alt

চিঠিপত্র

বাধা যেখানে পথ সেখানেই

: বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

‘প্রতিবন্ধী’ শব্দটা শুনলেই মনসপটে ভেসে ওঠে সমাজে পিছিয়ে পড়া একাংশের চিত্র; যারা জীবনমান উন্নয়নের মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন। ‘বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ আইন ২০০১’ অনুসারে মোট সাত ধরনের প্রতিবন্ধকতা বিদ্যমান; যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ। যেমন- দৃষ্টি, শ্রবণ, বাক, সেরিব্রাল পালসি, বুদ্ধি, শারীরিক এবং বহুমুখী।

সীমাবদ্ধতা মানেই হেরে যাওয়া নয় বরং ভেতরের অদম্য শক্তি অনুসন্ধানের সুযোগ। কাজেই প্রতিবন্ধকতা কোনো অপরাধ নয়; প্রতিবন্ধীরা নয় পাপের ফসল। নিজেকে প্রমাণের উপযুক্ত সুযোগ পেলে তারাও দক্ষ জনশক্তি হয়ে উঠতে পারে, সভ্যতার কল্যাণে স্বাক্ষর রাখতে পারে। প্রয়োজন শুধু আপনার একটুখানি সহযোগিতার ছোঁয়া।

সঠিক সহচার্যের সান্নিধ্য পেয়ে ‘হেলেন কেলার’ হয়ে উঠেছিলেন অন্ধকারে আলো জ্বালা এক দীপশিখা। তার শিক্ষক অ্যানি সুলিভানের স্পর্শ-অনুভূতির মাধ্যমে শিক্ষাদান এটাই প্রমাণ করে, জীবনের চাকা যদি একপাশে থেমে যায় তবে অন্যপাশে ঘুরিয়ে দিতে হয়। যার সুদূরপ্রসারি প্রতিফলন দেখা যায়- দৃষ্টিহীন নাহিয়ান বুশরার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিকূলতা জয়ের চ্যালেজ্ঞে।

প্রতিবন্ধীদের নিজস্ব জগৎ অত্যন্ত ছোট। তাই তাদের জানতে, বুঝতে, চিনতে হলে আপনাকেই তাদের পৃথিবীতে আসতে হবে। একবার তাদের আপন হয়ে উঠলে তারা আপনার জন্য নিবেদিত প্রাণ হতে দ্বিধা করবে না। কাজেই তাদের সাথে নিয়ে এগোতে হলে, কূপম-ুক মানসিকতা যেমন- রাস্তায় তাকিয়ে দেখার মতো বিনা বেতনের চাকরি পরিহার করতে হবে। ভিক্ষাবৃত্তির মতো মর্যাদাহীন কাজ থেকে অক্ষম ব্যক্তিদের বিরত রাখতে হবে।

বাস্তবতা নিষ্ঠুর, তাই প্রতিবন্ধীদের অযথা ভাগ্যকে দোষারোপ বন্ধ করে, স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি যোগ্যতা অর্জনে সচেষ্ট হতে হবে।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২০১৩ শুধু খাতা কলমে নয়, বাস্তব প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। তাদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বয় জরুরি। তাদের ভৌত ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।

ইউনিসেফ এর আহ্বানে ‘জাতীয় প্রতিবন্ধী ব্যক্তি জরিপ ২০১১’ অনুসারে, মোট প্রতিবন্ধীর ৬০ শতাংশ শিক্ষার বাহিরে অবস্থিত।

সরকারের একার পক্ষে কখনো বৈষম্য দূর করা সম্ভব নয়; সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রত্যেককে নিজ-নিজ অবস্থান হতে পরিবর্তনের উদ্যোগ নিতে হবে। তবেই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব। অটিজম ও প্রতিবন্ধতা এক নয়, তাই অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা আলাদা যুতসই ক্ষেত্র তৈরি অনিবার্য। এক্ষেত্রে বাংলার বিভিন্ন ঐতিহ্য যেমন- নকশীকাঁথা, পটচিত্র, নান্দনিক ফলক প্রভৃত ধরে রাখার কাজে এই বিপুল জনশক্তিকে নিযুক্ত করা যেতে পারে।

