alt

অর্থ-বাণিজ্য

বিদ্যুতে ‘অসম’ চুক্তি বাতিল ‘অতটা সহজ নয়’: পরিবেশ উপদেষ্টা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

বিদ্যুৎ খাতে চুক্তি বাতিলের কথা বলাটা সহজ হলেও তা থেকে বের হয়ে আসাটা অনেক ব্যয়বহুল বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘চুক্তি বাতিল অতটা সহজ নয়। নাইকো চুক্তি বাতিল করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেতে হয়েছে। তবুও অন্তর্বর্তী সরকার চ্যালেঞ্জটা নিয়েছে। এখন চুক্তিগুলো পর্যালোচনার মধ্যে আছে।’ একই সঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ম তামিম বলেছেন, ‘একটি প্রকল্প বন্ধ করতে গেলে ৮ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার জরিমানা দিতে হবে।’

‘বাংলাদেশ জ্বালানি সমৃদ্ধি-২০৫০’ নিয়ে দ্বিতীয় জ্বালানি সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে তিনদিনের এই সম্মেলনের উদ্বোধন হয়েছে। সম্মেলনের আয়োজক কয়েকটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সমন্বিত জোট বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিডব্লিউজিইডি)।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘অনেকের বক্তব্যে আগের সরকারের কিছু চুক্তি বা প্রকল্পের কথা বলা হয়েছে, যেগুলো প্রথম থেকেই বিরোধিতার মুখে ছিল। যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়ে গেছে, সেগুলোর ঋণের বোঝাও টানতে হচ্ছে। বসিয়ে বসিয়ে টাকা দিতে হচ্ছে। আবার একই সময়ে জ্বালানি রূপান্তরেরও একটা চাপ আছে। যে ধরনের অসম চুক্তি হয়েছে, অস্বাভাবিক খরচে করা হয়েছে, তার দায় বহন করতে হচ্ছে। ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ (ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ) করতেই সরকারের অনেকটা সময় লেগে যাচ্ছে।’

সম্মেলনে বক্তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ঢাকায় আবাসিক ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল আছে। এটা কাজ করে কিনা, তার তদারকি নেই। বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা জমিটা মূল মালিকদের ফিরিয়ে দেয়ার সুযোগ আইনে নেই। তবে অধিগ্রহণ করা অব্যবহৃত জমি নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন অথবা বনায়ন করে কাজে লাগানো যেতে পারে।’

সম্মেলনে জ্বালানি সাশ্রয়ের কথা কারও বক্তব্যে শোনা যায়নি বলে মন্তব্য করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা। তিনি আরও বলেন, ‘জ্বালানি খাতকে সমৃদ্ধ করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও স্বচ্ছতাসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিগত সরকারের রেখে যাওয়া অসম চুক্তি ও অস্বাভাবিক ঋণের বোঝা অন্তর্বর্তী সরকারকে টানতে হচ্ছে। তবে টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার কাজ করছে। এত সমস্যার মধ্যে থেকে একটা সেক্টরে সমৃদ্ধি অর্জন করা খুব বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়। তবে অন্তর্বর্তী সরকার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে। অনেক চুক্তি-প্রকল্পের কথা আমরা বলেছে যেগুলোর বিরোধিতা প্রথম থেকেই আমাদের ছিল।’

বিদ্যুৎ খাতে করা চুক্তি বাতিলের বাস্তবতা নিয়ে কথা বলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ম তামিম। তিনি বলেন, ‘একটি প্রকল্প বন্ধ করতে গেলে ৮ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার জরিমানা দিতে হবে, এটাই চুক্তি। অনেক চুক্তি দীর্ঘমেয়াদি। মেয়াদের আগে বাদ দিতে গেলেই আইনগত ঝামেলা আছে। আর্থিক জরিমানা তো আছেই।’

ম তামিম আরও বলেন, ‘বর্তমানে চলছে এখন সাত হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র। ছয় হাজার মেগাওয়াটের মতো বড় কেন্দ্র বসিয়ে রেখে কেন্দ্রভাড়া দিতে হচ্ছে। এটা কি বাদ দেয়া যাবে? গরমের সময় তো এগুলো লাগবে। সত্যিকার পরিকল্পনা করে এ খাত এগোয়নি। তাই রূপান্তরের ক্ষেত্রে সতর্কতার সঙ্গে পরিকল্পনা করে এগোতে হবে। দক্ষতা উন্নয়ন ও সাশ্রয়ে গুরুত্ব কম। এখানে মনোযোগ দিতে হবে।’

