alt

মতামত » চিঠিপত্র

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সম্ভাবনা বিস্তৃত, অনিয়মের ছায়াও গভীর

: শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

বাংলাদেশে গত এক দশকে ফ্রিল্যান্সিং তরুণদের জন্য একটি আকর্ষণীয় কর্মক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা ও প্রযুক্তির অগ্রগতিতে অনেকে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইন থেকে শুরু করে ভিডিও সম্পাদনা, ভার্চুয়াল সহায়তা ও লেখালেখিসহ নানা পেশায় যুক্ত হয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছেন। কিন্তু এই সম্ভাবনার আড়ালে রয়েছে ভয়াবহ অনিয়ম, ভুয়া প্রশিক্ষণ, স্ক্যাম, ভুল তথ্য এবং আর্থিক প্রতারণার বিস্তৃত জাল, যা তরুণদের ভবিষ্যৎ ও দেশের ডিজিটাল ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ‘মাসে এক লাখ টাকা আয়’, ‘তিন মাসে সফল ফ্রিল্যান্সার’-এমন মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করে। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে সফল হতে প্রয়োজন গভীর দক্ষতা, দীর্ঘ অনুশীলন ও পেশাদার মানসিকতা। ভারত, পাকিস্তান, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের নবীনরা বাস্তবতা বুঝতেই সময় নেন। ভুয়া ও নিম্নমানের কোর্স তাদের হতাশার কারণ হয়। অনেককে বলা হয়-ফাইভার বা আপওয়ার্ক অ্যাকাউন্ট খুললেই অর্ডার আসবে; পরে দেখা যায়, কোনো কাজই আসে না, বরং অ্যাকাউন্টই সাসপেন্ড হয়ে যায়।

এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসেও প্রতারণার নানা রূপ রয়েছে। ট্রায়ালের নাম করে বিনা পয়সায় কাজ করিয়ে নেওয়া, কাজ গ্রহণের পর রিফান্ড বা চার্জব্যাক করা, অফ-প্ল্যাটফর্মে প্রলোভন দিয়ে পেমেন্ট না দেওয়া-এসব ঘটনার শিকার হন অসংখ্য ফ্রিল্যান্সার। দেশের ভেতরেও গ্রুপ বায়িং প্রতারণা, ভুয়া রিভিউ, চুরি করা ডিজাইন বিক্রি-এসব অনৈতিক কর্মকা- বাজারের বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

ডলার লেনদেনেও প্রতারণা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ‘ডলার সেল–বাই’ গ্রুপে টাকা পাঠিয়েও অনেকে ডলার না পেয়ে ব্লকড হন। পেপাল বা পেওনিয়ারের ভুয়া লগইন পেজ পাঠিয়ে অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার ঘটনাও বাড়ছে। ঈঊজঞ-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ত্রিশ হাজার ফ্রিল্যান্সার সাইবার প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

ফ্রিল্যান্সিং বাজারকে সুস্থ রাখতে হলে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা, মিথ্যা আয় দেখিয়ে বিজ্ঞাপন বন্ধ করা, সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে বিশেষ নজরদারি গড়ে তোলা এবং ক্লায়েন্ট–ফ্রিল্যান্সার সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি জরুরি। তরুণদেরও বুঝতে হবে-দক্ষতায় সময় দেওয়া ছাড়া এ খাতে সাফল্যের কোনো শর্টকাট নেই। অতিরঞ্জিত স্বপ্নের পেছনে দৌড়ালে শেষ পর্যন্ত ক্ষতির মুখেই পড়তে হয়।

সম্ভাবনা অস্বীকার করা যায় না; কিন্তু সম্ভাবনা বাস্তবায়নের জন্য দরকার স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও সততার ভিত্তিতে একটি টেকসই বাজার। প্রতারণার অন্ধকার সরিয়ে প্রকৃত সক্ষমতা কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হবেন।

আরিফুল ইসলাম রাফি

সুলতানপুরে করতোয়া নদীর তাণ্ডব: নদীভাঙনে মানুষের জীবন বিপন্ন

গেন্ডারিয়ায় সড়ক ও ড্রেন সংস্কারে অনিয়ম: জনদূর্ভোগ বৃদ্ধি

প্রবীণদের সুরক্ষা ও মর্যাদা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি

পলিভিনাইলের ব্যবহার প্রতিরোধ জরুরি

বৈধ সনদধারীদের অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি

টেকসই দুর্যোগ প্রস্তুতিতে জরুরি বাস্তব পদক্ষেপ প্রয়োজন

জলবায়ু পরিবর্তন ও নারী ও কিশোরীদের ঝুঁকি

মেধা হারাচ্ছে দেশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় : অযৌক্তিক ফি, সেশনজট ও প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলায় বিপর্যস্ত শিক্ষার্থী

সামাজিক মাধ্যমের ভুবনে জনতুষ্টিবাদের নতুন রূপ

ভেজাল খেজুরগুড় ও স্বাস্থ্যঝুঁকি

হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় প্রশাসনিক ক্যাডারের প্রয়োজনীয়তা

প্লাস্টিক বর্জ্যে মাছের মৃত্যু: সমাধান কোথায়

খোলা ম্যানহোল: ঢাকার রাজপথে এক নীরব মরণফাঁদ

গণপরিবহন: প্রতিদিনের যন্ত্রণার শেষ কবে?

