alt

সম্পাদকীয়

জলাবদ্ধতার অভিশাপ : পরিকল্পনাহীন উন্নয়ন ও দুর্ভোগ

: রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

যশোরের কেশবপুরের বাগডাঙ্গা ও মনোহরনগর গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ যেন শেষ হওয়ার নয়। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে জলাবদ্ধতার কবলে থাকা এই দুই গ্রাম সারা বছরই পানিবন্দী থাকে। অপরিকল্পিত মাছের ঘের, ব্রিজ-কালভার্টের মুখ বন্ধ এবং পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সেখানকার মানুষ দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। বসতবাড়িতে পানি ঢুকে যাওয়ার কারণে অনেক পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ফলে একসময়ের উর্বর কৃষিজমি আজ পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে, আর মানুষের জীবনযাত্রা ক্রমশ সংকটাপন্ন হয়ে উঠেছে।

২০০০ সালের পর থেকে এলাকার প্রভাবশালীরা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিলে বাঁধ দিয়ে মাছের ঘের তৈরি করেন, যার ফলে পানি নিষ্কাশনের স্বাভাবিক পথ বন্ধ হয়ে যায়। শুষ্ক মৌসুমে ভূগর্ভস্থ পানি তুলে বিল ভরাট করা হলেও বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের পথ না থাকায় গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। বছরের পর বছর ধরে এ অবস্থা চলতে থাকায় জলাবদ্ধতা এখন চরম আকার ধারণ করেছে। অথচ যথাযথ পরিকল্পনা এবং নিয়মতান্ত্রিক অবকাঠামো গড়ে তোলা হলে আজ এ দুর্ভোগ পোহাতে হতো না।

জলাবদ্ধতার মতো সমস্যা শুধু প্রকৃতির কারণে সৃষ্টি হয়নি, বরং এটি মানুষের অব্যবস্থাপনা এবং পরিকল্পনাহীন উন্নয়নের ফল। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি, যা হতাশাজনক। এখনই সময় দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত নেয়ার। প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে, জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে, এবং পরিবেশবান্ধব পরিকল্পনা গ্রহণ করেই শুধু এ সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, নদী খননের জন্য প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, যা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে জলাবদ্ধতা অনেকাংশে কমে আসবে। তবে শুধু নদী খনন করলেই সমস্যার সমাধান হবে না, বরং ব্রিজ-কালভার্টের মুখ খুলে দেয়া এবং অবৈধ বেড়িবাঁধ অপসারণ করাও জরুরি। এছাড়া, মাছের ঘের করতে হলে তা পরিবেশগত ও অবকাঠামোগত পরিকল্পনার ভিত্তিতে করতে হবে, যাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা ব্যাহত না হয়।

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

ইকোপার্কের করুণ দশা : দায় কার

হাতি শাবকের মৃত্যু ও সাফারি পার্কের দায়ভার

বায়ুদূষণ রোধে চাই টেকসই উদ্যোগ

মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন

চালের দামে অস্বস্তি : সরকারি তথ্য ও বাজারের বাস্তবতার ফারাক

অতিদারিদ্র্যের আশঙ্কা : সমাধান কোথায়?

ডিমলা উপজেলা হাসপাতালের অনিয়ম

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের অপেক্ষা কবে ফুরাবে

হাইল হাওরের অস্তিত্ব সংকট

সমানাধিকারে আপত্তি কেন?

লেমুর চুরি : সাফারি পার্কের নিরাপত্তা সংকট

একটি হাসাহাসির ঘটনা, একটি হত্যাকাণ্ড : সমাজের সহিষ্ণুতার অবক্ষয়

চাই সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

মানুষ-হাতির সংঘাত : সমাধানের পথ খুঁজতে হবে

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সংকট দূর করুন

ফসলি জমি রক্ষায় কঠোর হোন

নিষ্ঠুরতার শিকার হাতি

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও নাগরিক অধিকার

হালদায় অবৈধ মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে

মশার উপদ্রব : বর্ষার আগেই সাবধান হতে হবে

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা : মানবতার প্রতি এক অব্যাহত আঘাত

অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদে প্রাণহানি : দায় কার?

নদীর বাঁধ ভাঙার দুর্ভোগ : টেকসই সমাধানের জরুরি প্রয়োজন

মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা সংকট

সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা : কঠোর নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপ জরুরি

সড়ক দুর্ঘটনা নাকি অবহেলার পরিণতি

ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ ও আমাদের প্রস্তুতি

বার্ড ফ্লু : আতঙ্ক নয়, চাই সতর্কতা

জাটকা রক্ষার প্রতিশ্রুতি কি শুধুই কাগজে-কলমে?

ভেজাল কীটনাশক বন্ধে ব্যবস্থা নিন

অতিরিক্ত ভাড়া : যাত্রীদের দুর্ভোগ আর কতকাল?

করতোয়া নদীতে রাবার ড্যাম স্থাপনের দাবি

tab

সম্পাদকীয়

জলাবদ্ধতার অভিশাপ : পরিকল্পনাহীন উন্নয়ন ও দুর্ভোগ

রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

যশোরের কেশবপুরের বাগডাঙ্গা ও মনোহরনগর গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ যেন শেষ হওয়ার নয়। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে জলাবদ্ধতার কবলে থাকা এই দুই গ্রাম সারা বছরই পানিবন্দী থাকে। অপরিকল্পিত মাছের ঘের, ব্রিজ-কালভার্টের মুখ বন্ধ এবং পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সেখানকার মানুষ দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। বসতবাড়িতে পানি ঢুকে যাওয়ার কারণে অনেক পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ফলে একসময়ের উর্বর কৃষিজমি আজ পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে, আর মানুষের জীবনযাত্রা ক্রমশ সংকটাপন্ন হয়ে উঠেছে।

২০০০ সালের পর থেকে এলাকার প্রভাবশালীরা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিলে বাঁধ দিয়ে মাছের ঘের তৈরি করেন, যার ফলে পানি নিষ্কাশনের স্বাভাবিক পথ বন্ধ হয়ে যায়। শুষ্ক মৌসুমে ভূগর্ভস্থ পানি তুলে বিল ভরাট করা হলেও বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের পথ না থাকায় গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। বছরের পর বছর ধরে এ অবস্থা চলতে থাকায় জলাবদ্ধতা এখন চরম আকার ধারণ করেছে। অথচ যথাযথ পরিকল্পনা এবং নিয়মতান্ত্রিক অবকাঠামো গড়ে তোলা হলে আজ এ দুর্ভোগ পোহাতে হতো না।

জলাবদ্ধতার মতো সমস্যা শুধু প্রকৃতির কারণে সৃষ্টি হয়নি, বরং এটি মানুষের অব্যবস্থাপনা এবং পরিকল্পনাহীন উন্নয়নের ফল। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি, যা হতাশাজনক। এখনই সময় দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত নেয়ার। প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে, জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে, এবং পরিবেশবান্ধব পরিকল্পনা গ্রহণ করেই শুধু এ সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, নদী খননের জন্য প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, যা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে জলাবদ্ধতা অনেকাংশে কমে আসবে। তবে শুধু নদী খনন করলেই সমস্যার সমাধান হবে না, বরং ব্রিজ-কালভার্টের মুখ খুলে দেয়া এবং অবৈধ বেড়িবাঁধ অপসারণ করাও জরুরি। এছাড়া, মাছের ঘের করতে হলে তা পরিবেশগত ও অবকাঠামোগত পরিকল্পনার ভিত্তিতে করতে হবে, যাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা ব্যাহত না হয়।

back to top