অবশেষে মুখ খুললেন খুলনা থেকে নিখোঁজের ৩০ দিন পর ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে নাটকীয়ভাবে উদ্ধার হওয়া রহিমা বেগম। উদ্ধারের পর রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তিনি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) জানিয়েছেন, তাকে চারজন অপহরণ করেছিল।
উদ্ধার হওয়ার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর রোববার দুপুর ১টার দিকে তাকে সন্তানদের মুখোমুখি করা হয় রহিমা বেগমকে। এরপর তিনি মুখ খোলেন। তিনি দাবি করেন, বাসার নিচ থেকে ৪ জন দুর্বৃত্ত মুখে কাপড় বেঁধে তাকে অপহরণ করেছিল।
রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেলা আড়াইটার দিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, শনিবার ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে উদ্ধারের পর কোনো কথাই বলছিলেন না রহিমা বেগম। বেলা ১টার দিকে তাকে মেয়ে মরিয়ম মান্নানসহ চার মেয়ের মুখোমুখি নেওয়া হয়। এ সময় মেয়েরা মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
কান্নারত অবস্থায় মেয়েরা মাকে বলতে থাকেন, ‘আমাদের ছেড়ে আর কোনোদিন কোথাও যাবে না! আমাদের জমি দরকার নেই। তোমাকে দরকার!’
পরে অপহৃত হয়েছিলেন বলে দাবি করেন রহিমা বেগম।
জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, রহিমা বেগমকে অপহরণের পর অজ্ঞাত স্থানে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করেছেন তিনি। জমি-জমার বিরোধ থাকা কিবরিয়া, মহিউদ্দিনসহ কয়েক ব্যক্তি তার কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর এবং বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দেন। এক পর্যায়ে তাকে একহাজার টাকা দিয়ে ছেড়ে দেন।
পুলিশ সুপার জানান, ‘রহিমা বেগমের দাবি, তিনি কিছুই চিনতে পারছিলেন না। এক পর্যায়ে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর হয়ে পূর্ব পরিচিত ভাড়াটিয়া ফরিদপুরের বোয়ালখালীর সৈয়দপুর গ্রামে যান। কিন্তু তার কাছে কোনো মোবাইল নম্বর না থাকায় কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারেননি।’
পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, আমরা রহিমা বেগমের বক্তব্য খতিয়ে দেখছি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রোববার দুপুরে তাকে মহানগর হাকিম আদালতে পাঠানো হয়েছে। আইন অনুযায়ী সবকিছু করা হবে।
এর আগে রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেছিলেন, রহিমার কাছে সাদা রঙের একটি শপিং ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। যার মধ্যে ওড়না, হিজাব, আয়না, শাড়ি, আই ড্রপ, ওষুধ, সালোয়ার-কামিজ এবং ছোট একটি হাত ব্যাগ ছিল। সাধারণত একজনকে অপহরণ করে নিয়ে গেলে এই জিনিসগুলো থাকার কথা না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ব্যাপক আলোচনায় আসা মরিয়ম মান্নানের মাকে উদ্ধার নিয়ে গত শনিবার গভীর রাতে নগরীর দৌলতপুর থানায় ব্রিফিং করেন খুলনা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে আমরা নিশ্চিত হয়েছিলাম, রহিমা বেগম ফরিদপুরে আছেন। পরে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনারের নির্দেশে আমাদের দক্ষ কিছু কর্মকর্তা সেখানে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
