alt

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

গাড়িতে চাই শিশু আসন

তরিকুল ইসলাম

: শনিবার, ০৬ আগস্ট ২০২২

‘আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ’, আর তাই তো আমাদের সবার উচিত তাদের নিরাপত্তার দিকটা লক্ষ্য রাখা। ২০২০ সালে সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রায় ৬৪৯ জন শিশু নিহত হয়েছে! গত দুই বছরে সড়কে ঝরেছে ১ হাজার ৬ শত ৭৪ শিশুর প্রাণ! আর চলতি বছরের এপ্রিলে ৪২৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৮১ জন শিশুর মৃত্যু হয়। বিষয়টা কতটা দুঃখজনক, ভেবে দেখেছেন? এইসব ভয়াবহ দুর্ঘটনা রোধকল্পে সবার সচেতন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যাতে আর কোন শিশুর জীবন যেন অঙ্কুরেই বিনাশ হয়ে না যায়!

উচ্চ গতির যুগে এবং গাড়িতে আটকে থাকা রাস্তা, চালকদের বেপরোয়াতায়, ভ্রমণের সময় শিশুর ঝুঁকি বেড়ে যায়। অতএব, শিশুদের নিরাপদ পরিবহনের জন্য, শিশুদের উপযোগী সুরক্ষিত আসন অত্যান্ত জরুরি।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে যার মধ্যে অন্যতম হলো সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮। তবে, আইনটি যুগোপযোগী হওয়া সত্ত্বেও এর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আইনটিতে মোটরসাইকেলে হেলমেট পরিধান বাধ্যতামূলক করে দেয়া হলেও, মানসম্মত হেলমেট ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা কিংবা এর মানদ- নির্ণয় করে দেয়া হয়নি। এ আইনে গতিসীমা লঙ্ঘনের বিধান বর্ণিত থাকলেও গতিসীমা নির্ধারণ কিংবা পর্যবেক্ষণের নির্দেশনা ও পরিকল্পনা উল্লেখ করা হয়নি। এ ছাড়া যাত্রীদের সিটবেল্ট ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা ও শিশুদের ক্ষেত্রে চাইল্ড রেস্ট্রেইন বা শিশুদের জন্য নিরাপদ বা সুরক্ষিত আসন ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা আইনটিতে নেই।

বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনা এক থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের মৃত্যুর প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিশু সুরক্ষিত আসন উল্লেখযোগ্যভাবে আঘাত অসুস্থতা এবং মৃত্যুহার হ্রাস করে।

দুর্ঘটনায় শিশুদের আঘাত প্রতিরোধ করার সর্বোত্তম উপায় হল গাড়িতে ভ্রমণ করার সময় তাদের সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া। আইন অনুসারে, অস্ট্রেলিয়ায় গাড়িতে ভ্রমণ করার সময় সব যাত্রীকে অবশ্যই যথাযথভাবে সংযত রাখতে হবে। শিশুদের তাদের বয়স এবং আকারের জন্য সঠিক শিশু আসন ব্যবহার করে সংযত করা।

শিশু সুরক্ষার আসন, কখনো কখনো বলা হয় শিশু নিরাপত্তা আসন, শিশু সংযম ব্যবস্থা, শিশু আসন বা বুস্টার সিট এমন একটি আসন, যা বিশেষত বাচ্চাদের গাড়ির সংঘর্ষের সময় আঘাত বা মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। অনেক আইনশাস্ত্রে কোন বয়সে, ওজন বা উচ্চতা দ্বারা সংজ্ঞায়িত বাচ্চাদের একটি গাড়িতে বহন করানোর সময় সরকার অনুমোদিত শিশু সুরক্ষা আসন ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়।

শিশু আসনের পক্ষে কারণগুলোর মধ্য অন্যতম হচ্ছে সড়কে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে শিশু আসন থাকায় শিশুকে সুরক্ষা রাখে, ধাক্কা ছাড়াই এবং সর্বাধিক গতির অসুস্থতার প্রভাবসহ একটি নিরাপদ ভ্রমণ প্রদান করে। শিশুর ক্যারিয়ারে শিশুটিকে তার স্বাস্থ্যের সঙ্গে আপোস না করে দীর্ঘ দূরত্বে পরিবহন করা সম্ভব।

আমাদের দেশে পরিবহনে শিশু আসন তৈরি করার কোন আইনি বিধিবিধান নেই। তাই বর্তমান নীতিমালায় শিশু আসন বাস্তবায়নে একটি সংযোজন প্রয়োজন। দেশে সঠিকভাবে শিশু নিরাপত্তা আসন ব্যবহার করা হলে যাত্রীবাহী গাড়িতে শিশুমৃত্যু কমাতে শিশু নিরাপত্তা আসন ৭১ শতাংশ কার্যকরী এবং শিশুর মৃত্যু কমাতে ৫৪ শতাংশ কার্যকর হবে।

