মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর কিংবা লুটেরাকে সমাজ যখন বাধা না দেয় তখন সে বেপরোয়া হয়। ক্ষমতা এবং অর্থের লোভ মানুষকে অন্ধ বানালে দুনিয়ার এহেন দুর্নীতি নাই যাতে সে নিজেকে জড়াতে না পারে। তখন সে দখল করে সুখ পায়, অন্যায় করে জনপ্রিয়তা ছড়ায়। মানুষের মাঝে ভীতি ছড়িয়ে, মানুষকে শাসিয়ে কিংবা মানুষের সম্পদ লুন্টন করে মিথ্যার যে বেসাতিতে নিজেকে রাজা বানায় সেখানে ন্যায়ের চিহ্নের লেশমাত্র থাকে না। মানুষের জন্য দরদ কিংবা মানুষের অধিকার বাঁচে না। সে রাষ্ট্রের সম্পদ তছরুপ করে এবং দুর্বলকে পিষে মারে। ক্ষমতার কালে নানাভাবে মানুষকে ত্যক্ত-বিরক্ত করতেও দ্বিধা করে না।
অন্যায়কারী যখন মনে করতে শুরু করে সব তার, সবাই তাকে মানতে বাধ্য কিংবা তার ইচ্ছাতেই সবকিছু ঘটে তখন সে দুনিয়ায় সর্বোচ্চ স্বৈরাচার হিসেবে প্রকাশিত হয়। খুন-জখম, হয়রানি-দখল এসব তার কাছে তুচ্ছাতিতুচ্ছ বিষয় মনে হয়। দুর্নীতিবাজের সা¤্রাজ্য মানুষের বসবাস নাভিশ্বাস হয়ে ওঠে। সমাজস্থরা প্রশ্রয় দিতে দিতে, অন্যায় মানতে মানতে কিংবা চুপ থাকতে থাকতে জনতার ভোটে জয়ী সেবক দানবের রূপ পরিগ্রহ করে।
প্রত্যেক নীতিবান মানুষের উচিত সর্বশক্তি সহযোগে অন্যায়ের প্রতিরোধ করা। অন্যায় বন্ধে শক্তি প্রয়োগ করা। যদি অপরাধ সংঘটনকারী শক্তিমান হয় তবে প্রতিবাদ জানাতে হবে। বলে ও লিখে ভিন্নমত প্রকাশ করতে হবে। যদি সেটাও সম্ভব না হয় তবে অন্যায়ের প্রতি ঘৃণা পোষণ করতে হবে।
সমাজে কারা কত দুর্নীতি করে, কাদের অন্যায়ের সাথে দোস্তি কিংবা কোন মহল নিজেদের স্বার্থে রাষ্ট্রের স্বার্থ বিক্রি করে তা স্পষ্ট। তাদের সাথে সাধারণরা শক্তিতে না পারলেও অসাধারণ কৌশলে পারবে। যারা নীতিহীন তারা নৈতিক সাহসে দুর্বল হয়। তাদের মধ্যে ভয় থাকে। হামভরা হাবভাবে তারা নিজেকে আড়াল করতে চায়। তারা সমাজের মোড়ল হিসেবে নিজেদেরকে জাহির করে। কন্ঠস্বরের তেজ দেখিয়ে মানুষকে ভয় দেখাতে চায় কিন্তু তারা কুলিয়ে ওঠে না। যখন তারা অবসরে যাবে তখন দুর্নীতিবাজ-ঘুষখোর বলে ডাকাডাকি করলেও অন্যায়-দুঃশাসনের চর্চা অনেকটা স্তিমিত হবে। যে মানুষকে অধিকার বঞ্চিত করেছে, রাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুন্ন করেছে কিংবা নাগরিক সেবা নিশ্চিত করেনি- তারা পরিত্যাজ্য হোক। অসম্মান তাদের বরাত। চোর চোর বলে যতদিনে তাদেরকে বয়কট করা না যাবে ততদিন এই সমাজ-রাষ্ট্রব্যবস্থা শুধরাবে না। সিস্টেমের মধ্যেও যারা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সিস্টেম চালু রেখেছে তারা বাংলাদেশের সংস্কার-প্রগতিতে বাধা। সমাজ-সংসারের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্তর থেকে দুর্নীতিবাজ-ঘুষখোরকে চিহ্নিত করে তাদের বুঝিয়ে দিতে হবে- জনগণ তাদেরকে ঘৃণা করে।
অন্যায়-অপদখলের বিরুদ্ধে যতদিনে সামাজিক আন্দোলন বেগবান না হবে ততদিনে কিছুই পাল্টাবে না। আপনি পাল্টানোর আগে আমি না পাল্টালে দুধ দিয়ে রাজার পুকুর ভরার গল্পের মতই রাষ্ট্র সংস্কারের স্বপ্ন পরনির্ভর অবাস্তব থেকে যাবে।
রাজু আহমেদ
