alt

সম্পাদকীয়

চট্টগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংকট

: সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রতি বছর ১৯ লাখ টন বর্জ্য উৎপাদিত হয়, যার মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) সংগ্রহ করতে পারে মাত্র ৯ লাখ টন। বাকি ১০ লাখ টন বর্জ্য খাল-নালা হয়ে নদীতে গিয়ে পড়ছে, যা নগরীর জলাবদ্ধতার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই বিশাল পরিমাণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা না আনতে পারলে সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পগুলোর সুফল নগরবাসী পাবে নাÑ এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এটি শুধু একটি পরিবেশগত সমস্যা নয়, বরং প্রশাসনিক অদক্ষতা এবং নগরবাসীর সচেতনতার ঘাটতির একটি সম্মিলিত প্রতিফলন।

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং চসিকের নেতৃত্বে বাস্তবায়নাধীন চারটি বৃহৎ প্রকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ ও সংস্কারের কাজ চলছে। ৩৬টি খাল থেকে বর্জ্য অপসারণ ও সাড়ে তিন হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, পরিষ্কারের পরদিনই খালগুলো পলিথিন, প্লাস্টিক ও অপচনশীল বর্জ্যে ভরে যাচ্ছে। এই বর্জ্যরে উৎস নগরবাসীর যত্রতত্র ফেলা আবর্জনা এবং চসিকের অপর্যাপ্ত সংগ্রহ ব্যবস্থা। ফলে প্রকল্পগুলোর তিন ভাগের বেশি কাজ শেষ হলেও জলাবদ্ধতা কমছে না।

সমস্যার মূলে রয়েছে দুটি প্রধান দিক : প্রথমত, চসিকের বর্জ্য সংগ্রহ ব্যবস্থার দুর্বলতা। ৭০ লাখ মানুষের নগরীতে উৎপাদিত বর্জ্যরে অর্ধেকও সংগ্রহ করতে না পারা প্রশাসনিক অক্ষমতার সুস্পষ্ট প্রমাণ। দ্বিতীয়ত, নগরবাসীর অসচেতনতা।

বিশেষজ্ঞরা বারবার জোর দিচ্ছেন যে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে হলে নির্ধারিত সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে বর্জ্য ফেলা নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইনে চসিকের হাতে এই শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার ক্ষমতা রয়েছে। খাল-নালায় বর্জ্য ফেলাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে জেল-জরিমানার বিধানও আছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই আইন কবে কার্যকর হবে?

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা শুধু প্রকৌশলগত সমস্যা নয়, এটি একটি সামাজিক ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ। সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প ব্যর্থতার মুখে পড়লে জনগণের অর্থের অপচয়ের দায় কে নেবে? চসিককে অবিলম্বে বর্জ্য সংগ্রহ ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। একই সঙ্গে নগরবাসীর মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার চালাতে হবে এবং আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। খাল-নালা পরিষ্কার রাখা কেবল প্রকল্পের দায়িত্ব নয়, এটি ৭০ লাখ নগরবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল হওয়া উচিত। নইলে এই বিশাল বিনিয়োগ শুধুই কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ থেকে যাবে, আর জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে যাবে চট্টগ্রামবাসীর নিত্যসঙ্গী।

গণরোষের নামে নৃশংসতা : কোথায় সমাধান?

গাছের জীবন রক্ষায় এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

প্রকাশ্যে ধূমপান, মবের সংস্কৃতি এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বয়ান

লামায় শ্রমিক অপহরণ : প্রশ্নবিদ্ধ নিরাপত্তা

রেলওয়ের তেল চুরি ও কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা

মহাসড়কে নিরাপত্তাহীনতা ও পুলিশের দায়িত্বে শৈথিল্য

দেওয়ানগঞ্জ ডাম্পিং স্টেশন প্রকল্প : দায়িত্বহীনতার প্রতিচ্ছবি

রেলপথে নিরাপত্তাহীনতা : চুরি ও অব্যবস্থাপনার দুষ্টচক্র

সবজি সংরক্ষণে হিমাগার : কৃষকদের বাঁচানোর জরুরি পদক্ষেপ

অমর একুশে

বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষায় উদাসীনতা কাম্য নয়

আইনশৃঙ্খলার অবনতি : নাগরিক নিরাপত্তা কোথায়?

