বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে মোট খেলাপি ঋণের ৭০ শতাংশই মাত্র ১০টি ব্যাংকের মধ্যে সীমাবদ্ধ, যেখানে তিন মাস আগেও এই হার ছিল ৫১ শতাংশ। এ ছাড়া খেলাপি ঋণের ৫৪ শতাংশ মাত্র পাঁচটি ব্যাংকে জমা হয়েছে।
সোমবার প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট’-এ এসব তথ্য উঠে এসেছে। যদিও ওই প্রতিবেদনে ব্যাংকগুলোর নাম প্রকাশ করা হয়নি।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, জুন মাসের হিসাব অনুযায়ী দেশের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। কিন্তু সেপ্টেম্বর শেষে এই ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ৭৪ হাজার কোটি টাকা।
জানা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেসরকারি ব্যাংকের তুলনায় বেশি। সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ১১১ কোটি টাকা, যা তাদের বিতরণ করা মোট ঋণের ৪০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। জুন মাসে এই অঙ্ক ছিল ১ লাখ ২ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা।
অন্যদিকে, বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সেপ্টেম্বর শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮০৬ কোটি টাকায়, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। তিন মাসের ব্যবধানে এই খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণ সম্পর্কে বিশ্লেষকরা বলছেন, ঋণ অনুমোদন ও বিতরণের ক্ষেত্রে যথাযথ যাচাই-বাছাইয়ের অভাব এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দায়মুক্তি এই সংকটের জন্য দায়ী। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাবেক মহাপরিচালক তৌফিক আহমদ চৌধুরী জানান, ঋণগ্রহীতা ও ঋণদাতা উভয়ই অনিয়মের জন্য দায়ী।
তিনি আরও বলেন, “অনেক ক্ষেত্রে ভুয়া প্রতিষ্ঠান ও সম্পত্তি দেখিয়ে ঋণ নেওয়া হয়। ফলে খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যর্থ হচ্ছে ব্যাংকগুলো।”
বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ তুলনামূলক কম। সেপ্টেম্বর শেষে বিদেশি ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৮১৩ কোটি টাকায়, যা মোট ঋণের ১৩ দশমিক ২১ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শীর্ষ ঋণগ্রহীতাদের খেলাপি ঋণ দেশের ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতায় বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এই সমস্যা সমাধানে ঋণগ্রহীতা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে মোট খেলাপি ঋণের ৭০ শতাংশই মাত্র ১০টি ব্যাংকের মধ্যে সীমাবদ্ধ, যেখানে তিন মাস আগেও এই হার ছিল ৫১ শতাংশ। এ ছাড়া খেলাপি ঋণের ৫৪ শতাংশ মাত্র পাঁচটি ব্যাংকে জমা হয়েছে।
সোমবার প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট’-এ এসব তথ্য উঠে এসেছে। যদিও ওই প্রতিবেদনে ব্যাংকগুলোর নাম প্রকাশ করা হয়নি।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, জুন মাসের হিসাব অনুযায়ী দেশের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। কিন্তু সেপ্টেম্বর শেষে এই ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ৭৪ হাজার কোটি টাকা।
জানা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেসরকারি ব্যাংকের তুলনায় বেশি। সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ১১১ কোটি টাকা, যা তাদের বিতরণ করা মোট ঋণের ৪০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। জুন মাসে এই অঙ্ক ছিল ১ লাখ ২ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা।
অন্যদিকে, বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সেপ্টেম্বর শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮০৬ কোটি টাকায়, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। তিন মাসের ব্যবধানে এই খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণ সম্পর্কে বিশ্লেষকরা বলছেন, ঋণ অনুমোদন ও বিতরণের ক্ষেত্রে যথাযথ যাচাই-বাছাইয়ের অভাব এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দায়মুক্তি এই সংকটের জন্য দায়ী। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাবেক মহাপরিচালক তৌফিক আহমদ চৌধুরী জানান, ঋণগ্রহীতা ও ঋণদাতা উভয়ই অনিয়মের জন্য দায়ী।
তিনি আরও বলেন, “অনেক ক্ষেত্রে ভুয়া প্রতিষ্ঠান ও সম্পত্তি দেখিয়ে ঋণ নেওয়া হয়। ফলে খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যর্থ হচ্ছে ব্যাংকগুলো।”
বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ তুলনামূলক কম। সেপ্টেম্বর শেষে বিদেশি ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৮১৩ কোটি টাকায়, যা মোট ঋণের ১৩ দশমিক ২১ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শীর্ষ ঋণগ্রহীতাদের খেলাপি ঋণ দেশের ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতায় বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এই সমস্যা সমাধানে ঋণগ্রহীতা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।