alt

মতামত » সম্পাদকীয়

সড়ক দুর্ঘটনা নাকি অবহেলার পরিণতি

: শনিবার, ০৫ এপ্রিল ২০২৫

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় ঘটে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনা আরেকটি মর্মান্তিক সত্যকে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেÑ এ দেশে সড়ক নিরাপত্তা এখনো স্বপ্নই রয়ে গেছে। এটি শুধু দুর্ঘটনা নয়, বরং বছরের পর বছর ধরে চলে আসা অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার ফল। ঈদের আনন্দযাত্রা যে মৃত্যুর মিছিলে রূপ নিতে পারে, তা ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ কল্পনাও করেনি। তাদের গল্প শুধু ব্যক্তিগত শোকের নয়, বরং একটি জাতীয় ট্র্যাজেডির প্রতিচ্ছবি।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা ও পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত থেকে জানা যায়, বিপজ্জনক বাঁক এবং অতিরিক্ত গতিই এই প্রাণহানির মূল কারণ। এই একই এলাকায় গত সোম ও মঙ্গলবারও পৃথক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে, আহত হয়েছেন অনেকে। তবু কেন এই বিপজ্জনক স্থানে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলো না?

এ ঘটনা শুধু চট্টগ্রামের নয়, পুরো দেশের সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার বাস্তবতাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায়। ঈদের ছুটিতে চার দিনে সড়কে ৬০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, বাসÑ কোনো যানই যাত্রীদের জন্য নিরাপদ নয়। এর পেছনে রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত গতি, অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন এবং সবচেয়ে বড় কারণ নিয়ন্ত্রণহীন দুর্নীতি।

‘দুর্ঘটনা’ শব্দটি এখানে আর প্রযোজ্য নয়। যেখানে প্রতিরোধযোগ্য কারণগুলো বছরের পর বছর ধরে উপেক্ষিত, সেখানে এটি অবহেলাজনিত হত্যা ছাড়া আর কিছু নয়। দেশে মাত্র একটি পরিবহন পরিদর্শন কেন্দ্র রয়েছে, যেখানে দৈনিক ১০০টি যান পরীক্ষা করা হয়, অথচ নিবন্ধিত বাস-ট্রাকের সংখ্যা লাখেরও বেশি। ফিটনেস সনদবিহীন যানবাহন সড়কে চলছে, চালকদের লাইসেন্স ভুয়া, প্রশিক্ষণ নেই, এমনকি স্বাস্থ্য পরীক্ষারও বালাই নেই। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ঘুষ, যা আইনের শাসনকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে।

প্রশ্ন হচ্ছেÑ এই প্রাণহানি কি অনিবার্য ছিল? এই অসহায়ত্ব কি আমাদের সবার ভাগ্য হতে হবে? আমরা বিশ্বাস করি, এর পরিবর্তন সম্ভব; কিন্তু তার জন্য চাই কঠোর আইন প্রয়োগ, সড়কের অবকাঠামো উন্নয়ন, যানবাহনের ফিটনেস নিশ্চিতকরণ এবং সর্বোপরি দুর্নীতিমুক্ত ব্যবস্থা।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের দাবিÑ এই মৃত্যুর মিছিল থামান। সড়ক নিরাপত্তা শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, এটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার। এ অধিকার প্রতিষ্ঠায় এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।

সার সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ দরকার

নির্বাচনী সহিংসতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন

প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা যেন অবহেলার শিকার না হয়

প্রাথমিকে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিল : একটি ভুল বার্তা

ঘিওর ভেটেরিনারি হাসপাতালের সংকট দূর করুন

ভূমি অফিসে সেবাপ্রার্থীদের দুর্ভোগ

একটি পাকা সেতুর জন্য অপেক্ষা

নদী থেকে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধ করুন

ইছামতী নদীকে রক্ষা করুন

সন্দেহবশত পিটিয়ে হত্যা: দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জয়দেবপুর রেলক্রসিংয়ে দুর্ভোগের অবসান হোক

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কেন থামছে না?

সারের সংকট আর কত

সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করুন

কক্সবাজার সৈকত রক্ষা করুন

ঐকমত্য কমিশনের উদ্দেশ্য কী?

