image

মিরপুরে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ ট্রাফিক বক্সে আগুন, পথচারী গুলিবিদ্ধ

রোববার, ১৯ মে ২০২৪
সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

রাজধানীর মিরপুরে রোববার (১৯ মে) সকাল থেকেই বিক্ষোভ করছিলেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা। তাদের বিক্ষোভ থেকে ট্রাফিক পুলিশ বক্সে আগুন দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের দাবি, রোববার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে কালশী মোড়ে অবস্থিত ট্রাফিক পুলিশের বক্সে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা। এ ঘটনায় এক পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি রয়েছে।

ডিএমপির পল্লবী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেসুর রহমান বলেন, কালশীতে আন্দোলনকারীরা সহিংস আন্দোলন করছে। তারা কালশী মোড়ে অবস্থিত একটি পুলিশ বক্সে আগুন দিয়েছে। এটি ট্রাফিক পুলিশের একটি বক্স।

সড়কে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে পুলিশের সাম্প্রতিক অভিযানের বিরুদ্ধে মিরপুরের ১০ নম্বরে লাঠিসোঁটা হাতে বিক্ষোভে নামে চালক ও ব্যবসায়ীরা। এ সময় কয়েকটি বাসে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি বিক্ষুব্ধরা প্যাডেলচালিত রিকশা চালকদেরও মারধর করেন বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার জসিম উদ্দিন জানান। রোববার সকাল ১০টা থেকে তারা মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর অবরোধ করে রাখেন।

রিকশা চালকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় ছোড়া গুলিতে একজন আহত হয়েছেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, আহত সাগর ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, সাগর পেশায় দর্জির দোকানের কারিগর। তিনি রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকায় থাকেন। আহত ওই যুবক জানান, উত্তরায় কাজ শেষে এক বন্ধুসহ বাসায় ফেরার পথে কালসী মোড়ে বিকেল ৩টার দিকে তার শরীরে গুলিবিদ্ধ হয়। পরে আহত অবস্থায় তার বন্ধু তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে বিকেল সোয়া ৫টায় ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

উপ-কমিশনার জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ব্যাটারিচালিত রিকশার চালক এবং এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনেকে মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর অবরোধ করে রাখে। ফলে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ যায়। পুলিশের সাম্প্রতিক অভিযানে কারণে তারা এরকম করছেন।’

উপ-কমিশনার জানান, মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে জড়ো হওয়ার আগে বিক্ষোভকারীরা মিরপুরের কালশিসহ আরও কয়েকটি সড়কে বিক্ষোভে নামেন। ‘এ সময় তারা প্যাডেলচালিত রিকশা চালকদেরও মারধর করেন, কয়েকটি বাস ভাঙচুর করেন। পরে তারা মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরে এসে অবস্থান নেন।’

দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে ঢাকার সড়কে ব্যাটারি চালিত রিকশা, ভ্যান এবং এ ধরনের তিন চাকার যান চলাচল বন্ধে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ। ১৮ মে শনিবার প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বিআরটিএ বলছে, ‘ব্যাটারি বা মোটরচালিত রিকশা বা ভ্যান বা এ জাতীয় থ্রি-হুইলার ঢাকা মহানগরীতে চলাচলের কারণে সড়ক নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী ব্যাটারি/রিকশা বা ভ্যান বা এ ধরনের থ্রি-হুইলার এবং ফিটনেসের অনুপযোগী, রংচটা, জরাজীর্ণ ও লক্কড়ঝক্কড় মোটরযান চালানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

‘এ অবস্থায় ঢাকা মহানগরীতে ব্যাটারি/রিকশা বা ভ্যান বা এ ধরনের থ্রি-হুইলার এবং ফিটনেসের অনুপযোগী, রঙচটা, জরাজীর্ণ ও লক্কড়ঝক্কড় মোটরযান চালানো বন্ধ করার অনুরোধ করা যাচ্ছে।’ নির্দেশনা অমান্য করলে সংশ্লিষ্টের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছে বিআরটিএ।

বিদ্যুৎচালিত তিন চাকার যানগুলো অটো, ইজিবাইকসহ নানা নামে পরিচিত। শারীরিক পরিশ্রম না হওয়ায় দেশে প্যাডেল রিকশার বিকল্প হিসেবে চালকদের কাছে জনপ্রিয় হয়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। কিন্তু প্রায় প্রতিদিন দুর্ঘটনায় পড়ছে কম গতির এসব হালকা যান। এ অবস্থায় বিভিন্ন প্রধান সড়কে এসব যান চলাচল বন্ধের দাবি উঠেছে। ঢাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত কোনো রিকশা চলাচল করতে পারবে না বলে ঘোষণা আসে গত বুধবার।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলেছিলেন, ‘ব্যাটারিচালিত কোনো গাড়ি যেন ঢাকা সিটিতে না চলে। আমরা ২২টি মহাসড়কে নিষিদ্ধ করেছি। শুধু নিষেধাজ্ঞা নয়, চলতে যেন না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।’ বিদ্যুৎচালিত তিন চাকার যানগুলো অটো, ইজিবাইকসহ নানা নামে পরিচিত। দুর্ঘটনার জন্য সড়কে মোটরবাইক এবং ইজিবাইকের চলাচলকে দায়ী করেন তিনি।

বিআরটিএ ভবনে মন্ত্রীর সঙ্গে ওই সভায় ঢাকার দুই মেয়রও শহরের মধ্যে এসব ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধের বিষয়ে তাদের সম্মতি জানিয়েছিলেন। রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচি দিয়েছে রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই কর্মসূচির কথা জানায় সংগঠনটি।

‘নগর-মহানগর’ : আরও খবর

সম্প্রতি