গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষের পথে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির শুরুতেই হামাস ২০ ইসরায়েলি বন্দিকে জীবিত মুক্তি দিয়েছে। পাশাপাশি ২৮ মৃত বন্দির মধ্যে ২১ জনের দেহাবশেষ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটি বলছে, ইসরায়েলের দুই বছরের আক্রমণে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কারণে এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় লাগছে। যদিও যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপ কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, তা নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়ে গেছে।
আলজাজিরার খবর অনুসারে, সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাতে হামাস আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির কাছে আরেকজন ইসরায়েলি জিম্মির দেহাবশেষ হস্তান্তর করেছে। পরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত করেন, ইসরায়েলি সৈনিক স্টাফ সার্জেন্ট ইতাই চেনের মৃতদেহ ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং তার শনাক্তকরণ সম্পন্ন হয়েছে। হামাস জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে জিম্মিদের মরদেহ খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে পড়েছে। মধ্যপ্রাচ্য ও উপসাগরীয় রাজনীতি বিশ্লেষক লুসিয়ানো জাকারার মতে, ‘এটা রাজনৈতিক ইচ্ছার অভাব নয়, বরং খুঁজে বের করার সামর্থ্যের অভাব।’ তিনি বলেন, গাজা যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপটি হবে আরও জটিল। কারণ, এতে হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং যুদ্ধবিরতি টিকিয়ে রাখতে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা বাহিনীর ভূমিকার প্রয়োজন হবে। জাকারা বলেন, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ হওয়া নিয়ে আশাবাদী হওয়া যায়। কারণ, নিহতদের দেহগুলো ফেরত এসেছে। যদি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন ও আন্তর্জাতিক বাহিনীর কার্যপ্রণালি ঠিক না হয়, তবে দ্বিতীয় ধাপে যাওয়া কঠিন হবে।
মিডল ইস্ট আইয়ের খবরে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। অব্যাহত রয়েছে স্থল বাহিনীর অভিযানও। দক্ষিণ গাজায় বিমান হামলা ও বোমাবর্ষণের খবর দিয়েছে বাসিন্দারা। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তিন ফিলিস্তিনির মরদেহ এবং দুই আহত ব্যক্তিকে গাজার হাসপাতালগুলোয় নেওয়া হয়েছে। নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল (এনআরসি) জানিয়েছে, গত ১০ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ২৩টি ত্রাণ প্রবেশের অনুরোধ বাতিল করেছে।
ফলে ৯টি সংস্থার প্রায় চার হাজার প্যালেট ত্রাণসামগ্রী (তাঁবু, কম্বল, প্লাস্টিক সিলিং কিট ইত্যাদি) জর্ডান, মিসর ও ইসরায়েলে আটকে আছে। যদিও গাজার দুই লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি পরিবার শীত ও বৃষ্টিতে আশ্রয়হীন অবস্থায় আছে। সংস্থার মধ্যপ্রাচ্য পরিচালক অ্যাঞ্জেলিটা ক্যারেদা বলেন, ‘শীতের আগেই পরিবারগুলোকে রক্ষা করার সময় খুবই সীমিত।’ এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব আনছে, যাতে দুই বছরের জন্য গাজার একটি অন্তর্বর্তী শাসনব্যবস্থা অনুমোদনের কথা বলা হয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করেছেন, গাজায় কোনো শান্তিরক্ষা বাহিনী গঠন করা হলে, সেটি অবশ্যই আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হতে হবে। তিনি আলজাজিরাকে বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি এখনও ভঙ্গুর। সেখানে দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে আরও ত্রাণ পৌঁছানো জরুরি।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫
গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষের পথে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির শুরুতেই হামাস ২০ ইসরায়েলি বন্দিকে জীবিত মুক্তি দিয়েছে। পাশাপাশি ২৮ মৃত বন্দির মধ্যে ২১ জনের দেহাবশেষ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটি বলছে, ইসরায়েলের দুই বছরের আক্রমণে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কারণে এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় লাগছে। যদিও যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপ কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, তা নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়ে গেছে।
আলজাজিরার খবর অনুসারে, সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাতে হামাস আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির কাছে আরেকজন ইসরায়েলি জিম্মির দেহাবশেষ হস্তান্তর করেছে। পরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত করেন, ইসরায়েলি সৈনিক স্টাফ সার্জেন্ট ইতাই চেনের মৃতদেহ ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং তার শনাক্তকরণ সম্পন্ন হয়েছে। হামাস জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে জিম্মিদের মরদেহ খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে পড়েছে। মধ্যপ্রাচ্য ও উপসাগরীয় রাজনীতি বিশ্লেষক লুসিয়ানো জাকারার মতে, ‘এটা রাজনৈতিক ইচ্ছার অভাব নয়, বরং খুঁজে বের করার সামর্থ্যের অভাব।’ তিনি বলেন, গাজা যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপটি হবে আরও জটিল। কারণ, এতে হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং যুদ্ধবিরতি টিকিয়ে রাখতে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা বাহিনীর ভূমিকার প্রয়োজন হবে। জাকারা বলেন, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ হওয়া নিয়ে আশাবাদী হওয়া যায়। কারণ, নিহতদের দেহগুলো ফেরত এসেছে। যদি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন ও আন্তর্জাতিক বাহিনীর কার্যপ্রণালি ঠিক না হয়, তবে দ্বিতীয় ধাপে যাওয়া কঠিন হবে।
মিডল ইস্ট আইয়ের খবরে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। অব্যাহত রয়েছে স্থল বাহিনীর অভিযানও। দক্ষিণ গাজায় বিমান হামলা ও বোমাবর্ষণের খবর দিয়েছে বাসিন্দারা। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তিন ফিলিস্তিনির মরদেহ এবং দুই আহত ব্যক্তিকে গাজার হাসপাতালগুলোয় নেওয়া হয়েছে। নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল (এনআরসি) জানিয়েছে, গত ১০ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ২৩টি ত্রাণ প্রবেশের অনুরোধ বাতিল করেছে।
ফলে ৯টি সংস্থার প্রায় চার হাজার প্যালেট ত্রাণসামগ্রী (তাঁবু, কম্বল, প্লাস্টিক সিলিং কিট ইত্যাদি) জর্ডান, মিসর ও ইসরায়েলে আটকে আছে। যদিও গাজার দুই লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি পরিবার শীত ও বৃষ্টিতে আশ্রয়হীন অবস্থায় আছে। সংস্থার মধ্যপ্রাচ্য পরিচালক অ্যাঞ্জেলিটা ক্যারেদা বলেন, ‘শীতের আগেই পরিবারগুলোকে রক্ষা করার সময় খুবই সীমিত।’ এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব আনছে, যাতে দুই বছরের জন্য গাজার একটি অন্তর্বর্তী শাসনব্যবস্থা অনুমোদনের কথা বলা হয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করেছেন, গাজায় কোনো শান্তিরক্ষা বাহিনী গঠন করা হলে, সেটি অবশ্যই আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হতে হবে। তিনি আলজাজিরাকে বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি এখনও ভঙ্গুর। সেখানে দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে আরও ত্রাণ পৌঁছানো জরুরি।