ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৭৭ হাজার ৩৪৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে শনিবার, (০৮ নভেম্বর ২০২৫) পর্যন্ত তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৮২৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৬৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০৩ জন, ঢাকা বিভাগে ২২৯ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২০৩ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৬০ জন, ময়মনসিংহে ২২ জন ভর্তির তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। শনিবার, ছুটির দিনে এ তথ্য পাওয়া গেলেও খোলার দিন আরও বেশি ভর্তির তথ্য পাওয়া যায়।
আক্রান্তদের মধ্যে ৫ বছর বয়সের ৪৭টি, ৬-১০ বছর বয়সের ২৯ জন, ১১-১৫ বছর বয়সের ৪১ জন, ১৬-২০ বছর বয়সের ৮৮ জন, ২১-২৫ বছর বয়সের ১০৬জন, ২৬ থেকে ৩০ বছর বয়সের ১১৬ জন, ৩১-৩৫ বছরের ১০০ জন, ৮০ বছরের ৬ জন। এভাবে নানা বয়সের মানুষ প্রতিদিন ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে। আবার মারাও যাচ্ছে।
হাসপাতালের তথ্যমতে, এখনও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ১৮৫ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ৬২ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ২৩ জন, সোহ্রাওয়ার্দী হাসপাতালে ৩৯ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৮৫ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৮৩ জন, কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে ২৬ জন, মহাখালী ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ১৬৪ জন ভর্তি আছে। এভাবে রাজধানীর ১৮টি সরকারি হাসপাতালে ৯০৪ জন ভর্তি আছে। এভাবে সারাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এখনও ৩ হাজার ২৫৬ জন ভর্তি আছে বলে জানিয়েছেন, ডা. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম।
কীটতত্ত্ব ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এডিস মশা সাধারণত পরিষ্কার জমে থাকা পানিতে ডিম পারে। যেমন- ফুলের টব, ড্রাম, প্লাস্টিকের পাত্র, পুরনো টায়ার, ছাদের গর্তে জমে থাকা পানিতে ডিম পারে। গত অক্টোবর ও চলতি নভেম্ববর বৃষ্টিপাতের ফলে এসব স্থানে পুনরায় পানি জমে এবং মশার ডিম থেকে লাভা ও পিউপা হয়ে নতুন প্রজন্মের মশা জন্ম নিচ্ছে। তাই বৃষ্টি যত দেরিতে হয়, ডেঙ্গুর প্রজনন চক্র তত দীর্র্ঘায়িত হয়। এছাড়াও বর্তমান তাপমাত্রাও এখন ডেঙ্গুর পক্ষে। বৃষ্টির সঙ্গে তাপমাত্রা মিলিয়ে ডেঙ্গু বিস্তারের জন্য পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
ডেঙ্গু মোকাবিলায় নাগরিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এডিস মশার শতকরা ৮০ ভাগ প্রজনন স্থানই মানুষের আবাসিক বা কর্মস্থল পরিবেশে অবস্থিত। তবু অনেকেই এখনও বিশ্বাস করেন এটি ‘সরকারের দায়িত্ব’।
বাসাবাড়ি বা অফিসের ছাদে, বারান্দায়, ফুলের টবে বা ড্রামে জমে থাকা পানি পরীক্ষা করার অভ্যাস এখনও গড়ে ওঠেনি। অনেকে মনে করেন, এক-দুই দিনের পানি জমে থাকলে ক্ষতি নেই। কিন্তু বাস্তবে এডিস মশা মাত্র ৫-৭ দিনে ডিম থেকে পূর্ণাঙ্গ মশা হয়ে যায়।
এডিস মশা দমনে জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারণা কার্যক্রম সারাবছর থাকা দরকার বলে বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেন। নাগরিকদের নিজ নিজ উদ্যোগে পানি জমা স্থান পরিষ্কার রাখা, নিয়মিত লার্ভা পরীক্ষা করা এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে তথ্য জানানো। এ তিনটি দায়িত্ব এখন অপরিহার্য।
পানির উৎসগুলোর সঙ্গে বৃষ্টির সম্পর্ক নেই, তাই শীতকালেও এডিস মশার প্রজনন চলতে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকা শহরের অনেক ভবনের নিচ তলা ও বেইজমেন্টে দিনের বেলায় প্রচুর এডিস মশা থাকে, যা শীতেও সক্রিয় থাকে।
