অনশন ভাঙার পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সুনসান নীরবতা। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পাল্টে গেছে ওই ক্যাম্পাসের চিত্র। কমেছে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা। দুপুরের দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশনকারীদের বিছানাপত্র গোছাচ্ছিলেন কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী। কয়েকজন সাংবাদিক, আর দু-একজন ছাড়া আর কাউকেই দেখা যাচ্ছিলো না ।অথচ কয়েক ঘণ্টা আগেই উত্তাল ছিল বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাস।
আন্দোলনকারীদের কয়েকজন জানালেন রাতে তারা কেউ ঘুমায়নি। সবাই ক্লান্ত, তাই বিশ্রামে গেছে।তবে তারা জানালেন অনশন ভাঙলেও আন্দোলন চলবে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে সন্ধ্যা ছয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে সবাই জড়ো হবে। সেখানেই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
আজ বুধবার সকাল ১০টার কিছু পরে ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই সাবেক দুই অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন হক পানি পান করিয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান। আর এরপর উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে অবরোধও তুলে নিয়েছেন তারা।
আজ ভোর ৪টার দিকে জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হক শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশনে বসা শিক্ষার্থীদের মাঝে উপস্থিত হন। বেশ কিছুটা সময় তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। সকাল ১০টার কিছু পরে তাদের পানি পান করিয়ে সাতদিনের অনশন ভাঙান জাফর ইকবাল।
পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সরকারের অনেক উচ্চমহল থেকে কথা বলেছে, তারপর আমি এখানে এসেছি। আশা করি তারা কথা রাখবেন।’
‘তাদের যে উদ্দেশ্য, এই আন্দোলন করার জন্য অনশন করার প্রয়োজন নাই। কারণ, যে মানুষটার জন্য তারা অনশন করতে যাচ্ছে তার জন্য প্রাণ দেওয়াটা সমীচীন না। তারা যদি আন্দোলন করতে চায়, সেটা তাদের সিদ্ধান্ত,’ বলেন জাফর ইকবাল।
আন্দোলনকারী কয়েকজন জানালেন, অনশনে ছিলেন ২৮ জন। এর মধ্যে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাগিব-রাবেয়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেছে ২৪ জন; বাকি ৪ জন বাড়িতে গেছেন। তারা বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নেবেন।
রাগিব-রাবেয়া হাসপাতালে একজন স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষার্থী জানালেন হাসপাতালে ছয়জনকে ভর্তি করা হয়েছে। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আরও ২ থেকে ৩ জনকে ভর্তি করানো লাগতে পারে।
ছয়জনের মধ্যে তিনজনের প্রচণ্ড জ্বর ও খিঁচুনি আছে। বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে চলে যাবে। অনেকে সাময়িক চিকিৎসা করে বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা নেবে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী।
১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আন্দোলন চলাকালে ছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে এবং রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এতে শিক্ষার্থীসহ ক্যাম্পাসের অন্তত অর্ধশত লোকজন আহত হন। সে ঘটনায় পুলিশ ‘গুলি বর্ষণ ও হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিটের অভিযোগ’এনে অজ্ঞাতপরিচয় ৩০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে।
ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যান। এ ঘটনার পরই উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রূপ নেয় আন্দোলন। একপর্যায়ে তারা অনশনে যান; ঘোষণা দেন উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার। সাতদিন পর সেই অনশন ভাঙালেন জনপ্রিয় লেখক ও শিক্ষক জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন হক।
বুধবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২২
অনশন ভাঙার পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সুনসান নীরবতা। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পাল্টে গেছে ওই ক্যাম্পাসের চিত্র। কমেছে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা। দুপুরের দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশনকারীদের বিছানাপত্র গোছাচ্ছিলেন কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী। কয়েকজন সাংবাদিক, আর দু-একজন ছাড়া আর কাউকেই দেখা যাচ্ছিলো না ।অথচ কয়েক ঘণ্টা আগেই উত্তাল ছিল বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাস।
আন্দোলনকারীদের কয়েকজন জানালেন রাতে তারা কেউ ঘুমায়নি। সবাই ক্লান্ত, তাই বিশ্রামে গেছে।তবে তারা জানালেন অনশন ভাঙলেও আন্দোলন চলবে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে সন্ধ্যা ছয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে সবাই জড়ো হবে। সেখানেই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
আজ বুধবার সকাল ১০টার কিছু পরে ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই সাবেক দুই অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন হক পানি পান করিয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান। আর এরপর উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে অবরোধও তুলে নিয়েছেন তারা।
আজ ভোর ৪টার দিকে জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হক শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশনে বসা শিক্ষার্থীদের মাঝে উপস্থিত হন। বেশ কিছুটা সময় তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। সকাল ১০টার কিছু পরে তাদের পানি পান করিয়ে সাতদিনের অনশন ভাঙান জাফর ইকবাল।
পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সরকারের অনেক উচ্চমহল থেকে কথা বলেছে, তারপর আমি এখানে এসেছি। আশা করি তারা কথা রাখবেন।’
‘তাদের যে উদ্দেশ্য, এই আন্দোলন করার জন্য অনশন করার প্রয়োজন নাই। কারণ, যে মানুষটার জন্য তারা অনশন করতে যাচ্ছে তার জন্য প্রাণ দেওয়াটা সমীচীন না। তারা যদি আন্দোলন করতে চায়, সেটা তাদের সিদ্ধান্ত,’ বলেন জাফর ইকবাল।
আন্দোলনকারী কয়েকজন জানালেন, অনশনে ছিলেন ২৮ জন। এর মধ্যে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাগিব-রাবেয়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেছে ২৪ জন; বাকি ৪ জন বাড়িতে গেছেন। তারা বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নেবেন।
রাগিব-রাবেয়া হাসপাতালে একজন স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষার্থী জানালেন হাসপাতালে ছয়জনকে ভর্তি করা হয়েছে। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আরও ২ থেকে ৩ জনকে ভর্তি করানো লাগতে পারে।
ছয়জনের মধ্যে তিনজনের প্রচণ্ড জ্বর ও খিঁচুনি আছে। বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে চলে যাবে। অনেকে সাময়িক চিকিৎসা করে বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা নেবে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী।
১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আন্দোলন চলাকালে ছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে এবং রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এতে শিক্ষার্থীসহ ক্যাম্পাসের অন্তত অর্ধশত লোকজন আহত হন। সে ঘটনায় পুলিশ ‘গুলি বর্ষণ ও হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিটের অভিযোগ’এনে অজ্ঞাতপরিচয় ৩০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে।
ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যান। এ ঘটনার পরই উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রূপ নেয় আন্দোলন। একপর্যায়ে তারা অনশনে যান; ঘোষণা দেন উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার। সাতদিন পর সেই অনশন ভাঙালেন জনপ্রিয় লেখক ও শিক্ষক জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন হক।