নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার কথা জানিয়েছেন বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ রাখার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। রোববার (৩১ মার্চ) বিকেলে বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানান তারা। নিরাপত্তা পেলে একাডেমি কার্যক্রমে ফিরবেন বলেও জানিয়েছেন তারা।
গত বুধবার মধ্যরাতে বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রবেশের প্রতিক্রিয়ায় গত শুক্রবার থেকে টানা আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করেন তারা।
এমন পরিস্থিতিতে রোববার দুপুর ১২টার পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অসাংবিধানিক, মৌলিক অধিকার পরিপন্থি ও শিক্ষা বিরোধী সিদ্ধান্ত বলে আখ্যা দিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে ছাত্রলীগ। একই সঙ্গে বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতির দাবিও জানায় ছাত্র সংগঠনটি। প্রতিবাদ সমাবেশের কর্মসূচি শুরু হয়। পরে দলবেঁধে বুয়েট ক্যাম্পাসে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
পরে সংবাদ সম্মেলনে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ রাখার দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দুজন লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান। তবে তাদের নাম পরিচয় দেননি।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আমাদের ক্যাম্পাসের রাজনীতিমুক্ত থাকা, অপশক্তির কবল থেকে মুক্ত থাকা এবং নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেলে আমরা সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অনতিবিলম্বে আমাদের একাডেমিক কার্যক্রমে ফেরত যাব।’ যে দুদিন শিক্ষার্থীরা টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করেছে, সেই দুই দিনের পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
২০১৯ সালে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার পর আন্দোলনের মুখে ওই ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয়। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, দপ্তর সম্পাদকসহ অনেকে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে এর প্রতিবাদে শুক্রবার থেকে ফের আন্দোলন শুরু হয়।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালা লঙ্ঘন করে পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম এ সমাগম ঘটান।
এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে বুয়েটের শহীদ মিনারের সামনে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখান।
এরপর রাতে বুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ফোরকান উদ্দিনের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমের হলের সিট বাতিল করা হয়। পাশাপাশি বিষয়টি তদন্তে কমিটি গঠন করে ৮ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
ইমতিয়াজকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করাসহ ছয় দফা দাবিতে রোববার সকাল থেকে ফের বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তবে রোববার সকাল থেকে ক্যাম্পাসে তাদের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। তবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলন নিজেদের অবস্থান তুলে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘বুয়েটে ছাত্র রাজনীতিবিহীন ক্যাম্পাসের পক্ষে আন্দোলনরত সব ব্যাচের সব শিক্ষার্থীরা আজ নিরাপত্তাজনিত তীব্র শঙ্কার কারণে কেউ কোনোরূপ সমাগম করেনি।
ক্যাম্পাসের আশপাশের সকল এলাকায় রোববার রাত থেকে ক্রমাগত মাইকিং, শিক্ষার্থীদের ফোন কলে হুমকি-ধমকি প্রদান করা, সোশাল মিডিয়ায় নানারকম গুজব, বুয়েট শিক্ষার্থীদের মিথ্যা ট্যাগ দেয়া, শিক্ষার্থীদের ছবি নাম পরিচয়সহ পোস্ট করে তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা গুরুতরভাবে বিঘ্নিত হয়- এমন সব অপপ্রচার চালানো হয়েছে।
নিরাপত্তাজনিত এসব কারণে বুয়েট শিক্ষার্থীদের আজ ক্যাম্পাসে অবস্থান না নেয়া মানে এই নয় যে, বুয়েট শিক্ষার্থীরা তাদের ছাত্ররাজনীতিবিহীন ক্যাম্পাস এর দাবি থেকে সরে এসেছে, এ দাবি বুয়েটের সব ব্যাচের সব শিক্ষার্থীর।
ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের বিষয়ে বলা হয়, ‘আজ বুয়েটের ২০ ব্যাচের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা ছিল, উক্ত পরীক্ষায় ক্যাম্পাসে কোনোরূপ অবস্থান আন্দোলন ছাড়াই, কোনো বাধা ছাড়াই নিয়মিত শিক্ষার্থীদের শুধুমাত্র ১ জন বাদে সব শিক্ষার্থীই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত ছিল।
