alt

সম্পাদকীয়

শবে বরাত: আত্মশুদ্ধির এক মহিমান্বিত রাত

: রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

শুক্রবার রাতে ধর্মীয় গাম্ভীর্যের সঙ্গে পালিত হবে পবিত্র শবে বরাত। হিজরি সনের শাবান মাসের ১৪ তারিখের এই মহিমান্বিত রাতটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে সৌভাগ্যের রাত হিসেবে পরিচিত। ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী, এই রাতে মহান আল্লাহ তাআলা বান্দাদের জন্য অশেষ রহমতের দরজা খুলে দেন, তাঁদের গুনাহ ক্ষমা করেন এবং ভাগ্য নির্ধারণ করেন। তাই শবে বরাত শুধু একটি ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়; এটি আত্মশুদ্ধির, আত্মবিশ্লেষণের এবং ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণ কামনার এক বিশেষ সুযোগ।

এই রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা নফল নামাজ আদায় করেন, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও জিকিরে মগ্ন থাকেন। অতীতের পাপ ও অন্যায়ের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন এবং ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণ কামনায় মোনাজাত করেন। ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী, আল্লাহর রহমত ও করুণা লাভের অন্যতম উপায় হলো তওবা করা এবং নিজেকে সঠিক পথে পরিচালিত করা। শবে বরাত সেই সুযোগ এনে দেয়, যেখানে একান্তভাবে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে নতুন করে জীবন শুরু করার অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়।

শবে বরাত মুসলমানদের কাছে রমজানের আগমনী বার্তাও নিয়ে আসে। শাবান মাসের পরই আসে আত্মশুদ্ধির মাস রমজান। তাই শবে বরাত থেকেই কার্যত রমজানের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। আত্মসংযম, ইবাদত-বন্দেগি এবং নৈতিক উন্নতির জন্য এই রাতকে কেন্দ্র করে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করা যেতে পারে।

তবে শবে বরাত পালনের ক্ষেত্রে কিছু সামাজিক ও কুসংস্কারজাত প্রথা অনেক সময় প্রকৃত ইসলামী চেতনাকে আড়াল করে ফেলে। বিশেষ করে, আতশবাজি ফোটানো, অতিরিক্ত জৌলুসপূর্ণ আয়োজন এবং কবরস্থানে অতি আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে শবে বরাতের মূল তাৎপর্য হারিয়ে যেতে বসে। ইসলাম বিনয়, সরলতা ও আন্তরিকতাকে বেশি গুরুত্ব দেয়। তাই আমাদের উচিত হবে এই মহিমান্বিত রাতকে যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালন করা এবং ধর্মীয় বিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ইবাদত-বন্দেগিতে আত্মনিয়োগ করা।

রাষ্ট্র ও সমাজের পক্ষ থেকেও শবে বরাত পালনের পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় কোলাহল ও অপসংস্কৃতি এড়িয়ে চলার জন্য জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য এই রাতে আমাদের প্রার্থনা করা উচিত।

শবে বরাতের মূল শিক্ষা হলো আত্মশুদ্ধি, ক্ষমা ও কল্যাণ কামনা। এই রাতে মহান আল্লাহর করুণা লাভের আশায় আমাদের একান্তভাবে তাঁর দরবারে নতজানু হওয়া উচিত। পাশাপাশি, এই রাতের শিক্ষা আমাদের ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে সামাজিক জীবনেও প্রতিফলিত হওয়া উচিত। পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, সহনশীলতা চর্চা করা এবং কল্যাণমূলক কাজে নিজেদের নিয়োজিত করাই হবে শবে বরাতের প্রকৃত তাৎপর্য উপলব্ধির অন্যতম উপায়।

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

ইকোপার্কের করুণ দশা : দায় কার

হাতি শাবকের মৃত্যু ও সাফারি পার্কের দায়ভার

বায়ুদূষণ রোধে চাই টেকসই উদ্যোগ

মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন

চালের দামে অস্বস্তি : সরকারি তথ্য ও বাজারের বাস্তবতার ফারাক

অতিদারিদ্র্যের আশঙ্কা : সমাধান কোথায়?

ডিমলা উপজেলা হাসপাতালের অনিয়ম

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের অপেক্ষা কবে ফুরাবে

হাইল হাওরের অস্তিত্ব সংকট

সমানাধিকারে আপত্তি কেন?

লেমুর চুরি : সাফারি পার্কের নিরাপত্তা সংকট

একটি হাসাহাসির ঘটনা, একটি হত্যাকাণ্ড : সমাজের সহিষ্ণুতার অবক্ষয়

চাই সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

মানুষ-হাতির সংঘাত : সমাধানের পথ খুঁজতে হবে

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সংকট দূর করুন

ফসলি জমি রক্ষায় কঠোর হোন

নিষ্ঠুরতার শিকার হাতি

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও নাগরিক অধিকার

হালদায় অবৈধ মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে

মশার উপদ্রব : বর্ষার আগেই সাবধান হতে হবে

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা : মানবতার প্রতি এক অব্যাহত আঘাত

অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদে প্রাণহানি : দায় কার?

