alt

মতামত » চিঠিপত্র

চিঠি : ডিসেম্বরের স্মৃতি

: বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

ঘন কুয়াশা আর উত্তুরে হাওয়া জানান দিত প্রকৃতিতে শীতের আগমন। সেই সাথে আমরাও চলতি বছরের পড়ালেখাকে বিদায় জানানোর জন্য প্রস্ততি গ্রহন করতাম। নভেম্বরের শেষে বা ডিসেম্বরের শুরুতে আমাদের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হতো। পরীক্ষা শেষ মানে সকাল-বিকাল প্রাইভেট, ক্লাস ও সন্ধা পড়তে বসা থেকে ছুটি। সেই ছুটি চলবে নতুন ক্লাসে উঠার আগপর্যন্ত।

খুব ভোরে ঘুম ভাঙ্গলেও কম্বলের নিচে চুপ মেরে শুয়ে থাকতাম। যেহেতু স্কুলে যাওয়ার তাড়া নেই। তাই আম্মুও ডাকবে না। রান্না ঘর থেকে আসা নানা রকম পিঠা-পুলি ও খেজুরের রসের ঘ্রাণ লোভ সামলাতে না পেরে উঠতে বাধ্য হতাম। ধোঁয়া ওঠা মজাদার পিঠায় সকালের নাস্তা শেষ।

সকালবেলা কনকনে ঠান্ডা থেকে বাঁচতে উঠোনে বসে রোদ পোহাতাম। কুয়াশা একটু কমে এলে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়তাম। ক্ষেতের আঁইল ধরে ঘাসের উপর জমে কুয়াশা মধ্যে দিয়ে হাঁটা শুরু করতাম। দিগন্ত বিস্মৃত সোনালী ধান ও রঙবেরঙের শাকসবজির মাঠ। অনেকে ছেলেরা সামনের ঈদের জন্য টাকা জমানোর উদ্দেশ্য কৃষকদের চুক্তিতে ধান কেটে দিতো।

বাড়িতে বাড়িতে চলতো ধান মাড়াইয়ের কাজ। বড়দের থেকে চাঁদা তুলে ও বাড়ি থেকে চাল, ডাল, তেল, মসলা ভাগাভাগি করে এনে ইট দিয়ে চুলা বানিয়ে চড়ুইভাতির আয়োজন করতাম। বিকেলের সময়টাতে ক্রিকেট, ফুটবল খেলার মাঠ জমে উঠত। সন্ধায় সবাই মিলে গ্রামের রাস্তা ধরে হেঁটে বাজারে হতো। নানা রকম খাবার খেতাম। রাতে বাড়ি ফিরে খড়ের স্তূপে লুকোচুরি খেলতাম।

রাতে ব্যাডমিন্টন খেলা ও খড়কুটা জ্বালিয়ে আগুন পোহানো। খালাতো ভাইবোন সবাই মিলে মামার বাড়িতে বেড়াতে যেতাম। চাঁদের আলোতে গল্পের আসর বসত। সবাই মিলে কত মজা করতাম। বাড়ির সবাই মিলে দূরে কোথাও ঘুরতে যেতাম। শীতের সময় গ্রামগুলোতে বিয়ের ধুম পড়ত। চাইলে ও ফিরে যেতে পারবো না ছোটবেলার দিনগুলোতে। এখন সবই শুধু স্মৃতি।

এই যুগের ছেলেমেয়ের কাছে মনে হতে পারে এটি কোনো রূপকথার গল্প। কারণ গ্রামগুলোতে আগের মতো পিঠাপুলি তৈরির ধুম পড়ে না। রোগের ভয়ে কেউ ঘর থেকে বের হয় না। গ্রাম গুলোতে নগরায়ন হয়েছে। প্রযুক্তি এসেছে হাতের মুঠোয়। আলোকিত হয়েছে পথঘাট। মানুষ হয়ে উঠেছে ঘরবন্দি।

ফরহাদ হোসেন

গ্রামীণ অর্থনীতিতে কৃষির অবদান

শহরের পাখিরা যখন মরার প্রহর গুনে

ধর্মের নামে বর্বরতা

টেকসই শহরের একান্ত প্রয়োজন

সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা সংস্কৃতি গড়ে তোলা জরুরি

সুন্দরবনের বাঘ ও জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : আর্শীবাদ নাকি অভিশাপ

সমুদ্রগবেষণায় পশ্চাৎপদতা মৎস্য খাতের ভবিষ্যৎকেই ঝুঁকিতে ফেলছে

কিশোর গ্যাং–সংস্কৃতি: সমাজের জন্য বাড়তে থাকা অশনি সংকেত

ডিগ্রি হাতে, চাকরি স্বপ্নে: শিক্ষিত বেকারদের মানসিক ক্ষয়

সরকারি কর্মচারীদের কর্মেই মুক্তি নাকি আন্দোলনে?

কর্মজীবী নারীর অদৃশ্য মানসিক বোঝা

নগর সংস্কৃতিতে ঐতিহ্যের বিলুপ্তি

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আগাম সতর্কবার্তাই কি যথেষ্ট?