‘১২১৫ জন ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১২১৪ জনই পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। এ থেকেই শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত নৈতিক অবস্থান ক্যাম্পাসে পুনরায় ছাত্ররাজনীতি প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে কতটুকু সুদৃঢ় তা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়।’
৩০ মার্চ শনিবারও বুয়েট ২২ ব্যাচের প্রথম টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাতেও কোনো শিক্ষার্থীই অংশগ্রহণ করেনি বলে দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।
বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে দাবি করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সম্প্রতি মিডিয়ায় বুয়েটের আন্দোলনরত বিপুল সংখ্যক সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। আমরা আবারও সাফ জানিয়ে দিতে চাই যে, আমাদের অবস্থান কোনো একক ছাত্ররাজনীতিক সংগঠনের বিরুদ্ধে নয়, বরং বুয়েট ক্যাম্পাসে বাংলাদেশের সব ছাত্ররাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে।’
বুয়েটে হিযবুত তাহরির কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমানে হিজবুত তাহরির নিয়ে কথা উঠেছে। এটি কোনো রাজনৈতিক দল না, বরং নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন। এদের কর্মকাণ্ড আমরা ক্যাম্পাসে দেখতে পাই বহিরাগতদের (সিসি ফুটেজ অনুযায়ী) লাগানো বিভিন্ন পোস্টার, মেইল বা প্রচারপত্র ইত্যাদির ভিত্তিতে। তাদের পরিচয় সম্পর্কে আমরা স্পষ্ট না।
এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, যেসব শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শিবিরের কার্যক্রমে যুক্ত থাকার অভিযোগ আসছে, তাদের ঘটনাটি বুয়েটের বাইরে হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত এই ঘটনার বিষয়ে আমাদের কাছে সুস্পষ্ট কোনো প্রমাণ নেই। তবে অভিযোগ আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা তাদের সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য লিখিতভাবে আহ্বান জানাই এবং এটি আমাদের পূর্বের একটি আন্দোলনের অন্যতম দাবি হিসেবে ছিল।
ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি না চাওয়া মানেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মতাদর্শ থেকে দূরে সরে যাওয়া নয় বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা বলেছেন, আমরা শুধু চাই না, ক্ষমতার লোভ ও অপচর্চা আবারও এসে আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে ফেলুক। আমরা সব শিক্ষার্থীই গর্বের সঙ্গে দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার চেতনার চর্চা আমাদের অন্তরে লালন করি। আমরা হিযবুত তাহরিরের সম্পূর্ণ বিপক্ষে এবং কারও শিবির-সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হলে তাৎক্ষণিকভাবে তার বহিষ্কার চাই।
এর আগে ইমতিয়াজকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে ও বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি ফেরাতে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রোববার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবাদ সমাবেশের পর নেতাকর্মীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান। বুয়েট শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে তারা বুয়েট ত্যাগ করেন।
ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, মাথাব্যথার কারণে মাথা কেটে ফেলায় কি সমাধান। বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের কালাকানুন বাতিল করতে হবে। আইন অনুসারে গণতান্ত্রিক কর্মকা-ের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
সমাবেশ থেকে বুয়েট কর্তৃপক্ষকে সময় বেঁধে দেন ছাত্রলীগ সভাপতি। তিনি বলেন, ‘আলটিমেটাম দিচ্ছি, বুয়েটে ছাত্র সংসদের নির্বাচন দিতে হবে। ইমতিয়াজ বাপ্পীকে (হলে আসন বাতিল হওয়া ছাত্র) সসম্মানে হলে বরণ করে নিতে হবে।’ তিনি বুয়েটে জঙ্গি কর্মকা-ের সঙ্গে সম্পৃক্তদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।
সাদ্দাম হোসেন আরও বলেন, বুয়েট ক্যাম্পাসে আবরারের মৃত্যু তাদের অন্তরকে ক্ষতবিক্ষত করেছে। তবে বুয়েট ক্যাম্পাসে হিজবুত তাহরির, জেএমবি, ছাত্রশিবির ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের কারিগর হবে, এটা হতে পারে না। তিনি বলেন, গুটিকয় ছদ্ম প্রতারক সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে তাদের আন্দোলনে নামিয়েছে।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে ছাত্ররাজনীতি আবার চালু হতে পারে : বুয়েট উপাচার্য
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) আবার ছাত্ররাজনীতি চালু হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার। রোববার উপাচার্য তার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
