দেশে সম্প্রতি বাসে আগুন দেওয়ার যেসব ঘটনা ঘটেছে তা শেখ হাসিনার ‘নির্দেশে’ হয়েছে বলে অভিযোগ বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা এখন ভারত বসে ‘অডিও বার্তা পাঠিয়ে নাশকতা’ করার ‘নির্দেশনা দিচ্ছেন’। কোনো একটা ‘চোরা রাস্তা’ দিয়ে আওয়ামী লীগ দেশে আসার ‘স্বপ্নে বিভোর’ রয়েছে বলে বলছেন রিজভী।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যলয়ের জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল।
রিজভী অভিযোগ, ‘আওয়ামী লীগের হাতে প্রচুর টাকা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮০০ কোটি টাকা, পদ্মা সেতু, ফ্লাইওভারসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের টাকা তাদের হাতে আছে। সব টাকা আটকানো যায়নি। সেই টাকা খরচ করে তারা নাশকতা করার চেষ্টা করছেন।’
জিয়াউর রহমান এ দেশের মানুষের ‘আত্মপরিচয় নিশ্চিত’ করেছেন দাবী করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাহাত্তরের পর থেকেই আত্মপরিচয়ের সংকট তৈরি করছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি সবাইকে বাঙালি হয়ে যেতে বলেছিলেন। তাহলে প্রশ্ন আসে আমরা কোন দেশের বাঙালি, আমাদের চাকমা, মারমা কীভাবে বাঙালি হবে। এর পরিবর্তে জিয়াউর রহমান আনলেন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ। এর মধ্যে আমার পাহাড়ী, সমতল, নদী সব চলে আসে। এটাকে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে মুছে দিতে চেয়েছিল, কিন্ত তিনি সেটা পারেননি।’
রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বুদ্ধিজীবীরা সমস্ত রাজনৈতিক দলকে বন্ধ করে দিয়ে বাকশাল কায়েম করেছিলো। পরে জিয়াউর রহমানের সময়ে এসে সবাই তার রাজনীতি করতে পারবেন। তার মত প্রকাশ করতে পারবেন — এই স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এটাই ৭ নভেম্বরের কৃতিত্ব ও মহত্ব। আপনি এটাকে কখনো অস্বীকার করতে পারবেন না।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘ভালো কিছু করতে বেশি সময়ের প্রয়োজন হয় না। জিয়াউর রহমান মাত্র সাড়ে তিন বছরে করেছেন। বাংলাদেশ প্রশ্নে তিনি আপোষ করেননি বলেই তাকে জীবন দিতে হয়েছে।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যাল ছাত্রদলের ইতিহাসের স্মৃতিচারণ করে ছাত্রদল সাবেক নেতা রিজভী বলেন, ‘১৯৭৯ সালের মার্চ মাসে হবিবুর রহমান হলের একটি কক্ষে ছাত্রদল গঠন করা হয়। সময়ের পরিক্রমায় এরশাদের আমলে আমরা মাত্র ১২/১৩ জন মিলে ঝটিকা মিছিল দিয়ে সামরিক আইন ভেঙেছি। এর পরেই ছাত্রদল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর ছাত্র সংগঠনে পরিনত হয়। ৮০ সালের রাকসু নির্বাচনে আমরা একটি সিটও পাইনি। তবে ৯০ এ এসে শান্তিপূর্ণ রাজনীতি ও ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে নির্বাচিত হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্র রাজনীতির মূল কাজ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জ্ঞান চর্চার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা। যারা নির্বাচিত প্রতিনিধি হবেন তাদেরই সেই দায়িত্ব থাকবে। তারা সে দায়িত্ব পালন না করলে, শিক্ষাবহির্ভূত কার্যক্রম শুরু হবে।’
চার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, ‘আমরা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালেয় ভিপি-জিএসদের দেখলাম — তাদের নির্বাচিত হওয়ার জন্য যেন বিগত দিনে ছাত্রলীগের খাতায় নাম থাকতে হবে। ছাত্রদল ন্যায় ও গণতন্ত্রের পথে কোনো সময় আপোষ করেনি। তারা প্রকাশ্যে শিক্ষার্থীদের পক্ষে কাজ করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলেন। এই চার নির্বাচনে হয়ত ছাত্রদল পরাজিত হয়েছে। তবে এই পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী। এ সময় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সর্দার জহুরুল হকের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, ইউট্যাবরে রাবি শাখার সভাপতি অধ্যাপক মামুনুর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসনে, জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামরে সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল আলীম, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আমরিুল ইসলাম, জয়িা পরষিদরে সভাপতি অধ্যাপক হাববিুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ফরিদুল ইসলাম ও ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ডাক্তার আওয়াল প্রমুখ।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫
দেশে সম্প্রতি বাসে আগুন দেওয়ার যেসব ঘটনা ঘটেছে তা শেখ হাসিনার ‘নির্দেশে’ হয়েছে বলে অভিযোগ বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা এখন ভারত বসে ‘অডিও বার্তা পাঠিয়ে নাশকতা’ করার ‘নির্দেশনা দিচ্ছেন’। কোনো একটা ‘চোরা রাস্তা’ দিয়ে আওয়ামী লীগ দেশে আসার ‘স্বপ্নে বিভোর’ রয়েছে বলে বলছেন রিজভী।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যলয়ের জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল।
রিজভী অভিযোগ, ‘আওয়ামী লীগের হাতে প্রচুর টাকা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮০০ কোটি টাকা, পদ্মা সেতু, ফ্লাইওভারসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের টাকা তাদের হাতে আছে। সব টাকা আটকানো যায়নি। সেই টাকা খরচ করে তারা নাশকতা করার চেষ্টা করছেন।’
জিয়াউর রহমান এ দেশের মানুষের ‘আত্মপরিচয় নিশ্চিত’ করেছেন দাবী করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাহাত্তরের পর থেকেই আত্মপরিচয়ের সংকট তৈরি করছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি সবাইকে বাঙালি হয়ে যেতে বলেছিলেন। তাহলে প্রশ্ন আসে আমরা কোন দেশের বাঙালি, আমাদের চাকমা, মারমা কীভাবে বাঙালি হবে। এর পরিবর্তে জিয়াউর রহমান আনলেন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ। এর মধ্যে আমার পাহাড়ী, সমতল, নদী সব চলে আসে। এটাকে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে মুছে দিতে চেয়েছিল, কিন্ত তিনি সেটা পারেননি।’
রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বুদ্ধিজীবীরা সমস্ত রাজনৈতিক দলকে বন্ধ করে দিয়ে বাকশাল কায়েম করেছিলো। পরে জিয়াউর রহমানের সময়ে এসে সবাই তার রাজনীতি করতে পারবেন। তার মত প্রকাশ করতে পারবেন — এই স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এটাই ৭ নভেম্বরের কৃতিত্ব ও মহত্ব। আপনি এটাকে কখনো অস্বীকার করতে পারবেন না।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘ভালো কিছু করতে বেশি সময়ের প্রয়োজন হয় না। জিয়াউর রহমান মাত্র সাড়ে তিন বছরে করেছেন। বাংলাদেশ প্রশ্নে তিনি আপোষ করেননি বলেই তাকে জীবন দিতে হয়েছে।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যাল ছাত্রদলের ইতিহাসের স্মৃতিচারণ করে ছাত্রদল সাবেক নেতা রিজভী বলেন, ‘১৯৭৯ সালের মার্চ মাসে হবিবুর রহমান হলের একটি কক্ষে ছাত্রদল গঠন করা হয়। সময়ের পরিক্রমায় এরশাদের আমলে আমরা মাত্র ১২/১৩ জন মিলে ঝটিকা মিছিল দিয়ে সামরিক আইন ভেঙেছি। এর পরেই ছাত্রদল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর ছাত্র সংগঠনে পরিনত হয়। ৮০ সালের রাকসু নির্বাচনে আমরা একটি সিটও পাইনি। তবে ৯০ এ এসে শান্তিপূর্ণ রাজনীতি ও ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে নির্বাচিত হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্র রাজনীতির মূল কাজ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জ্ঞান চর্চার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা। যারা নির্বাচিত প্রতিনিধি হবেন তাদেরই সেই দায়িত্ব থাকবে। তারা সে দায়িত্ব পালন না করলে, শিক্ষাবহির্ভূত কার্যক্রম শুরু হবে।’
চার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, ‘আমরা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালেয় ভিপি-জিএসদের দেখলাম — তাদের নির্বাচিত হওয়ার জন্য যেন বিগত দিনে ছাত্রলীগের খাতায় নাম থাকতে হবে। ছাত্রদল ন্যায় ও গণতন্ত্রের পথে কোনো সময় আপোষ করেনি। তারা প্রকাশ্যে শিক্ষার্থীদের পক্ষে কাজ করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলেন। এই চার নির্বাচনে হয়ত ছাত্রদল পরাজিত হয়েছে। তবে এই পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী। এ সময় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সর্দার জহুরুল হকের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, ইউট্যাবরে রাবি শাখার সভাপতি অধ্যাপক মামুনুর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসনে, জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামরে সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল আলীম, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আমরিুল ইসলাম, জয়িা পরষিদরে সভাপতি অধ্যাপক হাববিুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ফরিদুল ইসলাম ও ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ডাক্তার আওয়াল প্রমুখ।