alt

মতামত » চিঠিপত্র

সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা সংস্কৃতি গড়ে তোলা জরুরি

: রোববার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

প্রতিযোগিতায় জয়-পরাজয় একেবারেই স্বাভাবিক বিষয়। তাই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার আগে এই পরম সত্যকে মনে-প্রাণে ধারণ করার মতো মূল্যবোধ গড়ে তোলা ভীষণ জরুরি। সব সময় জেতার আশা রাখা আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সহায়তা করলেও, যেকোনো উপায়ে জিততেই হবে কিংবা না জিতলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে হবে-এমন গোঁড়ামি মোটেও সমীচীন নয়। প্রকৃত অর্থে প্রতিযোগিতায় জেতার চেয়েও ব্যক্তিত্ববোধ গড়ে তোলা অধিক জরুরি।

উদাহরণ হিসেবে নির্বাচনকে ধরা যেতে পারে। একজন সৎ ও মানবিক প্রার্থী নানান সৃজনশীল উপায়ে মানুষের হৃদয়ে পৌঁছে যায়, জনসমর্থন অর্জনের চেষ্টা করে। অথচ আমাদের দেশে নির্বাচনকে ভাবা হয় প্রতিপক্ষকে পেশিশক্তি দিয়ে দূরে রাখার সুযোগ হিসেবে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার, প্রচারণায় বাধা, হুমকি-ধমকি কিংবা ব্যালটে জাল ভোটের মতো অনিয়ম যেন এক অলিখিত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুখে ন্যায়ের গান গাইলেও প্রায় সবাই সুযোগ পেলে অবৈধ উপায়ে নিজের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে।

ভোটারদের মতামত উপেক্ষা করে প্রার্থীরা নিজেকেই মহান ভাবতে শুরু করে, আর তাদের সমর্থকেরা অন্ধ প্রশংসায় মেতে ওঠে। কেউ সমালোচনা করলে তাকে ট্যাগিং করে দমিয়ে দেওয়ার প্রবণতাও ব্যাপক। সমালোচনা সহ্য করার মনমানসিকতা নেই বললেই চলে। কিভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু করা যায় তা ভাবার পরিবর্তে, কিভাবে প্রতিপক্ষকে দুর্বল করা যায় সেটাই যেন মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। নির্বাচনের পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো, উসকানি দেওয়া, ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা-এসব কেবল ঘৃণার সম্পর্ক তৈরি করে। অথচ নির্বাচনের পর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠার কথা। বিজয়ীকে অভিনন্দন জানানো, গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে তাকে ভবিষ্যতে ভালোভাবে কাজ করতে সহায়তা করার চর্চাই হওয়া উচিত।

এ ধরনের নেতিবাচক মানসিকতা তৈরি হয় ছোটবেলা থেকেই। স্কুলে ফুটবল বা ক্রিকেট প্রতিযোগিতা হলে অনেকে বৈধ-অবৈধ উপায়ে নিজেদের স্কুলকে বিজয়ী করার চেষ্টা করে। উপজেলা বা জেলা পর্যায়ের খেলায়ও প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের ভয় দেখানো, হুমকি দেওয়া, এমনকি মারধরের মতো ঘটনাও ঘটে।

আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যদি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী দলগুলো সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার মনোভাব গড়ে তোলে, তবে নির্বাচন হবে উৎসবমুখর। সাধারণ ভোটারদের কাছে এটি হয়ে উঠবে আনন্দের দিন, হবে সঠিক নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার সুযোগ। কিন্তু মানসিকতার পরিবর্তন না হলে নির্বাচন আক্রমণাত্মক রূপ নেবে, অরাজকতা ছড়িয়ে পড়বে। নির্বাচনের আনন্দ পরিণত হবে আতঙ্কে। যদি নেতৃত্বের শুরুই প্রতিপক্ষকে দমন ও অনিয়মের মাধ্যমে হয়, তবে সেই নেতৃত্ব দেশের কল্যাণে কতটা ভূমিকা রাখবে-সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।

