# রিটটি সরাসরি খারিজ চাইলেন অ্যাটর্নি জেনারেল
# বললেন, দলটিকে নিষিদ্ধ করার ইচ্ছা অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের নেই
কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্র-জনতাকে ‘নির্বিচারে হত্যার’ অভিযোগে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও দল নিষিদ্ধ চেয়ে করা রিটের শুনানি মুলতবি করেছে হাইকোর্ট। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রিটকারীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১ সেপ্টেম্বর শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
তবে রিটটি জরিমানাসহ খারিজ করে দেওয়ার আবেদন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। শুনানিতে তিনি বলেন, ‘যিনি রিট করেছেন তার রিট করার এখতিয়ার নেই। রিটে আওয়ামী লীগকে বিবাদী করা হয়নি। সারডা নামের সংগঠন যে রিট করেছে তার গঠনতন্ত্রও এ ধরনের রিট করার অনুমোদন দেয় না।’
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও দলটির নিবন্ধন বাতিল চেয়ে গত ১৯ অগাস্ট এ রিট করেন ‘সারডা সোসাইটি’ নামের একটি মানবাধিকার সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া। গত ২৫ আগস্ট তিনি নিজে আবেদনের শুনানি করেন। তখন জ্যেষ্ঠ বিচারক তাকে একজন আইনজীবী নিয়োগ করার পরামর্শ দেন, যাতে ভালোভাবে শুনানি করা যায়। এরপর ২৭ আগস্ট শুনানির নতুন তারিখ দেয়া হয়।
আজ মঙ্গলবার সকালে প্রথমে শুনানি করতে উঠে আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া বলেন, তার আইনজীবী অন্য কোর্টে আছেন, সময় (পাস ওভার) চান। তখন আদালত সাড়ে ১২টায় শুনানির সময় ঠিক করে দেয়। এরপর বেলা সাড়ে ১২টায় শুনানি করতে উঠে মুরাদ ভূঁইয়া আদালতকে বলেন, ‘আমি একজন আইনজীবী নিয়োগ করেছি; তবে তিনি (আইনজীবী) বলেছেন যেন আমি শুনানি করি; সমস্যা হলে তিনি আসবেন। তিনি এখানে আছেন।’
এ সময় মুরাদ ভূঁইয়া পেছনে তাকিয়ে আইনজীবীকে দেখার চেষ্টা করেন। তখন জ্যেষ্ঠ বিচারক তাকে বলেন যেন আইনজীবীকে খুঁজে আনেন, তিনি সময় দেবেন। তখন মুরাদ ভূঁইয়া বাইরে গিয়ে আইনজীবীকে খুঁজে আসেন এবং না পাওয়ার কথা জানান আদালতকে।
তখন অ্যাটর্নি জেনারেল দাঁড়িয়ে আদালতকে বলেন, আবেদনকারী যথেষ্ট ‘কম্পিটেন্ট’, তিনি শুনানি করতে পারবেন।
এই প্রেক্ষিতে মুরাদ ভূঁইয়াই শুনানি করেন।
পরে শুনানিতে অংশ নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত নেই রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের। সংবিধানে রাজনৈতিক দল পরিচালনার যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে তা খর্ব করবে না সরকার। বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের অনেক অন্যায়-অবিচারের শিকার হয়েছে মানুষ। অনেক গুম-খুন হয়েছে। সেগুলোর বিচারের জন্য আইন ও আদালত রয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের অনেক ভালো নেতাকর্মীও রয়েছেন, তারা দলের মতাদর্শ ধারণ করেন। এজন্য দল নিষিদ্ধ করার সুযোগ নেই। তাদের রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করার ইচ্ছা এ সরকারের নেই।’
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘অতীতে অনেক রাজনৈতিক বিষয়কে কোর্টে টেনে আনা হয়েছে, যার মূল্য আমাদেরকে দিতে হয়েছে। যে গণঅভ্যুত্থানটি হয়েছে তা বিচার বিভাগের ওপরেও এসেছে। কোর্টে কোনো ঘটনা হলে আইনজীবী হিসেবে আমার ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়। এজন্য মাঠের রাজনীতি মাঠেই থাকুক। এ রিট সরাসরি খারিজ করে আবেদনকারীর ওপর কস্ট (খরচ) আরোপ করা হোক।’
পরে রিটকারী আওয়ামী লীগকে পক্ষ করার জন্য সময় চাইলে হাইকোর্ট আগামী ১ সেপ্টেম্বর নতুন দিন ধার্য করে দেয়।
মুরাদ ভূঁইয়ার করা রিট আবেদনে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা ছাড়াও যেসব প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনার নামে রয়েছে সেগুলোর নাম পরিবর্তন চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া রিটে দেশ সংস্কারের লক্ষ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ সর্বনি¤œ তিন বছর চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বিদেশে পাচার করা ১১ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনতে এবং বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের বদলি চাওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট ২০২৪
# রিটটি সরাসরি খারিজ চাইলেন অ্যাটর্নি জেনারেল
# বললেন, দলটিকে নিষিদ্ধ করার ইচ্ছা অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের নেই
কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্র-জনতাকে ‘নির্বিচারে হত্যার’ অভিযোগে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও দল নিষিদ্ধ চেয়ে করা রিটের শুনানি মুলতবি করেছে হাইকোর্ট। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রিটকারীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১ সেপ্টেম্বর শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
তবে রিটটি জরিমানাসহ খারিজ করে দেওয়ার আবেদন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। শুনানিতে তিনি বলেন, ‘যিনি রিট করেছেন তার রিট করার এখতিয়ার নেই। রিটে আওয়ামী লীগকে বিবাদী করা হয়নি। সারডা নামের সংগঠন যে রিট করেছে তার গঠনতন্ত্রও এ ধরনের রিট করার অনুমোদন দেয় না।’
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও দলটির নিবন্ধন বাতিল চেয়ে গত ১৯ অগাস্ট এ রিট করেন ‘সারডা সোসাইটি’ নামের একটি মানবাধিকার সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া। গত ২৫ আগস্ট তিনি নিজে আবেদনের শুনানি করেন। তখন জ্যেষ্ঠ বিচারক তাকে একজন আইনজীবী নিয়োগ করার পরামর্শ দেন, যাতে ভালোভাবে শুনানি করা যায়। এরপর ২৭ আগস্ট শুনানির নতুন তারিখ দেয়া হয়।
আজ মঙ্গলবার সকালে প্রথমে শুনানি করতে উঠে আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া বলেন, তার আইনজীবী অন্য কোর্টে আছেন, সময় (পাস ওভার) চান। তখন আদালত সাড়ে ১২টায় শুনানির সময় ঠিক করে দেয়। এরপর বেলা সাড়ে ১২টায় শুনানি করতে উঠে মুরাদ ভূঁইয়া আদালতকে বলেন, ‘আমি একজন আইনজীবী নিয়োগ করেছি; তবে তিনি (আইনজীবী) বলেছেন যেন আমি শুনানি করি; সমস্যা হলে তিনি আসবেন। তিনি এখানে আছেন।’
এ সময় মুরাদ ভূঁইয়া পেছনে তাকিয়ে আইনজীবীকে দেখার চেষ্টা করেন। তখন জ্যেষ্ঠ বিচারক তাকে বলেন যেন আইনজীবীকে খুঁজে আনেন, তিনি সময় দেবেন। তখন মুরাদ ভূঁইয়া বাইরে গিয়ে আইনজীবীকে খুঁজে আসেন এবং না পাওয়ার কথা জানান আদালতকে।
তখন অ্যাটর্নি জেনারেল দাঁড়িয়ে আদালতকে বলেন, আবেদনকারী যথেষ্ট ‘কম্পিটেন্ট’, তিনি শুনানি করতে পারবেন।
এই প্রেক্ষিতে মুরাদ ভূঁইয়াই শুনানি করেন।
পরে শুনানিতে অংশ নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত নেই রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের। সংবিধানে রাজনৈতিক দল পরিচালনার যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে তা খর্ব করবে না সরকার। বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের অনেক অন্যায়-অবিচারের শিকার হয়েছে মানুষ। অনেক গুম-খুন হয়েছে। সেগুলোর বিচারের জন্য আইন ও আদালত রয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের অনেক ভালো নেতাকর্মীও রয়েছেন, তারা দলের মতাদর্শ ধারণ করেন। এজন্য দল নিষিদ্ধ করার সুযোগ নেই। তাদের রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করার ইচ্ছা এ সরকারের নেই।’
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘অতীতে অনেক রাজনৈতিক বিষয়কে কোর্টে টেনে আনা হয়েছে, যার মূল্য আমাদেরকে দিতে হয়েছে। যে গণঅভ্যুত্থানটি হয়েছে তা বিচার বিভাগের ওপরেও এসেছে। কোর্টে কোনো ঘটনা হলে আইনজীবী হিসেবে আমার ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়। এজন্য মাঠের রাজনীতি মাঠেই থাকুক। এ রিট সরাসরি খারিজ করে আবেদনকারীর ওপর কস্ট (খরচ) আরোপ করা হোক।’
পরে রিটকারী আওয়ামী লীগকে পক্ষ করার জন্য সময় চাইলে হাইকোর্ট আগামী ১ সেপ্টেম্বর নতুন দিন ধার্য করে দেয়।
মুরাদ ভূঁইয়ার করা রিট আবেদনে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা ছাড়াও যেসব প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনার নামে রয়েছে সেগুলোর নাম পরিবর্তন চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া রিটে দেশ সংস্কারের লক্ষ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ সর্বনি¤œ তিন বছর চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বিদেশে পাচার করা ১১ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনতে এবং বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের বদলি চাওয়া হয়েছে।