মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী খাবার কলাইয়ের রুটি স্থানীয় সংস্কৃতি ও স্বাদের এক অনন্য নিদর্শন। কলাইয়ের আটা দিয়ে তৈরি এই রুটি খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে ভরপুর। সাধারণত শীতকালে এটি বেশি খাওয়া হয়, যখন গরম রুটির সঙ্গে খেজুরের গুড়, গরুর মাংস বা দেশি সবজির তরকারি পরিবেশন করা হয়। কলাইয়ের রুটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলের মানুষের ঐতিহ্যের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। গ্রামের রসনা বিলাসে এটি শুধু একটি খাবার নয়, বরং আড্ডা, উৎসব, আর পারিবারিক সময়ের আনন্দঘন মুহূর্তের অপরিহার্য অংশ।
তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় এবং খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনে এই ঐতিহ্যবাহী রুটি এখন আগের মতো জনপ্রিয় নয়। ফাস্টফুড ও প্যাকেটজাত খাবারের আধিক্যে হারিয়ে যেতে বসেছে এই ঐতিহ্যবাহী খাবারটি। তবুও, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ আজও বিশেষ দিনে বা ঐতিহ্য ধরে রাখতে কলাইয়ের রুটি তৈরি করে। এটি কেবল একটি খাবার নয়, বরং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ঐতিহ্যের মিষ্টি স্মৃতিবহনকারী এক স্বাদের প্রতীক।
রাজশাহীর রাস্তায় রাস্তায় এবং ঢাকার অনেক জায়গাতেও কলাইয়ের রুটি বিক্রির দৃশ্য এখন বেশ পরিচিত। প্রাচীন ঐতিহ্যের এই খাবারটি শুধু গ্রামীণ এলাকার নয়, শহরের মানুষের কাছেও সমান জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সকালে কিংবা বিকেলে রাস্তার ধারে বসা দোকানগুলোতে গরম কলাইয়ের রুটি তৈরি হতে দেখা যায়, যা সুস্বাদু গরুর মাংসের ঝোল, ডাল কিংবা খেজুরের গুড় দিয়ে পরিবেশন করা হয়। এর বিশেষ স্বাদ ও পুষ্টিগুণের জন্য এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
কলাইয়ের রুটির এই জনপ্রিয়তা শুধু ঐতিহ্যের টানে নয়, বরং দ্রুত পরিবেশন ও সাশ্রয়ী দামের জন্যও। ঢাকার মতো ব্যস্ত শহরের মানুষের কাছে এটি একটি প্রিয় স্ন্যাক্স হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। রাস্তার ধারে বসা এসব দোকানের ভিড় ও ক্রেতাদের আগ্রহ প্রমাণ করে, ঐতিহ্যবাহী এই খাবারটি শহর ও গ্রামের সীমানা ছাড়িয়ে মানুষের রসনার নতুন পরিচায়ক হয়ে উঠেছে।
কলাইয়ের রুটিকে জিআই (জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আলোচনা বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ রাজশাহী অঞ্চলের এই ঐতিহ্যবাহী খাবারটির স্বাদ, পুষ্টিগুণ এবং বিশেষ প্রস্তুত প্রণালী একে দেশের অন্যান্য খাবার থেকে আলাদা করে তুলেছে। জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেলে এটি শুধু স্থানীয় খাবারের গৌরব বৃদ্ধি করবে না, বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই রুটির পরিচিতি বাড়াবে।
জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেলে কলাইয়ের রুটির সুনাম ও চাহিদা আরও বৃদ্ধি পাবে, যা স্থানীয় কৃষি ও অর্থনীতির জন্য লাভজনক হবে। বিশেষ করে, এই রুটির প্রধান উপাদান কলাইয়ের আটা উৎপাদনেও কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ বাড়বে। তাছাড়া এটি দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারের একটি দৃষ্টান্ত হয়ে আন্তর্জাতিক বাজারেও নিজেদের ঐতিহ্য তুলে ধরার সুযোগ তৈরি করবে। তবে এর জন্য প্রয়োজন সঠিক উদ্যোগ ও কার্যকর প্রচেষ্টা, যাতে এই ঐতিহ্যবাহী খাবারটি হারিয়ে না যায়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষিত থাকে।
হালিমা আক্তার হানি, শিক্ষার্থী, রাজশাহী কলেজ
