মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
একবার মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক বা অন্য কোনো পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর সেই সনদের মেয়াদ শেষ হয়ে আবার পরীক্ষা দিতে হয়-এমন প্রথা পৃথিবীর কোথাও নেই। ঠিক তেমনি চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও চাকরি না দিয়ে আবার নতুন করে পরীক্ষা দিতে বলা, কিংবা কিছুদিন পর ‘বয়সসীমা অতিক্রম’ দেখিয়ে অযোগ্য ঘোষণার বিষয়টিও অস্বাভাবিক। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষ-এনটিআরসিএ-এমন বাস্তবতার জন্ম দিয়েছে। একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদ অর্জন করেন দীর্ঘ প্রশিক্ষণ, পাঠ এবং যোগ্যতা অর্জনের পর। সে সনদের প্রতি রাষ্ট্রীয় আস্থা না থাকলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মানোন্নয়ন প্রয়োজন; নয়তো প্রতিষ্ঠানটিকেই প্রশ্নবিদ্ধ বলা ছাড়া উপায় থাকে না।
একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ সনদ অর্জনের পর আবার অতিরিক্ত সনদ নেওয়ার বাধ্যবাধকতা সেই অর্জিত শিক্ষার বৈধতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। নতুনভাবে প্রাপ্ত সনদেরও যদি নির্দিষ্ট মেয়াদ বেঁধে দেওয়া হয়, তবে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে-আগের সনদ কি যথার্থ ছিল না? আবার যদি শিক্ষক নিয়োগের উদ্দেশ্যে পরীক্ষা নেওয়া হয়, তবে উত্তীর্ণদের চাকরি না দেওয়া নিঃসন্দেহে প্রহসন। এনটিআরসিএ সময়ের পর সময় নানা নিয়ম পরিবর্তন করেছে, কিন্তু পূর্বের সমস্যার সমাধান না করায় জটিলতা বেড়েছে। এ সুযোগে অসাধু কর্মকর্তারা জাল সনদ দিয়ে অর্থ আদায় করেছেন; সেই জাল সনদধারীরা চাকরিও করেছেন, এখন ধরা পড়ছেন।
এ অবস্থায় এনটিআরসিএ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হলো জাল সনদধারী কর্মরত অশিক্ষকদের চিহ্নিত করে চাকরিচ্যুত করা, নিয়োগ-পরবর্তী প্রাপ্ত সব অর্থ রাষ্ট্রের কোষাগারে ফেরত নেওয়া এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। একইভাবে যারা জাল সনদ সরবরাহ করেছে, তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে। আর বৈধ সনদধারী যারা বছরের পর বছর চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে এবং আদায়কৃত অর্থ থেকে প্রাপ্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে। বহু নিবন্ধনধারী ইতিমধ্যে বয়সোত্তীর্ণ, কেউ মারা গেছেন, কেউ পেশা বদল করতে বাধ্য হয়েছেন-এদের বঞ্চনা আর টেনে রাখা যায় না। নিজেদের অধিকার ফিরিয়ে আনতে তারা রাস্তায় নামবেই; তাই দ্রুত সমাধান প্রয়োজন।
শাহাদৎ হোসেন
শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, দোসাইদ অধন্য কুমার কলেজ
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫
একবার মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক বা অন্য কোনো পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর সেই সনদের মেয়াদ শেষ হয়ে আবার পরীক্ষা দিতে হয়-এমন প্রথা পৃথিবীর কোথাও নেই। ঠিক তেমনি চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও চাকরি না দিয়ে আবার নতুন করে পরীক্ষা দিতে বলা, কিংবা কিছুদিন পর ‘বয়সসীমা অতিক্রম’ দেখিয়ে অযোগ্য ঘোষণার বিষয়টিও অস্বাভাবিক। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষ-এনটিআরসিএ-এমন বাস্তবতার জন্ম দিয়েছে। একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদ অর্জন করেন দীর্ঘ প্রশিক্ষণ, পাঠ এবং যোগ্যতা অর্জনের পর। সে সনদের প্রতি রাষ্ট্রীয় আস্থা না থাকলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মানোন্নয়ন প্রয়োজন; নয়তো প্রতিষ্ঠানটিকেই প্রশ্নবিদ্ধ বলা ছাড়া উপায় থাকে না।
একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ সনদ অর্জনের পর আবার অতিরিক্ত সনদ নেওয়ার বাধ্যবাধকতা সেই অর্জিত শিক্ষার বৈধতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। নতুনভাবে প্রাপ্ত সনদেরও যদি নির্দিষ্ট মেয়াদ বেঁধে দেওয়া হয়, তবে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে-আগের সনদ কি যথার্থ ছিল না? আবার যদি শিক্ষক নিয়োগের উদ্দেশ্যে পরীক্ষা নেওয়া হয়, তবে উত্তীর্ণদের চাকরি না দেওয়া নিঃসন্দেহে প্রহসন। এনটিআরসিএ সময়ের পর সময় নানা নিয়ম পরিবর্তন করেছে, কিন্তু পূর্বের সমস্যার সমাধান না করায় জটিলতা বেড়েছে। এ সুযোগে অসাধু কর্মকর্তারা জাল সনদ দিয়ে অর্থ আদায় করেছেন; সেই জাল সনদধারীরা চাকরিও করেছেন, এখন ধরা পড়ছেন।
এ অবস্থায় এনটিআরসিএ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হলো জাল সনদধারী কর্মরত অশিক্ষকদের চিহ্নিত করে চাকরিচ্যুত করা, নিয়োগ-পরবর্তী প্রাপ্ত সব অর্থ রাষ্ট্রের কোষাগারে ফেরত নেওয়া এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। একইভাবে যারা জাল সনদ সরবরাহ করেছে, তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে। আর বৈধ সনদধারী যারা বছরের পর বছর চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে এবং আদায়কৃত অর্থ থেকে প্রাপ্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে। বহু নিবন্ধনধারী ইতিমধ্যে বয়সোত্তীর্ণ, কেউ মারা গেছেন, কেউ পেশা বদল করতে বাধ্য হয়েছেন-এদের বঞ্চনা আর টেনে রাখা যায় না। নিজেদের অধিকার ফিরিয়ে আনতে তারা রাস্তায় নামবেই; তাই দ্রুত সমাধান প্রয়োজন।
শাহাদৎ হোসেন
শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, দোসাইদ অধন্য কুমার কলেজ