alt

সম্পাদকীয়

ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ ও আমাদের প্রস্তুতি

: শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫

মায়ানমারে আঘাত হানা ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প শুধু একটি দেশের ট্র্যাজেডি নয়, এটি গোটা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য একটি বড় ধরনের সতর্কবার্তা। এ ভূমিকম্পে মায়ানমারে ১৪৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে। থাইল্যান্ডেও অনেক হতাহত হয়েছেন। বাংলাদেশসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে কম্পনের তীব্রতা অনুভূত হয়েছে। এই ঘটনা আমাদের আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেÑপ্রকৃতির কাছে আমরা কতটা অসহায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ধ্বংসযজ্ঞ থেকে আমরা কি কোনো শিক্ষা নেব।

বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ভূমিকম্পের জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইন্দো-বার্মা সাবডাকশন জোন এবং ডাউকি ফল্টে বড় মাত্রার ভূমিকম্পের শক্তি জমা হচ্ছে। মায়ানমারের ভূমিকম্পটি যদিও সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানেনি, কিন্তু এটি ঝুঁকি বাড়িয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ মনে করেন। কারণ, টেকটোনিক প্লেটের গতিশীলতা নতুন করে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

বাংলাদেশে ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হওয়া সত্ত্বেও আমাদের প্রস্তুতি নিতান্তই অপ্রতুল। রাজধানী ঢাকায় অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ, ভবন কোডের তোয়াক্কা না করা, নদীভাঙন ও জনবহুল এলাকায় জরুরি সেবার অভাবÑএসবই ভূমিকম্পে বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। থাইল্যান্ডে বহুতল ভবন ধসে অনেক মানুষ আটকা পড়ার ঘটনা আমাদের জন্য একটি গুরুতর সতর্কতা। আমাদের বহুতল ভবন, শপিংমল ও কারখানাগুলো কি ভূমিকম্পন সহনীয়? প্রশ্নটি এখনই ভাবতে হবে।

ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়া সম্ভব নয়, কিন্তু এর ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। এ জন্য ভূমিকম্প সহনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করার বিকল্প নেই। ভবন কোড কঠোরভাবে প্রয়োগ ও পুরনো ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা শক্তিশালী করতে হবে।

ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগে জরুরি সাড়াদান ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে। ফায়ার সার্ভিস, মেডিকেল টিম ও উদ্ধারকারী দলকে আধুনিক সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণ দেয়া জরুরি। স্কুল-কলেজে ভূমিকম্প ড্রিল ও সচেতনতামূলক কর্মশালা বাধ্যতামূলক করা দরকার। পাশাপাশি আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে।

ভূমিকম্পে মায়ানমার ও থাইল্যান্ডের ক্ষয়ক্ষতি আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। ভূমিকম্প কোনো স্থানীয় বা রাষ্ট্রীয় সমস্যা নয়Ñএটি একটি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ। তাই সংশ্লিষ্টদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ অপ্রতিরোধ্য, তবে প্রস্তুতি ও সচেতনতাই পারে লাখো প্রাণ বাঁচাতে।

দখলে অস্তিত্ব সংকটে বন

এই যুদ্ধবিরতি হোক স্থায়ী শান্তির সূচনা

তাপপ্রবাহে চাই সতর্কতা, সচেতনতা ও সুরক্ষা পরিকল্পনা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

ইকোপার্কের করুণ দশা : দায় কার

হাতি শাবকের মৃত্যু ও সাফারি পার্কের দায়ভার

বায়ুদূষণ রোধে চাই টেকসই উদ্যোগ

মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন

চালের দামে অস্বস্তি : সরকারি তথ্য ও বাজারের বাস্তবতার ফারাক

অতিদারিদ্র্যের আশঙ্কা : সমাধান কোথায়?

ডিমলা উপজেলা হাসপাতালের অনিয়ম

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের অপেক্ষা কবে ফুরাবে

হাইল হাওরের অস্তিত্ব সংকট

সমানাধিকারে আপত্তি কেন?

