মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
জলবায়ু পরিবর্তন কেবল আবহাওয়ার অস্বাভাবিকতা নয়; এটি সমাজের সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশগুলোর জীবনেও গভীর প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে নারী ও কিশোরীরা এই প্রভাবের সবচেয়ে সহজলভ্য লক্ষ্যবস্তু। তারা দৈনন্দিন জীবন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে জলবায়ু বিপর্যয়ের সময় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে পড়ে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা, ঝড়, খরা বা অতিবৃষ্টি তাদের জীবনকে শুধু অস্থায়ী নয়, দীর্ঘমেয়াদে গভীর প্রভাবিত করে।
দৈনন্দিন জীবনের ক্ষেত্রে, দুর্যোগের সময় নিরাপদ পানি ও খাদ্যের অভাব দেখা দেয়। নারী ও কিশোরীরা বহু কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পানি সংগ্রহ করতে বাধ্য হয়, যা দীর্ঘ পথ, অনিশ্চিত নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে তাদের জীবনকে বিপজ্জনক করে তোলে। শিক্ষার ক্ষেত্রে, স্কুল ও কলেজ বন্ধ হলে কিশোরী মেয়েদের শিক্ষা ব্যাহত হয় এবং পরিবারের নিরাপত্তার কারণে প্রায়শই তাদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করা হয়। এটি দীর্ঘমেয়াদে তাদের স্বাধীনতা, ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক অংশগ্রহণকে সীমিত করে।
মানসিক প্রভাবও এদের ওপর গভীর। অপ্রতিরোধ্য চাপ, নিরাপত্তাহীনতা এবং সামাজিক চাপ উদ্বেগ, হতাশা ও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। দীর্ঘমেয়াদে এটি সামাজিক অংশগ্রহণ, নেতৃত্ব এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতাকেও সীমিত করে। তাই সমাধান ও পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য। সরকার, স্থানীয় সংগঠন, এনজিও ও সমাজকর্মীদের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে খাদ্য, নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষায় লিঙ্গভিত্তিক সমতা বজায় রাখা এবং নারীদের পুনর্বাসন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ।
পরিবেশ বান্ধব উদ্যোগ যেমন নদী ও খাল রক্ষা, বৃক্ষরোপণ, পুনঃব্যবহারযোগ্য জ্বালানী ব্যবহার এবং টেকসই কৃষি পদ্ধতি নারীদের জীবনকে সরাসরি প্রভাবিত করে। শেষমেশ বলা যায়, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ নারী ও কিশোরীদের জীবনকে বহু দিক থেকে কঠিন করে তোলে। তাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নিরাপত্তা এবং মানসিক সুস্থতা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকে। লিঙ্গ সংবেদনশীল নীতি গ্রহণ, সচেতনতা বৃদ্ধি, কার্যকর পদক্ষেপ এবং সামাজিক সমর্থন নিশ্চিত করা অপরিহার্য। নারীদের নিরাপত্তা ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে না পারলে সমাজের সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশ প্রতিনিয়ত বিপদের মুখে থাকবে।
সমাজের স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের জন্য সকল স্তরে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। নারী ও কিশোরীদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নিরাপত্তা এবং মানসিক সুস্থতা রক্ষা করলে আমরা শুধু তাদের নয়, পুরো সমাজকেই শক্তিশালী করতে পারব।
মাহতাব হোসাইন মাজেদ
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
রোববার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
জলবায়ু পরিবর্তন কেবল আবহাওয়ার অস্বাভাবিকতা নয়; এটি সমাজের সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশগুলোর জীবনেও গভীর প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে নারী ও কিশোরীরা এই প্রভাবের সবচেয়ে সহজলভ্য লক্ষ্যবস্তু। তারা দৈনন্দিন জীবন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে জলবায়ু বিপর্যয়ের সময় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে পড়ে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা, ঝড়, খরা বা অতিবৃষ্টি তাদের জীবনকে শুধু অস্থায়ী নয়, দীর্ঘমেয়াদে গভীর প্রভাবিত করে।
দৈনন্দিন জীবনের ক্ষেত্রে, দুর্যোগের সময় নিরাপদ পানি ও খাদ্যের অভাব দেখা দেয়। নারী ও কিশোরীরা বহু কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পানি সংগ্রহ করতে বাধ্য হয়, যা দীর্ঘ পথ, অনিশ্চিত নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে তাদের জীবনকে বিপজ্জনক করে তোলে। শিক্ষার ক্ষেত্রে, স্কুল ও কলেজ বন্ধ হলে কিশোরী মেয়েদের শিক্ষা ব্যাহত হয় এবং পরিবারের নিরাপত্তার কারণে প্রায়শই তাদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করা হয়। এটি দীর্ঘমেয়াদে তাদের স্বাধীনতা, ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক অংশগ্রহণকে সীমিত করে।
মানসিক প্রভাবও এদের ওপর গভীর। অপ্রতিরোধ্য চাপ, নিরাপত্তাহীনতা এবং সামাজিক চাপ উদ্বেগ, হতাশা ও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। দীর্ঘমেয়াদে এটি সামাজিক অংশগ্রহণ, নেতৃত্ব এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতাকেও সীমিত করে। তাই সমাধান ও পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য। সরকার, স্থানীয় সংগঠন, এনজিও ও সমাজকর্মীদের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে খাদ্য, নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষায় লিঙ্গভিত্তিক সমতা বজায় রাখা এবং নারীদের পুনর্বাসন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ।
পরিবেশ বান্ধব উদ্যোগ যেমন নদী ও খাল রক্ষা, বৃক্ষরোপণ, পুনঃব্যবহারযোগ্য জ্বালানী ব্যবহার এবং টেকসই কৃষি পদ্ধতি নারীদের জীবনকে সরাসরি প্রভাবিত করে। শেষমেশ বলা যায়, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ নারী ও কিশোরীদের জীবনকে বহু দিক থেকে কঠিন করে তোলে। তাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নিরাপত্তা এবং মানসিক সুস্থতা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকে। লিঙ্গ সংবেদনশীল নীতি গ্রহণ, সচেতনতা বৃদ্ধি, কার্যকর পদক্ষেপ এবং সামাজিক সমর্থন নিশ্চিত করা অপরিহার্য। নারীদের নিরাপত্তা ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে না পারলে সমাজের সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশ প্রতিনিয়ত বিপদের মুখে থাকবে।
সমাজের স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের জন্য সকল স্তরে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। নারী ও কিশোরীদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নিরাপত্তা এবং মানসিক সুস্থতা রক্ষা করলে আমরা শুধু তাদের নয়, পুরো সমাজকেই শক্তিশালী করতে পারব।
মাহতাব হোসাইন মাজেদ