আমাদের দেশের গাড়িগুলো শিশু আসন খুবই জরুরি। শিশু আসনের ক্ষেত্রে নতুন আইন প্রণয়ন করে, তা অতি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হোক। প্রতি বছরে সড়কে আমাদের দেশে অভাবণীয় শিশুর প্রাণ ঝরে যাচ্ছে। আর এই মৃত্যুর হাত থেকে শিশুদের সুরক্ষা রাখতে শিশু আসন আইন প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন চাই।

[লেখক : অ্যাডভোকেসি অফিসার (কমিউনিকেশন), রোড সেইফটি প্রকল্প, স্বাস্থ্য সেক্টর, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন]

নির্বাচনী মাঠে জামায়াতী হেকমত

শিক্ষা ব্যবস্থায় গভীর বৈষম্য ও জাতির অগ্রযাত্রাধ

উপমহাদেশে সমাজতন্ত্রের স্বপ্ন, বাস্তবতা ও চ্যালেঞ্জ

এইচএসসি ফল: সংখ্যার খেল না কি শিক্ষার বাস্তব চিত্র?

বিনা ভোট, নিশি ভোট, ডামি ভোটের পরে এবার নাকি গণভোট!

কমরেড ইলা মিত্রের শততম জন্মজয়ন্তী

কত মৃত্যু হলে জাগবে বিবেক?

বৈষম্যের বিবিধ মুখ

মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় জরুরি আইনি সহায়তা

গাজা : এখন শান্তি রক্ষা করবে কে?

দোসর, বাই ডিফল্ট!

জমি কেনা দাগে দাগে কিন্তু ভোগদখল একদাগে

রাষ্ট্র কি শুধু শিক্ষকদের বেলায় এসে দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে?

শতরঞ্জ কি খিলাড়ী

শিক্ষক থাকে রাজপথে, আর পুলিশ ছাড়ে থানা

উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা : স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবিষ্যৎ কী?

ছবি

শ্লীলতা, অশ্লীলতার রাজনৈতিক সংস্কৃতি

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: অবক্ষয়ের চোরাবালিতে আলোর দিশারী

অটোমেশন ও দেশের যুব কর্মসংস্থানের ভবিষ্যৎ

দুর্যোগে ভয় নয়, প্রস্তুতিই শক্তি

বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন

ছবি

‘আল্লাহ তুই দেহিস’: এ কোন ঘৃণার আগুন, ছড়িয়ে গেল সবখানে!

চেকের মামলায় আসামী যেসব ডিফেন্স নিয়ে খালাস পেতে পারেন

খেলনাশিল্প: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ

ছবি

প্রান্তিক মানুষের হৃদয়ে ফিরে আসা কালো মেঘ

গীর্জায় হামলার নেপথ্যে কী?

সংঘের শতবর্ষের রাজনৈতিক তাৎপর্য

দুর্নীতি আর চাঁদাবাজি রাজনৈতিক-সংস্কৃতির অংশ

বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস

বাংলার সংস্কৃতি : উৎস, বিবর্তন ও বর্তমান সমাজ-মনন

রম্যগদ্য: শিক্ষা সহজ, বিদ্যা কঠিন

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জনগণের ভূমিকা উপেক্ষিত

শ্রমজীবী মানুষের শোভন কর্মসংস্থান

মূল্যস্ফীতি মোকাবেলায় বাংলাদেশের বাস্তবতা

প্রবারণার আলোয় আলোকিত হোক মানবজাতি

অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে ওয়াশিংটনের শেষ সুযোগ?

tab

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

গাড়িতে চাই শিশু আসন

তরিকুল ইসলাম

শনিবার, ০৬ আগস্ট ২০২২

‘আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ’, আর তাই তো আমাদের সবার উচিত তাদের নিরাপত্তার দিকটা লক্ষ্য রাখা। ২০২০ সালে সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রায় ৬৪৯ জন শিশু নিহত হয়েছে! গত দুই বছরে সড়কে ঝরেছে ১ হাজার ৬ শত ৭৪ শিশুর প্রাণ! আর চলতি বছরের এপ্রিলে ৪২৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৮১ জন শিশুর মৃত্যু হয়। বিষয়টা কতটা দুঃখজনক, ভেবে দেখেছেন? এইসব ভয়াবহ দুর্ঘটনা রোধকল্পে সবার সচেতন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যাতে আর কোন শিশুর জীবন যেন অঙ্কুরেই বিনাশ হয়ে না যায়!