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘জ্বালানি খাতে আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতির সুযোগ করে দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৪০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। শুরুতে ১০টির জন্য দরপত্র ডাকা হচ্ছে। ধাপে ধাপে বাকিগুলোর দরপত্র আহ্বান করা হবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সমন্বিত মহাপরিকল্পনা নতুন করে তৈরি হবে। এ ছাড়া দেশে সৌরবিদ্যুৎ যন্ত্রপাতি তৈরির কারখানা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা উন্নয়নকর্মীরা উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশ নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলে ধরেন। তারা বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সুন্দরবনের ক্ষতি হচ্ছে। এ কেন্দ্রের সঙ্গে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি আছে। তাহলে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাঁচতে ২০ বছর অপেক্ষা করতে হবে কিনা? বিকল্প থাকার পরও এ প্রকল্পের রাস্তা তৈরি করতে বেশ কিছু পরিবারকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন একজন। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ৪ হাজার ২০০ পরিবার উচ্ছেদ করা হয়েছে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে। বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল হয়েছে। পরিবারগুলোকে জমি ফিরিয়ে দেয়া যায় কিনা, তা জানতে চান একজন।

সম্মেলনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন বিডব্লিউজিইডির সদস্যসচিব হাসান মেহেদী। সঞ্চালনা করেন কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্কের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং উপদেষ্টা বেনজীর আহমেদ ও ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যাপক ফাহমিদা হক।

রাজধানীতে শুরু হওয়া এই সম্মেলন আগামী তিনদিন চলবে। সম্মেলনে সব মিলিয়ে মোট ১২টি সেশন হবে। এতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন, পরিবেশবাদী সংগঠন, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেন।

এস আলম-আকিজের বিরুদ্ধে নারী ব্যবসায়ীর প্রতারণা মামলা

ছবি

১৫তম বিজমায়েস্ট্রোজ এর চূড়ান্ত পর্ব উদযাপন করেছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ

ছবি

নতুন বছরে প্রথম এলএনজি কেনায় প্রতি ইউনিট ১৫.০২ ডলারে চূড়ান্ত অনুমোদন

ছবি

টিসিবি কার্ড বিতরণে অনিয়ম বন্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ছবি

করছাড়ের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান অর্থ উপদেষ্টার

ছবি

খেলাপি ঋণের ৭০ শতাংশ ১০টি ব্যাংকে, বিপাকে ব্যাংকিং খাত

ছবি

রাজধানীতে বুধবার শুরু হচ্ছে সূতা, বস্ত্র ও আনুষাঙ্গিক পণ্যের প্রদর্শনী

ছবি

মূসক ৯ শতাংশে নামানোর উদ্যোগ, শুল্ক ছাড় কমানোর পরিকল্পনা: এনবিআর চেয়ারম্যান

ছবি

কাল শুরু হচ্ছে অর্থনৈতিক শুমারি, চাওয়া হবে বিদেশিদের তথ্য

প্রযুক্তির ব্যবহার ৫০ শতাংশ বাড়লে চাকরি হারাতে পারেন ১৮ লাখ মানুষ: বিআইডিএস

ছবি

বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট এবং দেশে ব্যবসার সুযোগ বৃদ্ধি করতে সহযোগি হবে ফিকি

ছবি

নোভারটিস বাংলাদেশ লিমিটেডের বেশিরভাগ শেয়ার অধিগ্রহণ করবে রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস

ছবি

জ্বালানির আমদানি নির্ভরতা কমাতে নিজস্ব উৎস ও ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে মনোনিবেশের আহ্বান