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পুনর্জাগরণ

সাইবার বুলিং ও ভার্চুয়াল অপরাধ: তরুণদের অদৃশ্য বিপদ

ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে নগরজীবনের চরম ভোগান্তি

রাবি মেডিকেল সেন্টারের সংস্কার চাই

চিংড়ি শিল্পের পরিবেশগত প্রভাব

কক্সবাজার: উন্নয়নের পথে, বিপন্ন প্রকৃতি

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রেক্ষাপটে নতুন সম্ভাবনার ভোর

প্রাথমিক শিক্ষকদের বঞ্চনা দূর না হলে মানোন্নয়ন অসম্ভব

রাবির আবাসন সংকট

সব হাসপাতালে ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন সেবা চালু করা হোক

ডেঙ্গু মোকাবিলায় সচেতনতা

পানি সংকট: জীবন ও সভ্যতার জন্য বিরাট হুমকি

ই-লার্নিং: সীমান্তহীন শিক্ষার নতুন দিগন্ত

আজিমপুর কলোনির অব্যবস্থাপনা

জনস্বাস্থ্যের নীরব ঘাতক : তামাকজাত পণ্য

বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়: অবস্থান, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

ইন্দো-প্যাসিফিক রাজনীতি ও বাংলাদেশের সমুদ্রকৌশল

বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট: দীর্ঘসূত্রতা ও ভোগান্তির শেষ কোথায়?

পুরান ঢাকার রাস্তাগুলোর বেহাল অবস্থা

নিরাপদ শিশু খাদ্য: জাতির ভবিষ্যতের প্রশ্ন

ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়: প্রতিদিনের দুঃস্বপ্ন

tab

মতামত » চিঠিপত্র

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সম্ভাবনা বিস্তৃত, অনিয়মের ছায়াও গভীর

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশে গত এক দশকে ফ্রিল্যান্সিং তরুণদের জন্য একটি আকর্ষণীয় কর্মক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা ও প্রযুক্তির অগ্রগতিতে অনেকে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইন থেকে শুরু করে ভিডিও সম্পাদনা, ভার্চুয়াল সহায়তা ও লেখালেখিসহ নানা পেশায় যুক্ত হয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছেন। কিন্তু এই সম্ভাবনার আড়ালে রয়েছে ভয়াবহ অনিয়ম, ভুয়া প্রশিক্ষণ, স্ক্যাম, ভুল তথ্য এবং আর্থিক প্রতারণার বিস্তৃত জাল, যা তরুণদের ভবিষ্যৎ ও দেশের ডিজিটাল ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ‘মাসে এক লাখ টাকা আয়’, ‘তিন মাসে সফল ফ্রিল্যান্সার’-এমন মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করে। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে সফল হতে প্রয়োজন গভীর দক্ষতা, দীর্ঘ অনুশীলন ও পেশাদার মানসিকতা। ভারত, পাকিস্তান, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের নবীনরা বাস্তবতা বুঝতেই সময় নেন। ভুয়া ও নিম্নমানের কোর্স তাদের হতাশার কারণ হয়। অনেককে বলা হয়-ফাইভার বা আপওয়ার্ক অ্যাকাউন্ট খুললেই অর্ডার আসবে; পরে দেখা যায়, কোনো কাজই আসে না, বরং অ্যাকাউন্টই সাসপেন্ড হয়ে যায়।

এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসেও প্রতারণার নানা রূপ রয়েছে। ট্রায়ালের নাম করে বিনা পয়সায় কাজ করিয়ে নেওয়া, কাজ গ্রহণের পর রিফান্ড বা চার্জব্যাক করা, অফ-প্ল্যাটফর্মে প্রলোভন দিয়ে পেমেন্ট না দেওয়া-এসব ঘটনার শিকার হন অসংখ্য ফ্রিল্যান্সার। দেশের ভেতরেও গ্রুপ বায়িং প্রতারণা, ভুয়া রিভিউ, চুরি করা ডিজাইন বিক্রি-এসব অনৈতিক কর্মকা- বাজারের বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

ডলার লেনদেনেও প্রতারণা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ‘ডলার সেল–বাই’ গ্রুপে টাকা পাঠিয়েও অনেকে ডলার না পেয়ে ব্লকড হন। পেপাল বা পেওনিয়ারের ভুয়া লগইন পেজ পাঠিয়ে অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার ঘটনাও বাড়ছে। ঈঊজঞ-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ত্রিশ হাজার ফ্রিল্যান্সার সাইবার প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

ফ্রিল্যান্সিং বাজারকে সুস্থ রাখতে হলে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা, মিথ্যা আয় দেখিয়ে বিজ্ঞাপন বন্ধ করা, সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে বিশেষ নজরদারি গড়ে তোলা এবং ক্লায়েন্ট–ফ্রিল্যান্সার সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি জরুরি। তরুণদেরও বুঝতে হবে-দক্ষতায় সময় দেওয়া ছাড়া এ খাতে সাফল্যের কোনো শর্টকাট নেই। অতিরঞ্জিত স্বপ্নের পেছনে দৌড়ালে শেষ পর্যন্ত ক্ষতির মুখেই পড়তে হয়।

সম্ভাবনা অস্বীকার করা যায় না; কিন্তু সম্ভাবনা বাস্তবায়নের জন্য দরকার স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও সততার ভিত্তিতে একটি টেকসই বাজার। প্রতারণার অন্ধকার সরিয়ে প্রকৃত সক্ষমতা কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হবেন।

আরিফুল ইসলাম রাফি

back to top