ফলে আগামী ডিসেম্বর ও জানুয়ারি পর্যন্ত ডেঙ্গুর সংক্রমণ অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৭৭ হাজার ৩৪৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে শনিবার, (০৮ নভেম্বর ২০২৫) পর্যন্ত তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৮২৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৬৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০৩ জন, ঢাকা বিভাগে ২২৯ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২০৩ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৬০ জন, ময়মনসিংহে ২২ জন ভর্তির তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। শনিবার, ছুটির দিনে এ তথ্য পাওয়া গেলেও খোলার দিন আরও বেশি ভর্তির তথ্য পাওয়া যায়।
আক্রান্তদের মধ্যে ৫ বছর বয়সের ৪৭টি, ৬-১০ বছর বয়সের ২৯ জন, ১১-১৫ বছর বয়সের ৪১ জন, ১৬-২০ বছর বয়সের ৮৮ জন, ২১-২৫ বছর বয়সের ১০৬জন, ২৬ থেকে ৩০ বছর বয়সের ১১৬ জন, ৩১-৩৫ বছরের ১০০ জন, ৮০ বছরের ৬ জন। এভাবে নানা বয়সের মানুষ প্রতিদিন ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে। আবার মারাও যাচ্ছে।
হাসপাতালের তথ্যমতে, এখনও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ১৮৫ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ৬২ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ২৩ জন, সোহ্রাওয়ার্দী হাসপাতালে ৩৯ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৮৫ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৮৩ জন, কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে ২৬ জন, মহাখালী ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ১৬৪ জন ভর্তি আছে। এভাবে রাজধানীর ১৮টি সরকারি হাসপাতালে ৯০৪ জন ভর্তি আছে। এভাবে সারাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এখনও ৩ হাজার ২৫৬ জন ভর্তি আছে বলে জানিয়েছেন, ডা. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম।
কীটতত্ত্ব ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এডিস মশা সাধারণত পরিষ্কার জমে থাকা পানিতে ডিম পারে। যেমন- ফুলের টব, ড্রাম, প্লাস্টিকের পাত্র, পুরনো টায়ার, ছাদের গর্তে জমে থাকা পানিতে ডিম পারে। গত অক্টোবর ও চলতি নভেম্ববর বৃষ্টিপাতের ফলে এসব স্থানে পুনরায় পানি জমে এবং মশার ডিম থেকে লাভা ও পিউপা হয়ে নতুন প্রজন্মের মশা জন্ম নিচ্ছে। তাই বৃষ্টি যত দেরিতে হয়, ডেঙ্গুর প্রজনন চক্র তত দীর্র্ঘায়িত হয়। এছাড়াও বর্তমান তাপমাত্রাও এখন ডেঙ্গুর পক্ষে। বৃষ্টির সঙ্গে তাপমাত্রা মিলিয়ে ডেঙ্গু বিস্তারের জন্য পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
ডেঙ্গু মোকাবিলায় নাগরিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এডিস মশার শতকরা ৮০ ভাগ প্রজনন স্থানই মানুষের আবাসিক বা কর্মস্থল পরিবেশে অবস্থিত। তবু অনেকেই এখনও বিশ্বাস করেন এটি ‘সরকারের দায়িত্ব’।
বাসাবাড়ি বা অফিসের ছাদে, বারান্দায়, ফুলের টবে বা ড্রামে জমে থাকা পানি পরীক্ষা করার অভ্যাস এখনও গড়ে ওঠেনি। অনেকে মনে করেন, এক-দুই দিনের পানি জমে থাকলে ক্ষতি নেই। কিন্তু বাস্তবে এডিস মশা মাত্র ৫-৭ দিনে ডিম থেকে পূর্ণাঙ্গ মশা হয়ে যায়।
এডিস মশা দমনে জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারণা কার্যক্রম সারাবছর থাকা দরকার বলে বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেন। নাগরিকদের নিজ নিজ উদ্যোগে পানি জমা স্থান পরিষ্কার রাখা, নিয়মিত লার্ভা পরীক্ষা করা এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে তথ্য জানানো। এ তিনটি দায়িত্ব এখন অপরিহার্য।
পানির উৎসগুলোর সঙ্গে বৃষ্টির সম্পর্ক নেই, তাই শীতকালেও এডিস মশার প্রজনন চলতে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকা শহরের অনেক ভবনের নিচ তলা ও বেইজমেন্টে দিনের বেলায় প্রচুর এডিস মশা থাকে, যা শীতেও সক্রিয় থাকে।
ফলে আগামী ডিসেম্বর ও জানুয়ারি পর্যন্ত ডেঙ্গুর সংক্রমণ অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।