ছবি

চামচা পুঁজিবাদের বিকাশ থেকে অগণতান্ত্রিক মনোভাব তৈরি হয়েছে : রেহমান সোবহান

ছবি

উবার বাংলাদেশের ৮ বছর পূর্তি উদযাপন

ছবি

করপোরেট গভর্নেন্সে স্বীকৃতি পেল বিএটি বাংলাদেশ

রাণীনগরে ন্যায্যমূল্যের দোকান : স্বল্প আয়ের মানুষের স্বস্তি

ছবি

পুঁজিবাজারে শেয়ার কারসাজির ঘটনায় ১১৫ কোটি টাকা জরিমানা

ছবি

মূল্যস্ফীতির চাপে নিত্যপণ্যের বাজার, খাদ্যদ্রব্যে ১৩.৮০% মূল্যবৃদ্ধি

আইএমএফ-এর অধিকাংশ শর্ত পূরণ, চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড় ফেব্রুয়ারিতে

এইচআর ম্যানেজমেন্টে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে ‘ট্যালেন্ট লেন্স হাব’

ছবি

বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসার প্রসারে টিকটকের কর্মশালা

ছবি

৫-৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে রুয়েট সাইবার ফেস্ট ২০২৪

থ্রি মিলিয়ন ক্লাবে প্রবেশ করেছে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিং

ছবি

চার ধরনের নতুন নোট আসছে, নকশায় যুক্ত হবে জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি

ছবি

সূচকের ওঠানামায় পুঁজিবাজারে চলছে লেনদেন

দুই বছরের মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনার সুপারিশ

ছবি

২৮ উপায়ে ‘দুর্নীতি’, ২৩৪ বিলিয়ন ডলার ‘পাচার’

ছবি

বিপিও শিল্পের উন্নয়নে বাক্কো ও বিটিআরসি যৌথ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

ছবি

দক্ষতা উন্নয়নে বেসিস ও সিসিপ এর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর

ছবি

বেসিস ও এনআরবি ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত

ছবি

মুক্তাগাছায় ২০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে এডিবির অর্থায়ন

শ্বেতপত্র কমিটি: দেড় দশকে ২৮ উপায়ে দুর্নীতি, দেশ থেকে পাচার ২৮ লাখ কোটি টাকা

ছবি

ক্রেডিট কার্ডে সুদের হার বাড়ছে, জানুয়ারি থেকে কার্যকর

ছবি

ব্যাংক খাতের সংকট: দুর্নীতি ও খেলাপি ঋণে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ১০ ব্যাংক

ছবি

ছয় মাসে দ্বিগুণ হওয়ার আশঙ্কায় খেলাপি ঋণ: গভর্নর

tab

অর্থ-বাণিজ্য

বিদ্যুতে ‘অসম’ চুক্তি বাতিল ‘অতটা সহজ নয়’: পরিবেশ উপদেষ্টা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

বিদ্যুৎ খাতে চুক্তি বাতিলের কথা বলাটা সহজ হলেও তা থেকে বের হয়ে আসাটা অনেক ব্যয়বহুল বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘চুক্তি বাতিল অতটা সহজ নয়। নাইকো চুক্তি বাতিল করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেতে হয়েছে। তবুও অন্তর্বর্তী সরকার চ্যালেঞ্জটা নিয়েছে। এখন চুক্তিগুলো পর্যালোচনার মধ্যে আছে।’ একই সঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ম তামিম বলেছেন, ‘একটি প্রকল্প বন্ধ করতে গেলে ৮ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার জরিমানা দিতে হবে।’

‘বাংলাদেশ জ্বালানি সমৃদ্ধি-২০৫০’ নিয়ে দ্বিতীয় জ্বালানি সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে তিনদিনের এই সম্মেলনের উদ্বোধন হয়েছে। সম্মেলনের আয়োজক কয়েকটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সমন্বিত জোট বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিডব্লিউজিইডি)।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘অনেকের বক্তব্যে আগের সরকারের কিছু চুক্তি বা প্রকল্পের কথা বলা হয়েছে, যেগুলো প্রথম থেকেই বিরোধিতার মুখে ছিল। যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়ে গেছে, সেগুলোর ঋণের বোঝাও টানতে হচ্ছে। বসিয়ে বসিয়ে টাকা দিতে হচ্ছে। আবার একই সময়ে জ্বালানি রূপান্তরেরও একটা চাপ আছে। যে ধরনের অসম চুক্তি হয়েছে, অস্বাভাবিক খরচে করা হয়েছে, তার দায় বহন করতে হচ্ছে। ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ (ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ) করতেই সরকারের অনেকটা সময় লেগে যাচ্ছে।’

