alt

রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল ৭৫ থেকে ৫শ বেডে উন্নীত

মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি

বাকী বিল্লাহ : সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হিসেবে রূপান্তরের দাবি দীর্ঘদিনের। প্রতি বছর পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষ্যে সরকারের কাছে এই দাবি তুলে ধরার বিষয় নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। পুলিশ হাসপাতালটি মেডিকেল কলেজ হিসেবে রূপান্তর করার জন্য ইতোমধ্যে একাধিক নতুন ভবন নির্মাণ ও আধুনিক ডায়াগোনষ্টিক পরীক্ষার যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। হাসপাতালটি বর্তমানে ৫শ বেডেও উন্নীত করা হয়েছে। মেডিকেল কলেজ ঘোষনা করা হলে হাসপাতালটিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবা ও গবেষনার মান আরও উন্নত হবে বলে সাবেক ও বর্তমান পুলিশ কর্মকর্তরা মন্তব্য করেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের চিকিৎসার জন্য ১৯৫৪ সালে ১১ দশমিক ৫ একর জমিতে ৭৫ বেডের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়েছিল। স্বাধীনতার পর পুলিশ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা পর্যায়ক্রমে বাড়ছে। কিন্তু পুলিশ হাসপাতালের তেমন উন্নয়ন হয়নি। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে হাসপাতালটি ২৫০ বেডে উন্নীত করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়। যা পরবর্তীতে বাস্তবায়িত হয়।

প্রকল্পের আওতায় একটি দশতলা ভবন নির্মাণ করা হলেও চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য দরকারি আধুনিক যন্ত্রপাতি,সরঞ্জাম ও অভিজ্ঞ ডাক্ত্রা,নার্স,টেকনিশিয়ানের সংকট থাকায় পর্যাপ্ত সেবা দেয়া কষ্টকর ছিল।

২০০৮ সালে পুলিশ বাহিনীর অফিসার ও সদস্য বেড়ে ২ লাখের বেশী হয়েছে। এই বিশাল বাহিনী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নূন্যতম চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের সক্ষমতা ছিল অপর্য্যাপ্ত। ওই সময় মারাত্বক কোন রোগী ভর্তি হলে পরবর্তীতে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ অন্যান্য স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তির জন্য পাঠানো হত।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, রাজনৈতিক সহিংসতা,হরতাল, অবরোধ কিংবা বড় ধরনের দূর্ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় আহত হলে তাদেরকে প্রথমে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির পরীক্ষা নিরীক্ষার অভাবে তাদের চিকিৎসা দেয়া কষ্টকর ছিল। বর্তমান সরকারের আমলে পুলিশ হাসপাতালটির দিন দিন উন্নত থেকে আরও উন্নত করা হয়েছে।

খোজ নিয়ে জানা গেছে,নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও ২০১৮ সাল থেকে অদ্যবধি হাসপাতালটি নতুন করে আধুনিকরণ করা হয়েছে। পুরাতন নড়বড়ে ভবন ভেঙ্গে নতুন কাঠামোতে বহুতল ভবন তৈরী করা হয়েছে। চালু করা হয়েছে, ইমাজেন্সিসহ নতুন নতুন বিভাগ। যার ফলে বর্তমানে হাসপাতালটি একটি আধুনিক হাসপাতালে রূপ নেয়।

হাসপাতালের সাবেক পরিচালক অবসর প্রাপ্ত অতিরিক্ত আইজিপি হাসানুল হায়দার সংবাদকে জানান,হাসাপাতালটিতে ক্যান্সার ইউনিট স্থাপনসহ অন্যান্য সেবাগুলোকে বর্ধিত করার যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে এটি আরও উন্নত হাসপাতালে রূপান্তরিত হবে। আর হাসপাতালটিকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল করা হলে এই হাসপাতাল আরও উন্নত হবে বলে তিনি আশাবাদী। হাসপাতালটিতে টিম ওয়ার্ক কাজ করার কারনে আজকের এই অবস্থানে আসছে।