বাংলাদেশ সরকারের সমাজসেবা মন্ত্রণালয় কতৃক, ‘সুবর্ণ নাগরিক কার্ড’ ও বিভিন্ন ভাতা, বৃত্তিপ্রদান, শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে সুযোগ সৃষ্টি রাষ্ট্রের চমৎকার উদ্যোগ। প্রতিবন্ধকতা আমাদের অভিশাপ নয়, খাঁটি স্বর্ণ চেনার কষ্টিপাথর।

দীপা সাহা প্রিয়া

আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের শেষ কোথায়?

টেকসই উন্নয়ন ও আদিবাসীদের অধিকার

শব্দদূষণ বন্ধ হবে কবে?

চট্টগ্রাম দোহাজারী অংশে রেল চালু হোক

দেশের প্রথম শহীদ মিনারের উপেক্ষিত ইতিহাস

তরুণদের হীনমন্যতা ও মত প্রকাশে অনীহা

বন সংরক্ষণ ও উন্নয়ন

শুধু ফেব্রুয়ারিতে ভাষার দরদ?

ভাষা ও সাহিত্যের মিলনমেলা

জমি দখলের ক্ষতিপূরণ চাই

পুরান ঢাকায় মশার উৎপাত

গুইমারায় স্বাস্থ্যসেবা সংকট : অবিলম্বে সমাধান প্রয়োজন

মশার উপদ্রব : জনস্বাস্থ্য ও নগর ব্যবস্থাপনার চরম ব্যর্থতা

পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু : একটি জাতীয় সংকট

নাম পাল্টে গেলে কত কী যে হয়

অনুপ্রেরণা হোক তুলনাহীন

দূষণ রোধে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা হ্রাস জরুরি

পাবলিক টয়লেটের সংখ্যা বাড়ান

গণরুম প্রথার বিলুপ্তি কবে?

রেলসেবার মান বাড়ান

নওগাঁ সরকারি কলেজের সংকট

টিকিটের দাম আকাশচুম্বী

জকিগঞ্জে গ্রামীণ সড়কের দুরবস্থা

রেলে দুর্নীতি

নবায়নযোগ্য শক্তির বিকল্প নেই

পথশিশুদের ভয়ঙ্কর নেশাদ্রব্য থেকে রক্ষা করুন

ঢাকা-ময়মনসিংহ ননস্টপ ট্রেন ও ডাবল লাইন নির্মাণের দাবি

শিশুদের প্রতি প্রতিহিংসা বন্ধ করুন

চরবাসীর নদী পারাপারে নিরাপত্তার প্রয়োজন

জন্মনিবন্ধন সেবায় অতিরিক্ত অর্থ আদায় : ব্যবস্থা নিন

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে স্পিডব্রেকার চাই

উন্নয়নের জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান কারিগরি শিক্ষা

পোস্তগোলায় নিম্নমানের ড্রেন নির্মাণ

দিনমজুর সংকটে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত

পানাম সেতু : ঐতিহ্য রক্ষায় অবহেলা নয়

যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তা থেকে ধোলাইখাল বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তার দুরবস্থা

tab

চিঠিপত্র

বাধা যেখানে পথ সেখানেই

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

‘প্রতিবন্ধী’ শব্দটা শুনলেই মনসপটে ভেসে ওঠে সমাজে পিছিয়ে পড়া একাংশের চিত্র; যারা জীবনমান উন্নয়নের মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন। ‘বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ আইন ২০০১’ অনুসারে মোট সাত ধরনের প্রতিবন্ধকতা বিদ্যমান; যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ। যেমন- দৃষ্টি, শ্রবণ, বাক, সেরিব্রাল পালসি, বুদ্ধি, শারীরিক এবং বহুমুখী।

