alt

সম্পাদকীয়

জলমহাল দখল : জেলেদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

খুলনার ডুমুরিয়ার উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ মাছ চাষ, মাছ ধরা ও মাছের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তবে জলমহল ও নদী-খালগুলোর ওপর কতিপয় অমৎস্যজীবী প্রভাবশালীর একচেটিয়া দখলের ফলে জেলে পরিবারগুলো ক্রমশ অনিশ্চয়তার মুখে পড়ছে।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, উপজেলায় ১৩৬টি নদী-খাল সরকারি জলমহালের আওতাধীন। জলমহাল নীতিমালা অনুসারে, এসব জলাশয়ে স্থায়ীভাবে মাছ চাষ নিষিদ্ধ এবং নৌ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। তদুপরি দ্বিতীয় পক্ষকে ইজারা দেওয়ারও বিধিনিষেধ রয়েছে; কিন্তু বাস্তবে, স্থানীয় প্রভাবশালীরা ইজারা নিয়ে সহযোগী ইজারাদারদের মাধ্যমে মাছ চাষ চালিয়ে যাচ্ছেন। অধিক মুনাফার আশায় জলাশয়গুলোতে আড়াআড়ি বাঁধ ও নেট-পাটা বসিয়ে জলাশয়গুলোকে খ-িত করে মাছ চাষ করা হচ্ছে, যা স্থানীয় বাস্তুসংস্থান ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে।

এই দখলদারির কারণে নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে এবং পানি নিষ্কাশনের সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে, যার ফলে ঘরবাড়ি, আবাদি জমি, সবজিখেত ও মৎস্য খামার পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে।

ডুমুরিয়ার জেলে সম্প্রদায়ের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন যে, এখন আর নদী-খাল তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া দেশীয় মাছের প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তাদের পৈতৃক পেশা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে, ফলে তারা বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। তারা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন, নদী-খাল ইজারা না দিয়ে উন্মুক্ত রাখার জন্য।

নিয়ম মেনে ইজারা নেওয়া ব্যক্তিরাও সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। ২০২৪ সালে ভূমি অফিস মাত্র ১৫টি খাল মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির কাছে ইজারা দিয়েছে, যা ২০২৫ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে; কিন্তু ইজারা নেওয়া অনেকেই এখনও তাদের জলাশয়ের দখল পাননি। তারা দখল নিতে গিয়ে প্রভাবশালীদের প্রতিরোধের সম্মুখীন হচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত এ সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। সরকারি নীতিমালার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে প্রকৃত মৎস্যজীবীরা তাদের অধিকার ফিরে পান। দখলদারদের হাত থেকে জলমহাল মুক্ত করতে হলে প্রশাসনিক কঠোরতা ও আইনের কার্যকর প্রয়োগ দরকার। পাশাপাশি, জলমহালগুলো উন্মুক্ত রাখার বিষয়ে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

ইকোপার্কের করুণ দশা : দায় কার

হাতি শাবকের মৃত্যু ও সাফারি পার্কের দায়ভার

বায়ুদূষণ রোধে চাই টেকসই উদ্যোগ

মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন

চালের দামে অস্বস্তি : সরকারি তথ্য ও বাজারের বাস্তবতার ফারাক

অতিদারিদ্র্যের আশঙ্কা : সমাধান কোথায়?

ডিমলা উপজেলা হাসপাতালের অনিয়ম

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের অপেক্ষা কবে ফুরাবে

হাইল হাওরের অস্তিত্ব সংকট

সমানাধিকারে আপত্তি কেন?

লেমুর চুরি : সাফারি পার্কের নিরাপত্তা সংকট

একটি হাসাহাসির ঘটনা, একটি হত্যাকাণ্ড : সমাজের সহিষ্ণুতার অবক্ষয়

চাই সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

মানুষ-হাতির সংঘাত : সমাধানের পথ খুঁজতে হবে

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সংকট দূর করুন

ফসলি জমি রক্ষায় কঠোর হোন

নিষ্ঠুরতার শিকার হাতি

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও নাগরিক অধিকার

হালদায় অবৈধ মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে

মশার উপদ্রব : বর্ষার আগেই সাবধান হতে হবে

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা : মানবতার প্রতি এক অব্যাহত আঘাত

অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদে প্রাণহানি : দায় কার?

