ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
ইন্টারনেট বন্ধের ক্ষমতা স্থায়ীভাবে বিলোপ এবং নজরদারি কাঠামোতে বড় ধরনের সংস্কারের প্রস্তাব দিয়ে ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ-২০২৫’ এর খসড়া প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। খসড়ায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ‘ইন্টারনেট সংযোগ কোনো অবস্থাতেই বন্ধ, বিঘিœত বা সীমিত করা যাবে না।’
গত মঙ্গলবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ তাদের ওয়েবসাইটে খসড়া অধ্যাদেশটি প্রকাশ করে জনমতের জন্য উন্মুক্ত করেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি বাংলাদেশের ডিজিটাল অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতার দিকে ‘ঐতিহাসিক নীতিগত পরিবর্তন’।
এনটিএমসি বিলুপ্তির প্রস্তাব
দীর্ঘদিন ধরেই মানবাধিকার লঙ্ঘন, নজরদারি ও গুমের অভিযোগে সমালোচিত ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করার প্রস্তাব এসেছে এ খসড়ায়।
আইন প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, ‘নতুন অধ্যাদেশে নজরদারির পুরনো ধারণাটিই তুলে দেয়া হয়েছে।’
আগের আইনের ৯৭ ধারা ব্যবহার করে বেসামরিক যোগাযোগে নির্বিচারে নজরদারি চালানো হতো বলে অভিযোগ ছিল। খসড়ায় সেই ক্ষমতা সম্পূর্ণ বাতিল করে বলা হয়েছে-
কোনো নিরাপত্তা সংস্থা আদালতের অনুমতি ছাড়া কল, বার্তা বা ইন্টারনেট ট্রাফিক পর্যবেক্ষণ করতে পারবে না।
* অনুমতি ছাড়া নজরদারির শাস্তি থাকবে কঠোর
* রাজনৈতিক বা আদর্শগত কারণে নজরদারি নিষিদ্ধ
‘বৈধ অনুপ্রবেশ’ কঠোর শর্তে
নতুন অধ্যাদেশে ‘বৈধ অনুপ্রবেশ’ ধারণা যুক্ত করা হয়েছে, তবে কঠোর শর্তে:
* নির্দিষ্ট অভিযোগ বা প্রয়োজন ছাড়া অনুমতি দেয়া যাবে না
* আদালত বা বিচারিক কাউন্সিলের অনুমোদন বাধ্যতামূলক
* সীমিত সময়ের জন্য
* স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও প্রমাণযোগ্যতার ভিত্তিতে
সংগৃহীত তথ্য আদালতে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারবে কেবল তখনই, যখন তা বিচারিক অনুমোদন সাপেক্ষে সংগৃহীত হবে। অনুমতি ছাড়া সংগৃহীত গোয়েন্দা তথ্যকে আদালত গ্রহণ করবে না।
যা বলছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা
ভয়েস ফর রিফর্মের সমন্বয়ক ফাহিম মাশরুর মনে করেন, ‘ইন্টারনেট বন্ধে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা অত্যন্ত ইতিবাচক। তবে ‘বৈধ অনুপ্রবেশ’ যেন অপব্যবহার না হয়, সেজন্য প্রতিটি ক্ষেত্রেই আদালতের অনুমতি বাধ্যতামূলক করা দরকার।’
জনমতের জন্য উন্মুক্ত
১০২ ধারাবিশিষ্ট এ খসড়া আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত জনমত গ্রহণ করবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে ডাক বা ই-মেইলের মাধ্যমে মতামত পাঠানো যাবে।
মতামত নেয়ার পর:
* খসড়া বহু-পক্ষীয় বৈঠকে আলোচনা
* আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিং
* মন্ত্রিসভার অনুমোদন
* এরপর চূড়ান্ত প্রকাশ
সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার বরাতে জানা গেছে, এই আইনের লক্ষ্য নাগরিকদের অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগের অধিকার নিশ্চিত করা। রাষ্ট্র এক সময় নজরদারি করতো, এখন স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিতে চায়।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫
ইন্টারনেট বন্ধের ক্ষমতা স্থায়ীভাবে বিলোপ এবং নজরদারি কাঠামোতে বড় ধরনের সংস্কারের প্রস্তাব দিয়ে ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ-২০২৫’ এর খসড়া প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। খসড়ায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ‘ইন্টারনেট সংযোগ কোনো অবস্থাতেই বন্ধ, বিঘিœত বা সীমিত করা যাবে না।’
গত মঙ্গলবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ তাদের ওয়েবসাইটে খসড়া অধ্যাদেশটি প্রকাশ করে জনমতের জন্য উন্মুক্ত করেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি বাংলাদেশের ডিজিটাল অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতার দিকে ‘ঐতিহাসিক নীতিগত পরিবর্তন’।
এনটিএমসি বিলুপ্তির প্রস্তাব
দীর্ঘদিন ধরেই মানবাধিকার লঙ্ঘন, নজরদারি ও গুমের অভিযোগে সমালোচিত ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করার প্রস্তাব এসেছে এ খসড়ায়।
আইন প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, ‘নতুন অধ্যাদেশে নজরদারির পুরনো ধারণাটিই তুলে দেয়া হয়েছে।’
আগের আইনের ৯৭ ধারা ব্যবহার করে বেসামরিক যোগাযোগে নির্বিচারে নজরদারি চালানো হতো বলে অভিযোগ ছিল। খসড়ায় সেই ক্ষমতা সম্পূর্ণ বাতিল করে বলা হয়েছে-
কোনো নিরাপত্তা সংস্থা আদালতের অনুমতি ছাড়া কল, বার্তা বা ইন্টারনেট ট্রাফিক পর্যবেক্ষণ করতে পারবে না।
* অনুমতি ছাড়া নজরদারির শাস্তি থাকবে কঠোর
* রাজনৈতিক বা আদর্শগত কারণে নজরদারি নিষিদ্ধ
‘বৈধ অনুপ্রবেশ’ কঠোর শর্তে
নতুন অধ্যাদেশে ‘বৈধ অনুপ্রবেশ’ ধারণা যুক্ত করা হয়েছে, তবে কঠোর শর্তে:
* নির্দিষ্ট অভিযোগ বা প্রয়োজন ছাড়া অনুমতি দেয়া যাবে না
* আদালত বা বিচারিক কাউন্সিলের অনুমোদন বাধ্যতামূলক
* সীমিত সময়ের জন্য
* স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও প্রমাণযোগ্যতার ভিত্তিতে
সংগৃহীত তথ্য আদালতে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারবে কেবল তখনই, যখন তা বিচারিক অনুমোদন সাপেক্ষে সংগৃহীত হবে। অনুমতি ছাড়া সংগৃহীত গোয়েন্দা তথ্যকে আদালত গ্রহণ করবে না।
যা বলছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা
ভয়েস ফর রিফর্মের সমন্বয়ক ফাহিম মাশরুর মনে করেন, ‘ইন্টারনেট বন্ধে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা অত্যন্ত ইতিবাচক। তবে ‘বৈধ অনুপ্রবেশ’ যেন অপব্যবহার না হয়, সেজন্য প্রতিটি ক্ষেত্রেই আদালতের অনুমতি বাধ্যতামূলক করা দরকার।’
জনমতের জন্য উন্মুক্ত
১০২ ধারাবিশিষ্ট এ খসড়া আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত জনমত গ্রহণ করবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে ডাক বা ই-মেইলের মাধ্যমে মতামত পাঠানো যাবে।
মতামত নেয়ার পর:
* খসড়া বহু-পক্ষীয় বৈঠকে আলোচনা
* আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিং
* মন্ত্রিসভার অনুমোদন
* এরপর চূড়ান্ত প্রকাশ
সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার বরাতে জানা গেছে, এই আইনের লক্ষ্য নাগরিকদের অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগের অধিকার নিশ্চিত করা। রাষ্ট্র এক সময় নজরদারি করতো, এখন স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিতে চায়।