৩৩ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী বহিষ্কার
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) জুলাই অভ্যুত্থানবিরোধী ৩০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত একইসাথে ৩৩ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার ও সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭১তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিন্ডিকেট সদস্যরা জানান, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের বিরুদ্ধে ভূমিকায় থাকা ইবির ১৯ জন শিক্ষক, ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে শাস্তি নির্ধারণ কমিটি গঠন করবেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। এদিকে একই অপরাধে জড়িত থাকায় ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পড়াশোনা শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের সনদ বাতিল এবং অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট।
এর আগে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের বিরুদ্ধে ভূমিকায় অবতীর্ণ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের চিহ্নিতকরণে গত ১৫ মার্চ আল-হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আকতার হোসেনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে প্রশাসন? পরে প্রত্যক্ষদর্শীকর্তৃক প্রদত্ত লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ, বিভিন্ন তথ্যচিত্র, ভিডিও এবং পত্রিকার খবরের ভিত্তিতে এসব শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের জুলাই-আগস্ট বিপ্লববিরোধী ও নির্যাতনমূলক কার্যকলাপের সংশ্লিষ্টতা পায় কমিটি। কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। সর্বশেষ কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট সভায় তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তালিকায় থাকা শিক্ষকরা হলেন, অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন, অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার, অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা, সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ ও অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন, অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন ও অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন, অধ্যাপক ড. এ. এইচ. এম আক্তারুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. মিয়া মো. রাসিদুজ্জামান, অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন, অধ্যাপক ড. শাহজাহান মণ্ডল ও অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল, সহকারী অধ্যাপক মাজেদুল হক, সহযোগী অধ্যাপক ড. আফরোজা বানু, অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন, সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান এবং অধ্যাপক জয়শ্রী সেন।
এ তালিকার স্থান পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন- উপ-রেজিস্ট্রার আলমগীর হোসেন খান ও আব্দুল হান্নান, সহকারী রেজিস্ট্রার ওয়ালিদ হাসান মুকুট, উপ-রেজিস্ট্রার আব্দুস সালাম সেলিম, ড. ইব্রাহীম হোসেন সোনা, উকীল উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম (শিমুল), জে এম ইলিয়াস, তোফাজ্জেল হোসেন, তথ্য, উপ-রেজিস্ট্রার (ফটোগ্রাফি) শেখ আবু সিদ্দিক রোকন এবং সহকারী রেজিস্ট্রার মাসুদুর রহমান।
বহিষ্কারের তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীরা হলেন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিপুল খান, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মেহেদী হাসান হাফিজ ও শাহীন আলম, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের রতন রায়, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মুন্সি কামরুল হাসান অনিক, মার্কেটিং বিভাগের হুসাইন মজুমদার, বাংলা বিভাগের তরিকুল ইসলাম ও ইংরেজি বিভাগের ফজলে রাব্বী।
ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মৃদুল রাব্বী, ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শাকিল, ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিমুল খান, আইন বিভাগের কামাল হোসেন, ইংরেজি বিভাগের মাসুদ রানা, আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মেজবাহুল ইসলাম, সমাজকল্যাণ বিভাগের অনিক কুমার, বাংলা বিভাগের আব্দুল আলিম, ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিজন রায়, শেখ সোহাগ ও শাওন।
অর্থনীতি বিভাগের তানভীর ও শেখ সাদি, সমাজকল্যাণ বিভাগের মাজহারুল ইসলাম, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের মনিরুল ইসলাম আসিফ, সমাজকল্যাণ বিভাগের মারুফ ইসলাম, চারুকলা বিভাগের পিয়াস, বাংলা বিভাগের ফারহান লাবিব ধ্রুব, আল-ফিকহ অ্যান্ড ল’ বিভাগের প্রাঞ্জল, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের নাবিল আহমেদ ইমন, ফিনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের রাফিদ, লোক প্রশাসন বিভাগের আদনান আলি পাটোয়ারি, ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের লিয়াফত ইসলাম রাকিব এবং ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ইমামুল মুক্তাকী শিমুল।
এদিকে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে প্রকাশ্যে বিরোধিতাকারী হিসেবে এই ৬৩ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিলেও তাদের উস্কানীদাতা এবং পেছন থেকে আন্দোলন দমনকারী অনেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষিক-শিক্ষার্থীরা। একই অভিযোগ অভিযুক্তদেরও। তবে তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলমান রয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