উপাচার্য বলেন, ছাত্র রাজনীতি ছাত্রদের গড়ে ওঠার জন্যই দরকার। বুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে আবার ছাত্ররাজনীতি চালু হতে পারে।
সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, তদন্ত কমিটি কাজ করছে, রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেব। আর পরীক্ষা ওপেন আছে, কেউ চাইলে দিতে পারে।
এর আগে শনিবার উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর সঙ্গে আমরাও সহমত। কিন্তু এগুলো পুরণে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণের জন্য সময় প্রয়োজন।’
বুয়েটকে অপরাজনীতির কারখানা বানানো হচ্ছে কিনা- তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে : ওবায়দুল কাদের
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) অপরাজনীতির কারখানা বানানো হচ্ছে কিনা- তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘বুয়েটের ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। বুয়েটকে জঙ্গি রাজনীতির কারখানায় পরিণত করার প্রমাণ পেলে সরকার অ্যাকশনে যাবে।’
ওবায়দুল কাদের রোববার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত সাংগঠনিক জেলাসমূহের নেতারা, জাতীয় সংসদের দলীয় ও স্বতন্ত্র সদস্যরা এবং দলীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বুয়েটের ঘটনা তদন্ত চলছে। আমরা খতিয়ে দেখছি। সেখানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার নামে বুয়েটকে একটা অপরাজনীতি জঙ্গিবাদের কারখানায় পরিনত করা হবে। এটা যাতে না হয়, আমরা তা তদন্ত করে দেখছি। এরকম কিছু পাওয়া গেলে সরকারকে অ্যাকশনে যেতে হবে।’
বুয়েটে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা সব অপকর্ম, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স। সেই নীতিতে আমরা এগিয়ে চলছি। বুয়েটে আবরার হত্যায় কাউকে ছাড় দেয়া হয়নি। বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ডে নেতাকর্মীদের দণ্ড হয়েছে, কাউকে ছাড় দেয়া হয়নি।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বুয়েটে সেদিন কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না আর আমি রাজনীতি করি বলে বুয়েটে যেতে পারবো না- এটা কোন ধরনের আইন? কোন ধরনের নিয়ম?
রোববার, ৩১ মার্চ ২০২৪
নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার কথা জানিয়েছেন বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ রাখার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। রোববার (৩১ মার্চ) বিকেলে বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানান তারা। নিরাপত্তা পেলে একাডেমি কার্যক্রমে ফিরবেন বলেও জানিয়েছেন তারা।
গত বুধবার মধ্যরাতে বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রবেশের প্রতিক্রিয়ায় গত শুক্রবার থেকে টানা আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করেন তারা।
এমন পরিস্থিতিতে রোববার দুপুর ১২টার পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অসাংবিধানিক, মৌলিক অধিকার পরিপন্থি ও শিক্ষা বিরোধী সিদ্ধান্ত বলে আখ্যা দিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে ছাত্রলীগ। একই সঙ্গে বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতির দাবিও জানায় ছাত্র সংগঠনটি। প্রতিবাদ সমাবেশের কর্মসূচি শুরু হয়। পরে দলবেঁধে বুয়েট ক্যাম্পাসে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
পরে সংবাদ সম্মেলনে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ রাখার দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দুজন লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান। তবে তাদের নাম পরিচয় দেননি।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আমাদের ক্যাম্পাসের রাজনীতিমুক্ত থাকা, অপশক্তির কবল থেকে মুক্ত থাকা এবং নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেলে আমরা সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অনতিবিলম্বে আমাদের একাডেমিক কার্যক্রমে ফেরত যাব।’ যে দুদিন শিক্ষার্থীরা টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করেছে, সেই দুই দিনের পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
২০১৯ সালে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার পর আন্দোলনের মুখে ওই ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয়। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, দপ্তর সম্পাদকসহ অনেকে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে এর প্রতিবাদে শুক্রবার থেকে ফের আন্দোলন শুরু হয়।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালা লঙ্ঘন করে পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম এ সমাগম ঘটান।
এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে বুয়েটের শহীদ মিনারের সামনে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখান।
এরপর রাতে বুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ফোরকান উদ্দিনের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমের হলের সিট বাতিল করা হয়। পাশাপাশি বিষয়টি তদন্তে কমিটি গঠন করে ৮ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
ইমতিয়াজকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করাসহ ছয় দফা দাবিতে রোববার সকাল থেকে ফের বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তবে রোববার সকাল থেকে ক্যাম্পাসে তাদের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। তবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলন নিজেদের অবস্থান তুলে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘বুয়েটে ছাত্র রাজনীতিবিহীন ক্যাম্পাসের পক্ষে আন্দোলনরত সব ব্যাচের সব শিক্ষার্থীরা আজ নিরাপত্তাজনিত তীব্র শঙ্কার কারণে কেউ কোনোরূপ সমাগম করেনি।
ক্যাম্পাসের আশপাশের সকল এলাকায় রোববার রাত থেকে ক্রমাগত মাইকিং, শিক্ষার্থীদের ফোন কলে হুমকি-ধমকি প্রদান করা, সোশাল মিডিয়ায় নানারকম গুজব, বুয়েট শিক্ষার্থীদের মিথ্যা ট্যাগ দেয়া, শিক্ষার্থীদের ছবি নাম পরিচয়সহ পোস্ট করে তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা গুরুতরভাবে বিঘ্নিত হয়- এমন সব অপপ্রচার চালানো হয়েছে।
নিরাপত্তাজনিত এসব কারণে বুয়েট শিক্ষার্থীদের আজ ক্যাম্পাসে অবস্থান না নেয়া মানে এই নয় যে, বুয়েট শিক্ষার্থীরা তাদের ছাত্ররাজনীতিবিহীন ক্যাম্পাস এর দাবি থেকে সরে এসেছে, এ দাবি বুয়েটের সব ব্যাচের সব শিক্ষার্থীর।
ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের বিষয়ে বলা হয়, ‘আজ বুয়েটের ২০ ব্যাচের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা ছিল, উক্ত পরীক্ষায় ক্যাম্পাসে কোনোরূপ অবস্থান আন্দোলন ছাড়াই, কোনো বাধা ছাড়াই নিয়মিত শিক্ষার্থীদের শুধুমাত্র ১ জন বাদে সব শিক্ষার্থীই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত ছিল।
‘১২১৫ জন ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১২১৪ জনই পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। এ থেকেই শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত নৈতিক অবস্থান ক্যাম্পাসে পুনরায় ছাত্ররাজনীতি প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে কতটুকু সুদৃঢ় তা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়।’
৩০ মার্চ শনিবারও বুয়েট ২২ ব্যাচের প্রথম টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাতেও কোনো শিক্ষার্থীই অংশগ্রহণ করেনি বলে দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।
বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে দাবি করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সম্প্রতি মিডিয়ায় বুয়েটের আন্দোলনরত বিপুল সংখ্যক সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। আমরা আবারও সাফ জানিয়ে দিতে চাই যে, আমাদের অবস্থান কোনো একক ছাত্ররাজনীতিক সংগঠনের বিরুদ্ধে নয়, বরং বুয়েট ক্যাম্পাসে বাংলাদেশের সব ছাত্ররাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে।’
বুয়েটে হিযবুত তাহরির কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমানে হিজবুত তাহরির নিয়ে কথা উঠেছে। এটি কোনো রাজনৈতিক দল না, বরং নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন। এদের কর্মকাণ্ড আমরা ক্যাম্পাসে দেখতে পাই বহিরাগতদের (সিসি ফুটেজ অনুযায়ী) লাগানো বিভিন্ন পোস্টার, মেইল বা প্রচারপত্র ইত্যাদির ভিত্তিতে। তাদের পরিচয় সম্পর্কে আমরা স্পষ্ট না।
এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, যেসব শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শিবিরের কার্যক্রমে যুক্ত থাকার অভিযোগ আসছে, তাদের ঘটনাটি বুয়েটের বাইরে হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত এই ঘটনার বিষয়ে আমাদের কাছে সুস্পষ্ট কোনো প্রমাণ নেই। তবে অভিযোগ আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা তাদের সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য লিখিতভাবে আহ্বান জানাই এবং এটি আমাদের পূর্বের একটি আন্দোলনের অন্যতম দাবি হিসেবে ছিল।
ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি না চাওয়া মানেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মতাদর্শ থেকে দূরে সরে যাওয়া নয় বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা বলেছেন, আমরা শুধু চাই না, ক্ষমতার লোভ ও অপচর্চা আবারও এসে আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে ফেলুক। আমরা সব শিক্ষার্থীই গর্বের সঙ্গে দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার চেতনার চর্চা আমাদের অন্তরে লালন করি। আমরা হিযবুত তাহরিরের সম্পূর্ণ বিপক্ষে এবং কারও শিবির-সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হলে তাৎক্ষণিকভাবে তার বহিষ্কার চাই।
এর আগে ইমতিয়াজকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে ও বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি ফেরাতে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রোববার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবাদ সমাবেশের পর নেতাকর্মীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান। বুয়েট শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে তারা বুয়েট ত্যাগ করেন।
ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, মাথাব্যথার কারণে মাথা কেটে ফেলায় কি সমাধান। বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের কালাকানুন বাতিল করতে হবে। আইন অনুসারে গণতান্ত্রিক কর্মকা-ের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
সমাবেশ থেকে বুয়েট কর্তৃপক্ষকে সময় বেঁধে দেন ছাত্রলীগ সভাপতি। তিনি বলেন, ‘আলটিমেটাম দিচ্ছি, বুয়েটে ছাত্র সংসদের নির্বাচন দিতে হবে। ইমতিয়াজ বাপ্পীকে (হলে আসন বাতিল হওয়া ছাত্র) সসম্মানে হলে বরণ করে নিতে হবে।’ তিনি বুয়েটে জঙ্গি কর্মকা-ের সঙ্গে সম্পৃক্তদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।
সাদ্দাম হোসেন আরও বলেন, বুয়েট ক্যাম্পাসে আবরারের মৃত্যু তাদের অন্তরকে ক্ষতবিক্ষত করেছে। তবে বুয়েট ক্যাম্পাসে হিজবুত তাহরির, জেএমবি, ছাত্রশিবির ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের কারিগর হবে, এটা হতে পারে না। তিনি বলেন, গুটিকয় ছদ্ম প্রতারক সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে তাদের আন্দোলনে নামিয়েছে।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে ছাত্ররাজনীতি আবার চালু হতে পারে : বুয়েট উপাচার্য
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) আবার ছাত্ররাজনীতি চালু হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার। রোববার উপাচার্য তার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
উপাচার্য বলেন, ছাত্র রাজনীতি ছাত্রদের গড়ে ওঠার জন্যই দরকার। বুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে আবার ছাত্ররাজনীতি চালু হতে পারে।
সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, তদন্ত কমিটি কাজ করছে, রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেব। আর পরীক্ষা ওপেন আছে, কেউ চাইলে দিতে পারে।
এর আগে শনিবার উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর সঙ্গে আমরাও সহমত। কিন্তু এগুলো পুরণে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণের জন্য সময় প্রয়োজন।’
বুয়েটকে অপরাজনীতির কারখানা বানানো হচ্ছে কিনা- তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে : ওবায়দুল কাদের
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) অপরাজনীতির কারখানা বানানো হচ্ছে কিনা- তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘বুয়েটের ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। বুয়েটকে জঙ্গি রাজনীতির কারখানায় পরিণত করার প্রমাণ পেলে সরকার অ্যাকশনে যাবে।’
ওবায়দুল কাদের রোববার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত সাংগঠনিক জেলাসমূহের নেতারা, জাতীয় সংসদের দলীয় ও স্বতন্ত্র সদস্যরা এবং দলীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বুয়েটের ঘটনা তদন্ত চলছে। আমরা খতিয়ে দেখছি। সেখানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার নামে বুয়েটকে একটা অপরাজনীতি জঙ্গিবাদের কারখানায় পরিনত করা হবে। এটা যাতে না হয়, আমরা তা তদন্ত করে দেখছি। এরকম কিছু পাওয়া গেলে সরকারকে অ্যাকশনে যেতে হবে।’
বুয়েটে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা সব অপকর্ম, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স। সেই নীতিতে আমরা এগিয়ে চলছি। বুয়েটে আবরার হত্যায় কাউকে ছাড় দেয়া হয়নি। বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ডে নেতাকর্মীদের দণ্ড হয়েছে, কাউকে ছাড় দেয়া হয়নি।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বুয়েটে সেদিন কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না আর আমি রাজনীতি করি বলে বুয়েটে যেতে পারবো না- এটা কোন ধরনের আইন? কোন ধরনের নিয়ম?