দেশে কুষ্ঠ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত আছে। গত কয়েক দশকে এই রোগের সংক্রমণ হ্রাস পেয়েছে। তবে ২০২৪ সালে নতুন করে ৩,৫১৯ জন রোগী শনাক্ত হওয়ার ঘটনা উদ্বেগজনক।
কুষ্ঠ রোগের অন্যতম বড় বাধা হলো এই রোগ নিয়ে প্রচলিত কুসংস্কার। একবিংশ শতাব্দীতেও অনেকের মধ্যে এই ভুল ধারণা আছে যে, এটি পাপ কার্যের ফল। ফলে কুষ্ঠ রোগীরা সামাজিক বর্জন এবং বৈষম্যের শিকার হন। রোগীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন এবং অনেক সময় প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা নিতে পিছপা হন। এ পরিস্থিতি রোগ নিরাময়ে বড় অন্তরায়।
কুষ্ঠ রোগ নিরাময়ে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মহাখালী, নীলফামারী এবং সিলেটে তিনটি সরকারি হাসপাতাল রয়েছে, যেখানে কুষ্ঠ রোগীদের জন্য ১১০টি শয্যা বরাদ্দ রয়েছে। এছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে নীলফামারীতে ডেনিশ বাংলাদেশ লেপ্রোসি মিশন পরিচালিত ১০০ শয্যার একটি হাসপাতাল কার্যক্রম চালাচ্ছে।
তবে, এই সংস্থান যথেষ্ট নয়। জনবল সংকট এবং রোগ শনাক্তকরণের সীমাবদ্ধতা কুষ্ঠ নির্মূলের পথে বড় অন্তরায়। ২০২৪ সালে উত্তরবঙ্গের সাতটিসহ মোট ১২টি জেলা ঝুঁকিপূর্ণ প্রাদুর্ভাব এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এসব এলাকায় বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন।
জাতীয় কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির অধীনে বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে কুষ্ঠ রোগী এবং এ রোগে প্রতিবন্ধিতাকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এটি অর্জনের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। এজন্য তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। চিকিৎসা সরঞ্জাম ও চিকিৎসার সুযোগ বাড়াতে হবে। বিনামূল্যে ওষুধ, বিশেষ জুতা এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ বাড়াতে হবে।
সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে কুষ্ঠরোগ নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণা দূর করতে হবে। উত্তরবঙ্গসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বিশেষ কর্মসূচি নিতে হবে।
কুষ্ঠ রোগ নির্মূল একটি দীর্ঘমেয়াদি লড়াই। এটি শুধু একটি স্বাস্থ্যগত সমস্যা নয়, বরং একটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ২০৩০ সালের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে বলে আমরা আশা করতে চাই। তবে এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে জনগণের অংশগ্রহণ, সচেতনতা এবং আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ নিশ্চিত করাই হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একতাবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা একটি কুষ্ঠমুক্ত সমাজ গড়তে সক্ষম হব।
বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫
দেশে কুষ্ঠ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত আছে। গত কয়েক দশকে এই রোগের সংক্রমণ হ্রাস পেয়েছে। তবে ২০২৪ সালে নতুন করে ৩,৫১৯ জন রোগী শনাক্ত হওয়ার ঘটনা উদ্বেগজনক।
কুষ্ঠ রোগের অন্যতম বড় বাধা হলো এই রোগ নিয়ে প্রচলিত কুসংস্কার। একবিংশ শতাব্দীতেও অনেকের মধ্যে এই ভুল ধারণা আছে যে, এটি পাপ কার্যের ফল। ফলে কুষ্ঠ রোগীরা সামাজিক বর্জন এবং বৈষম্যের শিকার হন। রোগীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন এবং অনেক সময় প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা নিতে পিছপা হন। এ পরিস্থিতি রোগ নিরাময়ে বড় অন্তরায়।
কুষ্ঠ রোগ নিরাময়ে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মহাখালী, নীলফামারী এবং সিলেটে তিনটি সরকারি হাসপাতাল রয়েছে, যেখানে কুষ্ঠ রোগীদের জন্য ১১০টি শয্যা বরাদ্দ রয়েছে। এছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে নীলফামারীতে ডেনিশ বাংলাদেশ লেপ্রোসি মিশন পরিচালিত ১০০ শয্যার একটি হাসপাতাল কার্যক্রম চালাচ্ছে।
তবে, এই সংস্থান যথেষ্ট নয়। জনবল সংকট এবং রোগ শনাক্তকরণের সীমাবদ্ধতা কুষ্ঠ নির্মূলের পথে বড় অন্তরায়। ২০২৪ সালে উত্তরবঙ্গের সাতটিসহ মোট ১২টি জেলা ঝুঁকিপূর্ণ প্রাদুর্ভাব এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এসব এলাকায় বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন।
জাতীয় কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির অধীনে বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে কুষ্ঠ রোগী এবং এ রোগে প্রতিবন্ধিতাকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এটি অর্জনের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। এজন্য তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। চিকিৎসা সরঞ্জাম ও চিকিৎসার সুযোগ বাড়াতে হবে। বিনামূল্যে ওষুধ, বিশেষ জুতা এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ বাড়াতে হবে।
সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে কুষ্ঠরোগ নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণা দূর করতে হবে। উত্তরবঙ্গসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বিশেষ কর্মসূচি নিতে হবে।
কুষ্ঠ রোগ নির্মূল একটি দীর্ঘমেয়াদি লড়াই। এটি শুধু একটি স্বাস্থ্যগত সমস্যা নয়, বরং একটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ২০৩০ সালের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে বলে আমরা আশা করতে চাই। তবে এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে জনগণের অংশগ্রহণ, সচেতনতা এবং আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ নিশ্চিত করাই হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একতাবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা একটি কুষ্ঠমুক্ত সমাজ গড়তে সক্ষম হব।