সীমাবদ্ধতা মানেই হেরে যাওয়া নয় বরং ভেতরের অদম্য শক্তি অনুসন্ধানের সুযোগ। কাজেই প্রতিবন্ধকতা কোনো অপরাধ নয়; প্রতিবন্ধীরা নয় পাপের ফসল। নিজেকে প্রমাণের উপযুক্ত সুযোগ পেলে তারাও দক্ষ জনশক্তি হয়ে উঠতে পারে, সভ্যতার কল্যাণে স্বাক্ষর রাখতে পারে। প্রয়োজন শুধু আপনার একটুখানি সহযোগিতার ছোঁয়া।

সঠিক সহচার্যের সান্নিধ্য পেয়ে ‘হেলেন কেলার’ হয়ে উঠেছিলেন অন্ধকারে আলো জ্বালা এক দীপশিখা। তার শিক্ষক অ্যানি সুলিভানের স্পর্শ-অনুভূতির মাধ্যমে শিক্ষাদান এটাই প্রমাণ করে, জীবনের চাকা যদি একপাশে থেমে যায় তবে অন্যপাশে ঘুরিয়ে দিতে হয়। যার সুদূরপ্রসারি প্রতিফলন দেখা যায়- দৃষ্টিহীন নাহিয়ান বুশরার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিকূলতা জয়ের চ্যালেজ্ঞে।

প্রতিবন্ধীদের নিজস্ব জগৎ অত্যন্ত ছোট। তাই তাদের জানতে, বুঝতে, চিনতে হলে আপনাকেই তাদের পৃথিবীতে আসতে হবে। একবার তাদের আপন হয়ে উঠলে তারা আপনার জন্য নিবেদিত প্রাণ হতে দ্বিধা করবে না। কাজেই তাদের সাথে নিয়ে এগোতে হলে, কূপম-ুক মানসিকতা যেমন- রাস্তায় তাকিয়ে দেখার মতো বিনা বেতনের চাকরি পরিহার করতে হবে। ভিক্ষাবৃত্তির মতো মর্যাদাহীন কাজ থেকে অক্ষম ব্যক্তিদের বিরত রাখতে হবে।

বাস্তবতা নিষ্ঠুর, তাই প্রতিবন্ধীদের অযথা ভাগ্যকে দোষারোপ বন্ধ করে, স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি যোগ্যতা অর্জনে সচেষ্ট হতে হবে।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২০১৩ শুধু খাতা কলমে নয়, বাস্তব প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। তাদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বয় জরুরি। তাদের ভৌত ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।

ইউনিসেফ এর আহ্বানে ‘জাতীয় প্রতিবন্ধী ব্যক্তি জরিপ ২০১১’ অনুসারে, মোট প্রতিবন্ধীর ৬০ শতাংশ শিক্ষার বাহিরে অবস্থিত।

সরকারের একার পক্ষে কখনো বৈষম্য দূর করা সম্ভব নয়; সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রত্যেককে নিজ-নিজ অবস্থান হতে পরিবর্তনের উদ্যোগ নিতে হবে। তবেই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব। অটিজম ও প্রতিবন্ধতা এক নয়, তাই অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা আলাদা যুতসই ক্ষেত্র তৈরি অনিবার্য। এক্ষেত্রে বাংলার বিভিন্ন ঐতিহ্য যেমন- নকশীকাঁথা, পটচিত্র, নান্দনিক ফলক প্রভৃত ধরে রাখার কাজে এই বিপুল জনশক্তিকে নিযুক্ত করা যেতে পারে।

বাংলাদেশ সরকারের সমাজসেবা মন্ত্রণালয় কতৃক, ‘সুবর্ণ নাগরিক কার্ড’ ও বিভিন্ন ভাতা, বৃত্তিপ্রদান, শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে সুযোগ সৃষ্টি রাষ্ট্রের চমৎকার উদ্যোগ। প্রতিবন্ধকতা আমাদের অভিশাপ নয়, খাঁটি স্বর্ণ চেনার কষ্টিপাথর।

দীপা সাহা প্রিয়া

আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

back to top