alt

সম্পাদকীয়

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাঁকড়া শিকার : সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে

: মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

প্রতি বছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসকে কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম হিসেবে চিহ্নিত করে সরকার এই সময়ের জন্য সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য কাঁকড়ার প্রাকৃতিক বংশবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, যাতে এই প্রজাতির টিকে থাকা সম্ভব হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, বাজারে কাঁকড়ার চাহিদা থাকায় কিছু অসাধু শিকারি এবং ব্যবসায়ী এই নিষেধাজ্ঞা মানছে না। তারা নানা কৌশলে নিষিদ্ধ মৌসুমেও কাঁকড়া শিকার অব্যাহত রেখেছে।

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনের ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশ অংশের মধ্যে ৩১.১৫ শতাংশ জলভাগ। এই জলভাগে ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি এবং ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া রয়েছে। অথচ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাঁকড়া শিকার চলতে থাকলে এই জীববৈচিত্র্য চরম হুমকির মুখে পড়বে। প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা কাঁকড়া ধরা হলে প্রজাতিটির বংশবিস্তার বাধাগ্রস্ত হবে এবং আগামী দিনে এর ঘাটতি দেখা দিতে পারে। শুধু তাই নয়, খাদ্যশৃঙ্খলে কাঁকড়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে, যা ব্যাহত হলে সামগ্রিক ইকোসিস্টেমে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।

কাঁকড়া ব্যবসায় অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী ও দাদনদারদের প্রত্যক্ষ মদদে শিকারিরা বন বিভাগকে ফাঁকি দিয়ে কাঁকড়া আহরণ অব্যাহত রেখেছে। এমনকি অভিযোগ রয়েছে যে, কিছু অসাধু বনরক্ষী ও কর্মকর্তা ঘুষ নিয়ে শিকারিদের এই অবৈধ কাজে সহযোগিতা করছে। মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে কিছু কাঁকড়া ধরা পড়লেও মূলত তথ্য-প্রমাণের অভাবে অপরাধীরা সহজেই জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারও একই কাজে জড়িয়ে পড়ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে একসময় কাঁকড়ার স্বাভাবিক উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে ব্যাহত হবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারেও আমাদের রপ্তানি সক্ষমতা হ্রাস পাবে।

এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বন বিভাগকে আরও কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। সুন্দরবনে কাঁকড়া শিকার বন্ধে কঠোর নজরদারি চালাতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বন বিভাগের সমন্বিত অভিযানের মাধ্যমে দাদন ব্যবসায়ী ও অসাধু কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। স্থানীয় জেলেদের বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা করাও জরুরি।

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

ইকোপার্কের করুণ দশা : দায় কার

হাতি শাবকের মৃত্যু ও সাফারি পার্কের দায়ভার

বায়ুদূষণ রোধে চাই টেকসই উদ্যোগ

মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন

চালের দামে অস্বস্তি : সরকারি তথ্য ও বাজারের বাস্তবতার ফারাক

অতিদারিদ্র্যের আশঙ্কা : সমাধান কোথায়?

ডিমলা উপজেলা হাসপাতালের অনিয়ম

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের অপেক্ষা কবে ফুরাবে

হাইল হাওরের অস্তিত্ব সংকট

সমানাধিকারে আপত্তি কেন?

লেমুর চুরি : সাফারি পার্কের নিরাপত্তা সংকট

একটি হাসাহাসির ঘটনা, একটি হত্যাকাণ্ড : সমাজের সহিষ্ণুতার অবক্ষয়

চাই সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

মানুষ-হাতির সংঘাত : সমাধানের পথ খুঁজতে হবে

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সংকট দূর করুন

ফসলি জমি রক্ষায় কঠোর হোন

নিষ্ঠুরতার শিকার হাতি

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও নাগরিক অধিকার

হালদায় অবৈধ মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে

মশার উপদ্রব : বর্ষার আগেই সাবধান হতে হবে

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা : মানবতার প্রতি এক অব্যাহত আঘাত

অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদে প্রাণহানি : দায় কার?

নদীর বাঁধ ভাঙার দুর্ভোগ : টেকসই সমাধানের জরুরি প্রয়োজন

মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা সংকট

সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা : কঠোর নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপ জরুরি

সড়ক দুর্ঘটনা নাকি অবহেলার পরিণতি

ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ ও আমাদের প্রস্তুতি

বার্ড ফ্লু : আতঙ্ক নয়, চাই সতর্কতা

জাটকা রক্ষার প্রতিশ্রুতি কি শুধুই কাগজে-কলমে?

ভেজাল কীটনাশক বন্ধে ব্যবস্থা নিন

অতিরিক্ত ভাড়া : যাত্রীদের দুর্ভোগ আর কতকাল?

করতোয়া নদীতে রাবার ড্যাম স্থাপনের দাবি

tab

সম্পাদকীয়

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাঁকড়া শিকার : সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে

মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

প্রতি বছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসকে কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম হিসেবে চিহ্নিত করে সরকার এই সময়ের জন্য সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য কাঁকড়ার প্রাকৃতিক বংশবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, যাতে এই প্রজাতির টিকে থাকা সম্ভব হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, বাজারে কাঁকড়ার চাহিদা থাকায় কিছু অসাধু শিকারি এবং ব্যবসায়ী এই নিষেধাজ্ঞা মানছে না। তারা নানা কৌশলে নিষিদ্ধ মৌসুমেও কাঁকড়া শিকার অব্যাহত রেখেছে।

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনের ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশ অংশের মধ্যে ৩১.১৫ শতাংশ জলভাগ। এই জলভাগে ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি এবং ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া রয়েছে। অথচ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাঁকড়া শিকার চলতে থাকলে এই জীববৈচিত্র্য চরম হুমকির মুখে পড়বে। প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা কাঁকড়া ধরা হলে প্রজাতিটির বংশবিস্তার বাধাগ্রস্ত হবে এবং আগামী দিনে এর ঘাটতি দেখা দিতে পারে। শুধু তাই নয়, খাদ্যশৃঙ্খলে কাঁকড়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে, যা ব্যাহত হলে সামগ্রিক ইকোসিস্টেমে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।

কাঁকড়া ব্যবসায় অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী ও দাদনদারদের প্রত্যক্ষ মদদে শিকারিরা বন বিভাগকে ফাঁকি দিয়ে কাঁকড়া আহরণ অব্যাহত রেখেছে। এমনকি অভিযোগ রয়েছে যে, কিছু অসাধু বনরক্ষী ও কর্মকর্তা ঘুষ নিয়ে শিকারিদের এই অবৈধ কাজে সহযোগিতা করছে। মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে কিছু কাঁকড়া ধরা পড়লেও মূলত তথ্য-প্রমাণের অভাবে অপরাধীরা সহজেই জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারও একই কাজে জড়িয়ে পড়ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে একসময় কাঁকড়ার স্বাভাবিক উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে ব্যাহত হবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারেও আমাদের রপ্তানি সক্ষমতা হ্রাস পাবে।

এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বন বিভাগকে আরও কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। সুন্দরবনে কাঁকড়া শিকার বন্ধে কঠোর নজরদারি চালাতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বন বিভাগের সমন্বিত অভিযানের মাধ্যমে দাদন ব্যবসায়ী ও অসাধু কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। স্থানীয় জেলেদের বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা করাও জরুরি।

back to top