রহিমার অবস্থান শনাক্ত করা যাচ্ছিল না জানিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, রহিমা বেগম নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার সকল ডিজিটাল ডিভাইস বন্ধ করে রেখেছিল। তাকে আমরা কোনোভাবেই ট্র্যাক করতে পারছিলাম না। গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে যে বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে, সেই বাড়ির দুই নারীর সঙ্গে তিনি বসে গল্প করছিলেন, তবে আমাদের অফিসাররা তাকে উদ্ধারের পর কোনো কথার জবাব দেননি। সেই থেকে তিনি নির্বাক রয়েছেন।
পুলিশের ভাষ্য, ফরিদপুরের যে বাড়ি থেকে রহিমা বেগমকে আটক করা হয়েছে সেই বাড়ির মালিক কুদ্দুস মোল্লা এক সময় রহিমাদের খুলনার বাসায় ভাড়া থাকতেন। খুলনা শহরে পাটকলের শ্রমিক ছিলেন কুদ্দুস।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে রহিমার ছেলে মিরাজ একবার কুদ্দুসের বোয়ালমারীর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। রহিমাদের সঙ্গে কুদ্দুসের তেমন সম্পর্ক ছিল না।
কুদ্দুসের বাড়ি থেকে তিনজনকে আটকের কথা জানিয়ে কেএমপির কর্মকর্তা মোল্লা জাহাঙ্গীর বলেন, ‘ওই বাড়ি থেকে আমরা তিনজনকে হেফাজতে নিয়ে এসেছি। তারা হলেন কুদ্দুস মোল্লার স্ত্রী, ছেলে ও তার (কুদ্দুস) ভাইয়ের স্ত্রী। এই তিনজনের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, গত ১৭ আগস্ট ওই বাড়িতে রহিমা বেগম গিয়েছিলেন। প্রথমে তারা রহিমাকে চিনতে পারেনি। পরে একপর্যায়ে তাকে চিনতে পারে। তখন তাকে সাবেক বাড়িওয়ালা হিসেবে বেশ সেবাযত্ন করেন (কুদ্দুস ও তার বাড়ির লোকজন)। পরবর্তী সময়ে তাদের কাছে (রহিমা) জানান, এর আগে তিনি গোপালগঞ্জের মকছেদপুর ও চট্টগ্রামে ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সকালে নিখোঁজ রহিমা বেগমের (৫২) সন্ধানে ময়মনসিংহে যায় তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান ও তার পরিবারের সদস্যরা। একটি সালোয়ার দেখে মায়ের লাশ দাবি করেন মরিয়ম। তবে পুলিশ বলেছিল, ডিএনএ টেস্ট ছাড়া লাশ চূড়ান্তভাবে শনাক্ত করা সম্ভব নয়।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ আগস্ট রাত আনুমানিক ১০টার দিকে খুলনা মহানগরীর মহেশ্বরপাশার উত্তর বণিকপাড়ার নিজ বাসা থেকে টিউবওয়েলে পানি আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। এরপর আর ঘরে ফেরেননি তিনি। স্বামী বেল্লাল ঘটক ও ভাড়াটিয়ারা নলকূপের পাশে ঝোপঝাড়ে তার ব্যবহৃত ওড়না, স্যান্ডেল ও বালতি দেখতে পান। সেই রাতে মাকে খুঁজতে আত্মীয়স্বজন, আশপাশসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেন সন্তানরা।
রহিমার ছয় সন্তান কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কখনো মাইকিং, কখনো আত্মীয়স্বজনদের দ্বারস্থ হয়েছেন। সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধনের পর মাকে খুঁজে পেতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানায় মামলাও দায়ের করেন। মামলার বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পিবিআই তদন্তের ভার পায়। ১৭ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানা থেকে মামলাটি পিবিআইয়ে স্থানান্তর করা হয়।
পুলিশ জানায়, গত ২৭ আগস্ট নগরীর মহেশ্বরপাশা এলাকার বাড়ির সামনে থেকে রহিমা বেগম নিখোঁজ হয়-এ অভিযোগ তুলে তার মেয়ে আদুরি আক্তার বাদী হয়ে পরের দিন দৌলতপুর থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় এ পর্যন্ত ৬ জন আটক হয়েছেন। তারা হলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া, তার বড় ভাই মহিউদ্দিন, নিখোঁজ গৃহবধূর দ্বিতীয় স্বামী হেলাল হাওলাদার, দৌলতপুর মহেশ্বরপশা, পলাশ, নূর আলম জুয়েল এবং হেলাল শরীফ।
