alt

মতামত » সম্পাদকীয়

আজ সেই কালরাত্রি

: মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫

আজ বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়ের দিন, যে দিনটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় এক নৃশংস গণহত্যার কথা। ১৯৭১ সালের এই দিনে, ২৫ মার্চের রাতে, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঘুমন্ত বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজারবাগ পুলিশ লাইন, ইপিআর হেডকোয়ার্টার, বস্তি এলাকাÑকোথাও রেহাই পায়নি। শত শত বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, শহীদ মিনার ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর চালানো হয়েছে নির্মম হত্যাযজ্ঞ।

এই কালরাত্রি শুধু একটি রাতের ঘটনা নয়, বরং এটি ছিল সেই নয় মাসব্যাপী গণহত্যার সূচনা, যা চলেছিল একাত্তরের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে, কিন্তু এই স্বাধীনতার মূল্য ছিল অগণিত প্রাণের বিনিময়ে, রক্তে রঞ্জিত মাটিতে। মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় জুড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে। আর এই নৃশংসতায় শুধু পাকিস্তানি সেনারাই জড়িত ছিল না, তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল এদেশের কিছু দল, গোষ্ঠী ও ব্যক্তি। এই সহযোগীরা নিজেদের স্বার্থে, ক্ষমতার লোভে, বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল, যা ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।

২৫ মার্চের সেই রাতে শুরু হওয়া গণহত্যা ছিল একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ফসল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর পরিকল্পনাকে ভ-ুল করে দেয়। বাঙালির স্বায়ত্তশাসনের দাবি, ৬ দফার আন্দোলন, এবং জাতীয়তাবাদের উত্থানকে রুখতে তারা প্রথমে কালক্ষেপণ করে। তারপর আলোচনার নামে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করে। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার ডাক দেওয়ার পরও তারা আলোচনার নামে সময় নষ্ট করে। অবশেষে, ২৫ মার্চ রাতে তারা মুখোশ খুলে ফেলে, শুরু করে বাঙালি নিধনযজ্ঞ। কিন্তু এই গণহত্যা বাঙালির মনোবল ভাঙতে পারেনি। বরং বাঙালির প্রতিরোধের আগুনকে আরও জ্বালিয়ে দেয়।

নয় মাসের এই যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনী শুধু হত্যাই করেনি, তারা ধর্ষণ, বুদ্ধিজীবী হত্যা, বন্দিশিবিরে নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ চালিয়েছে। এই গণহত্যার মাত্রা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, আধুনিক বিশ্বে এর তুলনা খুঁজে পাওয়া কঠিন।

এই কালরাত্রি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় তাদের, যারা স্বাধীনতার স্বপ্ন নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন, কিন্তু সকালের আলো দেখতে পাননি। তাদের ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হলে গণহত্যার স্বীকৃতি ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

জয়ন্তীপুর ঘাটে সেতু নির্মাণে বিলম্ব কাম্য নয়

শিক্ষকদের আন্দোলন, সরকারের কঠোরতা এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ

রায়গঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত বেইলি ব্রিজ দ্রুত সংস্কার করুন

সওজের জমি দখল : ব্যবস্থা নিন

পার্বত্য চুক্তি: পাহাড়ে শান্তি কি ফিরল?

রাজধানী কি অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রস্তুত?

সেতু নির্মাণের কাজ কবে শেষ হবে

খুলনায় আদালতের সামনে হত্যাকাণ্ড

মীরসরাইয়ে বন রক্ষায় ব্যবস্থা নিন

পুরান ঢাকায় রাসায়নিক ঝুঁকি

মহেশপুরে অনুমোদনহীন করাত কল

বিদ্যালয়ের মাঠ দখলমুক্ত করুন

থমকে আছে সেতু নির্মাণের কাজ

হাকালুকি হাওরে মাছ লুট: প্রশাসন কী করছে

রাঙ্গাবালীর সংরক্ষিত বন ধ্বংসের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

টিসিবির পণ্য নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি কাম্য নয়

কক্সবাজারে পাহাড়ের মাটি কাটা বন্ধ করুন

দারিদ্র্যের নতুন ঢেউ

তাজরীনের ১৩ বছরের ক্ষত ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার কোথায়?

অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিন

চরাঞ্চলের বিদ্যালয়ে নিয়মিত পাঠদান নিশ্চিত করুন

অসহিষ্ণুতার সংস্কৃতি থামাতে হবে

কাঠ পাচার বন্ধে ব্যবস্থা নিন

ফিরে এল তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা

বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে জিও ব্যাগ ব্যবহারে অনিয়মের অভিযোগ

দুই দফা ভূমিকম্প: এখনই প্রস্তুতির সময়

অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি

গভীর রাতে সাংবাদিককে তুলে নেয়ার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করতে হবে

সাময়িকী কবিতা

ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ

স্কুল ফিডিং কর্মসূচিতে অনিয়ম কাম্য নয়

ছবি

শীতজনিত রোগ প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

গাজনার বিলে জলাবদ্ধতা দূর করতে ব্যবস্থা নিন

বাল্যবিয়ে: সংকট এখনো গভীর

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়: সব প্রশ্নের কি মীমাংসা হলো?

কুষ্টিয়ায় গাছ কাটার ‘গোপন টেন্ডার’ নিয়ে বিতর্কের অবসান হোক

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

আজ সেই কালরাত্রি

মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫

আজ বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়ের দিন, যে দিনটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় এক নৃশংস গণহত্যার কথা। ১৯৭১ সালের এই দিনে, ২৫ মার্চের রাতে, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঘুমন্ত বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজারবাগ পুলিশ লাইন, ইপিআর হেডকোয়ার্টার, বস্তি এলাকাÑকোথাও রেহাই পায়নি। শত শত বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, শহীদ মিনার ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর চালানো হয়েছে নির্মম হত্যাযজ্ঞ।

এই কালরাত্রি শুধু একটি রাতের ঘটনা নয়, বরং এটি ছিল সেই নয় মাসব্যাপী গণহত্যার সূচনা, যা চলেছিল একাত্তরের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে, কিন্তু এই স্বাধীনতার মূল্য ছিল অগণিত প্রাণের বিনিময়ে, রক্তে রঞ্জিত মাটিতে। মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় জুড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে। আর এই নৃশংসতায় শুধু পাকিস্তানি সেনারাই জড়িত ছিল না, তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল এদেশের কিছু দল, গোষ্ঠী ও ব্যক্তি। এই সহযোগীরা নিজেদের স্বার্থে, ক্ষমতার লোভে, বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল, যা ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।

২৫ মার্চের সেই রাতে শুরু হওয়া গণহত্যা ছিল একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ফসল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর পরিকল্পনাকে ভ-ুল করে দেয়। বাঙালির স্বায়ত্তশাসনের দাবি, ৬ দফার আন্দোলন, এবং জাতীয়তাবাদের উত্থানকে রুখতে তারা প্রথমে কালক্ষেপণ করে। তারপর আলোচনার নামে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করে। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার ডাক দেওয়ার পরও তারা আলোচনার নামে সময় নষ্ট করে। অবশেষে, ২৫ মার্চ রাতে তারা মুখোশ খুলে ফেলে, শুরু করে বাঙালি নিধনযজ্ঞ। কিন্তু এই গণহত্যা বাঙালির মনোবল ভাঙতে পারেনি। বরং বাঙালির প্রতিরোধের আগুনকে আরও জ্বালিয়ে দেয়।

নয় মাসের এই যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনী শুধু হত্যাই করেনি, তারা ধর্ষণ, বুদ্ধিজীবী হত্যা, বন্দিশিবিরে নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ চালিয়েছে। এই গণহত্যার মাত্রা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, আধুনিক বিশ্বে এর তুলনা খুঁজে পাওয়া কঠিন।

এই কালরাত্রি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় তাদের, যারা স্বাধীনতার স্বপ্ন নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন, কিন্তু সকালের আলো দেখতে পাননি। তাদের ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হলে গণহত্যার স্বীকৃতি ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

back to top