alt

মতামত » চিঠিপত্র

সমুদ্রগবেষণায় পশ্চাৎপদতা মৎস্য খাতের ভবিষ্যৎকেই ঝুঁকিতে ফেলছে

: শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

বাংলাদেশ সমুদ্রসম্পদে সমৃদ্ধ হলেও সেই সম্পদ চিহ্নিত ও ব্যবহারের ভিত্তিগত বিজ্ঞান এখনো দুর্বল। গবেষণা জাহাজ, আধুনিক জরিপযন্ত্র, সোনার প্রযুক্তি বা স্যাটেলাইট ডেটা বিশ্লেষণ-সব ক্ষেত্রেই ঘাটতি রয়ে গেছে। ফলে গভীর সমুদ্রে মাছের মজুদ, স্রোত–তাপমাত্রার পরিবর্তন কিংবা কোন এলাকায় কোন প্রজাতি কতটুকু আছে-এমন মৌলিক তথ্যও নির্ভরযোগ্যভাবে জানা যায় না। গবেষণার এই সীমাবদ্ধতা নীতিনির্ধারণকেও অনুমাননির্ভর করে তুলে; কখন আহরণ বাড়ানো বা কমানো উচিত, কোথায় প্রজননক্ষেত্র রক্ষা করতে হবে-এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবে বিজ্ঞানভিত্তিক নয়।

মানবসম্পদের ঘাটতিও বড়। সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী বা বাস্তুতন্ত্র–বিশেষজ্ঞের সংখ্যা কম, নিয়মিত প্রকল্প আরও কম। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মেরিন বিজ্ঞান বিভাগ থাকলেও গবেষণার পরিবেশ সীমিত, তহবিল অপ্রতুল, আর আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা খুব কমই হয়। ফলে সমুদ্রের পরিবর্তন, প্রজাতির আচরণ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব-এসব বিষয়ে গভীর বিশ্লেষণ গড়ে ওঠে না।

এই গবেষণা–অভাবের সরাসরি ক্ষতি হচ্ছে মৎস্য খাতে। মাছের মজুদ নির্ণয় না থাকায় কোথাও অতিরিক্ত আহরণ হচ্ছে, কোথাও আবার সম্ভাবনাময় এলাকা ব্যবহারই হচ্ছে না। গভীর সমুদ্রে বাণিজ্যিক আহরণেও সক্ষমতা অর্জিত হয়নি-ভূতাত্ত্বিক তথ্য নেই, প্রজাতিগত তথ্য নেই, নিয়মিত জরিপ নেই। প্রতিবেশী দেশগুলো যখন আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে গভীর সমুদ্র থেকে নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করছে, বাংলাদেশ তখনো অল্প তথ্য আর অনুমানের ওপর নির্ভর করছে। এতে উৎপাদনশীলতা কমছে এবং বহু মূল্যবান প্রজাতি ঝুঁকিতে পড়ছে।

জলবায়ু পরিবর্তন ও দূষণের চাপও বাড়ছে, কিন্তু এসবের প্রভাব মূল্যায়নে নিয়মিত গবেষণা নেই বললেই চলে।

এ অবস্থায় সমুদ্রগবেষণাকে জাতীয় অগ্রাধিকার দিতে হবে। আধুনিক গবেষণা জাহাজ, উন্নত ল্যাব, নিয়মিত স্টক মূল্যায়ন, স্যাটেলাইট ও জিআইএস প্রযুক্তির ব্যবহার, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা-এসব দ্রুত বাড়ানো জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে উচ্চতর প্রশিক্ষণ, যৌথ প্রকল্প এবং গবেষণা–তহবিল বৃদ্ধি ছাড়া টেকসই অগ্রগতি সম্ভব নয়।