রোববার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
অবশেষে মুখ খুললেন খুলনা থেকে নিখোঁজের ৩০ দিন পর ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে নাটকীয়ভাবে উদ্ধার হওয়া রহিমা বেগম। উদ্ধারের পর রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তিনি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) জানিয়েছেন, তাকে চারজন অপহরণ করেছিল।
উদ্ধার হওয়ার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর রোববার দুপুর ১টার দিকে তাকে সন্তানদের মুখোমুখি করা হয় রহিমা বেগমকে। এরপর তিনি মুখ খোলেন। তিনি দাবি করেন, বাসার নিচ থেকে ৪ জন দুর্বৃত্ত মুখে কাপড় বেঁধে তাকে অপহরণ করেছিল।
রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেলা আড়াইটার দিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, শনিবার ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে উদ্ধারের পর কোনো কথাই বলছিলেন না রহিমা বেগম। বেলা ১টার দিকে তাকে মেয়ে মরিয়ম মান্নানসহ চার মেয়ের মুখোমুখি নেওয়া হয়। এ সময় মেয়েরা মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
কান্নারত অবস্থায় মেয়েরা মাকে বলতে থাকেন, ‘আমাদের ছেড়ে আর কোনোদিন কোথাও যাবে না! আমাদের জমি দরকার নেই। তোমাকে দরকার!’
পরে অপহৃত হয়েছিলেন বলে দাবি করেন রহিমা বেগম।
জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, রহিমা বেগমকে অপহরণের পর অজ্ঞাত স্থানে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করেছেন তিনি। জমি-জমার বিরোধ থাকা কিবরিয়া, মহিউদ্দিনসহ কয়েক ব্যক্তি তার কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর এবং বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দেন। এক পর্যায়ে তাকে একহাজার টাকা দিয়ে ছেড়ে দেন।
পুলিশ সুপার জানান, ‘রহিমা বেগমের দাবি, তিনি কিছুই চিনতে পারছিলেন না। এক পর্যায়ে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর হয়ে পূর্ব পরিচিত ভাড়াটিয়া ফরিদপুরের বোয়ালখালীর সৈয়দপুর গ্রামে যান। কিন্তু তার কাছে কোনো মোবাইল নম্বর না থাকায় কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারেননি।’
পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, আমরা রহিমা বেগমের বক্তব্য খতিয়ে দেখছি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রোববার দুপুরে তাকে মহানগর হাকিম আদালতে পাঠানো হয়েছে। আইন অনুযায়ী সবকিছু করা হবে।
এর আগে রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেছিলেন, রহিমার কাছে সাদা রঙের একটি শপিং ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। যার মধ্যে ওড়না, হিজাব, আয়না, শাড়ি, আই ড্রপ, ওষুধ, সালোয়ার-কামিজ এবং ছোট একটি হাত ব্যাগ ছিল। সাধারণত একজনকে অপহরণ করে নিয়ে গেলে এই জিনিসগুলো থাকার কথা না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ব্যাপক আলোচনায় আসা মরিয়ম মান্নানের মাকে উদ্ধার নিয়ে গত শনিবার গভীর রাতে নগরীর দৌলতপুর থানায় ব্রিফিং করেন খুলনা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে আমরা নিশ্চিত হয়েছিলাম, রহিমা বেগম ফরিদপুরে আছেন। পরে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনারের নির্দেশে আমাদের দক্ষ কিছু কর্মকর্তা সেখানে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
