alt

মতামত » সম্পাদকীয়

নদীর বাঁধ ভাঙার দুর্ভোগ : টেকসই সমাধানের জরুরি প্রয়োজন

: সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ঘটনা একটি মর্মান্তিক দুর্যোগের চিত্র তুলে ধরেছে। গত ৩১ মার্চ ঈদের দিনে নদীর তীব্র জোয়ারের স্রোতে প্রায় ২০০ মিটার বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার পর থেকে ১১টি গ্রামের ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। পাকা ধানের ক্ষেত, মাছের ঘের, বসতবাড়িÑ সবকিছু পানিতে তলিয়ে গিয়ে উপকূলবাসীর স্বপ্ন ভেসে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড চার দিনের প্রচেষ্টার পর গত শুক্রবার জিও টিউবের মাধ্যমে রিংবাঁধ তৈরি করে পানি আটকাতে সক্ষম হলেও, জনদুর্ভোগ এখনও কমেনি। বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের তীব্র সংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছেন এলাকাবাসী। এই ঘটনা শুধু একটি দুর্যোগ নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি অবহেলা ও অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার ফলাফল।

এই দুর্যোগের মূলে রয়েছে টেকসই বেড়িবাঁধের অভাব। খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ বারবার ভাঙার ঘটনা নতুন নয়। প্রতিবারই সাময়িক সমাধান দেয়া হয়, কিন্তু মূল সমস্যার সমাধানে কোনো দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ দেখা যায় না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে আরও দুই বছর সময় লাগতে পারে। কিন্তু এই দুই বছরে আরও কতবার এমন দুর্যোগের শিকার হবে উপকূলবাসী? স্থানীয়রা টেকসই বাঁধের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন, দুর্নীতিমুক্ত প্রকল্পের আকুতি জানিয়েছেন। তাদের এই দাবি শুধু ন্যায্যই নয়, জীবন রক্ষার জন্য অপরিহার্য।

এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। অবিলম্বে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে পরিকল্পিত ও দ্রুত কাজ শুরু করতে হবে। দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় জরুরি ত্রাণ ব্যবস্থাÑ বিশেষ করে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যÑ মজুত রাখতে হবে। কৃষি ও মৎস্য খাতের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার জন্য ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দিতে হবে। সেনা, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের ত্রাণ বিতরণ প্রশংসনীয় হলেও, এটি সাময়িক স্বস্তি মাত্র। দীর্ঘমেয়াদি সমাধান ছাড়া এই দুর্ভোগের চক্র ভাঙা সম্ভব নয়।

খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ ভাঙা শুধু প্রকৃতির রোষ নয়, মানুষের অবহেলা ও অদূরদর্শিতারও প্রতিফলন। উপকূলবাসীর জীবন ও জীবিকা রক্ষায় এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এমন দুর্যোগ বারবার আঘাত হানবে। টেকসই বাঁধ নির্মাণ আর বিলম্বিত প্রকল্পের বিলাসিতা নয়, বরং জীবনের প্রশ্ন। সরকার, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে এখন দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবেÑ যাতে উপকূলবাসী আর স্বপ্ন ভাসতে না দেখেন।

লালমনিরহাটের বিসিক শিল্পনগরীর দুরবস্থা

তৃণমূলে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা, ব্যবস্থা নিন

শ্রীপুরের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে ব্যবস্থা নিন

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে ক্লাস, পদক্ষেপ জরুরি

শিশু ধর্ষণচেষ্টা: সালিসের নামে প্রহসন কাম্য নয়

বিশুদ্ধ পানির প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

সুপেয় পানির জন্য মোরেলগঞ্জের মানুষের অপেক্ষার অবসান হবে কবে

কেন একজন নিরপরাধ মানুষকে কিসের আগুনে পুড়ে মরতে হলো

জেলেদের মাঝে বকনা বাছুর বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ সুরাহা করুন

রাজধানীতে প্রকাশ্যে হত্যা: আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ

নলবিলা খাল খনন করুন

অগ্নি-নিরাপত্তায় উদাসীনতা কাম্য নয়

কারেন্ট পোকা দমনে কৃষককে সহায়তা দিন

আলুর বাজারে নীরব বিপর্যয়

বিদ্যালয়ের মাঠ দখলমুক্ত করুন

টিলায় পাথর লুট : কার্যকর ব্যবস্থা নিন

ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল ভবন সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ দরকার

