alt

সম্পাদকীয়

শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই সংকট : ব্যর্থতার দায় কার?

: বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার পর এক মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। এখনও ১৮ কোটি পাঠ্যবই ছাপা বাকি। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ছাপাখানাগুলোকে অন্যান্য প্রেসের মাধ্যমে কাজ শেষ করার সুযোগ দিচ্ছে, যা আগের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই দেরির পেছনে একাধিক কারণ থাকলেও মূল সমস্যা ছাপাখানার সীমিত সক্ষমতা, কাগজ ও বাঁধাইকর্মীর সংকট, এবং দরপত্রের শর্ত বাস্তবায়নের ব্যর্থতা।

এনসিটিবি দাবি করেছিল যে ছাপাখানাগুলো প্রতিদিন এক কোটি ৪২ লাখ বই ছাপাতে পারবে, কিন্তু বাস্তবে ছাপা হচ্ছে মাত্র ৪০ লাখ। কেন এই বিশাল পার্থক্য? প্রকাশকরা বলছেন, কাগজ ও বাইন্ডিং সংকট, ব্যাংক ঋণের জটিলতা এবং নোট-গাইড প্রকাশকদের উচ্চ মজুরিতে কর্মী নেয়ার কারণেই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, যদি ছাপাখানার সক্ষমতা সম্পর্কে ভুল তথ্য দেয়া হয়, তবে দরপত্র চূড়ান্ত করার সময় এসব বিবেচনায় নেয়া হলো না কেন?

শিক্ষার্থীরা বছরের শুরুতে পাঠ্যবই পায়নি। এই সংকট প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উভয় পর্যায়েই ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর বই ছাপার অগ্রগতি মাত্র ৩৪ শতাংশ। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বই ছাপার কাজ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সম্পন্ন করা হলেও অন্যান্য শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা এখনও দুশ্চিন্তায় রয়েছে।

শিক্ষার্থীরা অনলাইনে বই পড়তে পারছে বলে এনসিটিবি দাবি করলেও, প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। অনেকেরই ডিজিটাল ডিভাইস নেই, এবং প্রিন্ট করা কপি নেয়ার খরচও অনেক বেশি। ফলে, এই সমাধান কার্যকর নয়।

প্রতি বছর পাঠ্যবই ছাপার কাজ শুরু হয় জুলাই-আগস্ট মাসে, কিন্তু এবার তা শুরু হয়েছে ডিসেম্বর মাসে। এই দেরির জন্য দায়ভার কার? এনসিটিবির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কাগজের সংকট, ব্যাংক ঋণের বিলম্ব এবং বাইন্ডিং সমস্যার কথা, কিন্তু এগুলো যে আগে থেকে পূর্বানুমান করা সম্ভব ছিল না, এমন নয়।

প্রশ্ন হলো, এনসিটিবি কেন এমন ছাপাখানাগুলোকে কাজ দিয়েছে যাদের প্রকৃত সক্ষমতা নেই? দরপত্র চূড়ান্ত করার সময় কী ধরনের যাচাই-বাছাই করা হয়েছিল? যদি ছাপাখানাগুলোর সক্ষমতা তিন ভাগের এক ভাগ হয়, তবে কেন তাদের এত বেশি কাজ দেয়া হলো?

যথাসময়ে বই ছাপতে না পারা প্রশাসনিক ব্যর্থতাকেই তুলে ধরে। এই ব্যর্থতার কারণে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়েও একধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। শিক্ষাব্যবস্থা একটি জাতির উন্নতির অন্যতম প্রধান ভিত্তি। পাঠ্যবই বিতরণে এই ধরনের অব্যবস্থাপনা ভবিষ্যতে রোধ করতে হলে বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা করতে হবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। নাহলে এই সংকট প্রতি বছরই পুনরাবৃত্তি হবে, আর ক্ষতিগ্রস্ত হবে আগামী প্রজন্ম।

অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

মাদারীপুর পৌরসভায় ডাম্পিং স্টেশন কবে হবে

বায়ুদূষণ : আর উপেক্ষা করা যায় না

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাঁকড়া শিকার : সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে

যৌতুকের বলি : বৈশাখীর নির্মম পরিণতি ও আমাদের করণীয়

কেশবপুরে ওএমএস কর্মসূচির সংকট

শিক্ষক সংকট : প্রাথমিক শিক্ষার চ্যালেঞ্জ

নদীভাঙনের শিকার শিক্ষার্থীরা কোথায় যাবে?

আবারও অপহরণের ঘটনা : সমাধান কী

সারের কালোবাজারি বন্ধ করতে হবে

ভোটার তালিকা হালনাগাদ : কিছু প্রশ্ন

চায়নাদুয়ারী ও কারেন্টজাল ব্যবহার বন্ধে ব্যবস্থা নিন

পাহাড়-টিলা রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ জরুরি

জলমহাল দখল : জেলেদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

সাংবাদিকদের ওপর হামলা : মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য হুমকি