অতএব দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল, মতাদর্শ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সৎ প্রতিযোগিতা করার মনোভাব সৃষ্টি করা অপরিহার্য। তবেই এ দেশে শান্তি ও গণতন্ত্রের সঠিক চর্চা সম্ভব হবে।

আজিজুল ইসলাম

শিক্ষার্থী, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

টেকসই শহরের একান্ত প্রয়োজন

সুন্দরবনের বাঘ ও জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : আর্শীবাদ নাকি অভিশাপ

সমুদ্রগবেষণায় পশ্চাৎপদতা মৎস্য খাতের ভবিষ্যৎকেই ঝুঁকিতে ফেলছে

কিশোর গ্যাং–সংস্কৃতি: সমাজের জন্য বাড়তে থাকা অশনি সংকেত

ডিগ্রি হাতে, চাকরি স্বপ্নে: শিক্ষিত বেকারদের মানসিক ক্ষয়

সরকারি কর্মচারীদের কর্মেই মুক্তি নাকি আন্দোলনে?

কর্মজীবী নারীর অদৃশ্য মানসিক বোঝা

নগর সংস্কৃতিতে ঐতিহ্যের বিলুপ্তি

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আগাম সতর্কবার্তাই কি যথেষ্ট?

সুলতানপুরে করতোয়া নদীর তাণ্ডব: নদীভাঙনে মানুষের জীবন বিপন্ন

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সম্ভাবনা বিস্তৃত, অনিয়মের ছায়াও গভীর

গেন্ডারিয়ায় সড়ক ও ড্রেন সংস্কারে অনিয়ম: জনদূর্ভোগ বৃদ্ধি

প্রবীণদের সুরক্ষা ও মর্যাদা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি

পলিভিনাইলের ব্যবহার প্রতিরোধ জরুরি

বৈধ সনদধারীদের অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি

টেকসই দুর্যোগ প্রস্তুতিতে জরুরি বাস্তব পদক্ষেপ প্রয়োজন

জলবায়ু পরিবর্তন ও নারী ও কিশোরীদের ঝুঁকি

মেধা হারাচ্ছে দেশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় : অযৌক্তিক ফি, সেশনজট ও প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলায় বিপর্যস্ত শিক্ষার্থী

সামাজিক মাধ্যমের ভুবনে জনতুষ্টিবাদের নতুন রূপ

ভেজাল খেজুরগুড় ও স্বাস্থ্যঝুঁকি

হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় প্রশাসনিক ক্যাডারের প্রয়োজনীয়তা

প্লাস্টিক বর্জ্যে মাছের মৃত্যু: সমাধান কোথায়

খোলা ম্যানহোল: ঢাকার রাজপথে এক নীরব মরণফাঁদ

গণপরিবহন: প্রতিদিনের যন্ত্রণার শেষ কবে?

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পুনর্জাগরণ

সাইবার বুলিং ও ভার্চুয়াল অপরাধ: তরুণদের অদৃশ্য বিপদ

ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে নগরজীবনের চরম ভোগান্তি

রাবি মেডিকেল সেন্টারের সংস্কার চাই

চিংড়ি শিল্পের পরিবেশগত প্রভাব

কক্সবাজার: উন্নয়নের পথে, বিপন্ন প্রকৃতি

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রেক্ষাপটে নতুন সম্ভাবনার ভোর

প্রাথমিক শিক্ষকদের বঞ্চনা দূর না হলে মানোন্নয়ন অসম্ভব

রাবির আবাসন সংকট

সব হাসপাতালে ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন সেবা চালু করা হোক

tab

মতামত » চিঠিপত্র

সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা সংস্কৃতি গড়ে তোলা জরুরি

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

রোববার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রতিযোগিতায় জয়-পরাজয় একেবারেই স্বাভাবিক বিষয়। তাই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার আগে এই পরম সত্যকে মনে-প্রাণে ধারণ করার মতো মূল্যবোধ গড়ে তোলা ভীষণ জরুরি। সব সময় জেতার আশা রাখা আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সহায়তা করলেও, যেকোনো উপায়ে জিততেই হবে কিংবা না জিতলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে হবে-এমন গোঁড়ামি মোটেও সমীচীন নয়। প্রকৃত অর্থে প্রতিযোগিতায় জেতার চেয়েও ব্যক্তিত্ববোধ গড়ে তোলা অধিক জরুরি।