তার মতে, পুলিশ হেডকোয়াটার্স থেকে হাসপাতালটির উন্নয়নে সকল ধরনের সহযোগীতা করা হয়েছে। পুলিশ হাসপাতালের উন্নয়নে স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগ থেকে ভূমিকা রাখা হয়েছে। পুলিশ হাসপাতালে দায়িত্ব পালন কালে অবকাঠামো উন্নয়ন করতে গিয়ে নানা ধরনের চেলেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে।

যন্ত্রপাতি কেনা থেকে শুরু করে টেন্ডার পর্যন্ত সব কিছুতে একটি মহল প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছে। ওই সময় নানা মিথ্যা অভিযোগের পর তা পাত্তা না দিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে উচ্চ পর্যায়ে সর্বক্ষণ যোগাযোগ করে হাসপাতালের উন্নয়ন করা হয়েছে। এটা ছিল একটা কঠিন চেলেঞ্জ। টেন্ডার না পাওয়া লোকজন এখনো নানা ভাবে সমালোচনা করে যাচ্ছেন।

হাসপাতালের প্রাপ্ত তথ্য মতে,২০১৮ সাল থেকে হাসপাতালটি সেবার মান আরও উন্নত করা হয়েছে। ওয়ার্ডগুলোকে উন্নত করা হয়েছে। বহিঃবিভাগে ওষুধ বিতরণ,শিশু ওয়ার্ড,কিডনী ডায়ালাইসিস ইউনিট,ফিজিওখেরাপি,দন্ত, নাক,কানগলা বিভাগ,মেডিসিন বিভাগ,ইমাজেন্সি বিভাগসহ অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। ধীরে ধীরে হাসপাতালের কলেবর বাড়তে থাকে এবং হাসপাতালটি একটি আধুনিক হাসপাতালে রূপ নেয়।

করোনা মহামারীর সময় পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে পুলিশ হাসপাতাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। পুলিশ ছাড়াও অন্যান্য বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা,রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বসহ নানা পেশার মানুষ পুলিশ হাসপাতাল থেকে সেবা নিয়েছে। তারা করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়েছেন।

পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে,বর্তমান সরকারের সময় পুলিশের জনবল বাড়ছে। বাড়ছে পুলিশের নতুন নতুন ইউনিট। চিকিৎসা ক্ষেত্রে পুলিশ হাসপাতালটির অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তবে পুলিশ মেডিকেল কলেজ দীর্ঘদিনের দাবি। পুলিশ সপ্তাহে পুলিশ কর্মকর্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন,পুলিশ হাসপাতালটিকে মেডিকেল কলেজ হিসেবে রূপান্তর করলে চিকিৎসা সেবার মান আরও উন্নত হবে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

পুলিশ হেডকোয়াটার্সের একজন অতিরিক্ত আইজিপি (অ্যাডিশনাল আইজিপি) সংবাদকে জানান, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালটি বর্তমান সরকারের আমলে অনেক উন্নত হয়েছে। মেডিকেল কলেজ নিয়ে বার বার আলোচনায় আসলেও কলেজ করতে যে পরিমান জায়গার দরকার তা পর্যাপ্ত নয়। যার কারনে সমস্যা হচ্ছে। তবে বহু পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যের আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পাশাপাশি মেডিকেল কলেজ করা হলে সবাই উপকৃত হবে। ক্যাজুয়ালটিসহ অন্যান্য পূণাঙ্গ বিভাগ থাকলে দূর্ঘটনায় আহতরা এখন থেকে উন্নত সেবা পাবে। ২০০৮ সালের পর পুলিশ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার বাড়ানো হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন পুলিশ বাহিনীর সংখ্যা ২ লাখের বেশী। সঙ্গে তাদের পরিবারও রয়েছে। সেই হিসেবে হাসপাতালের পরিধি আরও বাড়লে সেবার মান বাড়বে বলে আশা করছেন।

