ঢাকার একটি আদালত শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে আনীত একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় মামলাটি বিচারিক আদালতে বদলির আদেশ দিয়েছেন। অভিযোগে তাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর হাকিম ইশরাত জেনিফার জেরিন মামলাটি বিচারের পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির এই আদেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ এর একটি জুম মিটিংয়ে অংশ নিয়ে তারা সরকারকে ‘উৎখাতের’ চেষ্টা করেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. সালাহউদ্দিন জানান, মামলায় ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৬১ জন পলাতক আসামি। তাদের আদালতে হাজিরের জন্য গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার প্রতিবেদন পাওয়ার পর মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়ে বিচারিক আদালতে বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হত্যার অভিযোগে বিভিন্ন থানায় ও আদালতে শেখ হাসিনাসহ তার দলের নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কয়েক ডজন মামলা হয়েছে।
এছাড়া, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই মাসে সংঘাতে মৃত্যুর ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু করেছে। পাশাপাশি শেখ হাসিনার সময়ে গুমের অভিযোগেও একাধিক মামলা ট্রাইব্যুনালে হয়েছে।
এর মধ্যে জুলাই মাসে অভ্যুত্থান দমন প্রচেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে রায় কবে হবে তা ১৩ নভেম্বর জানা যাবে বলে ожи করা হচ্ছে।
বর্তমানে দিল্লিতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে আসামি প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ সরকার ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানালেও ভারত তাতে সাড়া দেয়নি।
শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গত ২৭ মার্চ সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. এনামুল হক আদালতে মামলাটি করেন। তদন্ত শেষে গত ৩০ জুলাই হাসিনাসহ ২৮৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তিনি।
পরে ১৪ আগস্ট অভিযোগপত্র গ্রহণ করে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। গত ১১ সেপ্টেম্বর আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় এবং ১৪ অক্টোবর পলাতক ২৫৬ জনকে আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে, সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিনসহ ২৪ জনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর আগে মামলায় একজন আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল। নতুন ২৪ জনকে নিয়ে মোট গ্রেপ্তার দেখানো আসামির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫ জনে।
গ্রেপ্তার দেখানো অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন মো. ইব্রাহীম খলিল বিপুল, মো. আব্দুস সবুর, মোছা. ছানোয়ারা খাতুন, মেহেদী হাসান আকাশ, এ কে এম আকতারুজ্জামান, কে এম রাশেদ, মোছা. মেরিনা খাতুন মেরি, সুশান্ত ভৌমিক, নিজাম বারী, জাহাঙ্গীর আলম, শেখ আনিচুজ্জামান আনিচ, মো. আকরামুল আলম, মো. নুর উন নবী মন্ডল দুলাল মাস্টার্স, মো. সাইফুল ইসলাম সর্দার, কাজী আবুল কালাম, মোছা. ফেন্সী, কে এম শাহ নেওয়াজ ওরফে শিবলু, রফিকুল ইসলাম, জিন্নাত সুলতানা ঝুমা, মেহেদী হাসান ঈশান ওজনি চন্দ্র সূত্রধর।
মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রাব্বী আলমের নেতৃত্বে ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ এর একটি জুম মিটিংয়ে শেখ হাসিনাসহ কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন। এ সময় শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদের কাছে দেশবিরোধী বক্তব্য দেন এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসকে উৎখাতের নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এই বক্তব্য পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
মামলার অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন খুলনার যুবলীগ নেতা পারভেজ খান ইমন, চট্টগ্রাম ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ প্রধান কবিরুল ইসলাম আকাশ, ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ বরিশাল বিভাগের আইনজীবী কামরুল ইসলাম, সোহানা পারভীন রুনা, হাফিজুর রহমান ইকবাল, আইনজীবী মাহবুবুর রহমান মধু, এলাহী নেওয়াজ মাছুম ও সাজ্জাদুল আনাম।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫
ঢাকার একটি আদালত শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে আনীত একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় মামলাটি বিচারিক আদালতে বদলির আদেশ দিয়েছেন। অভিযোগে তাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর হাকিম ইশরাত জেনিফার জেরিন মামলাটি বিচারের পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির এই আদেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ এর একটি জুম মিটিংয়ে অংশ নিয়ে তারা সরকারকে ‘উৎখাতের’ চেষ্টা করেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. সালাহউদ্দিন জানান, মামলায় ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৬১ জন পলাতক আসামি। তাদের আদালতে হাজিরের জন্য গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার প্রতিবেদন পাওয়ার পর মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়ে বিচারিক আদালতে বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হত্যার অভিযোগে বিভিন্ন থানায় ও আদালতে শেখ হাসিনাসহ তার দলের নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কয়েক ডজন মামলা হয়েছে।
এছাড়া, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই মাসে সংঘাতে মৃত্যুর ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু করেছে। পাশাপাশি শেখ হাসিনার সময়ে গুমের অভিযোগেও একাধিক মামলা ট্রাইব্যুনালে হয়েছে।
এর মধ্যে জুলাই মাসে অভ্যুত্থান দমন প্রচেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে রায় কবে হবে তা ১৩ নভেম্বর জানা যাবে বলে ожи করা হচ্ছে।
বর্তমানে দিল্লিতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে আসামি প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ সরকার ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানালেও ভারত তাতে সাড়া দেয়নি।
শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গত ২৭ মার্চ সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. এনামুল হক আদালতে মামলাটি করেন। তদন্ত শেষে গত ৩০ জুলাই হাসিনাসহ ২৮৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তিনি।
পরে ১৪ আগস্ট অভিযোগপত্র গ্রহণ করে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। গত ১১ সেপ্টেম্বর আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় এবং ১৪ অক্টোবর পলাতক ২৫৬ জনকে আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে, সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিনসহ ২৪ জনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর আগে মামলায় একজন আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল। নতুন ২৪ জনকে নিয়ে মোট গ্রেপ্তার দেখানো আসামির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫ জনে।
গ্রেপ্তার দেখানো অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন মো. ইব্রাহীম খলিল বিপুল, মো. আব্দুস সবুর, মোছা. ছানোয়ারা খাতুন, মেহেদী হাসান আকাশ, এ কে এম আকতারুজ্জামান, কে এম রাশেদ, মোছা. মেরিনা খাতুন মেরি, সুশান্ত ভৌমিক, নিজাম বারী, জাহাঙ্গীর আলম, শেখ আনিচুজ্জামান আনিচ, মো. আকরামুল আলম, মো. নুর উন নবী মন্ডল দুলাল মাস্টার্স, মো. সাইফুল ইসলাম সর্দার, কাজী আবুল কালাম, মোছা. ফেন্সী, কে এম শাহ নেওয়াজ ওরফে শিবলু, রফিকুল ইসলাম, জিন্নাত সুলতানা ঝুমা, মেহেদী হাসান ঈশান ওজনি চন্দ্র সূত্রধর।
মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রাব্বী আলমের নেতৃত্বে ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ এর একটি জুম মিটিংয়ে শেখ হাসিনাসহ কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন। এ সময় শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদের কাছে দেশবিরোধী বক্তব্য দেন এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসকে উৎখাতের নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এই বক্তব্য পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
মামলার অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন খুলনার যুবলীগ নেতা পারভেজ খান ইমন, চট্টগ্রাম ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ প্রধান কবিরুল ইসলাম আকাশ, ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ বরিশাল বিভাগের আইনজীবী কামরুল ইসলাম, সোহানা পারভীন রুনা, হাফিজুর রহমান ইকবাল, আইনজীবী মাহবুবুর রহমান মধু, এলাহী নেওয়াজ মাছুম ও সাজ্জাদুল আনাম।