বাগাতিপাড়ার বিদ্যালয়গুলোর শৌচাগার সংকট দূর করুন

হাসপাতালগুলোতে জনবল সংকট দূর করুন

বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষায় উদাসীনতা কাম্য নয়

নতুন পাঠ্যবই বিতরণে ধীরগতি : শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত হচ্ছে

সরকারি জমি রক্ষায় উদাসীনতা কাম্য নয়

সার বিপণনে অনিয়মের অভিযোগ, ব্যবস্থা নিন

জলাবদ্ধতার অভিশাপ : পরিকল্পনাহীন উন্নয়ন ও দুর্ভোগ

সেতুর জন্য আর কত অপেক্ষা

শবে বরাত: আত্মশুদ্ধির এক মহিমান্বিত রাত

অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই সংকট : ব্যর্থতার দায় কার?

মাদারীপুর পৌরসভায় ডাম্পিং স্টেশন কবে হবে

বায়ুদূষণ : আর উপেক্ষা করা যায় না

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাঁকড়া শিকার : সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে

যৌতুকের বলি : বৈশাখীর নির্মম পরিণতি ও আমাদের করণীয়

কেশবপুরে ওএমএস কর্মসূচির সংকট

শিক্ষক সংকট : প্রাথমিক শিক্ষার চ্যালেঞ্জ

নদীভাঙনের শিকার শিক্ষার্থীরা কোথায় যাবে?

আবারও অপহরণের ঘটনা : সমাধান কী

সারের কালোবাজারি বন্ধ করতে হবে

ভোটার তালিকা হালনাগাদ : কিছু প্রশ্ন

চায়নাদুয়ারী ও কারেন্টজাল ব্যবহার বন্ধে ব্যবস্থা নিন

পাহাড়-টিলা রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ জরুরি

জলমহাল দখল : জেলেদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

tab

সম্পাদকীয়

চট্টগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংকট

সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রতি বছর ১৯ লাখ টন বর্জ্য উৎপাদিত হয়, যার মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) সংগ্রহ করতে পারে মাত্র ৯ লাখ টন। বাকি ১০ লাখ টন বর্জ্য খাল-নালা হয়ে নদীতে গিয়ে পড়ছে, যা নগরীর জলাবদ্ধতার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই বিশাল পরিমাণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা না আনতে পারলে সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পগুলোর সুফল নগরবাসী পাবে নাÑ এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এটি শুধু একটি পরিবেশগত সমস্যা নয়, বরং প্রশাসনিক অদক্ষতা এবং নগরবাসীর সচেতনতার ঘাটতির একটি সম্মিলিত প্রতিফলন।

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং চসিকের নেতৃত্বে বাস্তবায়নাধীন চারটি বৃহৎ প্রকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ ও সংস্কারের কাজ চলছে। ৩৬টি খাল থেকে বর্জ্য অপসারণ ও সাড়ে তিন হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, পরিষ্কারের পরদিনই খালগুলো পলিথিন, প্লাস্টিক ও অপচনশীল বর্জ্যে ভরে যাচ্ছে। এই বর্জ্যরে উৎস নগরবাসীর যত্রতত্র ফেলা আবর্জনা এবং চসিকের অপর্যাপ্ত সংগ্রহ ব্যবস্থা। ফলে প্রকল্পগুলোর তিন ভাগের বেশি কাজ শেষ হলেও জলাবদ্ধতা কমছে না।

সমস্যার মূলে রয়েছে দুটি প্রধান দিক : প্রথমত, চসিকের বর্জ্য সংগ্রহ ব্যবস্থার দুর্বলতা। ৭০ লাখ মানুষের নগরীতে উৎপাদিত বর্জ্যরে অর্ধেকও সংগ্রহ করতে না পারা প্রশাসনিক অক্ষমতার সুস্পষ্ট প্রমাণ। দ্বিতীয়ত, নগরবাসীর অসচেতনতা।

বিশেষজ্ঞরা বারবার জোর দিচ্ছেন যে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে হলে নির্ধারিত সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে বর্জ্য ফেলা নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইনে চসিকের হাতে এই শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার ক্ষমতা রয়েছে। খাল-নালায় বর্জ্য ফেলাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে জেল-জরিমানার বিধানও আছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই আইন কবে কার্যকর হবে?

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা শুধু প্রকৌশলগত সমস্যা নয়, এটি একটি সামাজিক ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ। সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প ব্যর্থতার মুখে পড়লে জনগণের অর্থের অপচয়ের দায় কে নেবে? চসিককে অবিলম্বে বর্জ্য সংগ্রহ ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। একই সঙ্গে নগরবাসীর মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার চালাতে হবে এবং আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। খাল-নালা পরিষ্কার রাখা কেবল প্রকল্পের দায়িত্ব নয়, এটি ৭০ লাখ নগরবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল হওয়া উচিত। নইলে এই বিশাল বিনিয়োগ শুধুই কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ থেকে যাবে, আর জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে যাবে চট্টগ্রামবাসীর নিত্যসঙ্গী।

back to top