alt

সম্পাদকীয়

রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন

: শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৩

মায়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী দল আল রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমঘুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে একজন রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে ও দুজন রোহিঙ্গা আহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার।

সংবাদ-এর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন দেয়া হয়। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা অতীতেও ঘটেছে। বাংলাদেশে ক্যাম্পগুলোতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে একাধিক সশস্ত্র সংগঠন। শুধু কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠাই নয়, তাদের লক্ষ্য হচ্ছে ক্যাম্পকেন্দ্রিক মাদকবাণিজ্য অস্ত্রবাণিজ্য, চাঁদাবাজি প্রভৃতিতে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা।

অভিযোগ আছে, কোন কোন সংগঠন চায় না যে রোহিঙ্গারা নিজ দেশ মায়ানমারে ফিরে যাক। নিজ দেশ মায়ানমারে ফিরে যেতে চায় এমন রোহিঙ্গাগোষ্ঠীদের সঙ্গেও এদের দ্বন্দ্ব রয়েছে। এই দ্বন্দ্ব অনেক সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়। তাতে অনেকেই হতাহত হয়। প্রসঙ্গক্রমে মুহিবুল্লাহ মাস্টার হত্যা ঘটনার কথা বলা যায়। তিনি নিজ দেশ মায়ানমারে ফিরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ফিরে পাওয়া এবং তাদের নিজ দেশে শান্তিপূর্ণভাবে ফিরে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন। বিভিন্ন দেশে রোহিঙ্গাদের পাচার প্রতিরোধে, রোহিঙ্গাদের খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপকর্মের বিরোধিতা করেন। এ কারণে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

ক্যাম্পকেন্দ্রিক সশস্ত্র সংগঠনগুলোর অপতৎপরতার কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তাও হুমকির মধ্যে পড়েছে। অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা, চাঁদাবাজি প্রভৃতির মতো গুরুতর অপরাধের শিকার হতে হয়েছে অনেককেই।

ক্যাম্পগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত আছে। এরপরও সেখানে প্রায়ই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ কারণে প্রশ্ন উঠেছে যে, সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আসলে কতটা কার্যকরী। প্রায়ই দেখা যায় যে অপরাধ করে অপরাধীরা নির্বিঘ্নে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা যদি নিশ্ছিদ্রই হবে তাহলে তারা অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সদলবলে ক্যাম্পগুলোয় প্রবেশ করে কিভাবে, আর অপরাধ সংঘটিত করে বিনা বাধায় সটকে পড়ে কিভাবে? বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে কাউকে কাউকে গ্রেপ্তার করা হলেও নেপথ্যের শক্তি ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। এই নেপথ্যের শক্তি বা তাদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া না হলে ক্যাম্পকেন্দ্রিক সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ করা কঠিন হবে।

বুধবার দু’পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে সীমান্তের শূন্যরেখায়। বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী এ ঘটনায় হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার সংশ্লিষ্ট কোন কর্তৃপক্ষের নেই। তারপরও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি বাড়াতে হবে।

সরকারকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মনোযোগী হতে হবে। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মায়ানমারে যতদিন পর্যন্ত ফেরানো না যাবে, ততদিন পর্যন্ত সমস্যার সমাধান মিলবে না।

এই যুদ্ধবিরতি হোক স্থায়ী শান্তির সূচনা

তাপপ্রবাহে চাই সতর্কতা, সচেতনতা ও সুরক্ষা পরিকল্পনা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

ইকোপার্কের করুণ দশা : দায় কার

হাতি শাবকের মৃত্যু ও সাফারি পার্কের দায়ভার

বায়ুদূষণ রোধে চাই টেকসই উদ্যোগ

মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন

চালের দামে অস্বস্তি : সরকারি তথ্য ও বাজারের বাস্তবতার ফারাক

অতিদারিদ্র্যের আশঙ্কা : সমাধান কোথায়?

ডিমলা উপজেলা হাসপাতালের অনিয়ম

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের অপেক্ষা কবে ফুরাবে

হাইল হাওরের অস্তিত্ব সংকট

সমানাধিকারে আপত্তি কেন?