মৎস্য খাত বাংলাদেশের প্রোটিন চাহিদা ও অর্থনীতির বড় ভরসা। সমুদ্র সম্পর্কে অজ্ঞ থেকে এই ভরসা দীর্ঘদিন ধরে রাখা যাবে না। সমুদ্রকে জানাই ভবিষ্যৎকে জানা-আর সেই ভবিষ্যতের ভিত্তি গড়ে ওঠে শক্ত সমুদ্রগবেষণার ওপর।

জিনিয়া তাবাসসুম

কিশোর গ্যাং–সংস্কৃতি: সমাজের জন্য বাড়তে থাকা অশনি সংকেত

ডিগ্রি হাতে, চাকরি স্বপ্নে: শিক্ষিত বেকারদের মানসিক ক্ষয়

সরকারি কর্মচারীদের কর্মেই মুক্তি নাকি আন্দোলনে?

কর্মজীবী নারীর অদৃশ্য মানসিক বোঝা

নগর সংস্কৃতিতে ঐতিহ্যের বিলুপ্তি

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আগাম সতর্কবার্তাই কি যথেষ্ট?

সুলতানপুরে করতোয়া নদীর তাণ্ডব: নদীভাঙনে মানুষের জীবন বিপন্ন

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সম্ভাবনা বিস্তৃত, অনিয়মের ছায়াও গভীর

গেন্ডারিয়ায় সড়ক ও ড্রেন সংস্কারে অনিয়ম: জনদূর্ভোগ বৃদ্ধি

প্রবীণদের সুরক্ষা ও মর্যাদা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি

পলিভিনাইলের ব্যবহার প্রতিরোধ জরুরি

বৈধ সনদধারীদের অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি

টেকসই দুর্যোগ প্রস্তুতিতে জরুরি বাস্তব পদক্ষেপ প্রয়োজন

জলবায়ু পরিবর্তন ও নারী ও কিশোরীদের ঝুঁকি

মেধা হারাচ্ছে দেশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় : অযৌক্তিক ফি, সেশনজট ও প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলায় বিপর্যস্ত শিক্ষার্থী

সামাজিক মাধ্যমের ভুবনে জনতুষ্টিবাদের নতুন রূপ

ভেজাল খেজুরগুড় ও স্বাস্থ্যঝুঁকি

হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় প্রশাসনিক ক্যাডারের প্রয়োজনীয়তা

প্লাস্টিক বর্জ্যে মাছের মৃত্যু: সমাধান কোথায়

খোলা ম্যানহোল: ঢাকার রাজপথে এক নীরব মরণফাঁদ

গণপরিবহন: প্রতিদিনের যন্ত্রণার শেষ কবে?

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পুনর্জাগরণ

সাইবার বুলিং ও ভার্চুয়াল অপরাধ: তরুণদের অদৃশ্য বিপদ

ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে নগরজীবনের চরম ভোগান্তি

রাবি মেডিকেল সেন্টারের সংস্কার চাই

চিংড়ি শিল্পের পরিবেশগত প্রভাব

কক্সবাজার: উন্নয়নের পথে, বিপন্ন প্রকৃতি

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রেক্ষাপটে নতুন সম্ভাবনার ভোর

প্রাথমিক শিক্ষকদের বঞ্চনা দূর না হলে মানোন্নয়ন অসম্ভব

রাবির আবাসন সংকট

সব হাসপাতালে ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন সেবা চালু করা হোক