সড়ক দখলমুক্ত করা জরুরি

কৃষকদের পাশে থাকুন

প্রাথমিক শিক্ষায় সংকট

অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণে ধীরগতি: ঝুঁকিতে মানুষ ও গবাদিপশু

রাজধানীর যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ফিরেছে সিগন্যাল বাতি: বাস্তবায়ন জরুরি

দুস্থদের জন্য নিম্নমানের চাল: দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

নিরাপদ সড়কের আকাঙ্ক্ষা ও বাস্তবতা

কটিয়াদীতে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে অভিযোগ আমলে নিন

ধানখেতে পোকার আক্রমণ: কৃষকের পাশে দাঁড়ান

কৃষিজমির পাশে ইউক্যালিপটাস: লাভ সাময়িক, ক্ষতি দীর্ঘমেয়াদী

খুলনা বিভাগীয় শিশু হাসপাতাল চালু হতে আর কত অপেক্ষা

সদরপুর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে ব্যবস্থা নিন

সরকারি জমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে

রংপুর সিটি করপোরেশনে অটোরিকশার লাইসেন্স প্রসঙ্গে

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ড প্রশ্ন অনেক, উত্তর মিলবে কি

দেবীদ্বার কলেজ মাঠ: অবহেলায় হারাতে বসেছে ঐতিহ্য

সিইপিজেডের আগুন: অবহেলা আর দায়িত্বহীনতার নজির

বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা : ফল বিপর্যয় নাকি বাস্তবতা

কুমারভোগের বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিন

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

সড়ক দুর্ঘটনা নাকি অবহেলার পরিণতি

শনিবার, ০৫ এপ্রিল ২০২৫

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় ঘটে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনা আরেকটি মর্মান্তিক সত্যকে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেÑ এ দেশে সড়ক নিরাপত্তা এখনো স্বপ্নই রয়ে গেছে। এটি শুধু দুর্ঘটনা নয়, বরং বছরের পর বছর ধরে চলে আসা অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার ফল। ঈদের আনন্দযাত্রা যে মৃত্যুর মিছিলে রূপ নিতে পারে, তা ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ কল্পনাও করেনি। তাদের গল্প শুধু ব্যক্তিগত শোকের নয়, বরং একটি জাতীয় ট্র্যাজেডির প্রতিচ্ছবি।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা ও পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত থেকে জানা যায়, বিপজ্জনক বাঁক এবং অতিরিক্ত গতিই এই প্রাণহানির মূল কারণ। এই একই এলাকায় গত সোম ও মঙ্গলবারও পৃথক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে, আহত হয়েছেন অনেকে। তবু কেন এই বিপজ্জনক স্থানে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলো না?

এ ঘটনা শুধু চট্টগ্রামের নয়, পুরো দেশের সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার বাস্তবতাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায়। ঈদের ছুটিতে চার দিনে সড়কে ৬০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, বাসÑ কোনো যানই যাত্রীদের জন্য নিরাপদ নয়। এর পেছনে রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত গতি, অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন এবং সবচেয়ে বড় কারণ নিয়ন্ত্রণহীন দুর্নীতি।

‘দুর্ঘটনা’ শব্দটি এখানে আর প্রযোজ্য নয়। যেখানে প্রতিরোধযোগ্য কারণগুলো বছরের পর বছর ধরে উপেক্ষিত, সেখানে এটি অবহেলাজনিত হত্যা ছাড়া আর কিছু নয়। দেশে মাত্র একটি পরিবহন পরিদর্শন কেন্দ্র রয়েছে, যেখানে দৈনিক ১০০টি যান পরীক্ষা করা হয়, অথচ নিবন্ধিত বাস-ট্রাকের সংখ্যা লাখেরও বেশি। ফিটনেস সনদবিহীন যানবাহন সড়কে চলছে, চালকদের লাইসেন্স ভুয়া, প্রশিক্ষণ নেই, এমনকি স্বাস্থ্য পরীক্ষারও বালাই নেই। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ঘুষ, যা আইনের শাসনকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে।

প্রশ্ন হচ্ছেÑ এই প্রাণহানি কি অনিবার্য ছিল? এই অসহায়ত্ব কি আমাদের সবার ভাগ্য হতে হবে? আমরা বিশ্বাস করি, এর পরিবর্তন সম্ভব; কিন্তু তার জন্য চাই কঠোর আইন প্রয়োগ, সড়কের অবকাঠামো উন্নয়ন, যানবাহনের ফিটনেস নিশ্চিতকরণ এবং সর্বোপরি দুর্নীতিমুক্ত ব্যবস্থা।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের দাবিÑ এই মৃত্যুর মিছিল থামান। সড়ক নিরাপত্তা শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, এটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার। এ অধিকার প্রতিষ্ঠায় এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।

back to top