উদাহরণ হিসেবে নির্বাচনকে ধরা যেতে পারে। একজন সৎ ও মানবিক প্রার্থী নানান সৃজনশীল উপায়ে মানুষের হৃদয়ে পৌঁছে যায়, জনসমর্থন অর্জনের চেষ্টা করে। অথচ আমাদের দেশে নির্বাচনকে ভাবা হয় প্রতিপক্ষকে পেশিশক্তি দিয়ে দূরে রাখার সুযোগ হিসেবে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার, প্রচারণায় বাধা, হুমকি-ধমকি কিংবা ব্যালটে জাল ভোটের মতো অনিয়ম যেন এক অলিখিত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুখে ন্যায়ের গান গাইলেও প্রায় সবাই সুযোগ পেলে অবৈধ উপায়ে নিজের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে।

ভোটারদের মতামত উপেক্ষা করে প্রার্থীরা নিজেকেই মহান ভাবতে শুরু করে, আর তাদের সমর্থকেরা অন্ধ প্রশংসায় মেতে ওঠে। কেউ সমালোচনা করলে তাকে ট্যাগিং করে দমিয়ে দেওয়ার প্রবণতাও ব্যাপক। সমালোচনা সহ্য করার মনমানসিকতা নেই বললেই চলে। কিভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু করা যায় তা ভাবার পরিবর্তে, কিভাবে প্রতিপক্ষকে দুর্বল করা যায় সেটাই যেন মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। নির্বাচনের পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো, উসকানি দেওয়া, ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা-এসব কেবল ঘৃণার সম্পর্ক তৈরি করে। অথচ নির্বাচনের পর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠার কথা। বিজয়ীকে অভিনন্দন জানানো, গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে তাকে ভবিষ্যতে ভালোভাবে কাজ করতে সহায়তা করার চর্চাই হওয়া উচিত।

এ ধরনের নেতিবাচক মানসিকতা তৈরি হয় ছোটবেলা থেকেই। স্কুলে ফুটবল বা ক্রিকেট প্রতিযোগিতা হলে অনেকে বৈধ-অবৈধ উপায়ে নিজেদের স্কুলকে বিজয়ী করার চেষ্টা করে। উপজেলা বা জেলা পর্যায়ের খেলায়ও প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের ভয় দেখানো, হুমকি দেওয়া, এমনকি মারধরের মতো ঘটনাও ঘটে।

আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যদি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী দলগুলো সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার মনোভাব গড়ে তোলে, তবে নির্বাচন হবে উৎসবমুখর। সাধারণ ভোটারদের কাছে এটি হয়ে উঠবে আনন্দের দিন, হবে সঠিক নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার সুযোগ। কিন্তু মানসিকতার পরিবর্তন না হলে নির্বাচন আক্রমণাত্মক রূপ নেবে, অরাজকতা ছড়িয়ে পড়বে। নির্বাচনের আনন্দ পরিণত হবে আতঙ্কে। যদি নেতৃত্বের শুরুই প্রতিপক্ষকে দমন ও অনিয়মের মাধ্যমে হয়, তবে সেই নেতৃত্ব দেশের কল্যাণে কতটা ভূমিকা রাখবে-সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।

অতএব দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল, মতাদর্শ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সৎ প্রতিযোগিতা করার মনোভাব সৃষ্টি করা অপরিহার্য। তবেই এ দেশে শান্তি ও গণতন্ত্রের সঠিক চর্চা সম্ভব হবে।

আজিজুল ইসলাম

শিক্ষার্থী, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

back to top