বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়ানো করোনাভাইরাসের দক্ষিণ আফ্রিকান নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নিয়ে সারা দেশের বিমান, সমুদ্র ও স্থলবন্দরসহ সব পোর্ট অফ এন্ট্রিতে সতর্কবার্তা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। একইসঙ্গে সবাইকে নিয়মিত মাস্ক পরা, নিয়মিত হাত ধোয়াসহ ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৮ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এই তথ্য জানান সংস্থাটির মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ।’
গত মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনাভাইরাসের নতুন এ ধরনটি প্রথম শনাক্ত হয়। বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর নাম দেয় ‘ওমিক্রন’। এরই মধ্যে বতসোয়ানা, বেলজিয়াম, হংকং এবং ইসরায়েলেও শনাক্ত হয়েছে এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক শনিবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, “সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আমরা অবহিত হয়েছি। এই ভ্যারিয়েন্ট খুবই অ্যাগ্রেসিভ। এ কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে যোগাযোগ এখনই স্থগিত করা হচ্ছে।”
অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা সবাই জেনেছি ‘ওমিক্রন’ নামক দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে উৎপন্ন করোনার একটি নতুন ভ্যারিয়েন্টকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উদ্বেগের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। ইতোমধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আমাদের সব পোর্ট অফ এন্ট্রিতে নির্দেশনা দিয়েছি।
তিনি বলেন, জাতীয় কারিগরি কমিটি, ন্যাশনাল ইমুনাইজেশন টেকনিক্যাল কমিটিসহ (নাইট্যাগ) স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বিভিন্ন পর্যায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও সভা করছেন। তারা বিভিন্ন দেশের করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছেন। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে সবার নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য যে সমস্ত কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হয় সেগুলো আমরা নেব। আমরা সবার সহযোগিতা নিয়ে এটি মোকাবিলা করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, কোনো অবস্থাতেই আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো সুযোগ নেই। যেকোনো সময়েই সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। তাই সংক্রমণ মোকাবিলায় ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি ও শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে। নাক-মুখ ঢেকে সঠিক নিয়মে মাস্ক পরতে হবে এবং নিয়মিত সাবান পানি দিয়ে ২০ সেকেন্ড বা তার চেয়ে বেশি সময় হাত ধুতে হবে।
দেশের সংক্রমণ পরিস্থিতির তথ্য উল্লেখ করে এ মুখপাত্র বলেন, গত এক সপ্তাহে আমরা যদি দেশের সংক্রমণ পরিস্থিতি দেখি, এক লাখ ২৫ হাজার ৫৮৫টি পরীক্ষা গত সাতদিনে হয়েছে, যা পূর্ববর্তী সপ্তাহের চেয়ে তিন শতাংশের মতো কম। আর এই সাত দিনে এক হাজার ৬৯০ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা পূর্ববর্তী সাত দিনের চেয়ে চার দশমিক ৯০ শতাংশ বেশি। একইসঙ্গে গত সাত দিনে দেশে ২৯টি মৃত্যু রেকর্ড হয়েছে, যা পূর্ববর্তী সাত দিনের চেয়ে একটি বেশি।
নাজমুল ইসলাম বলেন, সামগ্রিকভাবে বিগত সাত দিনের যে সংক্রমণ পরিস্থিতি, সেটি শতকরা শনাক্তের হিসাবে দুই শতাংশের নিচে আছে। গতকাল (২৭ নভেম্বর) ১৫৫টি নমুনা পজিটিভ পাওয়া গেছে, যা শতকরা হিসাবে শনাক্তের হার এক দশমিক ১৫ শতাংশ। সব মিলিয়ে গত ৩০ দিনে আমরা সংক্রমণের নিম্নগতি লক্ষ্য করেছি। জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত যদি আমরা তাকাই, তাহলে আমরা দেখি যে, জুলাই মাস ছিল সবচেয়ে বেশি সংখ্যক রোগী শনাক্তের মাস এবং নভেম্বর মাসের গতকাল পর্যন্ত ৬ হাজার ৪০ জন রোগী শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। শীর্ষ দশটি জেলা যদি আমরা বিবেচনা করি, তাহলে সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে কক্সবাজার জেলা। সেখানে ২৩ হাজার ৩৩৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং বরাবরের মতোই শীর্ষে রয়েছে ঢাকা জেলা, যেখানে ৫ লাখ ২৯ হাজার ৪৭৯ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
বন্দর পরিস্থিতি উল্লেখ করে নাজমুল ইসলাম বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে বিমান, সমুদ্র ও স্থলবন্দরগুলো দিয়ে সর্বমোট নয় হাজার ৫৯০ জন যাত্রী দেশে প্রবেশ করেছে। আর তার সিংহভাগই এসেছে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে। তাদের প্রত্যেককেই যথাযথ স্ক্রিনিং করার পর প্রয়োজন অনুযায়ী আইসোলেশন বা যাদের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর প্রয়োজন তাদের আমরা পাঠিয়েছি। আমরা মনে করি, করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি আমাদের মেনে চলতেই হবে।