ছবি

ঝটিকা মিছিল করে প্রচার সোশ্যাল মিডিয়াতেই সীমাবদ্ধ: ডিএমপি কমিশনার

ছবি

রাজধানীর যানবাহন নিয়ন্ত্রণে নতুনরূপে ফিরিয়ে আনা হলো সিগন্যাল বাতি

ছবি

রাজধানীতে একরাতে তিন যুবক খুন

ছবি

সাভারে পূর্ব শত্রুতার জেরে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা

ছবি

জেনিভা ক্যাম্পে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, যুবক নিহত

ছবি

কার্গো ভিলেজে আগুন: শুক্রবার ও শনিবার খোলা ঢাকা কাস্টমস

ছবি

জাতীয়করণের ঘোষণার বাস্তবায়নে পল্টনে সড়ক অবরোধে ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা

ছবি

বাড়িভাড়া ও ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে শাহবাগে কালো কাপড় বেঁধে বিক্ষোভ করবে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা

ছবি

পর্ন ভিডিও তৈরি ও প্রচারের অভিযোগে বান্দরবান থেকে যুগল গ্রেপ্তার

ছবি

সালমান শাহ হত্যার ২৯ বছর পর হত্যা মামলা দায়েরের আদেশ

সাভারে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ধর্ষণ: প্রধান আসামিসহ দুইজন গ্রেপ্তার

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ‘ভুখা মিছিল’ আটকে দিল পুলিশ

বিইউপি শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় বিক্ষোভ, ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম

শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুনে ফ্লাইট বাতিল, কয়েকটি ফ্লাইটের গন্তব্য পরিবর্তন

ছবি

শাহজালালে আগুন লাগে কুরিয়ার গুদামে

ছবি

শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে আগুন, ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ

ছবি

শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে আগুন

ছবি

‘সুযোগ সন্ধানীদের’ আশঙ্কায় পদযাত্রা স্থগিত, শুক্রবার থেকে আমরণ অনশন এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের

ছবি

দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা বিএফআইইউর সাবেক প্রধান শাহীনুল ইসলাম ও তার স্ত্রীর

বাড়ি ভাতা বাড়ানোর দাবিতে শাহবাগ অবরোধ শেষে শহীদ মিনারে অবস্থান, বৃহস্পতিবার পদযাত্রার ঘোষণা

ছবি

শাহবাগ মোড় ব্লকেডের ঘোষণা দিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা

ছবি

মিরপুরের আগুনে মৃত্যু অন্তত ১৬

ছবি

জিজ্ঞাসাবাদের নামে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে মারধরের অভিযোগে মামলা

ছবি

মিরপুরের আগুনে মৃত্যু বেড়ে ১৬

ছবি

পুলিশের বাধায় থমকে গেল এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সচিবালয় অভিমুখী পদযাত্রা

ছবি

মিরপুরে পোশাক কারখানায় ভয়াবহ আগুনে ৯ জনের মৃত্যু

ছবি

মিরপুরে পোশাক কারখানা ও রাসায়নিক গুদামে আগুন

ছবি

সায়েন্স ল্যাব মোড়ে ঢাকা কলেজ ও বদরুন্নেসা কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ছবি

কলাবাগানে ফ্রিজের ভেতর থেকে নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ জারির দাবিতে শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের অবস্থান

ছবি

চায়ের দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে মধ্যরাতে ঢাবি ও ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

ছবি

বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবস্থানে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার

ছবি

পুলিশ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদুনে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে

