সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার ওপর কথিত ছাত্র-জনতার হামলার ঘটনায় ‘সরকারের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই’ বলে মন্তব্য করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আসক জানায়, “শুধুমাত্র ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে এমন অরাজকতায় উচ্ছৃঙ্খল জনতার হাতে কমপক্ষে ৮৩ জন নিহত হয়েছেন, যা একটি সভ্য রাষ্ট্রে চরম নৈরাজ্যের ইঙ্গিত বহন করে।”
‘জনগণের ভোট ছাড়া’ নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগে রোববার বিএনপি শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করে, যেখানে তিন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশনারদের আসামি করা হয়।
মামলার প্রায় ছয় ঘণ্টা পর রোববার সন্ধ্যায় কথিত ছাত্র-জনতা ঢাকার উত্তরায় কে এম নূরুল হুদার বাসায় চড়াও হয়। তারা তার শরীরে ডিম ছুড়ে মারে, তাকে লুঙ্গি ও গেঞ্জি পরা অবস্থায় ফ্ল্যাট থেকে নামিয়ে এনে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় এবং একপর্যায়ে একজন তাকে জুতাও মারেন।
এ সময় পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও তারা কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। হামলাকারীদের অনেকে ঘটনার সময় ফেইসবুকে লাইভ করেন, যেখানে খালেদা জিয়ার নামে স্লোগান দিতে শোনা যায় এবং ঘটনার সম্পূর্ণ ভিডিও দেখা গেছে।
ঘটনার সমালোচনার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদও জানিয়েছেন, দলীয় কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে আসক বলেছে, “ইতিপূর্বে এ ধরনের বিবৃতি এলেও কার্যত দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার নজির দেখা যায়নি। ফলে এ জাতীয় ঘটনায় সরকারের দায় অস্বীকারের সুযোগ নেই।”
সংস্থাটি আরও বলেছে, “সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দুয়েকবার সতর্কতা দেওয়া হলেও সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত সংঘবদ্ধ সহিংসতার বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। বরং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তা এসব গোষ্ঠীর অপকর্মে পরোক্ষ প্রভাব ফেলছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।”
আসকের মতে, কে এম নূরুল হুদা একজন নাগরিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাকে যেভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে, তা শুধুই একজন ব্যক্তির অপমান নয়, বরং রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও আইনের শাসনের প্রতি অবমাননার শামিল।
নূরুল হুদাকে বেআইনি সমবেত কিছু ব্যক্তি গলায় জুতার মালা পরিয়ে মারধর করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে ঘটনাটির স্পষ্ট চিত্র দেখা গেছে।
আসক বলেছে, এই হামলা শুধু ব্যক্তি নয়, দেশের সংবিধান, মানবাধিকারের ন্যূনতম মূল্যবোধ এবং আইনের শাসনের ওপরও সরাসরি আঘাত।
সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, একজন নাগরিকের নিরাপত্তা, সম্মান এবং ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার সংরক্ষিত। কারও বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ থাকলেও তার নিষ্পত্তির একমাত্র পথ হচ্ছে সংবিধান ও প্রচলিত আইনের প্রক্রিয়া।
সংস্থাটি বলেছে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতকারীরা যদি এমন ঘটনা ঘটিয়ে যায়, তা বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি করে, যা ভবিষ্যতে ন্যায়বিচারের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে এবং আইনের শাসনের জায়গায় ‘মব সংস্কৃতিকে’ প্রতিষ্ঠিত করার বিপজ্জনক ইঙ্গিত দেয়।
সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার ওপর কথিত ছাত্র-জনতার হামলার ঘটনায় ‘সরকারের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই’ বলে মন্তব্য করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আসক জানায়, “শুধুমাত্র ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে এমন অরাজকতায় উচ্ছৃঙ্খল জনতার হাতে কমপক্ষে ৮৩ জন নিহত হয়েছেন, যা একটি সভ্য রাষ্ট্রে চরম নৈরাজ্যের ইঙ্গিত বহন করে।”
‘জনগণের ভোট ছাড়া’ নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগে রোববার বিএনপি শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করে, যেখানে তিন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশনারদের আসামি করা হয়।
মামলার প্রায় ছয় ঘণ্টা পর রোববার সন্ধ্যায় কথিত ছাত্র-জনতা ঢাকার উত্তরায় কে এম নূরুল হুদার বাসায় চড়াও হয়। তারা তার শরীরে ডিম ছুড়ে মারে, তাকে লুঙ্গি ও গেঞ্জি পরা অবস্থায় ফ্ল্যাট থেকে নামিয়ে এনে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় এবং একপর্যায়ে একজন তাকে জুতাও মারেন।
এ সময় পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও তারা কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। হামলাকারীদের অনেকে ঘটনার সময় ফেইসবুকে লাইভ করেন, যেখানে খালেদা জিয়ার নামে স্লোগান দিতে শোনা যায় এবং ঘটনার সম্পূর্ণ ভিডিও দেখা গেছে।
ঘটনার সমালোচনার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদও জানিয়েছেন, দলীয় কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে আসক বলেছে, “ইতিপূর্বে এ ধরনের বিবৃতি এলেও কার্যত দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার নজির দেখা যায়নি। ফলে এ জাতীয় ঘটনায় সরকারের দায় অস্বীকারের সুযোগ নেই।”
সংস্থাটি আরও বলেছে, “সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দুয়েকবার সতর্কতা দেওয়া হলেও সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত সংঘবদ্ধ সহিংসতার বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। বরং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তা এসব গোষ্ঠীর অপকর্মে পরোক্ষ প্রভাব ফেলছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।”
আসকের মতে, কে এম নূরুল হুদা একজন নাগরিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাকে যেভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে, তা শুধুই একজন ব্যক্তির অপমান নয়, বরং রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও আইনের শাসনের প্রতি অবমাননার শামিল।
নূরুল হুদাকে বেআইনি সমবেত কিছু ব্যক্তি গলায় জুতার মালা পরিয়ে মারধর করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে ঘটনাটির স্পষ্ট চিত্র দেখা গেছে।
আসক বলেছে, এই হামলা শুধু ব্যক্তি নয়, দেশের সংবিধান, মানবাধিকারের ন্যূনতম মূল্যবোধ এবং আইনের শাসনের ওপরও সরাসরি আঘাত।
সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, একজন নাগরিকের নিরাপত্তা, সম্মান এবং ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার সংরক্ষিত। কারও বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ থাকলেও তার নিষ্পত্তির একমাত্র পথ হচ্ছে সংবিধান ও প্রচলিত আইনের প্রক্রিয়া।
সংস্থাটি বলেছে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতকারীরা যদি এমন ঘটনা ঘটিয়ে যায়, তা বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি করে, যা ভবিষ্যতে ন্যায়বিচারের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে এবং আইনের শাসনের জায়গায় ‘মব সংস্কৃতিকে’ প্রতিষ্ঠিত করার বিপজ্জনক ইঙ্গিত দেয়।