শেরপুরের আলু চাষিদের সংকট

রেলের জমি রক্ষায় ব্যবস্থা নিন

চাঁদাবাজি থেকে বাজার ও সমাজের মুক্তি কোন পথে

বারোমাসি খালের দুর্দশা

এখনো কেন বিচারবহির্ভূত হত্যা

বুড়িগঙ্গা বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন

হরিপুর-চিলমারি তিস্তা সেতুর পাশে বালু তোলা বন্ধ করুন

ইটভাটা হোক পরিবেশবান্ধব

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যানসার চিকিৎসার সংকট : দ্রুত পদক্ষেপ জরুরি

পানি সংকটে হাইমচরের কৃষকদের হতাশা

ঢাবিতে আবাসন সমস্যা, অধিক ভোগান্তিতে নারী শিক্ষার্থীরা

কুষ্ঠ রোগ : চ্যালেঞ্জ ও করণীয়

জনবল সংকটে অচল আইসিইউ: জনস্বাস্থ্যের করুণ চিত্র

ঢাবি ও অধিভুক্ত সাত কলেজ : সমঝোতার পথেই সমাধান

নওগাঁয় মেনিনজাইটিস টিকা সংকট নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নিন

হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে দেরি কেন

জলবায়ু সংকট : শিশুদের শিক্ষা জীবনের জন্য বড় হুমকি

সয়াবিন তেলের সংকট : বাজার ব্যবস্থার দুর্বলতার প্রতিচ্ছবি

ভালুকার খীরু নদীর দূষণ বন্ধ করুন

নির্ধারিত মূল্যে ধান সংগ্রহ করা যাচ্ছে না কেন

লালপুরে ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা

tab

সম্পাদকীয়

শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই সংকট : ব্যর্থতার দায় কার?

বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার পর এক মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। এখনও ১৮ কোটি পাঠ্যবই ছাপা বাকি। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ছাপাখানাগুলোকে অন্যান্য প্রেসের মাধ্যমে কাজ শেষ করার সুযোগ দিচ্ছে, যা আগের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই দেরির পেছনে একাধিক কারণ থাকলেও মূল সমস্যা ছাপাখানার সীমিত সক্ষমতা, কাগজ ও বাঁধাইকর্মীর সংকট, এবং দরপত্রের শর্ত বাস্তবায়নের ব্যর্থতা।

এনসিটিবি দাবি করেছিল যে ছাপাখানাগুলো প্রতিদিন এক কোটি ৪২ লাখ বই ছাপাতে পারবে, কিন্তু বাস্তবে ছাপা হচ্ছে মাত্র ৪০ লাখ। কেন এই বিশাল পার্থক্য? প্রকাশকরা বলছেন, কাগজ ও বাইন্ডিং সংকট, ব্যাংক ঋণের জটিলতা এবং নোট-গাইড প্রকাশকদের উচ্চ মজুরিতে কর্মী নেয়ার কারণেই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, যদি ছাপাখানার সক্ষমতা সম্পর্কে ভুল তথ্য দেয়া হয়, তবে দরপত্র চূড়ান্ত করার সময় এসব বিবেচনায় নেয়া হলো না কেন?

শিক্ষার্থীরা বছরের শুরুতে পাঠ্যবই পায়নি। এই সংকট প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উভয় পর্যায়েই ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর বই ছাপার অগ্রগতি মাত্র ৩৪ শতাংশ। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বই ছাপার কাজ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সম্পন্ন করা হলেও অন্যান্য শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা এখনও দুশ্চিন্তায় রয়েছে।

শিক্ষার্থীরা অনলাইনে বই পড়তে পারছে বলে এনসিটিবি দাবি করলেও, প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। অনেকেরই ডিজিটাল ডিভাইস নেই, এবং প্রিন্ট করা কপি নেয়ার খরচও অনেক বেশি। ফলে, এই সমাধান কার্যকর নয়।

প্রতি বছর পাঠ্যবই ছাপার কাজ শুরু হয় জুলাই-আগস্ট মাসে, কিন্তু এবার তা শুরু হয়েছে ডিসেম্বর মাসে। এই দেরির জন্য দায়ভার কার? এনসিটিবির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কাগজের সংকট, ব্যাংক ঋণের বিলম্ব এবং বাইন্ডিং সমস্যার কথা, কিন্তু এগুলো যে আগে থেকে পূর্বানুমান করা সম্ভব ছিল না, এমন নয়।

প্রশ্ন হলো, এনসিটিবি কেন এমন ছাপাখানাগুলোকে কাজ দিয়েছে যাদের প্রকৃত সক্ষমতা নেই? দরপত্র চূড়ান্ত করার সময় কী ধরনের যাচাই-বাছাই করা হয়েছিল? যদি ছাপাখানাগুলোর সক্ষমতা তিন ভাগের এক ভাগ হয়, তবে কেন তাদের এত বেশি কাজ দেয়া হলো?

যথাসময়ে বই ছাপতে না পারা প্রশাসনিক ব্যর্থতাকেই তুলে ধরে। এই ব্যর্থতার কারণে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়েও একধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। শিক্ষাব্যবস্থা একটি জাতির উন্নতির অন্যতম প্রধান ভিত্তি। পাঠ্যবই বিতরণে এই ধরনের অব্যবস্থাপনা ভবিষ্যতে রোধ করতে হলে বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা করতে হবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। নাহলে এই সংকট প্রতি বছরই পুনরাবৃত্তি হবে, আর ক্ষতিগ্রস্ত হবে আগামী প্রজন্ম।

back to top