ছবি

ঢাকায় প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের ডাক

ছবি

বাধা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর গেন্ডারিয়ায়ও ক‌রা যায়নি ‘শরৎ উৎসব’

tab

রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল ৭৫ থেকে ৫শ বেডে উন্নীত

মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি

বাকী বিল্লাহ

সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হিসেবে রূপান্তরের দাবি দীর্ঘদিনের। প্রতি বছর পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষ্যে সরকারের কাছে এই দাবি তুলে ধরার বিষয় নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। পুলিশ হাসপাতালটি মেডিকেল কলেজ হিসেবে রূপান্তর করার জন্য ইতোমধ্যে একাধিক নতুন ভবন নির্মাণ ও আধুনিক ডায়াগোনষ্টিক পরীক্ষার যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। হাসপাতালটি বর্তমানে ৫শ বেডেও উন্নীত করা হয়েছে। মেডিকেল কলেজ ঘোষনা করা হলে হাসপাতালটিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবা ও গবেষনার মান আরও উন্নত হবে বলে সাবেক ও বর্তমান পুলিশ কর্মকর্তরা মন্তব্য করেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের চিকিৎসার জন্য ১৯৫৪ সালে ১১ দশমিক ৫ একর জমিতে ৭৫ বেডের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়েছিল। স্বাধীনতার পর পুলিশ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা পর্যায়ক্রমে বাড়ছে। কিন্তু পুলিশ হাসপাতালের তেমন উন্নয়ন হয়নি। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে হাসপাতালটি ২৫০ বেডে উন্নীত করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়। যা পরবর্তীতে বাস্তবায়িত হয়।

প্রকল্পের আওতায় একটি দশতলা ভবন নির্মাণ করা হলেও চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য দরকারি আধুনিক যন্ত্রপাতি,সরঞ্জাম ও অভিজ্ঞ ডাক্ত্রা,নার্স,টেকনিশিয়ানের সংকট থাকায় পর্যাপ্ত সেবা দেয়া কষ্টকর ছিল।

২০০৮ সালে পুলিশ বাহিনীর অফিসার ও সদস্য বেড়ে ২ লাখের বেশী হয়েছে। এই বিশাল বাহিনী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নূন্যতম চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের সক্ষমতা ছিল অপর্য্যাপ্ত। ওই সময় মারাত্বক কোন রোগী ভর্তি হলে পরবর্তীতে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ অন্যান্য স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তির জন্য পাঠানো হত।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, রাজনৈতিক সহিংসতা,হরতাল, অবরোধ কিংবা বড় ধরনের দূর্ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় আহত হলে তাদেরকে প্রথমে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির পরীক্ষা নিরীক্ষার অভাবে তাদের চিকিৎসা দেয়া কষ্টকর ছিল। বর্তমান সরকারের আমলে পুলিশ হাসপাতালটির দিন দিন উন্নত থেকে আরও উন্নত করা হয়েছে।

খোজ নিয়ে জানা গেছে,নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও ২০১৮ সাল থেকে অদ্যবধি হাসপাতালটি নতুন করে আধুনিকরণ করা হয়েছে। পুরাতন নড়বড়ে ভবন ভেঙ্গে নতুন কাঠামোতে বহুতল ভবন তৈরী করা হয়েছে। চালু করা হয়েছে, ইমাজেন্সিসহ নতুন নতুন বিভাগ। যার ফলে বর্তমানে হাসপাতালটি একটি আধুনিক হাসপাতালে রূপ নেয়।

হাসপাতালের সাবেক পরিচালক অবসর প্রাপ্ত অতিরিক্ত আইজিপি হাসানুল হায়দার সংবাদকে জানান,হাসাপাতালটিতে ক্যান্সার ইউনিট স্থাপনসহ অন্যান্য সেবাগুলোকে বর্ধিত করার যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে এটি আরও উন্নত হাসপাতালে রূপান্তরিত হবে। আর হাসপাতালটিকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল করা হলে এই হাসপাতাল আরও উন্নত হবে বলে তিনি আশাবাদী। হাসপাতালটিতে টিম ওয়ার্ক কাজ করার কারনে আজকের এই অবস্থানে আসছে।