রোববার, ২৮ নভেম্বর ২০২১
বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়ানো করোনাভাইরাসের দক্ষিণ আফ্রিকান নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নিয়ে সারা দেশের বিমান, সমুদ্র ও স্থলবন্দরসহ সব পোর্ট অফ এন্ট্রিতে সতর্কবার্তা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। একইসঙ্গে সবাইকে নিয়মিত মাস্ক পরা, নিয়মিত হাত ধোয়াসহ ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৮ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এই তথ্য জানান সংস্থাটির মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ।’
গত মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনাভাইরাসের নতুন এ ধরনটি প্রথম শনাক্ত হয়। বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর নাম দেয় ‘ওমিক্রন’। এরই মধ্যে বতসোয়ানা, বেলজিয়াম, হংকং এবং ইসরায়েলেও শনাক্ত হয়েছে এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক শনিবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, “সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আমরা অবহিত হয়েছি। এই ভ্যারিয়েন্ট খুবই অ্যাগ্রেসিভ। এ কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে যোগাযোগ এখনই স্থগিত করা হচ্ছে।”
অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা সবাই জেনেছি ‘ওমিক্রন’ নামক দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে উৎপন্ন করোনার একটি নতুন ভ্যারিয়েন্টকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উদ্বেগের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। ইতোমধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আমাদের সব পোর্ট অফ এন্ট্রিতে নির্দেশনা দিয়েছি।
তিনি বলেন, জাতীয় কারিগরি কমিটি, ন্যাশনাল ইমুনাইজেশন টেকনিক্যাল কমিটিসহ (নাইট্যাগ) স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বিভিন্ন পর্যায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও সভা করছেন। তারা বিভিন্ন দেশের করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছেন। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে সবার নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য যে সমস্ত কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হয় সেগুলো আমরা নেব। আমরা সবার সহযোগিতা নিয়ে এটি মোকাবিলা করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, কোনো অবস্থাতেই আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো সুযোগ নেই। যেকোনো সময়েই সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। তাই সংক্রমণ মোকাবিলায় ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি ও শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে। নাক-মুখ ঢেকে সঠিক নিয়মে মাস্ক পরতে হবে এবং নিয়মিত সাবান পানি দিয়ে ২০ সেকেন্ড বা তার চেয়ে বেশি সময় হাত ধুতে হবে।
দেশের সংক্রমণ পরিস্থিতির তথ্য উল্লেখ করে এ মুখপাত্র বলেন, গত এক সপ্তাহে আমরা যদি দেশের সংক্রমণ পরিস্থিতি দেখি, এক লাখ ২৫ হাজার ৫৮৫টি পরীক্ষা গত সাতদিনে হয়েছে, যা পূর্ববর্তী সপ্তাহের চেয়ে তিন শতাংশের মতো কম। আর এই সাত দিনে এক হাজার ৬৯০ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা পূর্ববর্তী সাত দিনের চেয়ে চার দশমিক ৯০ শতাংশ বেশি। একইসঙ্গে গত সাত দিনে দেশে ২৯টি মৃত্যু রেকর্ড হয়েছে, যা পূর্ববর্তী সাত দিনের চেয়ে একটি বেশি।
নাজমুল ইসলাম বলেন, সামগ্রিকভাবে বিগত সাত দিনের যে সংক্রমণ পরিস্থিতি, সেটি শতকরা শনাক্তের হিসাবে দুই শতাংশের নিচে আছে। গতকাল (২৭ নভেম্বর) ১৫৫টি নমুনা পজিটিভ পাওয়া গেছে, যা শতকরা হিসাবে শনাক্তের হার এক দশমিক ১৫ শতাংশ। সব মিলিয়ে গত ৩০ দিনে আমরা সংক্রমণের নিম্নগতি লক্ষ্য করেছি। জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত যদি আমরা তাকাই, তাহলে আমরা দেখি যে, জুলাই মাস ছিল সবচেয়ে বেশি সংখ্যক রোগী শনাক্তের মাস এবং নভেম্বর মাসের গতকাল পর্যন্ত ৬ হাজার ৪০ জন রোগী শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। শীর্ষ দশটি জেলা যদি আমরা বিবেচনা করি, তাহলে সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে কক্সবাজার জেলা। সেখানে ২৩ হাজার ৩৩৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং বরাবরের মতোই শীর্ষে রয়েছে ঢাকা জেলা, যেখানে ৫ লাখ ২৯ হাজার ৪৭৯ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
বন্দর পরিস্থিতি উল্লেখ করে নাজমুল ইসলাম বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে বিমান, সমুদ্র ও স্থলবন্দরগুলো দিয়ে সর্বমোট নয় হাজার ৫৯০ জন যাত্রী দেশে প্রবেশ করেছে। আর তার সিংহভাগই এসেছে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে। তাদের প্রত্যেককেই যথাযথ স্ক্রিনিং করার পর প্রয়োজন অনুযায়ী আইসোলেশন বা যাদের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর প্রয়োজন তাদের আমরা পাঠিয়েছি। আমরা মনে করি, করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি আমাদের মেনে চলতেই হবে।