alt

মতামত » সম্পাদকীয়

রমজানের নামে নিগ্রহ : কারা এই ‘নৈতিকতার ঠিকাদার’?

: রোববার, ১৬ মার্চ ২০২৫

রমজান মাস মানুষের জন্য শুধু আধ্যাত্মিক সাধনার সময়ই নয়, সহমর্মিতা, সহানুভূতি ও পারস্পরিক সম্প্রীতির একটি মাস। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, সাম্প্রতিক সময়ে রমজানের ‘পবিত্রতা রক্ষার’ নামে যে ধরনের ‘মোরাল পুলিশিং’ প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে, তা শুধু সামাজিক শান্তি বিনষ্ট করছে না, বরং মানুষের মৌলিক অধিকারের ওপর হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দিনের বেলা খাবারের দোকান খোলা রাখা বা খাবার খাওয়ার জন্য মানুষের ওপর হামলা, নিগ্রহ এবং হুমকি-ধমকির ঘটনা আমাদের সামনে এনেছে গুরুতর কিছু প্রশ্ন, এই ‘মোরাল পুলিশিং’ করছেন কারা? তাদের এই অধিকার কে দিয়েছে? এবং প্রশাসন কেন এর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না?

এই ঘটনাগুলোর সবচেয়ে দুঃখজনক দিক হলো, এর ফলে যারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তারা হলেন সমাজের সবচেয়ে দুর্বল গোষ্ঠীÑনারী, শিশু, বয়োবৃদ্ধ, অসুস্থ ব্যক্তি, দিনমজুর এবং ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা।

ইসলামী গবেষক ও প-িতরাও স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, ইসলাম এ ধরনের জোরপূর্বক ‘মোরাল পুলিশিং’ সমর্থন করে না। তাদের মতে, কোরআন-হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা করে কেউ কেউ এসব কর্মকা-ে জড়াচ্ছে।

প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। লক্ষ্মীপুর বা নোয়াখালীর ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে প্রশাসনের তৎপরতা খুবই সীমিত। অভিযোগ না পাওয়ার অজুহাতে ব্যবস্থা না নেয়া বা শুধু ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে ঘটনা মীমাংসার চেষ্টা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে করে মানুষের মধ্যে আইনের প্রতি আস্থা কমে এবং আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার প্রবণতা বাড়ে। প্রশাসনের উচিত এ ধরনের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়া এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

সমাজে বহু ধর্ম, বহু সংস্কৃতির মানুষ একসঙ্গে বসবাস করে। তাই সবার অধিকার ও স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া আমাদের সবার দায়িত্ব। রাষ্ট্রের উচিত এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া এবং সমাজে সহাবস্থানের সংস্কৃতি আরও জোরদার করা।

‘মোরাল পুলিশিং’য়ের নামে আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার এই প্রবণতা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। অন্যথায়, আমরা একটি অসহিষ্ণু ও বিভক্ত সমাজের দিকে এগিয়ে যাব, যা আমাদের জাতীয় ঐক্য ও অগ্রগতির জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

রংপুর সিটি করপোরেশনে অটোরিকশার লাইসেন্স প্রসঙ্গে

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ড প্রশ্ন অনেক, উত্তর মিলবে কি

দেবীদ্বার কলেজ মাঠ: অবহেলায় হারাতে বসেছে ঐতিহ্য

সিইপিজেডের আগুন: অবহেলা আর দায়িত্বহীনতার নজির

বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা : ফল বিপর্যয় নাকি বাস্তবতা

কুমারভোগের বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিন

বেহাল রাজবাড়ী বিসিক শিল্পনগরী: ব্যবস্থা নিন

শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি: যৌক্তিক পদক্ষেপ নিন

গার্মেন্টস কারখানায় অগ্নিকাণ্ড: প্রশ্নবিদ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ভিডব্লিউবি কর্মসূচিতে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করুন

টিআরএম প্রকল্পের ক্ষতিপূরণ পেতে আর কত অপেক্ষা

জয়পুরহাটে ডায়রিয়ার প্রকোপ

লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করা যাচ্ছে না কেন

টাইফয়েড টিকা: ভালো উদ্যোগ

হামাস-ইসরায়েল চুক্তি: শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ সফল হোক

বকুলতলায় স্থগিত শরৎ উৎসব!

সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স টিকাদান কার্যক্রমে জনবল সংকট দূর করুন

বনভূমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

নন্দীগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংকট

জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো সংস্কার করুন

কমছেই আলুর দাম, লোকসান বাড়ছে কৃষকের

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি কি পূরণ হলো?

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

কন্যাশিশু নিপীড়নের উদ্বেগজনক চিত্র

ট্রাম্পের পরিকল্পনা একটি সম্ভাবনাময় সূচনা, কিন্তু পথ এখনও দীর্ঘ

বিজয়া দশমী: সম্প্রীতি রক্ষার অঙ্গীকার

প্লাস্টিক দূষণের শিকার সুন্দরবন: চাই জনসচেতনতা

খাগড়াছড়িতে সহিংসতা কি এড়ানো যেত না

এক প্রবীণের আর্তনাদ: সমাজ কি শুনবে?

সাঁওতালদের বিদ্যালয় ও খেলার মাঠ রক্ষা করুন

সারের কৃত্রিম সংকট ও কৃষকদের দুর্ভোগ

কুড়িগ্রামে সার ও বীজ সংকট দূর করুন

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল পাচার: প্রশাসনের তৎপরতা ও প্রত্যাশা

অ্যান্টিভেনম সংকট দূর করুন

বিলাসবহুল গাড়ি কেনার ‘অতিআগ্রহ’ নিয়ে প্রশ্ন, উত্তর কি মিলবে?

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

রমজানের নামে নিগ্রহ : কারা এই ‘নৈতিকতার ঠিকাদার’?

রোববার, ১৬ মার্চ ২০২৫

রমজান মাস মানুষের জন্য শুধু আধ্যাত্মিক সাধনার সময়ই নয়, সহমর্মিতা, সহানুভূতি ও পারস্পরিক সম্প্রীতির একটি মাস। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, সাম্প্রতিক সময়ে রমজানের ‘পবিত্রতা রক্ষার’ নামে যে ধরনের ‘মোরাল পুলিশিং’ প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে, তা শুধু সামাজিক শান্তি বিনষ্ট করছে না, বরং মানুষের মৌলিক অধিকারের ওপর হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দিনের বেলা খাবারের দোকান খোলা রাখা বা খাবার খাওয়ার জন্য মানুষের ওপর হামলা, নিগ্রহ এবং হুমকি-ধমকির ঘটনা আমাদের সামনে এনেছে গুরুতর কিছু প্রশ্ন, এই ‘মোরাল পুলিশিং’ করছেন কারা? তাদের এই অধিকার কে দিয়েছে? এবং প্রশাসন কেন এর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না?

এই ঘটনাগুলোর সবচেয়ে দুঃখজনক দিক হলো, এর ফলে যারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তারা হলেন সমাজের সবচেয়ে দুর্বল গোষ্ঠীÑনারী, শিশু, বয়োবৃদ্ধ, অসুস্থ ব্যক্তি, দিনমজুর এবং ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা।

ইসলামী গবেষক ও প-িতরাও স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, ইসলাম এ ধরনের জোরপূর্বক ‘মোরাল পুলিশিং’ সমর্থন করে না। তাদের মতে, কোরআন-হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা করে কেউ কেউ এসব কর্মকা-ে জড়াচ্ছে।

প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। লক্ষ্মীপুর বা নোয়াখালীর ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে প্রশাসনের তৎপরতা খুবই সীমিত। অভিযোগ না পাওয়ার অজুহাতে ব্যবস্থা না নেয়া বা শুধু ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে ঘটনা মীমাংসার চেষ্টা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে করে মানুষের মধ্যে আইনের প্রতি আস্থা কমে এবং আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার প্রবণতা বাড়ে। প্রশাসনের উচিত এ ধরনের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়া এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

সমাজে বহু ধর্ম, বহু সংস্কৃতির মানুষ একসঙ্গে বসবাস করে। তাই সবার অধিকার ও স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া আমাদের সবার দায়িত্ব। রাষ্ট্রের উচিত এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া এবং সমাজে সহাবস্থানের সংস্কৃতি আরও জোরদার করা।

‘মোরাল পুলিশিং’য়ের নামে আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার এই প্রবণতা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। অন্যথায়, আমরা একটি অসহিষ্ণু ও বিভক্ত সমাজের দিকে এগিয়ে যাব, যা আমাদের জাতীয় ঐক্য ও অগ্রগতির জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

back to top