সুলতানপুরে করতোয়া নদীর তাণ্ডব: নদীভাঙনে মানুষের জীবন বিপন্ন

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সম্ভাবনা বিস্তৃত, অনিয়মের ছায়াও গভীর

গেন্ডারিয়ায় সড়ক ও ড্রেন সংস্কারে অনিয়ম: জনদূর্ভোগ বৃদ্ধি

প্রবীণদের সুরক্ষা ও মর্যাদা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি

পলিভিনাইলের ব্যবহার প্রতিরোধ জরুরি

বৈধ সনদধারীদের অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি

টেকসই দুর্যোগ প্রস্তুতিতে জরুরি বাস্তব পদক্ষেপ প্রয়োজন

জলবায়ু পরিবর্তন ও নারী ও কিশোরীদের ঝুঁকি

মেধা হারাচ্ছে দেশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় : অযৌক্তিক ফি, সেশনজট ও প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলায় বিপর্যস্ত শিক্ষার্থী

সামাজিক মাধ্যমের ভুবনে জনতুষ্টিবাদের নতুন রূপ

ভেজাল খেজুরগুড় ও স্বাস্থ্যঝুঁকি

হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় প্রশাসনিক ক্যাডারের প্রয়োজনীয়তা

প্লাস্টিক বর্জ্যে মাছের মৃত্যু: সমাধান কোথায়

খোলা ম্যানহোল: ঢাকার রাজপথে এক নীরব মরণফাঁদ

গণপরিবহন: প্রতিদিনের যন্ত্রণার শেষ কবে?

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পুনর্জাগরণ

সাইবার বুলিং ও ভার্চুয়াল অপরাধ: তরুণদের অদৃশ্য বিপদ

ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে নগরজীবনের চরম ভোগান্তি

রাবি মেডিকেল সেন্টারের সংস্কার চাই

চিংড়ি শিল্পের পরিবেশগত প্রভাব

কক্সবাজার: উন্নয়নের পথে, বিপন্ন প্রকৃতি

tab

মতামত » চিঠিপত্র

চিঠি : ডিসেম্বরের স্মৃতি

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩

ঘন কুয়াশা আর উত্তুরে হাওয়া জানান দিত প্রকৃতিতে শীতের আগমন। সেই সাথে আমরাও চলতি বছরের পড়ালেখাকে বিদায় জানানোর জন্য প্রস্ততি গ্রহন করতাম। নভেম্বরের শেষে বা ডিসেম্বরের শুরুতে আমাদের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হতো। পরীক্ষা শেষ মানে সকাল-বিকাল প্রাইভেট, ক্লাস ও সন্ধা পড়তে বসা থেকে ছুটি। সেই ছুটি চলবে নতুন ক্লাসে উঠার আগপর্যন্ত।

খুব ভোরে ঘুম ভাঙ্গলেও কম্বলের নিচে চুপ মেরে শুয়ে থাকতাম। যেহেতু স্কুলে যাওয়ার তাড়া নেই। তাই আম্মুও ডাকবে না। রান্না ঘর থেকে আসা নানা রকম পিঠা-পুলি ও খেজুরের রসের ঘ্রাণ লোভ সামলাতে না পেরে উঠতে বাধ্য হতাম। ধোঁয়া ওঠা মজাদার পিঠায় সকালের নাস্তা শেষ।

সকালবেলা কনকনে ঠান্ডা থেকে বাঁচতে উঠোনে বসে রোদ পোহাতাম। কুয়াশা একটু কমে এলে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়তাম। ক্ষেতের আঁইল ধরে ঘাসের উপর জমে কুয়াশা মধ্যে দিয়ে হাঁটা শুরু করতাম। দিগন্ত বিস্মৃত সোনালী ধান ও রঙবেরঙের শাকসবজির মাঠ। অনেকে ছেলেরা সামনের ঈদের জন্য টাকা জমানোর উদ্দেশ্য কৃষকদের চুক্তিতে ধান কেটে দিতো।

বাড়িতে বাড়িতে চলতো ধান মাড়াইয়ের কাজ। বড়দের থেকে চাঁদা তুলে ও বাড়ি থেকে চাল, ডাল, তেল, মসলা ভাগাভাগি করে এনে ইট দিয়ে চুলা বানিয়ে চড়ুইভাতির আয়োজন করতাম। বিকেলের সময়টাতে ক্রিকেট, ফুটবল খেলার মাঠ জমে উঠত। সন্ধায় সবাই মিলে গ্রামের রাস্তা ধরে হেঁটে বাজারে হতো। নানা রকম খাবার খেতাম। রাতে বাড়ি ফিরে খড়ের স্তূপে লুকোচুরি খেলতাম।

রাতে ব্যাডমিন্টন খেলা ও খড়কুটা জ্বালিয়ে আগুন পোহানো। খালাতো ভাইবোন সবাই মিলে মামার বাড়িতে বেড়াতে যেতাম। চাঁদের আলোতে গল্পের আসর বসত। সবাই মিলে কত মজা করতাম। বাড়ির সবাই মিলে দূরে কোথাও ঘুরতে যেতাম। শীতের সময় গ্রামগুলোতে বিয়ের ধুম পড়ত। চাইলে ও ফিরে যেতে পারবো না ছোটবেলার দিনগুলোতে। এখন সবই শুধু স্মৃতি।

এই যুগের ছেলেমেয়ের কাছে মনে হতে পারে এটি কোনো রূপকথার গল্প। কারণ গ্রামগুলোতে আগের মতো পিঠাপুলি তৈরির ধুম পড়ে না। রোগের ভয়ে কেউ ঘর থেকে বের হয় না। গ্রাম গুলোতে নগরায়ন হয়েছে। প্রযুক্তি এসেছে হাতের মুঠোয়। আলোকিত হয়েছে পথঘাট। মানুষ হয়ে উঠেছে ঘরবন্দি।

ফরহাদ হোসেন

back to top