উচ্চ গতির যুগে এবং গাড়িতে আটকে থাকা রাস্তা, চালকদের বেপরোয়াতায়, ভ্রমণের সময় শিশুর ঝুঁকি বেড়ে যায়। অতএব, শিশুদের নিরাপদ পরিবহনের জন্য, শিশুদের উপযোগী সুরক্ষিত আসন অত্যান্ত জরুরি।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে যার মধ্যে অন্যতম হলো সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮। তবে, আইনটি যুগোপযোগী হওয়া সত্ত্বেও এর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আইনটিতে মোটরসাইকেলে হেলমেট পরিধান বাধ্যতামূলক করে দেয়া হলেও, মানসম্মত হেলমেট ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা কিংবা এর মানদ- নির্ণয় করে দেয়া হয়নি। এ আইনে গতিসীমা লঙ্ঘনের বিধান বর্ণিত থাকলেও গতিসীমা নির্ধারণ কিংবা পর্যবেক্ষণের নির্দেশনা ও পরিকল্পনা উল্লেখ করা হয়নি। এ ছাড়া যাত্রীদের সিটবেল্ট ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা ও শিশুদের ক্ষেত্রে চাইল্ড রেস্ট্রেইন বা শিশুদের জন্য নিরাপদ বা সুরক্ষিত আসন ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা আইনটিতে নেই।

বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনা এক থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের মৃত্যুর প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিশু সুরক্ষিত আসন উল্লেখযোগ্যভাবে আঘাত অসুস্থতা এবং মৃত্যুহার হ্রাস করে।

দুর্ঘটনায় শিশুদের আঘাত প্রতিরোধ করার সর্বোত্তম উপায় হল গাড়িতে ভ্রমণ করার সময় তাদের সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া। আইন অনুসারে, অস্ট্রেলিয়ায় গাড়িতে ভ্রমণ করার সময় সব যাত্রীকে অবশ্যই যথাযথভাবে সংযত রাখতে হবে। শিশুদের তাদের বয়স এবং আকারের জন্য সঠিক শিশু আসন ব্যবহার করে সংযত করা।

শিশু সুরক্ষার আসন, কখনো কখনো বলা হয় শিশু নিরাপত্তা আসন, শিশু সংযম ব্যবস্থা, শিশু আসন বা বুস্টার সিট এমন একটি আসন, যা বিশেষত বাচ্চাদের গাড়ির সংঘর্ষের সময় আঘাত বা মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। অনেক আইনশাস্ত্রে কোন বয়সে, ওজন বা উচ্চতা দ্বারা সংজ্ঞায়িত বাচ্চাদের একটি গাড়িতে বহন করানোর সময় সরকার অনুমোদিত শিশু সুরক্ষা আসন ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়।

শিশু আসনের পক্ষে কারণগুলোর মধ্য অন্যতম হচ্ছে সড়কে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে শিশু আসন থাকায় শিশুকে সুরক্ষা রাখে, ধাক্কা ছাড়াই এবং সর্বাধিক গতির অসুস্থতার প্রভাবসহ একটি নিরাপদ ভ্রমণ প্রদান করে। শিশুর ক্যারিয়ারে শিশুটিকে তার স্বাস্থ্যের সঙ্গে আপোস না করে দীর্ঘ দূরত্বে পরিবহন করা সম্ভব।

আমাদের দেশে পরিবহনে শিশু আসন তৈরি করার কোন আইনি বিধিবিধান নেই। তাই বর্তমান নীতিমালায় শিশু আসন বাস্তবায়নে একটি সংযোজন প্রয়োজন। দেশে সঠিকভাবে শিশু নিরাপত্তা আসন ব্যবহার করা হলে যাত্রীবাহী গাড়িতে শিশুমৃত্যু কমাতে শিশু নিরাপত্তা আসন ৭১ শতাংশ কার্যকরী এবং শিশুর মৃত্যু কমাতে ৫৪ শতাংশ কার্যকর হবে।

আমাদের দেশের গাড়িগুলো শিশু আসন খুবই জরুরি। শিশু আসনের ক্ষেত্রে নতুন আইন প্রণয়ন করে, তা অতি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হোক। প্রতি বছরে সড়কে আমাদের দেশে অভাবণীয় শিশুর প্রাণ ঝরে যাচ্ছে। আর এই মৃত্যুর হাত থেকে শিশুদের সুরক্ষা রাখতে শিশু আসন আইন প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন চাই।

[লেখক : অ্যাডভোকেসি অফিসার (কমিউনিকেশন), রোড সেইফটি প্রকল্প, স্বাস্থ্য সেক্টর, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন]

back to top