alt

মতামত » চিঠিপত্র

জলবায়ু পরিবর্তন ও নারী ও কিশোরীদের ঝুঁকি

: রোববার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

জলবায়ু পরিবর্তন কেবল আবহাওয়ার অস্বাভাবিকতা নয়; এটি সমাজের সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশগুলোর জীবনেও গভীর প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে নারী ও কিশোরীরা এই প্রভাবের সবচেয়ে সহজলভ্য লক্ষ্যবস্তু। তারা দৈনন্দিন জীবন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে জলবায়ু বিপর্যয়ের সময় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে পড়ে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা, ঝড়, খরা বা অতিবৃষ্টি তাদের জীবনকে শুধু অস্থায়ী নয়, দীর্ঘমেয়াদে গভীর প্রভাবিত করে।

দৈনন্দিন জীবনের ক্ষেত্রে, দুর্যোগের সময় নিরাপদ পানি ও খাদ্যের অভাব দেখা দেয়। নারী ও কিশোরীরা বহু কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পানি সংগ্রহ করতে বাধ্য হয়, যা দীর্ঘ পথ, অনিশ্চিত নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে তাদের জীবনকে বিপজ্জনক করে তোলে। শিক্ষার ক্ষেত্রে, স্কুল ও কলেজ বন্ধ হলে কিশোরী মেয়েদের শিক্ষা ব্যাহত হয় এবং পরিবারের নিরাপত্তার কারণে প্রায়শই তাদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করা হয়। এটি দীর্ঘমেয়াদে তাদের স্বাধীনতা, ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক অংশগ্রহণকে সীমিত করে।

মানসিক প্রভাবও এদের ওপর গভীর। অপ্রতিরোধ্য চাপ, নিরাপত্তাহীনতা এবং সামাজিক চাপ উদ্বেগ, হতাশা ও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। দীর্ঘমেয়াদে এটি সামাজিক অংশগ্রহণ, নেতৃত্ব এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতাকেও সীমিত করে। তাই সমাধান ও পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য। সরকার, স্থানীয় সংগঠন, এনজিও ও সমাজকর্মীদের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে খাদ্য, নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষায় লিঙ্গভিত্তিক সমতা বজায় রাখা এবং নারীদের পুনর্বাসন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ।

পরিবেশ বান্ধব উদ্যোগ যেমন নদী ও খাল রক্ষা, বৃক্ষরোপণ, পুনঃব্যবহারযোগ্য জ্বালানী ব্যবহার এবং টেকসই কৃষি পদ্ধতি নারীদের জীবনকে সরাসরি প্রভাবিত করে। শেষমেশ বলা যায়, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ নারী ও কিশোরীদের জীবনকে বহু দিক থেকে কঠিন করে তোলে। তাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নিরাপত্তা এবং মানসিক সুস্থতা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকে। লিঙ্গ সংবেদনশীল নীতি গ্রহণ, সচেতনতা বৃদ্ধি, কার্যকর পদক্ষেপ এবং সামাজিক সমর্থন নিশ্চিত করা অপরিহার্য। নারীদের নিরাপত্তা ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে না পারলে সমাজের সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশ প্রতিনিয়ত বিপদের মুখে থাকবে।

সমাজের স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের জন্য সকল স্তরে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। নারী ও কিশোরীদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নিরাপত্তা এবং মানসিক সুস্থতা রক্ষা করলে আমরা শুধু তাদের নয়, পুরো সমাজকেই শক্তিশালী করতে পারব।

মাহতাব হোসাইন মাজেদ

টেকসই দুর্যোগ প্রস্তুতিতে জরুরি বাস্তব পদক্ষেপ প্রয়োজন

মেধা হারাচ্ছে দেশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় : অযৌক্তিক ফি, সেশনজট ও প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলায় বিপর্যস্ত শিক্ষার্থী

সামাজিক মাধ্যমের ভুবনে জনতুষ্টিবাদের নতুন রূপ

ভেজাল খেজুরগুড় ও স্বাস্থ্যঝুঁকি

হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় প্রশাসনিক ক্যাডারের প্রয়োজনীয়তা

প্লাস্টিক বর্জ্যে মাছের মৃত্যু: সমাধান কোথায়

খোলা ম্যানহোল: ঢাকার রাজপথে এক নীরব মরণফাঁদ

গণপরিবহন: প্রতিদিনের যন্ত্রণার শেষ কবে?