লেমুর চুরি : সাফারি পার্কের নিরাপত্তা সংকট

একটি হাসাহাসির ঘটনা, একটি হত্যাকাণ্ড : সমাজের সহিষ্ণুতার অবক্ষয়

চাই সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

মানুষ-হাতির সংঘাত : সমাধানের পথ খুঁজতে হবে

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সংকট দূর করুন

ফসলি জমি রক্ষায় কঠোর হোন

নিষ্ঠুরতার শিকার হাতি

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও নাগরিক অধিকার

হালদায় অবৈধ মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে

মশার উপদ্রব : বর্ষার আগেই সাবধান হতে হবে

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা : মানবতার প্রতি এক অব্যাহত আঘাত

অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদে প্রাণহানি : দায় কার?

নদীর বাঁধ ভাঙার দুর্ভোগ : টেকসই সমাধানের জরুরি প্রয়োজন

মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা সংকট

সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা : কঠোর নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপ জরুরি

সড়ক দুর্ঘটনা নাকি অবহেলার পরিণতি

ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ ও আমাদের প্রস্তুতি

বার্ড ফ্লু : আতঙ্ক নয়, চাই সতর্কতা

জাটকা রক্ষার প্রতিশ্রুতি কি শুধুই কাগজে-কলমে?

tab

সম্পাদকীয়

রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন

শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৩

মায়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী দল আল রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমঘুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে একজন রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে ও দুজন রোহিঙ্গা আহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার।

সংবাদ-এর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন দেয়া হয়। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা অতীতেও ঘটেছে। বাংলাদেশে ক্যাম্পগুলোতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে একাধিক সশস্ত্র সংগঠন। শুধু কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠাই নয়, তাদের লক্ষ্য হচ্ছে ক্যাম্পকেন্দ্রিক মাদকবাণিজ্য অস্ত্রবাণিজ্য, চাঁদাবাজি প্রভৃতিতে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা।

অভিযোগ আছে, কোন কোন সংগঠন চায় না যে রোহিঙ্গারা নিজ দেশ মায়ানমারে ফিরে যাক। নিজ দেশ মায়ানমারে ফিরে যেতে চায় এমন রোহিঙ্গাগোষ্ঠীদের সঙ্গেও এদের দ্বন্দ্ব রয়েছে। এই দ্বন্দ্ব অনেক সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়। তাতে অনেকেই হতাহত হয়। প্রসঙ্গক্রমে মুহিবুল্লাহ মাস্টার হত্যা ঘটনার কথা বলা যায়। তিনি নিজ দেশ মায়ানমারে ফিরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ফিরে পাওয়া এবং তাদের নিজ দেশে শান্তিপূর্ণভাবে ফিরে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন। বিভিন্ন দেশে রোহিঙ্গাদের পাচার প্রতিরোধে, রোহিঙ্গাদের খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপকর্মের বিরোধিতা করেন। এ কারণে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

ক্যাম্পকেন্দ্রিক সশস্ত্র সংগঠনগুলোর অপতৎপরতার কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তাও হুমকির মধ্যে পড়েছে। অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা, চাঁদাবাজি প্রভৃতির মতো গুরুতর অপরাধের শিকার হতে হয়েছে অনেককেই।

ক্যাম্পগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত আছে। এরপরও সেখানে প্রায়ই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ কারণে প্রশ্ন উঠেছে যে, সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আসলে কতটা কার্যকরী। প্রায়ই দেখা যায় যে অপরাধ করে অপরাধীরা নির্বিঘ্নে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা যদি নিশ্ছিদ্রই হবে তাহলে তারা অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সদলবলে ক্যাম্পগুলোয় প্রবেশ করে কিভাবে, আর অপরাধ সংঘটিত করে বিনা বাধায় সটকে পড়ে কিভাবে? বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে কাউকে কাউকে গ্রেপ্তার করা হলেও নেপথ্যের শক্তি ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। এই নেপথ্যের শক্তি বা তাদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া না হলে ক্যাম্পকেন্দ্রিক সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ করা কঠিন হবে।

বুধবার দু’পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে সীমান্তের শূন্যরেখায়। বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী এ ঘটনায় হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার সংশ্লিষ্ট কোন কর্তৃপক্ষের নেই। তারপরও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি বাড়াতে হবে।

সরকারকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মনোযোগী হতে হবে। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মায়ানমারে যতদিন পর্যন্ত ফেরানো না যাবে, ততদিন পর্যন্ত সমস্যার সমাধান মিলবে না।

back to top