লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার মেঘনা নদীতে জাটকা রক্ষার জন্য প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ ও কোস্টগার্ডের অভিযান চলছে ঠিকই, কিন্তু তার মধ্যেই জাটকা নিধন অব্যাহত রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রকাশ্যে জাটকা শিকার ও বিক্রি চলছে উপজেলার হাটবাজার থেকে গ্রামে গ্রামে, এমনকি ঢাকা-চট্টগ্রামের মতো বড় বাজারেও পৌঁছে যাচ্ছে এসব মাছ। এই অবস্থা ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর সরকারি লক্ষ্যকে হুমকির মুখে ফেলেছে। জাটকা রক্ষার নামে যে প্রচেষ্টা, তা কি তবে শুধুই আনুষ্ঠানিকতা?
মেঘনা নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকা ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে চিহ্নিত। এ সময়ে জেলেদের মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে সরকার ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে প্রতি জেলেকে ৪০ কেজি চাল বরাদ্দ দিয়েছে; কিন্তু জেলেদের অভিযোগ, এ সহায়তা তারা পাচ্ছেন না। ভিজিএফ কার্ড বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে প্রকৃত জেলেদের বদলে অন্যরা সুবিধা পাচ্ছেন। ফলে বিকল্প আয়ের পথ না পেয়ে অনেক জেলে বাধ্য হয়ে নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে নদীতে নামছেন।
অভিযানের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, অভিযানের খবর আগেই ফাঁস হয়ে যাওয়ায় জেলেরা সহজেই পার পেয়ে যাচ্ছেন। গত মঙ্গলবারের অভিযানে তিন মণ জাটকা, ৮০ হাজার মিটার জাল জব্দ ও ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হলেও, এটি সমস্যার মূল সমাধান নয়। রাতের আঁধারে অনেকেই জাটকা শিকার করছেন, আর দিনের আলোয় তা বিক্রি হচ্ছে প্রকাশ্যে। এটা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের নজরদারির ঘাটতির প্রমাণ।
জাটকা নিধনের পেছনে শুধু জেলেদের দায়ী করা যায় না। সচেতনতার অভাবে ক্রেতারাও এই মাছ কিনছেন, যা চাহিদা বাড়িয়ে অসাধু জেলেদের উৎসাহিত করছে। জনসচেতনতা বাড়াতে জেলে ও ক্রেতা উভয়ের মধ্যে প্রচারণা জোরদার করতে হবে।
ইলিশ দেশের জাতীয় সম্পদ। জাটকা রক্ষা না করলে ইলিশ উৎপাদন কমে যাবে, যা কেবল জেলেদের জীবিকাই নয়, দেশের অর্থনীতি ও খাদ্য নিরাপত্তাকেও হুমকির মুখে ফেলবে। সরকারের উচিত এই বিষয়টিকে শুধু আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বরং সামাজিক ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও দেখা। জাটকা নিধন বন্ধে কঠোরতার পাশাপাশি জেলেদের জন্য বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা এবং সঠিক সহায়তা নিশ্চিত করা জরুরি। অন্যথায়, ইলিশ রক্ষার সব প্রতিশ্রুতি কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থেকে যাবে।
শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার মেঘনা নদীতে জাটকা রক্ষার জন্য প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ ও কোস্টগার্ডের অভিযান চলছে ঠিকই, কিন্তু তার মধ্যেই জাটকা নিধন অব্যাহত রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রকাশ্যে জাটকা শিকার ও বিক্রি চলছে উপজেলার হাটবাজার থেকে গ্রামে গ্রামে, এমনকি ঢাকা-চট্টগ্রামের মতো বড় বাজারেও পৌঁছে যাচ্ছে এসব মাছ। এই অবস্থা ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর সরকারি লক্ষ্যকে হুমকির মুখে ফেলেছে। জাটকা রক্ষার নামে যে প্রচেষ্টা, তা কি তবে শুধুই আনুষ্ঠানিকতা?
মেঘনা নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকা ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে চিহ্নিত। এ সময়ে জেলেদের মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে সরকার ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে প্রতি জেলেকে ৪০ কেজি চাল বরাদ্দ দিয়েছে; কিন্তু জেলেদের অভিযোগ, এ সহায়তা তারা পাচ্ছেন না। ভিজিএফ কার্ড বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে প্রকৃত জেলেদের বদলে অন্যরা সুবিধা পাচ্ছেন। ফলে বিকল্প আয়ের পথ না পেয়ে অনেক জেলে বাধ্য হয়ে নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে নদীতে নামছেন।
অভিযানের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, অভিযানের খবর আগেই ফাঁস হয়ে যাওয়ায় জেলেরা সহজেই পার পেয়ে যাচ্ছেন। গত মঙ্গলবারের অভিযানে তিন মণ জাটকা, ৮০ হাজার মিটার জাল জব্দ ও ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হলেও, এটি সমস্যার মূল সমাধান নয়। রাতের আঁধারে অনেকেই জাটকা শিকার করছেন, আর দিনের আলোয় তা বিক্রি হচ্ছে প্রকাশ্যে। এটা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের নজরদারির ঘাটতির প্রমাণ।
জাটকা নিধনের পেছনে শুধু জেলেদের দায়ী করা যায় না। সচেতনতার অভাবে ক্রেতারাও এই মাছ কিনছেন, যা চাহিদা বাড়িয়ে অসাধু জেলেদের উৎসাহিত করছে। জনসচেতনতা বাড়াতে জেলে ও ক্রেতা উভয়ের মধ্যে প্রচারণা জোরদার করতে হবে।
ইলিশ দেশের জাতীয় সম্পদ। জাটকা রক্ষা না করলে ইলিশ উৎপাদন কমে যাবে, যা কেবল জেলেদের জীবিকাই নয়, দেশের অর্থনীতি ও খাদ্য নিরাপত্তাকেও হুমকির মুখে ফেলবে। সরকারের উচিত এই বিষয়টিকে শুধু আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বরং সামাজিক ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও দেখা। জাটকা নিধন বন্ধে কঠোরতার পাশাপাশি জেলেদের জন্য বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা এবং সঠিক সহায়তা নিশ্চিত করা জরুরি। অন্যথায়, ইলিশ রক্ষার সব প্রতিশ্রুতি কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থেকে যাবে।