অবৈধভাবে পরিচালনা করা ময়মনসিংহের একটি মিনি চিড়িয়াখানায় অভিযান চালিয়ে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির ২৩টি বন্যপ্রাণী জব্দ করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। গত মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর জয়নুল আবেদীন উদ্যানে মিনি চিড়িয়াখানায় অভিযান চালিয়ে এসব বণ্যপ্রাণী জব্দ করা হয়। এ সময় মিনি চিড়িয়াখানায় অবৈধভাবে রাখা ১টি অজগর সাপ, ২টি ময়ুর, ৫টি হরিণ, ২টি মদনটাক পাখি, ১টি কুমির, ২টি ভাল্লুক, ১টি সজারু, ৫টি বানর এবং বাচ্চাসহ ১টি লজ্জাবতী বানরসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি জব্দ করে চিড়িয়াখানাটি সিলগালা করে দেয়া হয়। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ এর পরপিন্থী বণ্যপ্রানী সংরক্ষণ করায় এই চিরিয়াখানাটি বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে বলে জানান বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘ ১২ বছর যাবত এই চিড়িয়াখানাটি ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র ইকরামুল হক টিটুর অনুসারীরা পরিচালনা করে আসছিলেন। মূলত এই চিড়িয়াখানাটি নগরীর জয়নুল আবেদীন পার্কের কিছু অংশ ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন থেকে নামমাত্র মূল্যে ইজারা নিয়েছিলেন ফুলবাড়িয়া উপজেলার তৎকালীন সংসদ সদস্যের ছেলে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমদাদুল হক সেলিম। পরে তার কাছ থেকে ৪নং ওয়ার্ড কমিশনার মাহবুবুর রহমান দুলাল এটি পরিচালনার দায়িত্ব নেন। তখন থেকে এই চিড়িয়াখানাতে বিভিন্ন প্রাণীকে খাঁচায় বন্দী করে টিকিট বিক্রির মাধ্যমে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি রেস্টুরেন্ট এবং শিশুদের জন্যে বিভিন্ন রাইড স্থাপনের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবসার পরিচালনা করে আসছিল। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলে তারা গা ঢাকা দেয় এবং চিড়িয়াখানাটির দায়িত্ব নেন ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মামুন। তবে শুরু থেকেই চিড়িয়াখানটির পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, প্রাণীর অপর্যাপ্ত চিকিৎসা এবং কর্মীদের দুর্ব্যবহার নিয়ে প্রায়শই অভিযোগ ছিল। কিন্তু আওয়ামীলীগ নেতাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলে কিছু বলতে পারতেন না। তবে সম্প্রতি চিড়িয়াখানার ভিতরে থাকা একটি ভালুকের পায়ে ঘা হয়ে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়ালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। এই সূত্র ধরে অভিযান পরিচালনা করে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মিনি চিড়িয়াখানার পরিচালক মিজানুর রহমান মামুন বলেন, মানুষের চিত্ত বিনোদনের কথা চিন্তা করে নামমাত্র দর্শনার্থী বিনিময় মূল্যে চিড়িয়াখানায় তারা প্রাণীদের প্রতি সর্বোচ্চ যত্ন নেয়ার চেষ্টা করেন। তবে সম্প্রতি একটি ভালুক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে অসুস্থ হলে তার পায়ে পচন ধরে এবং ঘা হয়ে যায়। তবে তারা একজন ভেটেরিনারি চিকিৎসকের মাধ্যমে সেটি সাড়িয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা জানান, বন্যপ্রাণী সংগ্রহ, দখলে রাখা, প্রদর্শন এবং সংরক্ষণ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই এখান থেকে ২৩টি বন্যপ্রাণী জব্দ করা হলো। জব্দকৃত প্রাণীগুলোকে সুচিকিৎসা দিয়ে সারিয়ে তোলে গাজীপুর সাফারি পার্কে অবমুক্ত করা হবে এবং কিছু প্রাণীকে ১৫ দিন কোয়ারেন্টিনে রেখে স্বাভাবিক বণ্য পরিবেশে অবমুক্ত করা হবে। বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস বলেন, আইন অমান্য করে ব্যাক্তির প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে চিড়িয়াখানাটি গড়ে তোলা হয়েছিল। খবর পেয়ে প্রাণীগুলোকে উদ্ধার করা হয় এবং আহত ভালুকটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ।
বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫
অবৈধভাবে পরিচালনা করা ময়মনসিংহের একটি মিনি চিড়িয়াখানায় অভিযান চালিয়ে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির ২৩টি বন্যপ্রাণী জব্দ করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। গত মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর জয়নুল আবেদীন উদ্যানে মিনি চিড়িয়াখানায় অভিযান চালিয়ে এসব বণ্যপ্রাণী জব্দ করা হয়। এ সময় মিনি চিড়িয়াখানায় অবৈধভাবে রাখা ১টি অজগর সাপ, ২টি ময়ুর, ৫টি হরিণ, ২টি মদনটাক পাখি, ১টি কুমির, ২টি ভাল্লুক, ১টি সজারু, ৫টি বানর এবং বাচ্চাসহ ১টি লজ্জাবতী বানরসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি জব্দ করে চিড়িয়াখানাটি সিলগালা করে দেয়া হয়। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ এর পরপিন্থী বণ্যপ্রানী সংরক্ষণ করায় এই চিরিয়াখানাটি বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে বলে জানান বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘ ১২ বছর যাবত এই চিড়িয়াখানাটি ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র ইকরামুল হক টিটুর অনুসারীরা পরিচালনা করে আসছিলেন। মূলত এই চিড়িয়াখানাটি নগরীর জয়নুল আবেদীন পার্কের কিছু অংশ ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন থেকে নামমাত্র মূল্যে ইজারা নিয়েছিলেন ফুলবাড়িয়া উপজেলার তৎকালীন সংসদ সদস্যের ছেলে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমদাদুল হক সেলিম। পরে তার কাছ থেকে ৪নং ওয়ার্ড কমিশনার মাহবুবুর রহমান দুলাল এটি পরিচালনার দায়িত্ব নেন। তখন থেকে এই চিড়িয়াখানাতে বিভিন্ন প্রাণীকে খাঁচায় বন্দী করে টিকিট বিক্রির মাধ্যমে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি রেস্টুরেন্ট এবং শিশুদের জন্যে বিভিন্ন রাইড স্থাপনের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবসার পরিচালনা করে আসছিল। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলে তারা গা ঢাকা দেয় এবং চিড়িয়াখানাটির দায়িত্ব নেন ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মামুন। তবে শুরু থেকেই চিড়িয়াখানটির পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, প্রাণীর অপর্যাপ্ত চিকিৎসা এবং কর্মীদের দুর্ব্যবহার নিয়ে প্রায়শই অভিযোগ ছিল। কিন্তু আওয়ামীলীগ নেতাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলে কিছু বলতে পারতেন না। তবে সম্প্রতি চিড়িয়াখানার ভিতরে থাকা একটি ভালুকের পায়ে ঘা হয়ে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়ালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। এই সূত্র ধরে অভিযান পরিচালনা করে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মিনি চিড়িয়াখানার পরিচালক মিজানুর রহমান মামুন বলেন, মানুষের চিত্ত বিনোদনের কথা চিন্তা করে নামমাত্র দর্শনার্থী বিনিময় মূল্যে চিড়িয়াখানায় তারা প্রাণীদের প্রতি সর্বোচ্চ যত্ন নেয়ার চেষ্টা করেন। তবে সম্প্রতি একটি ভালুক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে অসুস্থ হলে তার পায়ে পচন ধরে এবং ঘা হয়ে যায়। তবে তারা একজন ভেটেরিনারি চিকিৎসকের মাধ্যমে সেটি সাড়িয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা জানান, বন্যপ্রাণী সংগ্রহ, দখলে রাখা, প্রদর্শন এবং সংরক্ষণ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই এখান থেকে ২৩টি বন্যপ্রাণী জব্দ করা হলো। জব্দকৃত প্রাণীগুলোকে সুচিকিৎসা দিয়ে সারিয়ে তোলে গাজীপুর সাফারি পার্কে অবমুক্ত করা হবে এবং কিছু প্রাণীকে ১৫ দিন কোয়ারেন্টিনে রেখে স্বাভাবিক বণ্য পরিবেশে অবমুক্ত করা হবে। বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস বলেন, আইন অমান্য করে ব্যাক্তির প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে চিড়িয়াখানাটি গড়ে তোলা হয়েছিল। খবর পেয়ে প্রাণীগুলোকে উদ্ধার করা হয় এবং আহত ভালুকটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ।