alt

জাতীয়

রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধে বাংলাদেশিরা: মস্কোর দূতাবাসে যোগাযোগের পরামর্শ

মানবপাচার রোধে সতর্কতা, বিমানবন্দরে নজরদারি জোরদার

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : রোববার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

দালালের খপ্পরে পড়ে রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া বাংলাদেশিদের মস্কোতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাদের ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে সরকার।

একইসঙ্গে, রাশিয়ায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে ‘বিশেষ সতর্কতা’ জারি করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, “আপনারা হয়ত জেনে থাকবেন, সোলায়মান কবির নামে এক বাংলাদেশি দালালের প্রলোভনে পড়ে রাশিয়ায় গিয়ে এক ব্যক্তি যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য হন। পরে তিনি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে মস্কোর বাংলাদেশ দূতাবাসে আশ্রয় নিলে, দূতাবাস তাকে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করে।”

তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের সমস্যায় থাকা অন্যরাও যদি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তাহলে তাদেরও দেশে ফেরানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় যাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ নজরদারি দরকার।

মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, “ভ্রমণ ভিসায় রাশিয়ায় যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য, অথবা যাদের পাসপোর্টে রাশিয়া ভ্রমণের বৈধ ভিসা রয়েছে, তাদের বিষয়ে বিমানবন্দরগুলোতে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের জন্য আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছি।”

সম্প্রতি নাটোরের সিংড়ার এক যুবক রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন বলে তার পরিবার জানিয়েছে। একই পরিবারের আরেক সদস্য যুদ্ধ থেকে বাঁচতে পরিবার এবং দালালদের কাছে আকুতি জানিয়েছেন।

নিহত যুবকের নাম মো. হুমায়ুন কবির (৩৩)। তিনি সিংড়া উপজেলার হুলহুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার ভগ্নিপতি মো. রহমত আলীও বর্তমানে রাশিয়ায় আটকে রয়েছেন।

এছাড়া, যশোরের জাফর হোসেনও একই ধরনের পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়ার সরদারপাড়ার বাসিন্দা খায়রুল সরদারের ছেলে জাফর হোসেনকে রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে আরও কয়েকজনের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

রাশিয়ায় মানবপাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে সম্প্রতি ঢাকার এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি জানায়, গ্রেপ্তারকৃত তামান্না ‘ড্রিম হোম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানির অংশীদার এবং একটি মানব পাচার চক্রের সদস্য। তিনি ও তার সহযোগীরা মাসে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে অন্তত ১০ জন বাংলাদেশিকে রাশিয়ায় পাচার করেছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি, একটি বাংলাদেশি এজেন্সি রাশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে লোক পাঠাচ্ছে। পরে তাদেরকে রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধে বাধ্য করা হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের কাজে জড়িত রিক্রুটিং ও ট্রাভেল এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে ইতোমধ্যে অনুরোধ জানানো হয়েছে। রাশিয়ায় মানবপাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।”

রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরুর পর ২০২২ সালের এপ্রিলে ঢাকায় রুশ দূতাবাস এক ফেসবুক পোস্টে দাবি করেছিল, রাশিয়ার পক্ষে লড়তে ইচ্ছুক অনেক বাংলাদেশির কাছ থেকে তারা আবেদন পেয়েছে।

ওই পোস্টে বলা হয়েছিল, “আমরা বাংলাদেশি জনগণের এমন মহানুভব আহ্বানকে সাধুবাদ জানাই। তবে রুশ সামরিক বাহিনী নির্ধারিত পরিকল্পনামাফিক কাজ করছে, তাই স্বেচ্ছাসেবীদের প্রয়োজন নেই।”

তবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সে সময় কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

বাংলাদেশ সরকার এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও কঠোর অবস্থান নিতে যাচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, “মানবপাচার প্রতিরোধে আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। যাতে কেউ প্রতারণার শিকার হয়ে বিদেশে গিয়ে বিপদে না পড়ে, সে জন্য বিভিন্ন সংস্থাকে সতর্ক করা হয়েছে।”

এছাড়া, রাশিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফেরাতে কী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, সে বিষয়ে জানতে ইতোমধ্যে মস্কোর বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।

রফিকুল আলম বলেন, “এক জায়গায় গিয়ে আপনি আটকা পড়ে গেলে সেখান থেকে বের হয়ে আসা সহজ নয়। তাই দালালদের প্রলোভনে পা না দেওয়ার জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।”

বাংলাদেশ সরকার আশা করছে, এ ধরনের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে ভবিষ্যতে এ ধরনের বিপদের শিকার হওয়া কমে আসবে।

ছবি

নিরাপত্তা নির্দেশিকা বাতিল: হাইকোর্টের রুলের আগেই পিছু হটল সরকার

ছবি

ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের লাঠিচার্জ : ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসি আবদুল্লাহ আল মামুনের অপসারণের দাবি, মশাল মিছিলের ঘোষণা

ছবি

ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রায় পুলিশের বাধা, ধাক্কাধাক্কি, লাঠিপেটা

ছবি

সুধাসদনসহ হাসিনা পরিবারের সম্পত্তি ও ১২৪ ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ

ছবি

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে নেতিবাচক মনে করছেন ৫৮ শতাংশ, চিনের সঙ্গে সম্পর্ককে ইতিবাচক মনে করেন ৭৫ শতাংশ মানুষ

ছবি

নাগরিক সেবার বেহাল দশা: ঘুষ ও হয়রানির অভিযোগে গণশুনানিতে কান্নায় ভেঙে পড়লেন এক ব্যক্তি

ছবি

পাঠ্যবইয়ের কাগজ কেনায় রাখাল রাহার সংশ্লিষ্টতা নেই: এনসিটিবি চেয়ারম্যান

ছবি

অর্থনীতির ভঙ্গুর দশা উত্তরণের প্রতিশ্রুতি আনিসুজ্জামান চৌধুরীর

ছবি

এলডিসি থেকে উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়ার বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করছে সরকার

ছবি

জুলাই আন্দোলনে আহতদের চোখের চিকিৎসা দিচ্ছেন যুক্তরাজ্যের দুই বিশেষজ্ঞ

ছবি

স্পিকার রাষ্ট্রপতিকে শপথ পড়ানোর বৈধতা জানতে চায় হাই কোর্ট

ছবি

শেখ হাসিনা ও পরিবারের সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ

ছবি

বায়ুদূষণে বিশ্বের দ্বিতীয় বাংলাদেশ, ঢাকার অবস্থান তৃতীয়

ছবি

‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ এর গণপদযাত্রায় পুলিশের লাঠিপেটা, বাধা প্রদান

ছবি

জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পুরস্কার পুনর্বহাল

ছবি

শাহবাগে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, দ্রুত বিচার ও ধর্ষকদের ফাঁসি দাবি

ছবি

শেখ হাসিনা ও পরিবারের ১২৪ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

ছবি

ফিতরা জনপ্রতি সর্বনিম্ন ১১০ টাকা নির্ধারণ

ছবি

আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফর: গুরুত্ব পাবে রোহিঙ্গা সংকট ও মানবাধিকার প্রসঙ্গ

ছবি

গার্ডিয়ানকে ইউনূস: ‘হাসিনা রেখে গেছেন গাজার মতো বিধ্বস্ত বাংলাদেশ’

ছবি

রাজউকের পূর্বাচল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে শেখ হাসিনা ও পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা

ছবি

এবার ঈদে মিলবে না নতুন নোট

ছবি

ধর্ষণ, নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে দেশজুড়ে মানববন্ধন

কারাগারে অনিয়ম, ১২ জনকে চাকরিচ্যুতসহ ৮২৩ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

ছবি

সড়ক দুর্ঘটনায় পোশাক শ্রমিক নিহত, ৭ ঘণ্টা অবরোধ, চরম ভোগান্তিতে নগরবাসী

চোখের পাতা নেড়েছে মাগুরার সেই শিশুটি: প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব

জাতিসংঘের ফলকার টুর্কের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া আইএসপিআরের

প্রধান উপদেষ্টার এক বিশেষ সহকারীর পদত্যাগ, নতুন আরেকজনের নিয়োগ

বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচন আদায়ে দ্রুতই রাজপথে নামার ঘোষণা নাহিদের

ছবি

পঙ্গু হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে ‘জুলাই-যোদ্ধাদের’ মারামারি, ভোগান্তিতে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষজন

কম সময়ের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার

ছবি

বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরাতে বিশেষ আইন আনছে সরকার

ছবি

ফলকার টুর্কের মন্তব্যের বিষয়ে সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়া

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন আনিসুজ্জামান চৌধুরী

ছবি

পাচার হওয়া ২৩৪ বিলিয়ন ডলার ফেরাতে আসছে বিশেষ আইন

ছবি

মাগুরার শিশুর সামান্য উন্নতি, এখনও শঙ্কামুক্ত নয়

tab

জাতীয়

রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধে বাংলাদেশিরা: মস্কোর দূতাবাসে যোগাযোগের পরামর্শ

মানবপাচার রোধে সতর্কতা, বিমানবন্দরে নজরদারি জোরদার

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

রোববার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

দালালের খপ্পরে পড়ে রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া বাংলাদেশিদের মস্কোতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাদের ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে সরকার।

একইসঙ্গে, রাশিয়ায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে ‘বিশেষ সতর্কতা’ জারি করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, “আপনারা হয়ত জেনে থাকবেন, সোলায়মান কবির নামে এক বাংলাদেশি দালালের প্রলোভনে পড়ে রাশিয়ায় গিয়ে এক ব্যক্তি যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য হন। পরে তিনি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে মস্কোর বাংলাদেশ দূতাবাসে আশ্রয় নিলে, দূতাবাস তাকে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করে।”

তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের সমস্যায় থাকা অন্যরাও যদি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তাহলে তাদেরও দেশে ফেরানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় যাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ নজরদারি দরকার।

মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, “ভ্রমণ ভিসায় রাশিয়ায় যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য, অথবা যাদের পাসপোর্টে রাশিয়া ভ্রমণের বৈধ ভিসা রয়েছে, তাদের বিষয়ে বিমানবন্দরগুলোতে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের জন্য আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছি।”

সম্প্রতি নাটোরের সিংড়ার এক যুবক রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন বলে তার পরিবার জানিয়েছে। একই পরিবারের আরেক সদস্য যুদ্ধ থেকে বাঁচতে পরিবার এবং দালালদের কাছে আকুতি জানিয়েছেন।

নিহত যুবকের নাম মো. হুমায়ুন কবির (৩৩)। তিনি সিংড়া উপজেলার হুলহুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার ভগ্নিপতি মো. রহমত আলীও বর্তমানে রাশিয়ায় আটকে রয়েছেন।

এছাড়া, যশোরের জাফর হোসেনও একই ধরনের পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়ার সরদারপাড়ার বাসিন্দা খায়রুল সরদারের ছেলে জাফর হোসেনকে রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে আরও কয়েকজনের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

রাশিয়ায় মানবপাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে সম্প্রতি ঢাকার এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি জানায়, গ্রেপ্তারকৃত তামান্না ‘ড্রিম হোম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানির অংশীদার এবং একটি মানব পাচার চক্রের সদস্য। তিনি ও তার সহযোগীরা মাসে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে অন্তত ১০ জন বাংলাদেশিকে রাশিয়ায় পাচার করেছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি, একটি বাংলাদেশি এজেন্সি রাশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে লোক পাঠাচ্ছে। পরে তাদেরকে রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধে বাধ্য করা হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের কাজে জড়িত রিক্রুটিং ও ট্রাভেল এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে ইতোমধ্যে অনুরোধ জানানো হয়েছে। রাশিয়ায় মানবপাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।”

রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরুর পর ২০২২ সালের এপ্রিলে ঢাকায় রুশ দূতাবাস এক ফেসবুক পোস্টে দাবি করেছিল, রাশিয়ার পক্ষে লড়তে ইচ্ছুক অনেক বাংলাদেশির কাছ থেকে তারা আবেদন পেয়েছে।

ওই পোস্টে বলা হয়েছিল, “আমরা বাংলাদেশি জনগণের এমন মহানুভব আহ্বানকে সাধুবাদ জানাই। তবে রুশ সামরিক বাহিনী নির্ধারিত পরিকল্পনামাফিক কাজ করছে, তাই স্বেচ্ছাসেবীদের প্রয়োজন নেই।”

তবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সে সময় কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

বাংলাদেশ সরকার এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও কঠোর অবস্থান নিতে যাচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, “মানবপাচার প্রতিরোধে আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। যাতে কেউ প্রতারণার শিকার হয়ে বিদেশে গিয়ে বিপদে না পড়ে, সে জন্য বিভিন্ন সংস্থাকে সতর্ক করা হয়েছে।”

এছাড়া, রাশিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফেরাতে কী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, সে বিষয়ে জানতে ইতোমধ্যে মস্কোর বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।

রফিকুল আলম বলেন, “এক জায়গায় গিয়ে আপনি আটকা পড়ে গেলে সেখান থেকে বের হয়ে আসা সহজ নয়। তাই দালালদের প্রলোভনে পা না দেওয়ার জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।”

বাংলাদেশ সরকার আশা করছে, এ ধরনের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে ভবিষ্যতে এ ধরনের বিপদের শিকার হওয়া কমে আসবে।

back to top