চুন ক্যালসিয়ামের খুব ভালো উৎস। ক্যালসিয়ামের ঘাটতির কারণে বিশেষ করে নারীরা নানা রোগেভুগে থাকেন। অথচ হাতের কাছে অতি সহজলভ্য চুনদিয়ে এই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব বলে জানান গবেষক ড.তাহমিদ আহমেদ।
তিনি বলেন, ভাতের সাথে চুন সেদ্ধ করে খেলে ক্যালসিয়ম ঘাটতি কমানো যায়। ২শ গ্রামচালের সাথে সাড়ে ৭ গ্রাম চুন মিশিয়ে ভাত রান্না করে খেলে প্রতিদিনকার ক্যালসিয়াম ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব বলে সম্প্রতি এক গবেষণা থেকে জানা গেছে বলে জানান আইসিডিডিআরবি’র কার্যনর্বিাহী পরিচালক ও গবেষক ড.তাহমিদ।
বাংলাদেশে উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান আয়োজিত ‘টকিং ক্যালসিয়াম ডিফেসিয়েন্সি অনআওয়ার ডায়েট: লার্নিং ফর্ম দ্য পিপল’ (খাদ্য তালিকায় ক্যালসিয়ামের ঘাটতি : মানুষের কাছ থেকে শেখা) শীর্ষক সভায় গতকাল এ তথ্য দেন ড. তাহমিদ আহমেদ।
ড. তাহমিদ বলেন, ‘একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দিনে ১ হাজার মিলি গ্রামের মতো ক্যালসিয়াম প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ যে পরিমাণ ক্যালসিয়াম পায় তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। বিশেষ করে নারীরা ক্যালসিয়াম ঘাটতি জনিত নানা রোগে ভুগে থাকেন। এ থেকে মুক্তি পেতে চালের সঙ্গে ঝিনুক চুন মিশিয়ে ভাত রান্না করলে এই ক্যালসিয়াম ঘাটতির অনেকটাই পূরণ করা সম্ভব বলে জানান এই বিশেষজ্ঞ।
তিনি বলেন এক গবেষণায় দেখা গেছে, কক্সবাজারের চকোরিয়া ও চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় অতীতে প্রচুর শিশু রিকেটস নামক হাড়ের অসুখে ভুগতো। এ রোগে শরীরের হাড়গুলো নরম হয়ে বেঁকে যায়। স্থানীয় মানুষ এই রোগ থেকে বাঁচতে ঝিনুক পুড়িয়ে তা গুড়ো করে ভাতের সাথে সেদ্ধ করে খেতো , এখনো খায়। এবং এই ঝিনুক ভাত খেয়ে তারা উপকারা পায় বলে জানার পর আইসিডিডিআরবি’র এ নিয়ে গবেষণা শুরু করে। এবং গবেষণায় আশ্চযজনকভাবে এর ফল দেখতে পান গবেষকরা। ড. তাহমিদ বলেন, ইদানিং এই রোগে অথাৎ রিকেটস রোগে ঐ অঞ্চলের মানুষ কম ভুগছে।
প্রায় এক বছর ১৮ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ২২ জন নারীর ওপর আইসিডিডিআরবি গবেষণা শুরু করে। ঝিনুক গুড়া থেকে বানানো চুনের সাথে চাল সেদ্ধ করে ভাত রান্না করে খাওয়ানো হয়। এই ১ বছরে দেখা যায় ওই নারীদের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি লক্ষণীয়ভাবে পূরণ হতে শুরু করেছে। দৈনিক প্রয়োজনের এক পঞ্চমাংশ ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা সম্ভব এই ভাত থেকে। তবে এই ভাত থেকে মাড় না ঝড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের অনেকেই বিশেষ করে বয়স্কদের মাঝে পানের সাথে চুন খেয়ে থাকেন। তবে সরাসরি এই চুন না খাওয়াই ভালো কারণ সরাসরি চুন হল ক্ষারকীয় পদার্থ যা ক্যালসিয়াম অক্সাইড বা ক্যালসিয়াম হাইড্রোঅক্সাইড। তাামাক বা পান পাতার সাথে চুন না খাওয়াই ভালো।
চুন হল ক্যালসিয়াম যুক্ত একটি অজৈব উপাদান, যার মধ্যে কার্বনেটসমূহ, অক্সাইডসমূহ ও হাইড্রোক্সাইডসমূহের প্রাধান্য রয়েছে। কুইক লাইম আবার পানি সংযোজন বিক্রিয়ার মাধ্যমে হাইড্রেটেড লাইমে পরিণত হয়। শুষ্ক অবস্থায় এটি সাধারণত সাদা বর্ণের গুড়া জাতীয় পদার্থ।
ড. তাহমিদ জানান, চুন দিয়ে ভাত রান্না করার বিষয়টি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। যেহেতু এই খাবারের কোনো পাশ্ব প্রতিক্রিয়া উল্লেখিত ২২ নারীর মধ্যে পাওয়া যায় নাই। তাই শিগগরিই সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনেক মানুষকে নিয়ে বড়ো আকারে গবেষণা করবেন বলে জানান।
এ সময় অনেকেই অনলাইনে যুক্ত হয়ে গণস্বাথ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘চুন দিয়ে ভাত রান্নার বিষয়টি অনেক বেশী বেশী প্রচারের মাধ্যমে মানুষকে জানাত হবে।’
সভা শেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি বিআইডিএসের মহা পরিচালক বিনায়ক সেন বলেন, ক্যালসিয়ামের ঘাটতি যদি চুন দিয়ে কমানো যায় তবে এরচেয়ে ভালো আর কিছুই হতে পারে না।