লেমুর চুরি : সাফারি পার্কের নিরাপত্তা সংকট

একটি হাসাহাসির ঘটনা, একটি হত্যাকাণ্ড : সমাজের সহিষ্ণুতার অবক্ষয়

চাই সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

মানুষ-হাতির সংঘাত : সমাধানের পথ খুঁজতে হবে

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সংকট দূর করুন

ফসলি জমি রক্ষায় কঠোর হোন

নিষ্ঠুরতার শিকার হাতি

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও নাগরিক অধিকার

হালদায় অবৈধ মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে

মশার উপদ্রব : বর্ষার আগেই সাবধান হতে হবে

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা : মানবতার প্রতি এক অব্যাহত আঘাত

অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদে প্রাণহানি : দায় কার?

নদীর বাঁধ ভাঙার দুর্ভোগ : টেকসই সমাধানের জরুরি প্রয়োজন

মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা সংকট

সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা : কঠোর নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপ জরুরি

সড়ক দুর্ঘটনা নাকি অবহেলার পরিণতি

বার্ড ফ্লু : আতঙ্ক নয়, চাই সতর্কতা

জাটকা রক্ষার প্রতিশ্রুতি কি শুধুই কাগজে-কলমে?

tab

সম্পাদকীয়

ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ ও আমাদের প্রস্তুতি

শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫

মায়ানমারে আঘাত হানা ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প শুধু একটি দেশের ট্র্যাজেডি নয়, এটি গোটা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য একটি বড় ধরনের সতর্কবার্তা। এ ভূমিকম্পে মায়ানমারে ১৪৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে। থাইল্যান্ডেও অনেক হতাহত হয়েছেন। বাংলাদেশসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে কম্পনের তীব্রতা অনুভূত হয়েছে। এই ঘটনা আমাদের আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেÑপ্রকৃতির কাছে আমরা কতটা অসহায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ধ্বংসযজ্ঞ থেকে আমরা কি কোনো শিক্ষা নেব।

বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ভূমিকম্পের জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইন্দো-বার্মা সাবডাকশন জোন এবং ডাউকি ফল্টে বড় মাত্রার ভূমিকম্পের শক্তি জমা হচ্ছে। মায়ানমারের ভূমিকম্পটি যদিও সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানেনি, কিন্তু এটি ঝুঁকি বাড়িয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ মনে করেন। কারণ, টেকটোনিক প্লেটের গতিশীলতা নতুন করে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

বাংলাদেশে ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হওয়া সত্ত্বেও আমাদের প্রস্তুতি নিতান্তই অপ্রতুল। রাজধানী ঢাকায় অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ, ভবন কোডের তোয়াক্কা না করা, নদীভাঙন ও জনবহুল এলাকায় জরুরি সেবার অভাবÑএসবই ভূমিকম্পে বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। থাইল্যান্ডে বহুতল ভবন ধসে অনেক মানুষ আটকা পড়ার ঘটনা আমাদের জন্য একটি গুরুতর সতর্কতা। আমাদের বহুতল ভবন, শপিংমল ও কারখানাগুলো কি ভূমিকম্পন সহনীয়? প্রশ্নটি এখনই ভাবতে হবে।

ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়া সম্ভব নয়, কিন্তু এর ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। এ জন্য ভূমিকম্প সহনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করার বিকল্প নেই। ভবন কোড কঠোরভাবে প্রয়োগ ও পুরনো ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা শক্তিশালী করতে হবে।

ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগে জরুরি সাড়াদান ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে। ফায়ার সার্ভিস, মেডিকেল টিম ও উদ্ধারকারী দলকে আধুনিক সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণ দেয়া জরুরি। স্কুল-কলেজে ভূমিকম্প ড্রিল ও সচেতনতামূলক কর্মশালা বাধ্যতামূলক করা দরকার। পাশাপাশি আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে।

ভূমিকম্পে মায়ানমার ও থাইল্যান্ডের ক্ষয়ক্ষতি আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। ভূমিকম্প কোনো স্থানীয় বা রাষ্ট্রীয় সমস্যা নয়Ñএটি একটি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ। তাই সংশ্লিষ্টদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ অপ্রতিরোধ্য, তবে প্রস্তুতি ও সচেতনতাই পারে লাখো প্রাণ বাঁচাতে।

back to top