ডেঙ্গু মোকাবিলায় দায়িত্বহীনতা আর নয়

সার সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ দরকার

নির্বাচনী সহিংসতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন

প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা যেন অবহেলার শিকার না হয়

প্রাথমিকে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিল : একটি ভুল বার্তা

ঘিওর ভেটেরিনারি হাসপাতালের সংকট দূর করুন

ভূমি অফিসে সেবাপ্রার্থীদের দুর্ভোগ

একটি পাকা সেতুর জন্য অপেক্ষা

নদী থেকে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধ করুন

ইছামতী নদীকে রক্ষা করুন

সন্দেহবশত পিটিয়ে হত্যা: দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জয়দেবপুর রেলক্রসিংয়ে দুর্ভোগের অবসান হোক

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কেন থামছে না?

সারের সংকট আর কত

সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করুন

কক্সবাজার সৈকত রক্ষা করুন

ঐকমত্য কমিশনের উদ্দেশ্য কী?

সড়ক দখলমুক্ত করা জরুরি

কৃষকদের পাশে থাকুন

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

নদীর বাঁধ ভাঙার দুর্ভোগ : টেকসই সমাধানের জরুরি প্রয়োজন

সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ঘটনা একটি মর্মান্তিক দুর্যোগের চিত্র তুলে ধরেছে। গত ৩১ মার্চ ঈদের দিনে নদীর তীব্র জোয়ারের স্রোতে প্রায় ২০০ মিটার বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার পর থেকে ১১টি গ্রামের ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। পাকা ধানের ক্ষেত, মাছের ঘের, বসতবাড়িÑ সবকিছু পানিতে তলিয়ে গিয়ে উপকূলবাসীর স্বপ্ন ভেসে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড চার দিনের প্রচেষ্টার পর গত শুক্রবার জিও টিউবের মাধ্যমে রিংবাঁধ তৈরি করে পানি আটকাতে সক্ষম হলেও, জনদুর্ভোগ এখনও কমেনি। বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের তীব্র সংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছেন এলাকাবাসী। এই ঘটনা শুধু একটি দুর্যোগ নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি অবহেলা ও অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার ফলাফল।

এই দুর্যোগের মূলে রয়েছে টেকসই বেড়িবাঁধের অভাব। খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ বারবার ভাঙার ঘটনা নতুন নয়। প্রতিবারই সাময়িক সমাধান দেয়া হয়, কিন্তু মূল সমস্যার সমাধানে কোনো দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ দেখা যায় না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে আরও দুই বছর সময় লাগতে পারে। কিন্তু এই দুই বছরে আরও কতবার এমন দুর্যোগের শিকার হবে উপকূলবাসী? স্থানীয়রা টেকসই বাঁধের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন, দুর্নীতিমুক্ত প্রকল্পের আকুতি জানিয়েছেন। তাদের এই দাবি শুধু ন্যায্যই নয়, জীবন রক্ষার জন্য অপরিহার্য।

এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। অবিলম্বে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে পরিকল্পিত ও দ্রুত কাজ শুরু করতে হবে। দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় জরুরি ত্রাণ ব্যবস্থাÑ বিশেষ করে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যÑ মজুত রাখতে হবে। কৃষি ও মৎস্য খাতের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার জন্য ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দিতে হবে। সেনা, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের ত্রাণ বিতরণ প্রশংসনীয় হলেও, এটি সাময়িক স্বস্তি মাত্র। দীর্ঘমেয়াদি সমাধান ছাড়া এই দুর্ভোগের চক্র ভাঙা সম্ভব নয়।

খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ ভাঙা শুধু প্রকৃতির রোষ নয়, মানুষের অবহেলা ও অদূরদর্শিতারও প্রতিফলন। উপকূলবাসীর জীবন ও জীবিকা রক্ষায় এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এমন দুর্যোগ বারবার আঘাত হানবে। টেকসই বাঁধ নির্মাণ আর বিলম্বিত প্রকল্পের বিলাসিতা নয়, বরং জীবনের প্রশ্ন। সরকার, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে এখন দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবেÑ যাতে উপকূলবাসী আর স্বপ্ন ভাসতে না দেখেন।

back to top