নদীর বাঁধ ভাঙার দুর্ভোগ : টেকসই সমাধানের জরুরি প্রয়োজন

মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা সংকট

সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা : কঠোর নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপ জরুরি

সড়ক দুর্ঘটনা নাকি অবহেলার পরিণতি

ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ ও আমাদের প্রস্তুতি

বার্ড ফ্লু : আতঙ্ক নয়, চাই সতর্কতা

জাটকা রক্ষার প্রতিশ্রুতি কি শুধুই কাগজে-কলমে?

ভেজাল কীটনাশক বন্ধে ব্যবস্থা নিন

অতিরিক্ত ভাড়া : যাত্রীদের দুর্ভোগ আর কতকাল?

করতোয়া নদীতে রাবার ড্যাম স্থাপনের দাবি

tab

সম্পাদকীয়

শবে বরাত: আত্মশুদ্ধির এক মহিমান্বিত রাত

রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

শুক্রবার রাতে ধর্মীয় গাম্ভীর্যের সঙ্গে পালিত হবে পবিত্র শবে বরাত। হিজরি সনের শাবান মাসের ১৪ তারিখের এই মহিমান্বিত রাতটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে সৌভাগ্যের রাত হিসেবে পরিচিত। ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী, এই রাতে মহান আল্লাহ তাআলা বান্দাদের জন্য অশেষ রহমতের দরজা খুলে দেন, তাঁদের গুনাহ ক্ষমা করেন এবং ভাগ্য নির্ধারণ করেন। তাই শবে বরাত শুধু একটি ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়; এটি আত্মশুদ্ধির, আত্মবিশ্লেষণের এবং ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণ কামনার এক বিশেষ সুযোগ।

এই রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা নফল নামাজ আদায় করেন, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও জিকিরে মগ্ন থাকেন। অতীতের পাপ ও অন্যায়ের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন এবং ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণ কামনায় মোনাজাত করেন। ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী, আল্লাহর রহমত ও করুণা লাভের অন্যতম উপায় হলো তওবা করা এবং নিজেকে সঠিক পথে পরিচালিত করা। শবে বরাত সেই সুযোগ এনে দেয়, যেখানে একান্তভাবে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে নতুন করে জীবন শুরু করার অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়।

শবে বরাত মুসলমানদের কাছে রমজানের আগমনী বার্তাও নিয়ে আসে। শাবান মাসের পরই আসে আত্মশুদ্ধির মাস রমজান। তাই শবে বরাত থেকেই কার্যত রমজানের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। আত্মসংযম, ইবাদত-বন্দেগি এবং নৈতিক উন্নতির জন্য এই রাতকে কেন্দ্র করে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করা যেতে পারে।

তবে শবে বরাত পালনের ক্ষেত্রে কিছু সামাজিক ও কুসংস্কারজাত প্রথা অনেক সময় প্রকৃত ইসলামী চেতনাকে আড়াল করে ফেলে। বিশেষ করে, আতশবাজি ফোটানো, অতিরিক্ত জৌলুসপূর্ণ আয়োজন এবং কবরস্থানে অতি আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে শবে বরাতের মূল তাৎপর্য হারিয়ে যেতে বসে। ইসলাম বিনয়, সরলতা ও আন্তরিকতাকে বেশি গুরুত্ব দেয়। তাই আমাদের উচিত হবে এই মহিমান্বিত রাতকে যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালন করা এবং ধর্মীয় বিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ইবাদত-বন্দেগিতে আত্মনিয়োগ করা।

রাষ্ট্র ও সমাজের পক্ষ থেকেও শবে বরাত পালনের পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় কোলাহল ও অপসংস্কৃতি এড়িয়ে চলার জন্য জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য এই রাতে আমাদের প্রার্থনা করা উচিত।

শবে বরাতের মূল শিক্ষা হলো আত্মশুদ্ধি, ক্ষমা ও কল্যাণ কামনা। এই রাতে মহান আল্লাহর করুণা লাভের আশায় আমাদের একান্তভাবে তাঁর দরবারে নতজানু হওয়া উচিত। পাশাপাশি, এই রাতের শিক্ষা আমাদের ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে সামাজিক জীবনেও প্রতিফলিত হওয়া উচিত। পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, সহনশীলতা চর্চা করা এবং কল্যাণমূলক কাজে নিজেদের নিয়োজিত করাই হবে শবে বরাতের প্রকৃত তাৎপর্য উপলব্ধির অন্যতম উপায়।

back to top