মঙ্গলবার রাজধানীতে আট দলের সমাবেশে বক্তব্য দেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান
গণভোটের আগে কোনো নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা হলে তা প্রতিহত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জামায়াতসহ তাদের সঙ্গীয় দলের নেতারা। তারা বলেন, গণভোট নিয়ে টালবাহানা করা হলে ‘জনগণ আর অপেক্ষা করবে না’।
যারা জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি দিতে নারাজ, তাদের জন্য ২০২৬ সালে কোনো নির্বাচন নাই: জামায়াতের আমির
গণভোট নিয়ে টালবাহানা করা হলে জনগণ আর অপেক্ষা করবে না: ইসলামী আন্দোলনের আমির
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ঠেকিয়ে আবার ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চাইছে একটি দল: বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির
মঙ্গলবার,(১১ নভেম্বর ২০২৫) জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে সাংবিধানিক আদেশ জারি ও নভেম্বর মাসেই গণভোট আয়োজনসহ পাঁচ দাবিতে রাজধানীর পল্টনে সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা আটটি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম (চরমোনাই পীর)। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমীর শফিকুর রহমান। সমাবেশে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির নেতাকর্মীরা।
সমাবেশ থেকে নেতারা জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন, নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন, নির্বাচনে পিআর (সমানুপাতিক নির্বাচন) পদ্ধতি চালু, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ, আওয়ামী সরকারের জুলুম-নির্যাতন ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার
দাবি জানান।
জামায়াতের আমীর শফিকুর রহমান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। যারা জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি দিতে নারাজ, তাদের জন্য ২০২৬ সালে কোনো নির্বাচন নাই।’ তিনি দাবি করেন, জুলাই সনদে জনগণের ইচ্ছা ও জাতীয় ঐকমত্যের প্রতিফলন ঘটেছে। তাই এই সনদের ওপর গণভোট আয়োজন এখন সময়ের দাবি।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর এই ঐতিহাসিক সমাবেশ রাজনীতিতে নতুন মাইলফলক হয়ে থাকবে। সরকার জাতির আকাক্সক্ষা উপেক্ষা করে সাংবিধানিক সংস্কারকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তি কেবল গণভোটের মাধ্যমেই সম্ভব। অন্যথায় জাতীয় নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে।
ইসলামী আন্দোলনের আমীর মুফতি রেজাউল করিম বলেন, ‘যারা গণভোট নিয়ে টালবাহানা করছেন, তাদের জন্য জনগণ আর অপেক্ষা করবে না। এবার জনগণই রাস্তায় নেমে তাদের জবাব দেবে।’ তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি গণভোটের তারিখ ঘোষণা না করা হয়, তবে আট দল কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
ইসলামী আন্দোলনের আমীর প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এরপর আমরা বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ নিয়ে এমন কর্মসূচি ঘোষণা করবো, আপনি গণভোট নির্বাচনের আগে দিতে বাধ্য হবেন। আমাদের ওই পথে হাঁটাবেন না। আমরাও ওই পথে হাঁটতে চাই না। এই সমাবেশের মাধ্যমে আমরা আপনাদের অনুরোধ করছি।
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘একটি দল জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ঠেকিয়ে দিয়ে বাংলাদেশে আবার ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চাইছে। এই জুলাই সনদকে আমরা কোনো কাগজের সনদ হিসেবে দেখতে চাই না। জুলাই সনদকে আমরা আগামীর বাংলাদেশের রূপরেখা হিসেবে দেখতে চাই।’
একইসঙ্গে কোনোভাবেই দেশে ফ্যাসিবাদ ফিরতে দেয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘পরিষ্কার ঘোষণা করছি, রক্ত দিয়ে যে ফ্যাসিবাদ বিদায় করেছি, প্রয়োজনে আবার রক্তের সাগর প্রবাহিত হবে, তবু বাংলার মাটিতে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে না।’
সমাবেশকে কেন্দ্র করে দুপুর থেকেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে দলীয় পতাকা ও ব্যানার হাতে নেতাকর্মীরা মিছিলসহ পল্টনের দিকে অগ্রসর হন। পল্টন মোড়ের দুই পাশে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়, যেখানে নেতারা পর্যায়ক্রমে বক্তব্য দেন।
স্বেচ্ছাসেবকরা যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও বিকেল নাগাদ পল্টন এলাকা কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। সমাবেশে গণভোটের দাবিতে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করো, গণভোটের তারিখ দাও’ এবং ‘জনতার দাবি মানতে হবে’ স্লোগানে মুখর থাকে পুরো এলাকা।
এই সমাবেশের মাধ্যমে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনসহ ধর্মভিত্তিক দলগুলো নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান আরও স্পষ্ট করেছে। তারা নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনকে জাতীয় ঐকমত্যের বিষয় হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে দলগুলোকে আলোচনার আহ্বান জানানো হলেও কোনো সমঝোতা হয়নি বলে জানা গেছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মঙ্গলবার রাজধানীতে আট দলের সমাবেশে বক্তব্য দেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫
গণভোটের আগে কোনো নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা হলে তা প্রতিহত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জামায়াতসহ তাদের সঙ্গীয় দলের নেতারা। তারা বলেন, গণভোট নিয়ে টালবাহানা করা হলে ‘জনগণ আর অপেক্ষা করবে না’।
যারা জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি দিতে নারাজ, তাদের জন্য ২০২৬ সালে কোনো নির্বাচন নাই: জামায়াতের আমির
গণভোট নিয়ে টালবাহানা করা হলে জনগণ আর অপেক্ষা করবে না: ইসলামী আন্দোলনের আমির
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ঠেকিয়ে আবার ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চাইছে একটি দল: বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির
মঙ্গলবার,(১১ নভেম্বর ২০২৫) জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে সাংবিধানিক আদেশ জারি ও নভেম্বর মাসেই গণভোট আয়োজনসহ পাঁচ দাবিতে রাজধানীর পল্টনে সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা আটটি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম (চরমোনাই পীর)। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমীর শফিকুর রহমান। সমাবেশে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির নেতাকর্মীরা।
সমাবেশ থেকে নেতারা জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন, নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন, নির্বাচনে পিআর (সমানুপাতিক নির্বাচন) পদ্ধতি চালু, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ, আওয়ামী সরকারের জুলুম-নির্যাতন ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার
দাবি জানান।
জামায়াতের আমীর শফিকুর রহমান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। যারা জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি দিতে নারাজ, তাদের জন্য ২০২৬ সালে কোনো নির্বাচন নাই।’ তিনি দাবি করেন, জুলাই সনদে জনগণের ইচ্ছা ও জাতীয় ঐকমত্যের প্রতিফলন ঘটেছে। তাই এই সনদের ওপর গণভোট আয়োজন এখন সময়ের দাবি।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর এই ঐতিহাসিক সমাবেশ রাজনীতিতে নতুন মাইলফলক হয়ে থাকবে। সরকার জাতির আকাক্সক্ষা উপেক্ষা করে সাংবিধানিক সংস্কারকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তি কেবল গণভোটের মাধ্যমেই সম্ভব। অন্যথায় জাতীয় নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে।
ইসলামী আন্দোলনের আমীর মুফতি রেজাউল করিম বলেন, ‘যারা গণভোট নিয়ে টালবাহানা করছেন, তাদের জন্য জনগণ আর অপেক্ষা করবে না। এবার জনগণই রাস্তায় নেমে তাদের জবাব দেবে।’ তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি গণভোটের তারিখ ঘোষণা না করা হয়, তবে আট দল কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
ইসলামী আন্দোলনের আমীর প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এরপর আমরা বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ নিয়ে এমন কর্মসূচি ঘোষণা করবো, আপনি গণভোট নির্বাচনের আগে দিতে বাধ্য হবেন। আমাদের ওই পথে হাঁটাবেন না। আমরাও ওই পথে হাঁটতে চাই না। এই সমাবেশের মাধ্যমে আমরা আপনাদের অনুরোধ করছি।
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘একটি দল জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ঠেকিয়ে দিয়ে বাংলাদেশে আবার ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চাইছে। এই জুলাই সনদকে আমরা কোনো কাগজের সনদ হিসেবে দেখতে চাই না। জুলাই সনদকে আমরা আগামীর বাংলাদেশের রূপরেখা হিসেবে দেখতে চাই।’
একইসঙ্গে কোনোভাবেই দেশে ফ্যাসিবাদ ফিরতে দেয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘পরিষ্কার ঘোষণা করছি, রক্ত দিয়ে যে ফ্যাসিবাদ বিদায় করেছি, প্রয়োজনে আবার রক্তের সাগর প্রবাহিত হবে, তবু বাংলার মাটিতে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে না।’
সমাবেশকে কেন্দ্র করে দুপুর থেকেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে দলীয় পতাকা ও ব্যানার হাতে নেতাকর্মীরা মিছিলসহ পল্টনের দিকে অগ্রসর হন। পল্টন মোড়ের দুই পাশে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়, যেখানে নেতারা পর্যায়ক্রমে বক্তব্য দেন।
স্বেচ্ছাসেবকরা যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও বিকেল নাগাদ পল্টন এলাকা কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। সমাবেশে গণভোটের দাবিতে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করো, গণভোটের তারিখ দাও’ এবং ‘জনতার দাবি মানতে হবে’ স্লোগানে মুখর থাকে পুরো এলাকা।
এই সমাবেশের মাধ্যমে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনসহ ধর্মভিত্তিক দলগুলো নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান আরও স্পষ্ট করেছে। তারা নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনকে জাতীয় ঐকমত্যের বিষয় হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে দলগুলোকে আলোচনার আহ্বান জানানো হলেও কোনো সমঝোতা হয়নি বলে জানা গেছে।