নদীর বাঁধ ভাঙার দুর্ভোগ : টেকসই সমাধানের জরুরি প্রয়োজন

মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা সংকট

সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা : কঠোর নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপ জরুরি

সড়ক দুর্ঘটনা নাকি অবহেলার পরিণতি

ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ ও আমাদের প্রস্তুতি

বার্ড ফ্লু : আতঙ্ক নয়, চাই সতর্কতা

জাটকা রক্ষার প্রতিশ্রুতি কি শুধুই কাগজে-কলমে?

ভেজাল কীটনাশক বন্ধে ব্যবস্থা নিন

অতিরিক্ত ভাড়া : যাত্রীদের দুর্ভোগ আর কতকাল?

করতোয়া নদীতে রাবার ড্যাম স্থাপনের দাবি

tab

সম্পাদকীয়

জলমহাল দখল : জেলেদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

খুলনার ডুমুরিয়ার উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ মাছ চাষ, মাছ ধরা ও মাছের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তবে জলমহল ও নদী-খালগুলোর ওপর কতিপয় অমৎস্যজীবী প্রভাবশালীর একচেটিয়া দখলের ফলে জেলে পরিবারগুলো ক্রমশ অনিশ্চয়তার মুখে পড়ছে।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, উপজেলায় ১৩৬টি নদী-খাল সরকারি জলমহালের আওতাধীন। জলমহাল নীতিমালা অনুসারে, এসব জলাশয়ে স্থায়ীভাবে মাছ চাষ নিষিদ্ধ এবং নৌ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। তদুপরি দ্বিতীয় পক্ষকে ইজারা দেওয়ারও বিধিনিষেধ রয়েছে; কিন্তু বাস্তবে, স্থানীয় প্রভাবশালীরা ইজারা নিয়ে সহযোগী ইজারাদারদের মাধ্যমে মাছ চাষ চালিয়ে যাচ্ছেন। অধিক মুনাফার আশায় জলাশয়গুলোতে আড়াআড়ি বাঁধ ও নেট-পাটা বসিয়ে জলাশয়গুলোকে খ-িত করে মাছ চাষ করা হচ্ছে, যা স্থানীয় বাস্তুসংস্থান ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে।

এই দখলদারির কারণে নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে এবং পানি নিষ্কাশনের সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে, যার ফলে ঘরবাড়ি, আবাদি জমি, সবজিখেত ও মৎস্য খামার পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে।

ডুমুরিয়ার জেলে সম্প্রদায়ের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন যে, এখন আর নদী-খাল তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া দেশীয় মাছের প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তাদের পৈতৃক পেশা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে, ফলে তারা বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। তারা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন, নদী-খাল ইজারা না দিয়ে উন্মুক্ত রাখার জন্য।

নিয়ম মেনে ইজারা নেওয়া ব্যক্তিরাও সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। ২০২৪ সালে ভূমি অফিস মাত্র ১৫টি খাল মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির কাছে ইজারা দিয়েছে, যা ২০২৫ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে; কিন্তু ইজারা নেওয়া অনেকেই এখনও তাদের জলাশয়ের দখল পাননি। তারা দখল নিতে গিয়ে প্রভাবশালীদের প্রতিরোধের সম্মুখীন হচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত এ সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। সরকারি নীতিমালার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে প্রকৃত মৎস্যজীবীরা তাদের অধিকার ফিরে পান। দখলদারদের হাত থেকে জলমহাল মুক্ত করতে হলে প্রশাসনিক কঠোরতা ও আইনের কার্যকর প্রয়োগ দরকার। পাশাপাশি, জলমহালগুলো উন্মুক্ত রাখার বিষয়ে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।

back to top