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী খাবার কলাইয়ের রুটি স্থানীয় সংস্কৃতি ও স্বাদের এক অনন্য নিদর্শন। কলাইয়ের আটা দিয়ে তৈরি এই রুটি খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে ভরপুর। সাধারণত শীতকালে এটি বেশি খাওয়া হয়, যখন গরম রুটির সঙ্গে খেজুরের গুড়, গরুর মাংস বা দেশি সবজির তরকারি পরিবেশন করা হয়। কলাইয়ের রুটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলের মানুষের ঐতিহ্যের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। গ্রামের রসনা বিলাসে এটি শুধু একটি খাবার নয়, বরং আড্ডা, উৎসব, আর পারিবারিক সময়ের আনন্দঘন মুহূর্তের অপরিহার্য অংশ।
তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় এবং খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনে এই ঐতিহ্যবাহী রুটি এখন আগের মতো জনপ্রিয় নয়। ফাস্টফুড ও প্যাকেটজাত খাবারের আধিক্যে হারিয়ে যেতে বসেছে এই ঐতিহ্যবাহী খাবারটি। তবুও, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ আজও বিশেষ দিনে বা ঐতিহ্য ধরে রাখতে কলাইয়ের রুটি তৈরি করে। এটি কেবল একটি খাবার নয়, বরং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ঐতিহ্যের মিষ্টি স্মৃতিবহনকারী এক স্বাদের প্রতীক।
রাজশাহীর রাস্তায় রাস্তায় এবং ঢাকার অনেক জায়গাতেও কলাইয়ের রুটি বিক্রির দৃশ্য এখন বেশ পরিচিত। প্রাচীন ঐতিহ্যের এই খাবারটি শুধু গ্রামীণ এলাকার নয়, শহরের মানুষের কাছেও সমান জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সকালে কিংবা বিকেলে রাস্তার ধারে বসা দোকানগুলোতে গরম কলাইয়ের রুটি তৈরি হতে দেখা যায়, যা সুস্বাদু গরুর মাংসের ঝোল, ডাল কিংবা খেজুরের গুড় দিয়ে পরিবেশন করা হয়। এর বিশেষ স্বাদ ও পুষ্টিগুণের জন্য এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
কলাইয়ের রুটির এই জনপ্রিয়তা শুধু ঐতিহ্যের টানে নয়, বরং দ্রুত পরিবেশন ও সাশ্রয়ী দামের জন্যও। ঢাকার মতো ব্যস্ত শহরের মানুষের কাছে এটি একটি প্রিয় স্ন্যাক্স হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। রাস্তার ধারে বসা এসব দোকানের ভিড় ও ক্রেতাদের আগ্রহ প্রমাণ করে, ঐতিহ্যবাহী এই খাবারটি শহর ও গ্রামের সীমানা ছাড়িয়ে মানুষের রসনার নতুন পরিচায়ক হয়ে উঠেছে।
কলাইয়ের রুটিকে জিআই (জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আলোচনা বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ রাজশাহী অঞ্চলের এই ঐতিহ্যবাহী খাবারটির স্বাদ, পুষ্টিগুণ এবং বিশেষ প্রস্তুত প্রণালী একে দেশের অন্যান্য খাবার থেকে আলাদা করে তুলেছে। জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেলে এটি শুধু স্থানীয় খাবারের গৌরব বৃদ্ধি করবে না, বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই রুটির পরিচিতি বাড়াবে।
জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেলে কলাইয়ের রুটির সুনাম ও চাহিদা আরও বৃদ্ধি পাবে, যা স্থানীয় কৃষি ও অর্থনীতির জন্য লাভজনক হবে। বিশেষ করে, এই রুটির প্রধান উপাদান কলাইয়ের আটা উৎপাদনেও কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ বাড়বে। তাছাড়া এটি দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারের একটি দৃষ্টান্ত হয়ে আন্তর্জাতিক বাজারেও নিজেদের ঐতিহ্য তুলে ধরার সুযোগ তৈরি করবে। তবে এর জন্য প্রয়োজন সঠিক উদ্যোগ ও কার্যকর প্রচেষ্টা, যাতে এই ঐতিহ্যবাহী খাবারটি হারিয়ে না যায়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষিত থাকে।
হালিমা আক্তার হানি, শিক্ষার্থী, রাজশাহী কলেজ