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪
দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর কিংবা লুটেরাকে সমাজ যখন বাধা না দেয় তখন সে বেপরোয়া হয়। ক্ষমতা এবং অর্থের লোভ মানুষকে অন্ধ বানালে দুনিয়ার এহেন দুর্নীতি নাই যাতে সে নিজেকে জড়াতে না পারে। তখন সে দখল করে সুখ পায়, অন্যায় করে জনপ্রিয়তা ছড়ায়। মানুষের মাঝে ভীতি ছড়িয়ে, মানুষকে শাসিয়ে কিংবা মানুষের সম্পদ লুন্টন করে মিথ্যার যে বেসাতিতে নিজেকে রাজা বানায় সেখানে ন্যায়ের চিহ্নের লেশমাত্র থাকে না। মানুষের জন্য দরদ কিংবা মানুষের অধিকার বাঁচে না। সে রাষ্ট্রের সম্পদ তছরুপ করে এবং দুর্বলকে পিষে মারে। ক্ষমতার কালে নানাভাবে মানুষকে ত্যক্ত-বিরক্ত করতেও দ্বিধা করে না।
অন্যায়কারী যখন মনে করতে শুরু করে সব তার, সবাই তাকে মানতে বাধ্য কিংবা তার ইচ্ছাতেই সবকিছু ঘটে তখন সে দুনিয়ায় সর্বোচ্চ স্বৈরাচার হিসেবে প্রকাশিত হয়। খুন-জখম, হয়রানি-দখল এসব তার কাছে তুচ্ছাতিতুচ্ছ বিষয় মনে হয়। দুর্নীতিবাজের সা¤্রাজ্য মানুষের বসবাস নাভিশ্বাস হয়ে ওঠে। সমাজস্থরা প্রশ্রয় দিতে দিতে, অন্যায় মানতে মানতে কিংবা চুপ থাকতে থাকতে জনতার ভোটে জয়ী সেবক দানবের রূপ পরিগ্রহ করে।
প্রত্যেক নীতিবান মানুষের উচিত সর্বশক্তি সহযোগে অন্যায়ের প্রতিরোধ করা। অন্যায় বন্ধে শক্তি প্রয়োগ করা। যদি অপরাধ সংঘটনকারী শক্তিমান হয় তবে প্রতিবাদ জানাতে হবে। বলে ও লিখে ভিন্নমত প্রকাশ করতে হবে। যদি সেটাও সম্ভব না হয় তবে অন্যায়ের প্রতি ঘৃণা পোষণ করতে হবে।
সমাজে কারা কত দুর্নীতি করে, কাদের অন্যায়ের সাথে দোস্তি কিংবা কোন মহল নিজেদের স্বার্থে রাষ্ট্রের স্বার্থ বিক্রি করে তা স্পষ্ট। তাদের সাথে সাধারণরা শক্তিতে না পারলেও অসাধারণ কৌশলে পারবে। যারা নীতিহীন তারা নৈতিক সাহসে দুর্বল হয়। তাদের মধ্যে ভয় থাকে। হামভরা হাবভাবে তারা নিজেকে আড়াল করতে চায়। তারা সমাজের মোড়ল হিসেবে নিজেদেরকে জাহির করে। কন্ঠস্বরের তেজ দেখিয়ে মানুষকে ভয় দেখাতে চায় কিন্তু তারা কুলিয়ে ওঠে না। যখন তারা অবসরে যাবে তখন দুর্নীতিবাজ-ঘুষখোর বলে ডাকাডাকি করলেও অন্যায়-দুঃশাসনের চর্চা অনেকটা স্তিমিত হবে। যে মানুষকে অধিকার বঞ্চিত করেছে, রাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুন্ন করেছে কিংবা নাগরিক সেবা নিশ্চিত করেনি- তারা পরিত্যাজ্য হোক। অসম্মান তাদের বরাত। চোর চোর বলে যতদিনে তাদেরকে বয়কট করা না যাবে ততদিন এই সমাজ-রাষ্ট্রব্যবস্থা শুধরাবে না। সিস্টেমের মধ্যেও যারা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সিস্টেম চালু রেখেছে তারা বাংলাদেশের সংস্কার-প্রগতিতে বাধা। সমাজ-সংসারের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্তর থেকে দুর্নীতিবাজ-ঘুষখোরকে চিহ্নিত করে তাদের বুঝিয়ে দিতে হবে- জনগণ তাদেরকে ঘৃণা করে।
অন্যায়-অপদখলের বিরুদ্ধে যতদিনে সামাজিক আন্দোলন বেগবান না হবে ততদিনে কিছুই পাল্টাবে না। আপনি পাল্টানোর আগে আমি না পাল্টালে দুধ দিয়ে রাজার পুকুর ভরার গল্পের মতই রাষ্ট্র সংস্কারের স্বপ্ন পরনির্ভর অবাস্তব থেকে যাবে।
রাজু আহমেদ