মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
বাংলাদেশের নগরায়ণ আজ এক অদ্ভুত দ্বৈততায় দাঁড়িয়ে। একদিকে উন্নয়নের দৌড়, অন্যদিকে প্রাকৃতিক জলাধারের বিনাশ। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনায় নদী-নালা ভরাট করে দখল, বাণিজ্যিক প্লট তৈরি ও অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণ যেন নৈমিত্তিক বিষয় হয়ে উঠেছে। এ অব্যবস্থা প্রমাণ করে নগর পরিকল্পনা কতটা দুর্বল ও বাস্তবহীন।
মূল সংকট হলো জলাধারের গুরুত্বকে পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে না নেওয়া। নদী-নালার স্বাভাবিক প্রবাহ ও জলধারণ ক্ষমতা উপেক্ষা করে ভবন, সড়ক ও আবাসিক প্রকল্প বিস্তৃত করা হচ্ছে। প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা ও সমন্বয়হীনতার কারণে রাজউক, সিটি করপোরেশন, ওয়াসা ও পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রম মিলছে না। কোথাও খাল উদ্ধার হলেও পাশেই অন্য সংস্থা তা সংকুচিত করে, ফলে দখলদারি বেড়ে যাচ্ছে।
এর প্রভাব শহরের জলাবদ্ধতা ও বন্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে। ঢাকার অধিকাংশ খাল ভরাট, প্রাকৃতিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। আইন থাকলেও প্রয়োগ হয় না; প্রভাবশালী দখলদার শাস্তি এড়িয়ে যায় এবং সাধারণ মানুষ নদী-নালা ধ্বংসকে উপেক্ষা করে।
সমাধান হলো নগর পরিকল্পনায় নদী-নালা-জলাধারকে কেন্দ্র করে ব্লু নেটওয়ার্কভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ, খাল পুনঃখনন, দখলমুক্তকরণ ও পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি। সমস্ত উন্নয়ন প্রকল্পকে জলাধারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অনুমোদন ও বহু সংস্থার কাজ একক কর্তৃপক্ষের অধীনে সমন্বয় করা জরুরি। প্রকৃতিকে প্রতিপক্ষ নয়, অংশীদার হিসেবে না দেখলে নগরায়ণ টেকসই হবে না। নদী-নালা রক্ষা না করলে শহর কংক্রিটের জলাবদ্ধ মরুভূমিতে পরিণত হবে।
শায়লা নাজনীন
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
রোববার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের নগরায়ণ আজ এক অদ্ভুত দ্বৈততায় দাঁড়িয়ে। একদিকে উন্নয়নের দৌড়, অন্যদিকে প্রাকৃতিক জলাধারের বিনাশ। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনায় নদী-নালা ভরাট করে দখল, বাণিজ্যিক প্লট তৈরি ও অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণ যেন নৈমিত্তিক বিষয় হয়ে উঠেছে। এ অব্যবস্থা প্রমাণ করে নগর পরিকল্পনা কতটা দুর্বল ও বাস্তবহীন।
মূল সংকট হলো জলাধারের গুরুত্বকে পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে না নেওয়া। নদী-নালার স্বাভাবিক প্রবাহ ও জলধারণ ক্ষমতা উপেক্ষা করে ভবন, সড়ক ও আবাসিক প্রকল্প বিস্তৃত করা হচ্ছে। প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা ও সমন্বয়হীনতার কারণে রাজউক, সিটি করপোরেশন, ওয়াসা ও পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রম মিলছে না। কোথাও খাল উদ্ধার হলেও পাশেই অন্য সংস্থা তা সংকুচিত করে, ফলে দখলদারি বেড়ে যাচ্ছে।
এর প্রভাব শহরের জলাবদ্ধতা ও বন্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে। ঢাকার অধিকাংশ খাল ভরাট, প্রাকৃতিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। আইন থাকলেও প্রয়োগ হয় না; প্রভাবশালী দখলদার শাস্তি এড়িয়ে যায় এবং সাধারণ মানুষ নদী-নালা ধ্বংসকে উপেক্ষা করে।
সমাধান হলো নগর পরিকল্পনায় নদী-নালা-জলাধারকে কেন্দ্র করে ব্লু নেটওয়ার্কভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ, খাল পুনঃখনন, দখলমুক্তকরণ ও পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি। সমস্ত উন্নয়ন প্রকল্পকে জলাধারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অনুমোদন ও বহু সংস্থার কাজ একক কর্তৃপক্ষের অধীনে সমন্বয় করা জরুরি। প্রকৃতিকে প্রতিপক্ষ নয়, অংশীদার হিসেবে না দেখলে নগরায়ণ টেকসই হবে না। নদী-নালা রক্ষা না করলে শহর কংক্রিটের জলাবদ্ধ মরুভূমিতে পরিণত হবে।
শায়লা নাজনীন