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পুনর্জাগরণ

সাইবার বুলিং ও ভার্চুয়াল অপরাধ: তরুণদের অদৃশ্য বিপদ

ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে নগরজীবনের চরম ভোগান্তি

রাবি মেডিকেল সেন্টারের সংস্কার চাই

চিংড়ি শিল্পের পরিবেশগত প্রভাব

কক্সবাজার: উন্নয়নের পথে, বিপন্ন প্রকৃতি

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রেক্ষাপটে নতুন সম্ভাবনার ভোর

প্রাথমিক শিক্ষকদের বঞ্চনা দূর না হলে মানোন্নয়ন অসম্ভব

রাবির আবাসন সংকট

সব হাসপাতালে ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন সেবা চালু করা হোক

ডেঙ্গু মোকাবিলায় সচেতনতা

পানি সংকট: জীবন ও সভ্যতার জন্য বিরাট হুমকি

ই-লার্নিং: সীমান্তহীন শিক্ষার নতুন দিগন্ত

আজিমপুর কলোনির অব্যবস্থাপনা

জনস্বাস্থ্যের নীরব ঘাতক : তামাকজাত পণ্য

বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়: অবস্থান, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

ইন্দো-প্যাসিফিক রাজনীতি ও বাংলাদেশের সমুদ্রকৌশল

বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট: দীর্ঘসূত্রতা ও ভোগান্তির শেষ কোথায়?

পুরান ঢাকার রাস্তাগুলোর বেহাল অবস্থা

নিরাপদ শিশু খাদ্য: জাতির ভবিষ্যতের প্রশ্ন

ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়: প্রতিদিনের দুঃস্বপ্ন

পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা

হেমন্ত আসে হিম কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে

জীবনের অভিধানে প্রবীণদের স্থান কোথায়?

নীরবতা নয়, বলতে শেখ

সুন্দরবনে টেকসই পর্যটন মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের সম্ভাবনা ও করণীয়

প্রথার নামে প্রথাগত শোষণ: উচ্চ কাবিনের ফাঁদ

tab

মতামত » চিঠিপত্র

জলবায়ু পরিবর্তন ও নারী ও কিশোরীদের ঝুঁকি

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

রোববার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

জলবায়ু পরিবর্তন কেবল আবহাওয়ার অস্বাভাবিকতা নয়; এটি সমাজের সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশগুলোর জীবনেও গভীর প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে নারী ও কিশোরীরা এই প্রভাবের সবচেয়ে সহজলভ্য লক্ষ্যবস্তু। তারা দৈনন্দিন জীবন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে জলবায়ু বিপর্যয়ের সময় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে পড়ে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা, ঝড়, খরা বা অতিবৃষ্টি তাদের জীবনকে শুধু অস্থায়ী নয়, দীর্ঘমেয়াদে গভীর প্রভাবিত করে।

দৈনন্দিন জীবনের ক্ষেত্রে, দুর্যোগের সময় নিরাপদ পানি ও খাদ্যের অভাব দেখা দেয়। নারী ও কিশোরীরা বহু কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পানি সংগ্রহ করতে বাধ্য হয়, যা দীর্ঘ পথ, অনিশ্চিত নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে তাদের জীবনকে বিপজ্জনক করে তোলে। শিক্ষার ক্ষেত্রে, স্কুল ও কলেজ বন্ধ হলে কিশোরী মেয়েদের শিক্ষা ব্যাহত হয় এবং পরিবারের নিরাপত্তার কারণে প্রায়শই তাদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করা হয়। এটি দীর্ঘমেয়াদে তাদের স্বাধীনতা, ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক অংশগ্রহণকে সীমিত করে।

মানসিক প্রভাবও এদের ওপর গভীর। অপ্রতিরোধ্য চাপ, নিরাপত্তাহীনতা এবং সামাজিক চাপ উদ্বেগ, হতাশা ও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। দীর্ঘমেয়াদে এটি সামাজিক অংশগ্রহণ, নেতৃত্ব এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতাকেও সীমিত করে। তাই সমাধান ও পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য। সরকার, স্থানীয় সংগঠন, এনজিও ও সমাজকর্মীদের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে খাদ্য, নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষায় লিঙ্গভিত্তিক সমতা বজায় রাখা এবং নারীদের পুনর্বাসন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ।

পরিবেশ বান্ধব উদ্যোগ যেমন নদী ও খাল রক্ষা, বৃক্ষরোপণ, পুনঃব্যবহারযোগ্য জ্বালানী ব্যবহার এবং টেকসই কৃষি পদ্ধতি নারীদের জীবনকে সরাসরি প্রভাবিত করে। শেষমেশ বলা যায়, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ নারী ও কিশোরীদের জীবনকে বহু দিক থেকে কঠিন করে তোলে। তাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নিরাপত্তা এবং মানসিক সুস্থতা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকে। লিঙ্গ সংবেদনশীল নীতি গ্রহণ, সচেতনতা বৃদ্ধি, কার্যকর পদক্ষেপ এবং সামাজিক সমর্থন নিশ্চিত করা অপরিহার্য। নারীদের নিরাপত্তা ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে না পারলে সমাজের সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশ প্রতিনিয়ত বিপদের মুখে থাকবে।

সমাজের স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের জন্য সকল স্তরে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। নারী ও কিশোরীদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নিরাপত্তা এবং মানসিক সুস্থতা রক্ষা করলে আমরা শুধু তাদের নয়, পুরো সমাজকেই শক্তিশালী করতে পারব।

মাহতাব হোসাইন মাজেদ

back to top