রহিমার অবস্থান শনাক্ত করা যাচ্ছিল না জানিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, রহিমা বেগম নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার সকল ডিজিটাল ডিভাইস বন্ধ করে রেখেছিল। তাকে আমরা কোনোভাবেই ট্র্যাক করতে পারছিলাম না। গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে যে বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে, সেই বাড়ির দুই নারীর সঙ্গে তিনি বসে গল্প করছিলেন, তবে আমাদের অফিসাররা তাকে উদ্ধারের পর কোনো কথার জবাব দেননি। সেই থেকে তিনি নির্বাক রয়েছেন।
পুলিশের ভাষ্য, ফরিদপুরের যে বাড়ি থেকে রহিমা বেগমকে আটক করা হয়েছে সেই বাড়ির মালিক কুদ্দুস মোল্লা এক সময় রহিমাদের খুলনার বাসায় ভাড়া থাকতেন। খুলনা শহরে পাটকলের শ্রমিক ছিলেন কুদ্দুস।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে রহিমার ছেলে মিরাজ একবার কুদ্দুসের বোয়ালমারীর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। রহিমাদের সঙ্গে কুদ্দুসের তেমন সম্পর্ক ছিল না।
কুদ্দুসের বাড়ি থেকে তিনজনকে আটকের কথা জানিয়ে কেএমপির কর্মকর্তা মোল্লা জাহাঙ্গীর বলেন, ‘ওই বাড়ি থেকে আমরা তিনজনকে হেফাজতে নিয়ে এসেছি। তারা হলেন কুদ্দুস মোল্লার স্ত্রী, ছেলে ও তার (কুদ্দুস) ভাইয়ের স্ত্রী। এই তিনজনের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, গত ১৭ আগস্ট ওই বাড়িতে রহিমা বেগম গিয়েছিলেন। প্রথমে তারা রহিমাকে চিনতে পারেনি। পরে একপর্যায়ে তাকে চিনতে পারে। তখন তাকে সাবেক বাড়িওয়ালা হিসেবে বেশ সেবাযত্ন করেন (কুদ্দুস ও তার বাড়ির লোকজন)। পরবর্তী সময়ে তাদের কাছে (রহিমা) জানান, এর আগে তিনি গোপালগঞ্জের মকছেদপুর ও চট্টগ্রামে ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সকালে নিখোঁজ রহিমা বেগমের (৫২) সন্ধানে ময়মনসিংহে যায় তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান ও তার পরিবারের সদস্যরা। একটি সালোয়ার দেখে মায়ের লাশ দাবি করেন মরিয়ম। তবে পুলিশ বলেছিল, ডিএনএ টেস্ট ছাড়া লাশ চূড়ান্তভাবে শনাক্ত করা সম্ভব নয়।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ আগস্ট রাত আনুমানিক ১০টার দিকে খুলনা মহানগরীর মহেশ্বরপাশার উত্তর বণিকপাড়ার নিজ বাসা থেকে টিউবওয়েলে পানি আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। এরপর আর ঘরে ফেরেননি তিনি। স্বামী বেল্লাল ঘটক ও ভাড়াটিয়ারা নলকূপের পাশে ঝোপঝাড়ে তার ব্যবহৃত ওড়না, স্যান্ডেল ও বালতি দেখতে পান। সেই রাতে মাকে খুঁজতে আত্মীয়স্বজন, আশপাশসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেন সন্তানরা।
রহিমার ছয় সন্তান কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কখনো মাইকিং, কখনো আত্মীয়স্বজনদের দ্বারস্থ হয়েছেন। সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধনের পর মাকে খুঁজে পেতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানায় মামলাও দায়ের করেন। মামলার বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পিবিআই তদন্তের ভার পায়। ১৭ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানা থেকে মামলাটি পিবিআইয়ে স্থানান্তর করা হয়।
পুলিশ জানায়, গত ২৭ আগস্ট নগরীর মহেশ্বরপাশা এলাকার বাড়ির সামনে থেকে রহিমা বেগম নিখোঁজ হয়-এ অভিযোগ তুলে তার মেয়ে আদুরি আক্তার বাদী হয়ে পরের দিন দৌলতপুর থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় এ পর্যন্ত ৬ জন আটক হয়েছেন। তারা হলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া, তার বড় ভাই মহিউদ্দিন, নিখোঁজ গৃহবধূর দ্বিতীয় স্বামী হেলাল হাওলাদার, দৌলতপুর মহেশ্বরপশা, পলাশ, নূর আলম জুয়েল এবং হেলাল শরীফ।