নীলফামারীর সৈয়দপুরের কৃষক আব্দুল গনি। চাষাবাদই তার ধ্যান জ্ঞান। সারাদিন ফসলের ক্ষেতে মাথার ঘাম পা ফেলে চাষাবাদ করেন। নানা ধরনের সবজি চাষই তার নেশা ও পেশা। বছরের বারো মাসেই তিনি সবজির আবাদ করেন। ছয় ঋতুতেই তিনি সব ধরনের শাকসবজির যোগান দিতে চান ভোক্তাদের। শীতের সবজিও যেন গরমকালে পাওয়া যায় আবার গরম কালের সবজিও যেন মানুষ শীতকালে খেতে পারেন সেটিই তার মনো বাসনা।
দিনমান কাজ শেষে অবসর সময়ে অ্যানড্রয়েড মোবাইল সেট নিয়ে ঘাটাঘাটি করেন ইউটিউব। দৃষ্টি রাখেন টিভির পর্দায় কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠানে। এ বছর তিনি গরমকালে তাপ সহনীয় ঠান্ডা প্রিয় ফসল মুলার চাষ করেছেন। ননগওবিয়ো (ঘড়হমড়িড়নরড়) জাতের মুলা চাষ করে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছেন। সাধারণত এই দেশে মুলার চাষ হয় শীতকালে। মুলাকে শীতকালীন সবজি হিসাবে এদেশের মানুষ দীর্ঘকাল ধরে দেখে আসছে। কিন্তু গরমকালেও যে বাংলাদেশের মাটিতে শীতের ফসল মূলার চাষ সম্ভব সেটি বাস্তব রুপ দিয়েছেন সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের বড়দহ গামের কৃষক আব্দুল গনি। তিনি জাপান থেকে আমদানীকৃত এই মুলা বীজ বাজার থেকে কিনে মুলা চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন। মুলা বিক্রি করে আয়ও হচ্ছে বেশ। ওই জাতের মুলা এবার মাত্র ২০ শতক জমিতে চাষ করেছেন। বেলে দোআঁশ মাটিতে লাগানো হয়েছে মুলা। প্রথমবারেই বাজিমাত করেছেন। আগামী দিনে বড় আকারে মুলার চাষ করবেন বলে এই প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন। গ্রীষ্মকালে চাষকৃত গনির মুলা ক্ষেত প্রতিদিন আশপাশের চাষীরাও দেখতে আসছেন। তাঁর কাছে মুলা চাষ নিয়ে অনেকে শলা পরামর্শও চাইছেন। সব মিলে গনি এখন স্থানীয় কৃষকদের কাছে রোল মডেলে পরিণত হয়েছেন।
কথা হয় কৃষক গনির সঙ্গে। তিনি জানান, তার ২০ শতক জমিতে মুলার বীজ বপণ থেকে বাজারে তোলা পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ১০ হাজার টাকা। তিনি বর্তমানে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি করছেন ২০ টাকা দরে। তার চাষকৃত ২০ শতক জমিতে মুলা উৎপাদন হবে কমপক্ষে দুই হাজার কেজি। সেই হিসাবে দুই হাজার কেজি মুলা তিনি বিক্রি করবেন ৪০ হাজার টাকায়। খরচ বাদে তার নীট মুনাফা দাঁড়াবে ৩০ হাজার টাকা। মাত্র দুই মাসের মধ্যে এই জাতের মুলা বিক্রি করার উপযোগী হয়। অল্প সময়ে বেশি মুনাফা। গনির মুলার মূল খরিদ্দার জাপানী ও চাইনিজরা। এসব বিদেশিরা কাজ করেন নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেড ও দিনাজপুরের বড় পুকুরিয়া কয়লা খনিতে। এমনকি ঢাকার বাজারেও তার মুলার রয়েছে চাহিদা।
কৃষক গনি আরো জানান, বিদেশিরা যদি এই সময়ে তাদের দেশে মুলা চাষ করতে পারেন, তাহলে তিনি পারবেন না ক্যানো। আর সব সিজনে যাতে সব ধরনের সবজি বাজারে সরবরাহ করা যায় তাহলে অনায়াসে ভোক্তারা সব সবজিরই স্বাদ নিতে পারবে। তবে তার এই মুলা চাষে কৃষি দপ্তর থেকে কোন সহযোগিতা নেননি তিনি। যা কিছু করেছেন নিজ উদ্যোগেই করেছেন। তার মতে এটি কৃষি প্রধান দেশ। কৃষিতে নতুন নতুন ফসল উৎপাদন করতে না পারলে কৃষকদের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। কৃষিকে লাভজনক করতে হলে সব ফসলই আগাম চাষ করার কৌশল কৃষকদের রপ্ত করার বিকল্প নেই বলে তিনি জানান। এজন্য তিনি ইউটিউবসহ টিভিতে বিভিন্ন দেশের কৃষকদের চাষাবাদ পদ্ধতি দেখেন এবং তা আয়ত্ব করে নিজ জমিতে তেমন ফসল ফলার চেষ্টা করেন।