সম্মেলনে বক্তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ঢাকায় আবাসিক ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল আছে। এটা কাজ করে কিনা, তার তদারকি নেই। বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা জমিটা মূল মালিকদের ফিরিয়ে দেয়ার সুযোগ আইনে নেই। তবে অধিগ্রহণ করা অব্যবহৃত জমি নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন অথবা বনায়ন করে কাজে লাগানো যেতে পারে।’

সম্মেলনে জ্বালানি সাশ্রয়ের কথা কারও বক্তব্যে শোনা যায়নি বলে মন্তব্য করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা। তিনি আরও বলেন, ‘জ্বালানি খাতকে সমৃদ্ধ করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও স্বচ্ছতাসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিগত সরকারের রেখে যাওয়া অসম চুক্তি ও অস্বাভাবিক ঋণের বোঝা অন্তর্বর্তী সরকারকে টানতে হচ্ছে। তবে টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার কাজ করছে। এত সমস্যার মধ্যে থেকে একটা সেক্টরে সমৃদ্ধি অর্জন করা খুব বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়। তবে অন্তর্বর্তী সরকার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে। অনেক চুক্তি-প্রকল্পের কথা আমরা বলেছে যেগুলোর বিরোধিতা প্রথম থেকেই আমাদের ছিল।’

বিদ্যুৎ খাতে করা চুক্তি বাতিলের বাস্তবতা নিয়ে কথা বলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ম তামিম। তিনি বলেন, ‘একটি প্রকল্প বন্ধ করতে গেলে ৮ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার জরিমানা দিতে হবে, এটাই চুক্তি। অনেক চুক্তি দীর্ঘমেয়াদি। মেয়াদের আগে বাদ দিতে গেলেই আইনগত ঝামেলা আছে। আর্থিক জরিমানা তো আছেই।’

ম তামিম আরও বলেন, ‘বর্তমানে চলছে এখন সাত হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র। ছয় হাজার মেগাওয়াটের মতো বড় কেন্দ্র বসিয়ে রেখে কেন্দ্রভাড়া দিতে হচ্ছে। এটা কি বাদ দেয়া যাবে? গরমের সময় তো এগুলো লাগবে। সত্যিকার পরিকল্পনা করে এ খাত এগোয়নি। তাই রূপান্তরের ক্ষেত্রে সতর্কতার সঙ্গে পরিকল্পনা করে এগোতে হবে। দক্ষতা উন্নয়ন ও সাশ্রয়ে গুরুত্ব কম। এখানে মনোযোগ দিতে হবে।’

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘জ্বালানি খাতে আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতির সুযোগ করে দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৪০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। শুরুতে ১০টির জন্য দরপত্র ডাকা হচ্ছে। ধাপে ধাপে বাকিগুলোর দরপত্র আহ্বান করা হবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সমন্বিত মহাপরিকল্পনা নতুন করে তৈরি হবে। এ ছাড়া দেশে সৌরবিদ্যুৎ যন্ত্রপাতি তৈরির কারখানা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা উন্নয়নকর্মীরা উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশ নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলে ধরেন। তারা বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সুন্দরবনের ক্ষতি হচ্ছে। এ কেন্দ্রের সঙ্গে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি আছে। তাহলে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাঁচতে ২০ বছর অপেক্ষা করতে হবে কিনা? বিকল্প থাকার পরও এ প্রকল্পের রাস্তা তৈরি করতে বেশ কিছু পরিবারকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন একজন। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ৪ হাজার ২০০ পরিবার উচ্ছেদ করা হয়েছে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে। বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল হয়েছে। পরিবারগুলোকে জমি ফিরিয়ে দেয়া যায় কিনা, তা জানতে চান একজন।

সম্মেলনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন বিডব্লিউজিইডির সদস্যসচিব হাসান মেহেদী। সঞ্চালনা করেন কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্কের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং উপদেষ্টা বেনজীর আহমেদ ও ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যাপক ফাহমিদা হক।

রাজধানীতে শুরু হওয়া এই সম্মেলন আগামী তিনদিন চলবে। সম্মেলনে সব মিলিয়ে মোট ১২টি সেশন হবে। এতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন, পরিবেশবাদী সংগঠন, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেন।

back to top