alt

সম্পাদকীয়

অমর একুশে

: শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আজ অমর একুশে পালিত হচ্ছে সারাদেশে। এটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবেও বাংলাদেশ এবং জাতিসংঘভুক্ত দেশগুলো দিনটি পালন করছে।

বাংলা ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বাঙালির আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হলো ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। মাতৃভাষার দাবিতে এই আন্দোলন শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারাবিশ্বে ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার অনন্য উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই আন্দোলনের পথ ধরেই পরবর্তীতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথ প্রশস্ত হয়।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘটার পর পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠিত হয়। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালির ভাষা বাংলা থাকা সত্ত্বেও ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উর্দুকে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। এর বিরুদ্ধে বাঙালি শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাহিত্যিক ও সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ গড়ে তোলেন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ অনেকে। সেই আত্মত্যাগের ফলস্বরূপ ১৯৫৬ সালে বাংলা পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাকে প্রশাসন ও শিক্ষায় প্রধান ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু এখনও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আদালতে, উচ্চশিক্ষায়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গবেষণায় বাংলার ব্যবহার আশানুরূপ হয়নি। বিশেষ করে আদালতে ইংরেজি ভাষার প্রচলন থাকায় সাধারণ জনগণ আইনি প্রক্রিয়া বুঝতে সমস্যায় পড়ে। মামলার নথিপত্র, রায় এবং অন্যান্য আইনি কার্যক্রম প্রধানত ইংরেজিতে পরিচালিত হয়, যা সাধারণ মানুষের জন্য বোঝা কঠিন। যদিও সরকারি উদ্যোগে আদালতে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, তা এখনও পরিপূর্ণ বাস্তবায়িত হয়নি।

বাংলাদেশে বাংলা ভাষার পাশাপাশি চাকমা, মারমা, সাঁওতাল, গারো, রাখাইনসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষা প্রচলিত। এসব ভাষা সংরক্ষণ ও বিকাশের জন্য সরকার উদ্যোগ নিলেও বাস্তবে অনেক ভাষাই বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা তাদের মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা লাভের সুযোগ পাচ্ছেন না, যা তাদের ভাষা ও সংস্কৃতির টিকে থাকার জন্য হুমকিস্বরূপ।

ভাষা আন্দোলনের অর্জন ধরে রাখতে বাংলা ভাষার যথাযথ চর্চা ও প্রসার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষার সংরক্ষণেও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

ইকোপার্কের করুণ দশা : দায় কার

হাতি শাবকের মৃত্যু ও সাফারি পার্কের দায়ভার

বায়ুদূষণ রোধে চাই টেকসই উদ্যোগ

মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন

চালের দামে অস্বস্তি : সরকারি তথ্য ও বাজারের বাস্তবতার ফারাক

অতিদারিদ্র্যের আশঙ্কা : সমাধান কোথায়?

ডিমলা উপজেলা হাসপাতালের অনিয়ম

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের অপেক্ষা কবে ফুরাবে

হাইল হাওরের অস্তিত্ব সংকট

সমানাধিকারে আপত্তি কেন?

লেমুর চুরি : সাফারি পার্কের নিরাপত্তা সংকট

একটি হাসাহাসির ঘটনা, একটি হত্যাকাণ্ড : সমাজের সহিষ্ণুতার অবক্ষয়

চাই সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

মানুষ-হাতির সংঘাত : সমাধানের পথ খুঁজতে হবে

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সংকট দূর করুন

ফসলি জমি রক্ষায় কঠোর হোন

নিষ্ঠুরতার শিকার হাতি

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও নাগরিক অধিকার

হালদায় অবৈধ মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে

মশার উপদ্রব : বর্ষার আগেই সাবধান হতে হবে

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা : মানবতার প্রতি এক অব্যাহত আঘাত

অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদে প্রাণহানি : দায় কার?

নদীর বাঁধ ভাঙার দুর্ভোগ : টেকসই সমাধানের জরুরি প্রয়োজন

মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা সংকট

সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা : কঠোর নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপ জরুরি

সড়ক দুর্ঘটনা নাকি অবহেলার পরিণতি

ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ ও আমাদের প্রস্তুতি

বার্ড ফ্লু : আতঙ্ক নয়, চাই সতর্কতা

জাটকা রক্ষার প্রতিশ্রুতি কি শুধুই কাগজে-কলমে?

ভেজাল কীটনাশক বন্ধে ব্যবস্থা নিন

অতিরিক্ত ভাড়া : যাত্রীদের দুর্ভোগ আর কতকাল?

করতোয়া নদীতে রাবার ড্যাম স্থাপনের দাবি

tab

সম্পাদকীয়

অমর একুশে

শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আজ অমর একুশে পালিত হচ্ছে সারাদেশে। এটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবেও বাংলাদেশ এবং জাতিসংঘভুক্ত দেশগুলো দিনটি পালন করছে।

বাংলা ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বাঙালির আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হলো ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। মাতৃভাষার দাবিতে এই আন্দোলন শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারাবিশ্বে ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার অনন্য উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই আন্দোলনের পথ ধরেই পরবর্তীতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথ প্রশস্ত হয়।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘটার পর পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠিত হয়। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালির ভাষা বাংলা থাকা সত্ত্বেও ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উর্দুকে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। এর বিরুদ্ধে বাঙালি শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাহিত্যিক ও সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ গড়ে তোলেন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ অনেকে। সেই আত্মত্যাগের ফলস্বরূপ ১৯৫৬ সালে বাংলা পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাকে প্রশাসন ও শিক্ষায় প্রধান ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু এখনও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আদালতে, উচ্চশিক্ষায়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গবেষণায় বাংলার ব্যবহার আশানুরূপ হয়নি। বিশেষ করে আদালতে ইংরেজি ভাষার প্রচলন থাকায় সাধারণ জনগণ আইনি প্রক্রিয়া বুঝতে সমস্যায় পড়ে। মামলার নথিপত্র, রায় এবং অন্যান্য আইনি কার্যক্রম প্রধানত ইংরেজিতে পরিচালিত হয়, যা সাধারণ মানুষের জন্য বোঝা কঠিন। যদিও সরকারি উদ্যোগে আদালতে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, তা এখনও পরিপূর্ণ বাস্তবায়িত হয়নি।

বাংলাদেশে বাংলা ভাষার পাশাপাশি চাকমা, মারমা, সাঁওতাল, গারো, রাখাইনসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষা প্রচলিত। এসব ভাষা সংরক্ষণ ও বিকাশের জন্য সরকার উদ্যোগ নিলেও বাস্তবে অনেক ভাষাই বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা তাদের মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা লাভের সুযোগ পাচ্ছেন না, যা তাদের ভাষা ও সংস্কৃতির টিকে থাকার জন্য হুমকিস্বরূপ।

ভাষা আন্দোলনের অর্জন ধরে রাখতে বাংলা ভাষার যথাযথ চর্চা ও প্রসার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষার সংরক্ষণেও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

back to top