শনিবার, ২৭ মে ২০২৩
নীলফামারীর সৈয়দপুরের কৃষক আব্দুল গনি। চাষাবাদই তার ধ্যান জ্ঞান। সারাদিন ফসলের ক্ষেতে মাথার ঘাম পা ফেলে চাষাবাদ করেন। নানা ধরনের সবজি চাষই তার নেশা ও পেশা। বছরের বারো মাসেই তিনি সবজির আবাদ করেন। ছয় ঋতুতেই তিনি সব ধরনের শাকসবজির যোগান দিতে চান ভোক্তাদের। শীতের সবজিও যেন গরমকালে পাওয়া যায় আবার গরম কালের সবজিও যেন মানুষ শীতকালে খেতে পারেন সেটিই তার মনো বাসনা।
দিনমান কাজ শেষে অবসর সময়ে অ্যানড্রয়েড মোবাইল সেট নিয়ে ঘাটাঘাটি করেন ইউটিউব। দৃষ্টি রাখেন টিভির পর্দায় কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠানে। এ বছর তিনি গরমকালে তাপ সহনীয় ঠান্ডা প্রিয় ফসল মুলার চাষ করেছেন। ননগওবিয়ো (ঘড়হমড়িড়নরড়) জাতের মুলা চাষ করে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছেন। সাধারণত এই দেশে মুলার চাষ হয় শীতকালে। মুলাকে শীতকালীন সবজি হিসাবে এদেশের মানুষ দীর্ঘকাল ধরে দেখে আসছে। কিন্তু গরমকালেও যে বাংলাদেশের মাটিতে শীতের ফসল মূলার চাষ সম্ভব সেটি বাস্তব রুপ দিয়েছেন সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের বড়দহ গামের কৃষক আব্দুল গনি। তিনি জাপান থেকে আমদানীকৃত এই মুলা বীজ বাজার থেকে কিনে মুলা চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন। মুলা বিক্রি করে আয়ও হচ্ছে বেশ। ওই জাতের মুলা এবার মাত্র ২০ শতক জমিতে চাষ করেছেন। বেলে দোআঁশ মাটিতে লাগানো হয়েছে মুলা। প্রথমবারেই বাজিমাত করেছেন। আগামী দিনে বড় আকারে মুলার চাষ করবেন বলে এই প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন। গ্রীষ্মকালে চাষকৃত গনির মুলা ক্ষেত প্রতিদিন আশপাশের চাষীরাও দেখতে আসছেন। তাঁর কাছে মুলা চাষ নিয়ে অনেকে শলা পরামর্শও চাইছেন। সব মিলে গনি এখন স্থানীয় কৃষকদের কাছে রোল মডেলে পরিণত হয়েছেন।
কথা হয় কৃষক গনির সঙ্গে। তিনি জানান, তার ২০ শতক জমিতে মুলার বীজ বপণ থেকে বাজারে তোলা পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ১০ হাজার টাকা। তিনি বর্তমানে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি করছেন ২০ টাকা দরে। তার চাষকৃত ২০ শতক জমিতে মুলা উৎপাদন হবে কমপক্ষে দুই হাজার কেজি। সেই হিসাবে দুই হাজার কেজি মুলা তিনি বিক্রি করবেন ৪০ হাজার টাকায়। খরচ বাদে তার নীট মুনাফা দাঁড়াবে ৩০ হাজার টাকা। মাত্র দুই মাসের মধ্যে এই জাতের মুলা বিক্রি করার উপযোগী হয়। অল্প সময়ে বেশি মুনাফা। গনির মুলার মূল খরিদ্দার জাপানী ও চাইনিজরা। এসব বিদেশিরা কাজ করেন নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেড ও দিনাজপুরের বড় পুকুরিয়া কয়লা খনিতে। এমনকি ঢাকার বাজারেও তার মুলার রয়েছে চাহিদা।
কৃষক গনি আরো জানান, বিদেশিরা যদি এই সময়ে তাদের দেশে মুলা চাষ করতে পারেন, তাহলে তিনি পারবেন না ক্যানো। আর সব সিজনে যাতে সব ধরনের সবজি বাজারে সরবরাহ করা যায় তাহলে অনায়াসে ভোক্তারা সব সবজিরই স্বাদ নিতে পারবে। তবে তার এই মুলা চাষে কৃষি দপ্তর থেকে কোন সহযোগিতা নেননি তিনি। যা কিছু করেছেন নিজ উদ্যোগেই করেছেন। তার মতে এটি কৃষি প্রধান দেশ। কৃষিতে নতুন নতুন ফসল উৎপাদন করতে না পারলে কৃষকদের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। কৃষিকে লাভজনক করতে হলে সব ফসলই আগাম চাষ করার কৌশল কৃষকদের রপ্ত করার বিকল্প নেই বলে তিনি জানান। এজন্য তিনি ইউটিউবসহ টিভিতে বিভিন্ন দেশের কৃষকদের চাষাবাদ পদ্ধতি দেখেন এবং তা আয়ত্ব করে নিজ জমিতে তেমন ফসল ফলার চেষ্টা করেন।