তার মতে, পুলিশ হেডকোয়াটার্স থেকে হাসপাতালটির উন্নয়নে সকল ধরনের সহযোগীতা করা হয়েছে। পুলিশ হাসপাতালের উন্নয়নে স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগ থেকে ভূমিকা রাখা হয়েছে। পুলিশ হাসপাতালে দায়িত্ব পালন কালে অবকাঠামো উন্নয়ন করতে গিয়ে নানা ধরনের চেলেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে।

যন্ত্রপাতি কেনা থেকে শুরু করে টেন্ডার পর্যন্ত সব কিছুতে একটি মহল প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছে। ওই সময় নানা মিথ্যা অভিযোগের পর তা পাত্তা না দিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে উচ্চ পর্যায়ে সর্বক্ষণ যোগাযোগ করে হাসপাতালের উন্নয়ন করা হয়েছে। এটা ছিল একটা কঠিন চেলেঞ্জ। টেন্ডার না পাওয়া লোকজন এখনো নানা ভাবে সমালোচনা করে যাচ্ছেন।

হাসপাতালের প্রাপ্ত তথ্য মতে,২০১৮ সাল থেকে হাসপাতালটি সেবার মান আরও উন্নত করা হয়েছে। ওয়ার্ডগুলোকে উন্নত করা হয়েছে। বহিঃবিভাগে ওষুধ বিতরণ,শিশু ওয়ার্ড,কিডনী ডায়ালাইসিস ইউনিট,ফিজিওখেরাপি,দন্ত, নাক,কানগলা বিভাগ,মেডিসিন বিভাগ,ইমাজেন্সি বিভাগসহ অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। ধীরে ধীরে হাসপাতালের কলেবর বাড়তে থাকে এবং হাসপাতালটি একটি আধুনিক হাসপাতালে রূপ নেয়।

করোনা মহামারীর সময় পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে পুলিশ হাসপাতাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। পুলিশ ছাড়াও অন্যান্য বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা,রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বসহ নানা পেশার মানুষ পুলিশ হাসপাতাল থেকে সেবা নিয়েছে। তারা করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়েছেন।

পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে,বর্তমান সরকারের সময় পুলিশের জনবল বাড়ছে। বাড়ছে পুলিশের নতুন নতুন ইউনিট। চিকিৎসা ক্ষেত্রে পুলিশ হাসপাতালটির অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তবে পুলিশ মেডিকেল কলেজ দীর্ঘদিনের দাবি। পুলিশ সপ্তাহে পুলিশ কর্মকর্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন,পুলিশ হাসপাতালটিকে মেডিকেল কলেজ হিসেবে রূপান্তর করলে চিকিৎসা সেবার মান আরও উন্নত হবে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

পুলিশ হেডকোয়াটার্সের একজন অতিরিক্ত আইজিপি (অ্যাডিশনাল আইজিপি) সংবাদকে জানান, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালটি বর্তমান সরকারের আমলে অনেক উন্নত হয়েছে। মেডিকেল কলেজ নিয়ে বার বার আলোচনায় আসলেও কলেজ করতে যে পরিমান জায়গার দরকার তা পর্যাপ্ত নয়। যার কারনে সমস্যা হচ্ছে। তবে বহু পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যের আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পাশাপাশি মেডিকেল কলেজ করা হলে সবাই উপকৃত হবে। ক্যাজুয়ালটিসহ অন্যান্য পূণাঙ্গ বিভাগ থাকলে দূর্ঘটনায় আহতরা এখন থেকে উন্নত সেবা পাবে। ২০০৮ সালের পর পুলিশ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার বাড়ানো হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন পুলিশ বাহিনীর সংখ্যা ২ লাখের বেশী। সঙ্গে তাদের পরিবারও রয়েছে। সেই হিসেবে হাসপাতালের পরিধি আরও বাড়লে সেবার মান বাড়বে বলে আশা করছেন।

back to top