৩৩ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী বহিষ্কার
শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) জুলাই অভ্যুত্থানবিরোধী ৩০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত একইসাথে ৩৩ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার ও সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭১তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিন্ডিকেট সদস্যরা জানান, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের বিরুদ্ধে ভূমিকায় থাকা ইবির ১৯ জন শিক্ষক, ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে শাস্তি নির্ধারণ কমিটি গঠন করবেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। এদিকে একই অপরাধে জড়িত থাকায় ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পড়াশোনা শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের সনদ বাতিল এবং অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট।
এর আগে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের বিরুদ্ধে ভূমিকায় অবতীর্ণ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের চিহ্নিতকরণে গত ১৫ মার্চ আল-হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আকতার হোসেনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে প্রশাসন? পরে প্রত্যক্ষদর্শীকর্তৃক প্রদত্ত লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ, বিভিন্ন তথ্যচিত্র, ভিডিও এবং পত্রিকার খবরের ভিত্তিতে এসব শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের জুলাই-আগস্ট বিপ্লববিরোধী ও নির্যাতনমূলক কার্যকলাপের সংশ্লিষ্টতা পায় কমিটি। কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। সর্বশেষ কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট সভায় তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তালিকায় থাকা শিক্ষকরা হলেন, অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন, অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার, অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা, সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ ও অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন, অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন ও অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন, অধ্যাপক ড. এ. এইচ. এম আক্তারুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. মিয়া মো. রাসিদুজ্জামান, অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন, অধ্যাপক ড. শাহজাহান মণ্ডল ও অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল, সহকারী অধ্যাপক মাজেদুল হক, সহযোগী অধ্যাপক ড. আফরোজা বানু, অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন, সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান এবং অধ্যাপক জয়শ্রী সেন।
এ তালিকার স্থান পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন- উপ-রেজিস্ট্রার আলমগীর হোসেন খান ও আব্দুল হান্নান, সহকারী রেজিস্ট্রার ওয়ালিদ হাসান মুকুট, উপ-রেজিস্ট্রার আব্দুস সালাম সেলিম, ড. ইব্রাহীম হোসেন সোনা, উকীল উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম (শিমুল), জে এম ইলিয়াস, তোফাজ্জেল হোসেন, তথ্য, উপ-রেজিস্ট্রার (ফটোগ্রাফি) শেখ আবু সিদ্দিক রোকন এবং সহকারী রেজিস্ট্রার মাসুদুর রহমান।
বহিষ্কারের তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীরা হলেন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিপুল খান, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মেহেদী হাসান হাফিজ ও শাহীন আলম, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের রতন রায়, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মুন্সি কামরুল হাসান অনিক, মার্কেটিং বিভাগের হুসাইন মজুমদার, বাংলা বিভাগের তরিকুল ইসলাম ও ইংরেজি বিভাগের ফজলে রাব্বী।
ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মৃদুল রাব্বী, ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শাকিল, ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিমুল খান, আইন বিভাগের কামাল হোসেন, ইংরেজি বিভাগের মাসুদ রানা, আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মেজবাহুল ইসলাম, সমাজকল্যাণ বিভাগের অনিক কুমার, বাংলা বিভাগের আব্দুল আলিম, ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিজন রায়, শেখ সোহাগ ও শাওন।
অর্থনীতি বিভাগের তানভীর ও শেখ সাদি, সমাজকল্যাণ বিভাগের মাজহারুল ইসলাম, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের মনিরুল ইসলাম আসিফ, সমাজকল্যাণ বিভাগের মারুফ ইসলাম, চারুকলা বিভাগের পিয়াস, বাংলা বিভাগের ফারহান লাবিব ধ্রুব, আল-ফিকহ অ্যান্ড ল’ বিভাগের প্রাঞ্জল, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের নাবিল আহমেদ ইমন, ফিনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের রাফিদ, লোক প্রশাসন বিভাগের আদনান আলি পাটোয়ারি, ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের লিয়াফত ইসলাম রাকিব এবং ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ইমামুল মুক্তাকী শিমুল।
এদিকে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে প্রকাশ্যে বিরোধিতাকারী হিসেবে এই ৬৩ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিলেও তাদের উস্কানীদাতা এবং পেছন থেকে আন্দোলন দমনকারী অনেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষিক-শিক্ষার্থীরা। একই অভিযোগ অভিযুক্তদেরও। তবে তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলমান রয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।