কৃষিঋণ বিতরণে অনিয়ম বন্ধে ব্যবস্থা নিন

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মোহনপুর ব্লকের কৃষি দপ্তরে কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ব্যাংক থেকে ঋণ পাইয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন কৃষকদের। তিনি ১ লাখ টাকা ঋণ নিলে ৫ হাজার আর ২ লাখ নিলে ১০ হাজার টাকা জামানত নেন। এই হিসাবে সাতগাঁও, তীরচর, বাতাঘাসী গ্রামের ৪০ জন কৃষকের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা নিয়েছেন। সাত দিনের কথা বলে ছয় মাসেও আর টাকা দেননি। কৃষকরা টাকা চাইতে গেলে তিনি টালবাহানা করছেন এবং হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। কিছুদিন ধরে তার কোনো খোঁজও পাওয়া যাচ্ছে না। ভুক্তভোগী কৃষকরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ধরনা দিয়েও সুরাহা পাননি।

কৃষকরা ফসল উৎপাদনের মৌসুমে অনেক সময় টাকা জোগাড় করতে পারেন না। তখন যদি তাদের জন্য স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে তাদের ফসল ফলানোর কাজে আর ব্যাঘাত ঘটে না। অনেক সময় ক্ষুদ্র প্রান্তিক ও বর্গাচাষিরা ধান, শাকসবজি, ফল ও ফুল চাষের জন্য শুধু ফসল বন্ধক রেখে জামানতবিহীন সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। আর ঋণ তারা ব্যাংক থেকে পান। যে কারণে কৃষিঋণ পেতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন কৃষকরা।

কৃষিঋণ পেতে যদি কৃষককে ঘুষ দিতে হয়, একটা অংশ যদি কর্মকর্তাদের পেটে চলে যায় তাহলে কৃষকরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ঋণের টাকা নিয়ে কৃষক চাষাবাদ করবেন। তারপর ফসল ঘরে উঠলে সেই টাকা সুদে-আসলে ফেরত দিতে হবে। ঋণ হিসেবে কৃষকরা যে টাকা পাওয়ার কথা, সেটা যদি তারা না পান তাহলে তো তাদের ফসল উৎপাদন কমে যাবে। ঋণ পরিশোধের সক্ষমতাও ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।

ঋণ দেয়ার নামে ‘জামানত’ নেয়ার ফাঁদ থেকে চান্দিনা উপজেলার প্রান্তিক কৃষকদের উদ্ধার করতে হবে। উপজেলার মোহনপুর ব্লকের কৃষি দপ্তরে কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাংক থেকে ঋণ পাইয়ে দেয়ার নামে যে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে তা আমলে নেয়া হবে এটা আমরা আশা করব। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখে অভিযোগের সত্যতা মিললে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। ‘জামানত’র নামে যে ৪০ জন কৃষকের কাছ থেকে পাঁচ হাজার ও ১০ করে টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে, তা কৃষকদের ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

শুধু চান্দিনায় নয়, অনেক এলাকায় কৃষকদের ব্যাংক ঋণ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে একশ্রেণীর অসাধু কৃষি ও ব্যাংক কর্মকর্তা কৃষকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন। ঋণ দেয়ার নামে কৃষকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার মতো অনিয়ম ও দুর্নীতি দূর করতে কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নিয়েছে- এটা আমরা দেখতে চাই।

‘সম্পাদকীয়’ : আরও খবর

» গোবিন্দগঞ্জে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি দখলের অভিযোগ আমলে নিন

» আত্রাই নদীর বালু লুট বন্ধ করুন

» ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে মানুষ হত্যা: কঠোর ব্যবস্থা নিন

» অবৈধ ইটভাটা: প্রশাসনের দুর্বলতা ও পরিবেশের সংকট

» ফসলি জমি রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নিন

» শেষ না হওয়া সেতু, শেষ না হওয়া ভোগান্তি

» সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে হামলা: আদি ও অকৃত্রিম ফ্যাসিবাদের জঘন্য রূপ

» পাহাড় কেটে কেন পানের বরজ?

» মতপ্রকাশের জন্য গ্রেপ্তার: গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়

» সাহাগোলা রেলওয়ে স্টেশনে জনবল সংকট দূর করুন

» চাঁদপুর সেচ প্রকল্প রক্ষায় ব্যবস্থা নিন

সম্প্রতি