সোমবার, ১৪ মার্চ ২০২২
চুন ক্যালসিয়ামের খুব ভালো উৎস। ক্যালসিয়ামের ঘাটতির কারণে বিশেষ করে নারীরা নানা রোগেভুগে থাকেন। অথচ হাতের কাছে অতি সহজলভ্য চুনদিয়ে এই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব বলে জানান গবেষক ড.তাহমিদ আহমেদ।
তিনি বলেন, ভাতের সাথে চুন সেদ্ধ করে খেলে ক্যালসিয়ম ঘাটতি কমানো যায়। ২শ গ্রামচালের সাথে সাড়ে ৭ গ্রাম চুন মিশিয়ে ভাত রান্না করে খেলে প্রতিদিনকার ক্যালসিয়াম ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব বলে সম্প্রতি এক গবেষণা থেকে জানা গেছে বলে জানান আইসিডিডিআরবি’র কার্যনর্বিাহী পরিচালক ও গবেষক ড.তাহমিদ।
বাংলাদেশে উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান আয়োজিত ‘টকিং ক্যালসিয়াম ডিফেসিয়েন্সি অনআওয়ার ডায়েট: লার্নিং ফর্ম দ্য পিপল’ (খাদ্য তালিকায় ক্যালসিয়ামের ঘাটতি : মানুষের কাছ থেকে শেখা) শীর্ষক সভায় গতকাল এ তথ্য দেন ড. তাহমিদ আহমেদ।
ড. তাহমিদ বলেন, ‘একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দিনে ১ হাজার মিলি গ্রামের মতো ক্যালসিয়াম প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ যে পরিমাণ ক্যালসিয়াম পায় তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। বিশেষ করে নারীরা ক্যালসিয়াম ঘাটতি জনিত নানা রোগে ভুগে থাকেন। এ থেকে মুক্তি পেতে চালের সঙ্গে ঝিনুক চুন মিশিয়ে ভাত রান্না করলে এই ক্যালসিয়াম ঘাটতির অনেকটাই পূরণ করা সম্ভব বলে জানান এই বিশেষজ্ঞ।
তিনি বলেন এক গবেষণায় দেখা গেছে, কক্সবাজারের চকোরিয়া ও চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় অতীতে প্রচুর শিশু রিকেটস নামক হাড়ের অসুখে ভুগতো। এ রোগে শরীরের হাড়গুলো নরম হয়ে বেঁকে যায়। স্থানীয় মানুষ এই রোগ থেকে বাঁচতে ঝিনুক পুড়িয়ে তা গুড়ো করে ভাতের সাথে সেদ্ধ করে খেতো , এখনো খায়। এবং এই ঝিনুক ভাত খেয়ে তারা উপকারা পায় বলে জানার পর আইসিডিডিআরবি’র এ নিয়ে গবেষণা শুরু করে। এবং গবেষণায় আশ্চযজনকভাবে এর ফল দেখতে পান গবেষকরা। ড. তাহমিদ বলেন, ইদানিং এই রোগে অথাৎ রিকেটস রোগে ঐ অঞ্চলের মানুষ কম ভুগছে।
প্রায় এক বছর ১৮ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ২২ জন নারীর ওপর আইসিডিডিআরবি গবেষণা শুরু করে। ঝিনুক গুড়া থেকে বানানো চুনের সাথে চাল সেদ্ধ করে ভাত রান্না করে খাওয়ানো হয়। এই ১ বছরে দেখা যায় ওই নারীদের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি লক্ষণীয়ভাবে পূরণ হতে শুরু করেছে। দৈনিক প্রয়োজনের এক পঞ্চমাংশ ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা সম্ভব এই ভাত থেকে। তবে এই ভাত থেকে মাড় না ঝড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের অনেকেই বিশেষ করে বয়স্কদের মাঝে পানের সাথে চুন খেয়ে থাকেন। তবে সরাসরি এই চুন না খাওয়াই ভালো কারণ সরাসরি চুন হল ক্ষারকীয় পদার্থ যা ক্যালসিয়াম অক্সাইড বা ক্যালসিয়াম হাইড্রোঅক্সাইড। তাামাক বা পান পাতার সাথে চুন না খাওয়াই ভালো।
চুন হল ক্যালসিয়াম যুক্ত একটি অজৈব উপাদান, যার মধ্যে কার্বনেটসমূহ, অক্সাইডসমূহ ও হাইড্রোক্সাইডসমূহের প্রাধান্য রয়েছে। কুইক লাইম আবার পানি সংযোজন বিক্রিয়ার মাধ্যমে হাইড্রেটেড লাইমে পরিণত হয়। শুষ্ক অবস্থায় এটি সাধারণত সাদা বর্ণের গুড়া জাতীয় পদার্থ।
ড. তাহমিদ জানান, চুন দিয়ে ভাত রান্না করার বিষয়টি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। যেহেতু এই খাবারের কোনো পাশ্ব প্রতিক্রিয়া উল্লেখিত ২২ নারীর মধ্যে পাওয়া যায় নাই। তাই শিগগরিই সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনেক মানুষকে নিয়ে বড়ো আকারে গবেষণা করবেন বলে জানান।
এ সময় অনেকেই অনলাইনে যুক্ত হয়ে গণস্বাথ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘চুন দিয়ে ভাত রান্নার বিষয়টি অনেক বেশী বেশী প্রচারের মাধ্যমে মানুষকে জানাত হবে।’
সভা শেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি বিআইডিএসের মহা পরিচালক বিনায়ক সেন বলেন, ক্যালসিয়ামের ঘাটতি যদি চুন দিয়ে কমানো যায় তবে এরচেয়ে ভালো আর কিছুই হতে পারে না।