চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে আনসার সদস্যরা সচিবালয় ঘেরাও করে রাখায় ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন কর্মকর্তারা। অফিস শেষ হলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী সেখান থেকে বের হতে পারেননি।

চার দিন ধরে আন্দোলনরত আনসার সদস্যরা রোববার সকাল থেকেই সচিবালয়ের সব গেটে অবস্থান নেন। তাদের দাবি, চাকরি জাতীয়করণ না হওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান চালিয়ে যাবেন।

ঘেরাও চলাকালে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি জানান, আনসার থেকে ‘রেস্ট প্রথা’ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং অন্যান্য দাবি পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে। সেই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, এবং কয়েকজন আনসার সদস্য।

‘রেস্ট প্রথা’ বাতিলের সিদ্ধান্তের পরেও আনসার সদস্যরা তাদের মূল দাবি থেকে সরেননি। তারা বারবার চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন, যা সচিবালয়ের সব গেট বন্ধ করে দেয়।

এক কর্মকর্তা বলেন, "আমাদের এভাবে অবরুদ্ধ করে রাখা কোনোভাবে ঠিক নয়। আমাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছি।"

দুপুর ১টার দিকে কিছু আনসার সদস্য সচিবালয়ে ঢুকে পড়েন এবং জাতীয়করণের দাবিতে স্লোগান দেন। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গেট বন্ধ করে দেয়।

বিকাল ৫টার পর কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী সচিবালয় থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু আনসারদের অবস্থানের কারণে তাদের আবারও আটকে দেওয়া হয়।

বৈঠকের পর জাহাঙ্গীর আলম বলেন, "রেস্ট প্রথা বাতিল করা হয়েছে এবং আগামী সাত দিনের মধ্যে একটি কমিটি সুপারিশ দেবে যে কীভাবে আনসারদের চাকরিতে নিয়মিত করা যায়।"

তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, "জাতীয় সংকট মোকাবিলায় এই কমিটি সব কিছু বিশ্লেষণ করে একটি যৌক্তিক সমাধানে পৌঁছাবে।"

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত আনসার সদস্যরা সচিবালয়ের সামনে তাদের অবস্থান ধরে রাখে। তাদের এক দফা দাবি—চাকরি জাতীয়করণ, যা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে ঘোষণা দেন।