ডেঙ্গু মোকাবিলায় সচেতনতা

পানি সংকট: জীবন ও সভ্যতার জন্য বিরাট হুমকি

ই-লার্নিং: সীমান্তহীন শিক্ষার নতুন দিগন্ত

আজিমপুর কলোনির অব্যবস্থাপনা

tab

মতামত » চিঠিপত্র

সমুদ্রগবেষণায় পশ্চাৎপদতা মৎস্য খাতের ভবিষ্যৎকেই ঝুঁকিতে ফেলছে

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশ সমুদ্রসম্পদে সমৃদ্ধ হলেও সেই সম্পদ চিহ্নিত ও ব্যবহারের ভিত্তিগত বিজ্ঞান এখনো দুর্বল। গবেষণা জাহাজ, আধুনিক জরিপযন্ত্র, সোনার প্রযুক্তি বা স্যাটেলাইট ডেটা বিশ্লেষণ-সব ক্ষেত্রেই ঘাটতি রয়ে গেছে। ফলে গভীর সমুদ্রে মাছের মজুদ, স্রোত–তাপমাত্রার পরিবর্তন কিংবা কোন এলাকায় কোন প্রজাতি কতটুকু আছে-এমন মৌলিক তথ্যও নির্ভরযোগ্যভাবে জানা যায় না। গবেষণার এই সীমাবদ্ধতা নীতিনির্ধারণকেও অনুমাননির্ভর করে তুলে; কখন আহরণ বাড়ানো বা কমানো উচিত, কোথায় প্রজননক্ষেত্র রক্ষা করতে হবে-এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবে বিজ্ঞানভিত্তিক নয়।

মানবসম্পদের ঘাটতিও বড়। সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী বা বাস্তুতন্ত্র–বিশেষজ্ঞের সংখ্যা কম, নিয়মিত প্রকল্প আরও কম। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মেরিন বিজ্ঞান বিভাগ থাকলেও গবেষণার পরিবেশ সীমিত, তহবিল অপ্রতুল, আর আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা খুব কমই হয়। ফলে সমুদ্রের পরিবর্তন, প্রজাতির আচরণ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব-এসব বিষয়ে গভীর বিশ্লেষণ গড়ে ওঠে না।

এই গবেষণা–অভাবের সরাসরি ক্ষতি হচ্ছে মৎস্য খাতে। মাছের মজুদ নির্ণয় না থাকায় কোথাও অতিরিক্ত আহরণ হচ্ছে, কোথাও আবার সম্ভাবনাময় এলাকা ব্যবহারই হচ্ছে না। গভীর সমুদ্রে বাণিজ্যিক আহরণেও সক্ষমতা অর্জিত হয়নি-ভূতাত্ত্বিক তথ্য নেই, প্রজাতিগত তথ্য নেই, নিয়মিত জরিপ নেই। প্রতিবেশী দেশগুলো যখন আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে গভীর সমুদ্র থেকে নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করছে, বাংলাদেশ তখনো অল্প তথ্য আর অনুমানের ওপর নির্ভর করছে। এতে উৎপাদনশীলতা কমছে এবং বহু মূল্যবান প্রজাতি ঝুঁকিতে পড়ছে।

জলবায়ু পরিবর্তন ও দূষণের চাপও বাড়ছে, কিন্তু এসবের প্রভাব মূল্যায়নে নিয়মিত গবেষণা নেই বললেই চলে।

এ অবস্থায় সমুদ্রগবেষণাকে জাতীয় অগ্রাধিকার দিতে হবে। আধুনিক গবেষণা জাহাজ, উন্নত ল্যাব, নিয়মিত স্টক মূল্যায়ন, স্যাটেলাইট ও জিআইএস প্রযুক্তির ব্যবহার, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা-এসব দ্রুত বাড়ানো জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে উচ্চতর প্রশিক্ষণ, যৌথ প্রকল্প এবং গবেষণা–তহবিল বৃদ্ধি ছাড়া টেকসই অগ্রগতি সম্ভব নয়।

মৎস্য খাত বাংলাদেশের প্রোটিন চাহিদা ও অর্থনীতির বড় ভরসা। সমুদ্র সম্পর্কে অজ্ঞ থেকে এই ভরসা দীর্ঘদিন ধরে রাখা যাবে না। সমুদ্রকে জানাই ভবিষ্যৎকে জানা-আর সেই ভবিষ্যতের ভিত্তি গড়ে ওঠে শক্ত সমুদ্রগবেষণার ওপর।

জিনিয়া তাবাসসুম

back to top