মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
ডিপ্রেশন বা বিষণœতা বর্তমান সমাজে একটি নীরব মহামারী আকার ধারণ করেছে। যা ধীরে ধীরে শিশু, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক এবং বৃদ্ধদের জীবনেও গভীরভাবে প্রভাব ফেলছে। এই মানসিক অসুস্থতা এমন একটি অবস্থা, যেখানে একজন মানুষ ধীরে ধীরে ক্রমাগতভাবে হতাশা, একাকীত্ব এবং বিচ্ছিন্নতার গভীরে তলিয়ে যায়। এটি এমন একটি বিষয় যা শুধু ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব ফেলে না; বরং সামগ্রিকভাবে সমাজ ও পরিবারের উপরেও ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে।
ডিপ্রেশন একটি ব্যক্তিগত সমস্যা হলেও এর প্রভাব পুরো সমাজে ছড়িয়ে পড়ে। ডিপ্রেশন আক্রান্ত মানুষদের কর্মক্ষমতা এবং উৎপাদনশীলতা হ্রাস পায়, যা অর্থনৈতিক দিক থেকে সমাজের ওপর প্রভাব ফেলে। সমাজের সদস্যরা যখন বিষণ্ণতার শিকার হয়, তখন তারা তাদের কাজ এবং দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে ব্যর্থ হন। কর্মজীবনে উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাওয়ার ফলে অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এমনকি অপরাধের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়, যা সমাজের মধ্যে একটি অস্থিরতা এবং বিশৃৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এর পাশাপাশি, বিষণœতার কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়, যা একটি পরিবারকে মানসিকভাবে এবং আর্থিকভাবে ভেঙে দিতে পারে। বিষণœতা মোকাবিলায় প্রয়োজন মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রসার এবং পেশাদার মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ। এটি শুধু ব্যক্তি পর্যায়ে সমস্যার সমাধান করবে না বরং এটি পরিবার এবং সমাজের উন্নয়নে বিশেষভাবে সাহায্য করবে। প্রথমেই পরিবারে সহানুভূতির পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন, যেন প্রতিটি সদস্য তার মানসিক অবস্থা খোলাখুলিভাবে পরিবারের কাছে প্রকাশ করতে পারে এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্ত হতে পারে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং কর্মস্থলে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন কর্মশালা এবং কাউন্সেলিং সেশন আয়োজন করা দরকার। শিশু এবং তরুণদের জন্য মানসিক প্রশিক্ষণ ও সুস্থ মানসিক বিকাশের কার্যক্রম চালানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বন্ধুবান্ধব এবং সহকর্মীদের মানসিক সহায়তার জন্য একে অপরের কাছে অবাধে কথা বলার সুযোগ থাকা উচিত।
একটি সহানুভূতিশীল সমাজ গড়ে তুলতে পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সমাজের বিভিন্ন অংশের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। আমাদের সমাজকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যেন মানুষ মানসিক সমস্যাকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারে এবং প্রয়োজনীয় সাহায্য গ্রহণ করতে দ্বিধা না করে। সমাজের প্রত্যেক সদস্যের জন্য প্রয়োজনীয় মানসিক সুরক্ষার ব্যবস্থা করে একটি সুস্থ, সুখী এবং সক্রিয় সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। তাই একটি রঙিন সমাজ গঙ তোলার জন্য ডিপ্রেশন বাদ দিয়ে সহানুভূতিশীল হওয়া অনেক দরকার।
হালিমা আক্তার হানি
দর্শন বিভাগ, রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪
ডিপ্রেশন বা বিষণœতা বর্তমান সমাজে একটি নীরব মহামারী আকার ধারণ করেছে। যা ধীরে ধীরে শিশু, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক এবং বৃদ্ধদের জীবনেও গভীরভাবে প্রভাব ফেলছে। এই মানসিক অসুস্থতা এমন একটি অবস্থা, যেখানে একজন মানুষ ধীরে ধীরে ক্রমাগতভাবে হতাশা, একাকীত্ব এবং বিচ্ছিন্নতার গভীরে তলিয়ে যায়। এটি এমন একটি বিষয় যা শুধু ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব ফেলে না; বরং সামগ্রিকভাবে সমাজ ও পরিবারের উপরেও ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে।
ডিপ্রেশন একটি ব্যক্তিগত সমস্যা হলেও এর প্রভাব পুরো সমাজে ছড়িয়ে পড়ে। ডিপ্রেশন আক্রান্ত মানুষদের কর্মক্ষমতা এবং উৎপাদনশীলতা হ্রাস পায়, যা অর্থনৈতিক দিক থেকে সমাজের ওপর প্রভাব ফেলে। সমাজের সদস্যরা যখন বিষণ্ণতার শিকার হয়, তখন তারা তাদের কাজ এবং দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে ব্যর্থ হন। কর্মজীবনে উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাওয়ার ফলে অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এমনকি অপরাধের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়, যা সমাজের মধ্যে একটি অস্থিরতা এবং বিশৃৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এর পাশাপাশি, বিষণœতার কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়, যা একটি পরিবারকে মানসিকভাবে এবং আর্থিকভাবে ভেঙে দিতে পারে। বিষণœতা মোকাবিলায় প্রয়োজন মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রসার এবং পেশাদার মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ। এটি শুধু ব্যক্তি পর্যায়ে সমস্যার সমাধান করবে না বরং এটি পরিবার এবং সমাজের উন্নয়নে বিশেষভাবে সাহায্য করবে। প্রথমেই পরিবারে সহানুভূতির পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন, যেন প্রতিটি সদস্য তার মানসিক অবস্থা খোলাখুলিভাবে পরিবারের কাছে প্রকাশ করতে পারে এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্ত হতে পারে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং কর্মস্থলে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন কর্মশালা এবং কাউন্সেলিং সেশন আয়োজন করা দরকার। শিশু এবং তরুণদের জন্য মানসিক প্রশিক্ষণ ও সুস্থ মানসিক বিকাশের কার্যক্রম চালানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বন্ধুবান্ধব এবং সহকর্মীদের মানসিক সহায়তার জন্য একে অপরের কাছে অবাধে কথা বলার সুযোগ থাকা উচিত।
একটি সহানুভূতিশীল সমাজ গড়ে তুলতে পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সমাজের বিভিন্ন অংশের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। আমাদের সমাজকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যেন মানুষ মানসিক সমস্যাকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারে এবং প্রয়োজনীয় সাহায্য গ্রহণ করতে দ্বিধা না করে। সমাজের প্রত্যেক সদস্যের জন্য প্রয়োজনীয় মানসিক সুরক্ষার ব্যবস্থা করে একটি সুস্থ, সুখী এবং সক্রিয় সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। তাই একটি রঙিন সমাজ গঙ তোলার জন্য ডিপ্রেশন বাদ দিয়ে সহানুভূতিশীল হওয়া অনেক দরকার।
হালিমা আক্তার হানি
দর্শন বিভাগ, রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী।